সূর্য আরশের নিচে সিজদা কিভাবে করে ?
প্রশ্নঃ সূর্য আরশের নিচে সিজদা কিভাবে করে ?
লিখেছেনঃ আফিফ আলী সাদাফ
(বিদ্রঃ এ পোস্ট যদি সম্পূর্ণ পড়ে থাকেন তবে আপনি মুসলিম হয়ে থাকলে একটি সিজদা দিবেন এরপর তিনবার তাসবিহ পাঠ করবেন নামাজে যা পড়েন । কেননা , উক্ত পোস্টে একটি সিজদার আয়াত রয়েছে যা পড়লে আপনার জন্য সিজদা ওয়াজিব । )
জবাবঃ
বুখারি শরিফের একটি হাদিস আছে হাদিসটা হচ্ছে সহিহ বুখারির চতুর্থ খন্ডের ৫৪ নাম্বার অধ্যায়ের হাদীস নাম্বার ৪২১। এই হাদিসে বলা হয়েছে যে ,
⦁ হজরত আবু যা’র (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,- “রাসূল (সাঃ) আমার কাছে জিজ্ঞেস করলেন,- তুমি কী জানো (সূর্যাস্তের সময়) সূর্য কোথায় যায়?”আমি বললাম,- “আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ভালো জানেন”। তখন তিনি বললেন,- ‘এটা (নির্দিষ্ট পথে চলতে চলতে) আল্লাহর আরশের নিচে এসে সিজদা করে এবং উদয় হবার জন্য অনুমতি চায় এবং এটাকে অনুমতি দেওয়া হয়। এমন একটা সময় আসবে যেদিন এটাকে আর অনুমতি দেওয়া হবেনা (পূর্বদিক থেকে উদিত হবার জন্য) এবং এটাকে যেদিক থেকে এসেছে সেদিকে ফিরে যেতে বলা হবে। সেদিন এটা (সূর্য) পশ্চিম দিক থেকে উদয় হবে”। [ 1 ]
এখন প্রশ্ন হচ্ছে সূর্য তো নিজ কক্ষপথে আবর্তনশীল সেটা তো কখনো নিজ কক্ষের বাহিরে যায়না । তাহলে সেটা আরশের নিচে কিভাবে গিয়ে সিজদা করে ? এখন এর উত্তর সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের আগে এটা জানতে হবে যে , আল্লাহর আরশ কোথায় ।
আল্লাহ বলেন ,
আল্লাহ বলেন ,
⦁ إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ ۗ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ ۗ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ
⦁ “আসমান ও জমিনকে আল্লাহ ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, এই ছয় দিনের ব্যস্ততার পর আল্লাহ তা’আলা আরশের উপর সমাসীন হন। [ 2 ]
⦁ ইমাম আওযাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ
আমরা এবং তাবেয়ীগন বলেন যে, অবশ্যই আল্লাহ বলেছেন যে, তিনি তাঁর আরশের উপর, এবং তাঁর গুন(সিফাত) সম্পর্কে যা সুন্নাহ এ বর্ণিত হয়েছে তা আমরা বিশ্বাস করি। [ 3 ]
⦁ ইমাম আবু হানিফা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ
যে বলবে যে, আল্লাহ আসমানে আছেন না যমিনে আছেন,তা আমি জানি না, সে কুফরী করবে, কেননা আল্লাহ বলেন- রহমান আরশে সমাসীন। আর তাঁর আরশ সপ্ত আকাশের উপর । [ 4 ]
অর্থাৎ এথেকে বুঝা যাচ্ছে যে , আরশ সপ্ত আকাশে সমাসীন ।
