১৪০০ বছরেও কোরআন পরিবর্তন হয়নি ?


#QN- ১৪০০ বছরেও কোরআন পরিবর্তন হয়নি। আমরা মন থেকে চাই পৃথিবী ধ্বংসের আগ পর্যন্ত ( ইসলামের সৌভাগ্য এবং মানব জাতীর দূর্ভাগ্য বশত যদি এর অস্তিত্ব সামান্য পরিমান ও থাকে ) কোরআনের একটা লাইনও যেন পরিবর্তন না হয়। মুমিন ভাইদের কাছে শুধু একটা অনুরোধ তারা যেন কোরআনের অর্থ কখনোই পরিবর্তন না করে। তাতেই আলহামদুলিল্লাহ আমাদের কাজ সফল হবে। কোরআনের সঠিক অর্থ বুঝে মানুষ এই গ্রন্থটি যদি পড়ে তাহলেই সবাই এই বর্বর ধর্ম ত্যাগ করবে।

লিখেছেনঃ মোঃ নাসির শেখ

#ANS

স্বীকার করার জন্য ধন্যবাদ যে ১৪০০ বছরেও কোরআন পরিবর্তন হয়নি। কেননা অনেকেই কোরআন বিকৃতের ভূয়া দাবি করে ৷ ইনি আবার মন থেকে চাইছেন পৃথিবী ধ্বংসের আগ পর্যন্ত কোরআনের একটা লাইনও যেন পরিবর্তন না হয়। এক্ষেত্রে আপনার মন থেকে চাওয়া না চাওয়ার চার আনার দাম নেই। কোরআনের একটা লাইন কেন একটা হরফও পরিবর্তন হয়নি, হবেও না। চাইলেও সম্ভব না। কোরআন আসার শুরু থেকে মুখস্ত রাখা হয়েছে। যাদের হাফিজ বলা হয়। এর সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছেই। লক্ষ লক্ষ কোরআনের হাফিজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সারাবিশ্বে। এছাড়াও এখন ইন্টারনেটে হাজারো ওয়েবসাইটে কোরআন সংরক্ষিত। পরিবর্তন এখন আরো দুঃসাধ্য। আপনাদের লোপা আপুকে কিছুদিন কোরআনের আয়াত চেঞ্জ করার জন্য অনেক কান্নাকাটি করতে দেখলাম। আপনারা কখন কি চান মন থেকে নিজেরাও ভালো করে জানেন না।

পৃথিবীর সবচেয়ে দূর্ভাগা তো তারা যারা কোরআনের আলো থেকে দূরে। সারাবিশ্বের দিকে তাকান। যেসমস্ত দেশ কোরআন তথা ইসলাম গ্রহন করেনি সেসমস্ত দেশে ধর্ষন, সমকাম (অভিশাপ), আত্মহত্যা ইত্যাদির হার বেশি। এখন ভাবুন কারা সৌভাগ্যবান ও কারা দূর্ভাগা!

কোরআন নিয়ে নাস্তিকদের দুঃশ্চিন্তার শেষ নাই। তাদের অযাচিত অকাম-কুকামের স্বীকৃতি কোরআনে নেই বলে। কোরআনের অর্থের বা অনুবাদের পরিবর্তন করতে হবে কি হবেনা তা ইসলামি স্কলাররা ভালো বলতে পারবে বা যারা অনুবাদ বিশেষজ্ঞ। অনুবাদের সীমাবদ্ধতা আছে। সীমাবদ্ধতার কারণে অনুবাদ করা প্রথমে নিষিদ্ধ ছিলো। কিন্তু, আল্লাহর মহান বাণী সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য অনুবাদের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কোরআনের অনুবাদ যত শুদ্ধই হোক, শতভাগ বিশুদ্ধ অনুবাদ সম্ভব নয়। এর কারণ ভাষাগত সীমাবদ্ধতা। কোরআন বোঝার জন্য অনুবাদের বিকল্প নেই। কিন্তু অনুবাদের একটু হেরফের হলে স্বয়ং আল্লাহতায়ালার কথাই বিতর্কিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। বাংলা বা উর্দুতে কোরআন অনুবাদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আরবি থেকে সরাসরি অনুবাদ না হয়ে ফার্সি থেকে উর্দুতে এবং উর্দু বা ফার্সিতে অনুবাদকৃত কোরআন থেকে বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছিল। ফলে উর্দু ও বাংলা উভয় ভাষার অনুবাদেই শাব্দিক, ভাষাগত ও ব্যাখ্যার তারতম্য ঘটেছে। এইটা অস্বাভাবিক কিছুই না। হতেই পারে।