এখন আসি দ্বিতীয় প্রশ্নে যে , আচ্ছা মেনে নেয়া যাক যে , সূর্য আরশের নিচেই অবস্থান করছে কিন্তু সূর্য আরশকে সিজদা করে কিভাবে ? সূর্যের তো আর হাত , পা , নাক , হাটু , পা নেই । এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে আমাদের "সিজদা " বা Sujood সম্পর্কে জানতে হবে যে , সিজদা আসলে কি । সিজদা আরবি শব্দ ( سجد ) এর অর্থ শ্রদ্ধা , বন্দনা , ভক্তি , বাধ্য হওয়া , অনুগত হওয়া , অত্যন্ত বিনয় প্রদর্শন করা ইত্যাদি [ 5 ] । সিজদা শুধু মাথা , পা , হাটু , কপাল , নাক ঠেকানো না । একেকজনের ক্ষেত্রে সিজদা একেক রকম । আল্লাহ প্রত্যেককে তার সাধ্য মত সিজদা করতে বলেছেন কাউকে জবরদস্তি ওভাবেই সিজদা করতে সেভাবেই সিজদা করতে হবে । এরকম কোন বাধ্য বাধকতা নেই । যদি উদাহরণ দিতে যাই তাহলে কোমর ভাঙ্গা মানুষের ক্ষেত্রে বসে সিজদা দেবার বিধান রয়েছে অসুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে শুয়ে সিজদা দেবার বিধান আছে । গুরুতর অসুস্থ মানুষের জন্য ইশারায় সিজদা দেবার বিধান এসেছে । সকলকে সকলের সাধ্য মত সিজদা করার বিধান দেয়া হয়েছে । ঠিক তেমনি সূর্য চন্দ্রের ক্ষেত্রেও । আল্লাহ কুরআনের মধ্যে বলেছেন ,
⦁ وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَظِلَالُهُمْ بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ ۩
⦁ আর আল্লাহর জন্যই আসমানসমূহ ও যমীনের সবকিছু অনুগত ও বাধ্য হয়ে সিজদা করে এবং সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের ছায়াগুলোও। [ 6 ]
আল্লাহর জন্য সকলে সিজদা করে আসমান যমিনের যা কিছু আছে আর যেহেতু সিজদা আরবি শব্দ ( سجد ) এর অর্থ শ্রদ্ধা , বন্দনা , ভক্তি , বাধ্য হওয়া , অনুগত হওয়া , অত্যন্ত বিনয় প্রদর্শন করা ইত্যাদি । আর সূর্য আল্লাহর বাধ্য , অনুগত আল্লাহর আদেশেই সূর্য পরিভ্রমণ করে । আল্লাহ বলেন ,
⦁ وَقَالُوا اتَّخَذَ اللَّهُ وَلَدًا ۗ سُبْحَانَهُ ۖ بَلْ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ كُلٌّ لَهُ قَانِتُونَ
⦁ আর তারা বলে, আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। তিনি পবিত্র মহান; বরং আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে তা তাঁরই । সব তাঁরই অনুগত।
অর্থাৎ এইখান থেকেই বুঝা যাচ্ছে যে , সূর্য আল্লাহর অনুগত হয় , বিনয় প্রদর্শন করে , বাধ্য হয় । আর মানুষ এবং জীন আল্লাহর ইবাদত করে আল্লাহর অনুগত প্রকাশ করে নামাজ , রোজা , হজ , যাকাত করে অনুগত প্রকাশ করে । সৃষ্টিকর্তার অনুগত একেক সৃষ্টির জন্য একেকরকম যেমন আল্লাহ বলেন ,
সাত আসমান ও যমীন এবং এগুলোর মধ্যে যা কিছু আছে সব কিছু তাঁর তাসবীহ পাঠ করে এবং এমন কিছু নেই যা তাঁর প্রসংশায় তাসবীহ পাঠ করে না; কিন্তু তাদের তাসবীহ তোমরা বুঝ না। নিশ্চয় তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ।
মানুষ আর জিনের ইবাদত হল নামাজ , রোজা , হজ , যাকাত এসবই । এসবের মাধ্যমে মানুষ , জীন আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা , অনুগততা , বিনয় প্রকাশ করে । ঠিক তেমনি সূর্য , চন্দ্র তাদের নির্দিষ্ট কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি অনুগত , অত্যন্ত বিনয় , , বাধ্য , ভক্তি প্রদর্শন করে । এককথায় সিজদা করে । এখন পাঠকদের মধ্যে যদি মুক্তমনা থেকে থাকেন তাঁরা বলবেন যে , আল্লাহ কুরআনে সুরা আরাফের ২৯ নাম্বার আয়াতে বলেছেন ,
⦁ قُلْ أَمَرَ رَبِّي بِالْقِسْطِ ۖ وَأَقِيمُوا وُجُوهَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَادْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ ۚ كَمَا بَدَأَكُمْ تَعُودُونَ
⦁ বল, ‘আমার রব ন্যায়বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন আর তোমরা প্রত্যেক সিজদার সময় তোমাদের চেহারা সোজা রাখবে এবং তাঁরই ইবাদাতের জন্য একনিষ্ঠ হয়ে তাঁকে ডাক’। যেভাবে তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, সেভাবে তোমরা প্রথমে ফিরে আসবে। [ 8 ]
তাহলে সূর্যকেও সিজদা দিতে হলে স্থির হতে হবে যেহেতু সূর্যের নাক , কপাল , মুখ চিনহিত করা সম্ভব না তাই সূর্যকে পুরো স্থির হতে হবে । এর মানে কুরআনে ভুল আছে ।
আমার উত্তর হচ্ছে না ! হাদিসে ভুল নেই ভুল টা আপনাদের মধ্যে । আল্লাহ প্রত্যেকের ইবাদত আলাদা করে দিয়েছেন I Mean বিনয় প্রদর্শনের System অথবা অনুগত হবার System আলাদা করে দিয়েছেন । কেননা সিজদা করার জন্য স্থির হবার প্রয়োজন নেই । যেহেতু সিজদার বিভিন্ন অর্থও আছে তাঁর মধ্যে একটি অনুগত হওয়া । আর আল্লাহ একেকজন কে একেকভাবে অনুগত হবার আদেশ দিয়েছেন অথবা অনুগত করে দিয়েছেন আল্লাহ মানুষ আর জিনদের নামাজ , রোজা , হজ , যাকাত দেবার মাধ্যমে অনুগত করেছেন ।
অর্থাৎ আল্লাহ এইসকল জিনিস অর্থাৎ সূর্য , আকাশ , যমিন এদের বহু আগেই অনুগত করে দিয়েছেন এবং এরা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আল্লাহর অনুগত করবে এরপরে ধ্বংস হয়ে যাবে । যেমন মানুষ এবং জিন মৃত্যু আগ পর্যন্ত আল্লাহর অনুগত হবে এরপরে তাদের আমল বন্ধ করে দেয়া হবে ।
এখানে মূল কথা হচ্ছে সৃষ্টিকুলের সকল বস্তু একভাবে একই নিয়মে আল্লাহর অনুগত বা আল্লাহকে বিনয় প্রদর্শন করেনা । একেকজনের ক্ষেত্রে বা একেক জাতির ক্ষেত্রে একেক রকম নিয়ম ছিল এবং এই নিয়মের বৈচিত্র্যতা আজও সৃষ্টিকুলের মধ্যে বিরাজ করছে । ঠিক তেমনি সূর্য , চন্দ্র আল্লাহর অনুগত হচ্ছে এবং হতেই আছে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নির্দিষ্ট নিয়মের মাধ্যমে । এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে , যদি সূর্য আরশের নিচেই থাকে তাহলে আলাদা করে সূর্যাস্তের কথা কেন বলা হল ?