আমরা একটু অনুবাদের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখে নেই-

অনুবাদকের অনুবাদচর্চায় প্রতিবন্ধকতার জায়গাগুলিকে পবিত্র সরকার নির্ণয় করেছেন। সেগুলি হলঃ ১. ধ্বন্যাত্মক শব্দাবলি ২. নিরর্থিত প্রয়োগ ৩. বিশিষ্ট বাগধারা ৪. সংস্কৃতি-লগ্ন শব্দাবলি ৫. পরিভাষা ৬. শব্দঋণ ৭. নৈকট্য জনিত প্রশ্রয় – পিতাজী ≠ পিতা। কথ্য বাংলায় পিতা শব্দের চল নেই। ৮. সমার্থক শব্দাবলি। যেমন – যুদ্ধ, লড়াই, সংগ্রাম শব্দগুলি সমার্থক কিন্তু প্রেক্ষিত অনুযায়ী শব্দগুলির অর্থের রদবদল ঘটে। ৯. ভিন্নার্থক শব্দাবলি। বিষয় প্রসঙ্গে একই উচ্চারিত এবং লিখিত শব্দের অর্থ বদলে যায়। যেমন – অঙ্ক, মাথা, কাচা ইত্যাদি শব্দ বিভিন্ন শব্দ-সংলগ্ন হয়ে বিভিন্ন অর্থ তৈরী করে। ১০. রূপকার্থ বিন্যাস

তাছাড়া উদয়নারায়ণ সিংহ অনুবাদচর্চার পদ্ধতিকে গঠন প্রয়াসে দুটি নতুন ভাগে ভাগ করেছেন – অনুকথন ও অনুসরণ। এক্ষেত্রে ‘অনুকথন’ বলতে বুঝিয়েছেন নব-ভঙ্গি, শৈলী বা নব-বক্তব্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একই পাঠের বক্তব্যকে অন্যরকম ভাবে বলা। অন্যদিকে ‘অনুসরন’ ক্ষেত্রে বুঝিয়েছেন এক ভাষা থেকে আরেক ভাষায় ‘ভাষান্তর’ বা ‘পাঠান্তর’। অনুবাদকের স্বাধীনতা অনেকাংশে খর্বিত হয় এই ‘অনুসরণ’এ। কেননা মূল পাঠ্যের প্রাথমিকতাকে মেনে নিয়ে অনুবাদককে এগোতে হয়। এধরনের কাজ বর্তমানে যন্ত্র-অনুবাদের (কম্পিউটার) মধ্যে পাই। অধ্যাপক সিংহ অনুবাদচর্চা প্রসঙ্গে আরো ৫টি পদ্ধতিগত স্তর নির্ণয় করেছেন, যথা - ১.রূপান্তরণ, ২.অনুসরণ, ৩.অনুলিখন, ৪.সংক্ষেপণ, ৫.শাস্ত্রীয় অনুবাদ। (উইকিপিডিয়া থেকে সমস্যার অংশটুকু)

উপরোক্ত সমস্যা থেকে বলতে পারি, অনুবাদ সংশোধন না করার দাবি একদম অহেতুক আবদার।

কোরআন অনুবাদের ভুল সংশোধনে প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী নির্দেশ (শিরোনাম-The Daily Ittefaq
মঙ্গলবার, ১০ জুলাই ২০১৮)। দেশের খবরই রাখেন না। রাখলে এমন পোস্ট করতেন না। অলরেডি অনুবাদ সংশোধনের কাজ চলতেছে। এই সংশোধন আপনাদের চাপে নয়। যারা এর সাথে সংশ্লিষ্ট তারা আপনাদের চিনে কিনা সন্দেহ আছে আর আপনাদের অভিযোগ তো আরো দুরের কথা।

আপনাদের কাজ সফল কতটা তা তো দেখতেই পাচ্ছি। আঠারো শতক থেকে নাস্তিকতার যাত্রাতে আজ অব্ধি ২.৩% মানুষের সমর্থন পেয়েছেন। আর তার বিপরীতে আমরা দেখি ইসলামে হাজার হাজার মানুষের ফিরে আসাকে।

আপনার দাবি কোরআন বুঝে পাঠ করলে নাকি এই বর্বর ধর্ম সবাই ত্যাগ করবে! আপনার জন্য একরাশ সমবেদনা এই জন্য যে কোরআন শুধু বুঝেই পাঠ করা হয় না, রীতিমতো গবেষণাও করা হয়, তাফসীর করা হয়। কয়জন তাফসীরকারক ইসলাম ছেড়েছে? তারা কি না বুঝে তাফসীর করেন? বিশ্বে আর কোন মতাদর্শের উপর এতো গবেষণাগার ও ইনস্টিটিউট নেই যতটা ইসলামকে নিয়ে আছে বা কোরআনকে নিয়ে আছে। যদি কোরআন বুঝে মানুষ ইসলাম ত্যাগ করতো তবে ওসব গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয় অনেক আগেই ইসলামের বিপক্ষে প্রচারণা চালাইতো। কিন্তু, তা-তো হচ্ছে না। কাজেই, স্বপ্ন দেখা ভালো তবে দুঃস্বপ্ন নয়। এতে আর কিছু হয় না শুধু জ্বালা-যন্ত্রণাই বাড়ে।


No comments

Note: Only a member of this blog may post a comment.

Powered by Blogger.