এর উত্তর বেশ সহজ উপরোক্ত হাদিসের আরবি ইবারতে কোথাও আলাদা করে সূর্যাস্তের কথা নেই ।
প্রতিটা ভাষার মধ্যেই শব্দ আছে । এইসকল শব্দের অনেক অর্থ আছে আবার তার পাশাপাশি ভিন্নার্থক অর্থও বিদ্যমান । সবকিছু আক্ষরিকভাবে বিবেচনা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয় । আরবি ভাষায় অনেক শব্দের ভিন্নার্থক অর্থ আছে । এখন অনেকে আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন যে , তাহলে অনুবাদকেরা কি ভুল ? আমার উত্তর একটাই যা আমি প্রতিবারের মত করে দেই তা হল অনুবাদকেরা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে কুরআন কে ব্যাখ্যা করেনি । কেননা বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা আছে বিজ্ঞানের থিওরি সমূহ কালে কালে চেঞ্জ হয় । কিন্তু যেখান থেকে বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা সেখানেই কুরআনের অলৌকিকতার শুরু । কেননা কুরআন সর্বকালের জন্য তাই আল্লাহ কুরআনে এমন এমন শব্দ ব্যাবহার করেছেন যাতে করে কুরআন সর্বকালের জন্যই যুগোপযোগী হতে পারে । এছাড়া কুরআন লেখা হয়েছে সাহিত্যর মত করে । এছাড়া কুরআনে ছন্দের ব্যাবহার করা হয়েছে । যার কারণে দেখা যায় অনেক আয়াতে আল্লাহ আকাশকে , পাহাড়কে , চাঁদ , সূর্য ইত্যাদি এগুলোকে নানা জিনিসের সাথে তুলনা করেছেন । আকাশকে ছাদের সাথে তুলনা করেছেন যমিন কে বিছানার সাথে । যেমন টা অন্যান্য সাহিত্যর মধ্যে করা হয় যেমন উদাহরণ স্বরূপ শেক্সপিয়ারের একটি বিখ্যাত উক্তি যে ,
⦁ " অভাব যখন দরজায় এসে দাঁড়ায়, ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায় !!" [9]
এখন ভালোবাসা তো কোন জীব না যে এটা পালাবে এটা মনের মাঝে একটা অনুভূতি । এর মানে শেক্সপিয়ার পাগল ? উন্মাদ ? কখনই না এগুলো হচ্ছে ছন্দ । ঠিক তেমনি কুরআনে বিভিন্ন জিনিসের সাথে বিভিন্ন জিনিসের তুলনা করা হয়েছে বলে কুরআন অবৈজ্ঞানিক হয়ে যায়নি শুধু মাত্র ছন্দ সাজাবার জন্য ব্যাবহার করা হয়েছে । এগুলো হোল উপমা কেননা আল্লাহ কুরআনে বলেছেন , [10]
⦁ وَلَقَدْ صَرَّفْنَا فِي هَٰذَا الْقُرْآنِ لِلنَّاسِ مِنْ كُلِّ مَثَلٍ ۚ وَكَانَ الْإِنْسَانُ أَكْثَرَ شَيْءٍ جَدَلًا
⦁ “নিশ্চয় আমি এ কোরআনে মানুষকে নানাভাবে বিভিন্ন উপমার দ্বারা আমার বাণী বুঝিয়েছি। মানুষ সব বস্তু থেকে অধিক তর্কপ্রিয়”।
অর্থাৎ আল্লাহ তখন জানতেন যে ,এ ইসমস্ত উপমা নিয়ে মানুষ তর্ক বিতর্ক করবে ।
তথ্যসূত্রঃ
1. সহিহ বুখারি চতুর্থ খন্ড ৫৪ নাম্বার অধ্যায় হাদীস নাম্বার ৪২১
2. সুরা আরাফ: ৫৪
3. শারহ আকীদাতিত তাহাবীয়াহ, পৃঃ ৩২২
4. ইমাম বাইহাকী এর আল আসমা ওয়া সিফাত, পৃঃ ৫১৫
5. Wikitionary / ( سجد )
6. সুরা আর রাদ আয়াত ১৫
7 . সুরা হাজ্জ আয়াত ৬৭
8. সুরা আরাফ আয়াত ২৯
9. বিডিটুডেস ডেস্ক: আরএ/১৮ নভেম্বর, ২০১৮ [ শেক্সপিয়ারের কিছু উক্তি ]
10. সুরা কাহাফঃ ৫৪ আয়াত
1. সহিহ বুখারি চতুর্থ খন্ড ৫৪ নাম্বার অধ্যায় হাদীস নাম্বার ৪২১
2. সুরা আরাফ: ৫৪
3. শারহ আকীদাতিত তাহাবীয়াহ, পৃঃ ৩২২
4. ইমাম বাইহাকী এর আল আসমা ওয়া সিফাত, পৃঃ ৫১৫
5. Wikitionary / ( سجد )
6. সুরা আর রাদ আয়াত ১৫
7 . সুরা হাজ্জ আয়াত ৬৭
8. সুরা আরাফ আয়াত ২৯
9. বিডিটুডেস ডেস্ক: আরএ/১৮ নভেম্বর, ২০১৮ [ শেক্সপিয়ারের কিছু উক্তি ]
10. সুরা কাহাফঃ ৫৪ আয়াত
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.