আমি কেন নাস্তিকধর্ম বিশ্বাস করি না ? part 21

আমি কেন নাস্তিকধর্ম বিশ্বাস করি না ?
========================
আমি কখনোই আল্লাহকে খোঁজার গরজ অনুভব করিনি। যখন কিছুই করার থাকত না, তখন কোনো পুরনো বই বা ভবন দেখে সময় কাটাতাম। কখনো কল্পনাও করিনি আমি মুসলমান হব। আমি খ্রিস্টানও হতে চাইনি।যেকোনো প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের প্রতিই আমার তীব্র বিতৃষ্ণা ছিল। প্রাচীন কোনো গ্রন্থ আমার জীবনযাপনের পথ-নির্দেশ করবে, তা নিয়ে ভাবিইনি।
এমনকি কেউ যদি আমাকে কয়েক কোটি ডলার দিয়েও কোনো ধর্ম গ্রহণ করতে বলত, আমি সরাসরি অস্বীকার করতাম।আমার প্রিয় লেখকদের অন্যতম ছিলেন বার্টান্ড রাসেল। তার মতে, ধর্ম হলো কুসংস্কারের চেয়ে একটু ভালো, সাধারণভাবে লোকজনের জন্য ক্ষতিকর, যদিও এর ইতিবাচক কিছু বিষয়ও আছে। তিনি বিশ্বাস করতেন, ধর্ম ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি জ্ঞানের পথ বন্ধ করে দেয়, ভীতি আর নির্ভরতা বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া আমাদের বিশ্বের যুদ্ধ, নির্যাতন আর দুর্দশার জন্য অনেকাংশে দায়ী ধর্ম।
আমার মনে হতো, ধর্ম ছাড়াই তো ভালো আছি। আমি প্রমাণ করতে চাইতাম, ধর্ম আসলে একটা জোচ্চুরি। ধর্মকে হেয় করতে আমি পরিকল্পিত কাজ করার কথা ভাবতাম। হ্যাঁ, সেই আমিই এখন মুসলমান।
আমি ঘোষণা দিয়েই ইসলাম গ্রহণ করেছি। আর সেটা না করে উপায়ও ছিল না। আমি অনুগত হয়েছি, ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছি। মজার ব্যাপার হলো, যখন ধর্মাবলম্বনকারীদের সাথে বিশেষ করে মুসলমান হিসেবে পরিচয়দানকারীদের সাথে কথা বলতাম, আমি প্রায়ই লক্ষ করতাম, তারা বিশ্বাস করার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে। তাদের ধর্মগ্রন্থে যতই সাংঘর্ষিক বিষয় থাকুক, ভুল থাকুক, তারা সবকিছু এড়িয়ে দ্বিধাহীনভাবে ধর্মকে আঁকড়ে ধরে। তারা জানে,তারা কী বিশ্বাস করে।
ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনো আল্লাহকেখুঁজকে চাইনি, সেই ইচ্ছাও আমার কখনো হয়নি। একদিন আমার এক বন্ধু ইসলামে আল্লাহর অস্তিত্ব সম্পর্কে বোঝাতে চাইল,আমি ক্ষুব্ধ হলাম। কোনো মানুষ যখন কিছু বিশ্বাস করতে চায়, তখন তার  মধ্যে  অনেক সময়ই এমন একটা বোধ সৃষ্টি হয়, যার ফলে সেটা গ্রহণ করার ব্যাপারে আগ্রহ তার মধ্যে তৈরি হয়।
ধর্মের ব্যাপারেও আমার মধ্যে তেমন একটা ধারণার সৃষ্টি হয়েছিল। আমি ধর্মকে স্রেফ একটা বাজে জিনিস হিসেবে বিশ্বাস করতে চাইতাম। এমন বিশ্বাস কিন্তু কোনো দৃঢ় প্রমাণের ভিত্তিতে হয়, এমন নয়। স্রেফ অনুমানের ওপর গড়ে ওঠে এ ধরনের বিশ্বাস। আমি যখন কোনো ধর্মীয় বই পড়তাম, তখন
সেগুলোর প্রতি আমার কোনো
পক্ষপাতিত্ব থাকত না,
তবে আমার উদ্দেশ্য থাকত তা থেকে
ভুল-ত্রুটি বের করা।
এর ফলে আমি আমার উদ্দেশ্যের প্রতি
অটল থাকতে
পারতাম।
আমার কোরআনের পেপারব্যাক
অনুবাদটি পেয়েছিলাম বিনা
মূল্যে। একদিন দেখলাম, এমবিএ’র কিছু
ছেলে কোরআন বিলি
করছে। আমি জানতে চাইলাম, এগুলো
কি ফ্রি? তারা হ্যাঁ
সূচক জবাব দিলে আমি একটা নিয়ে
রওনা দিলাম। এসব
বইয়ের প্রতি আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ
ছিল না। কেবল ফ্রি
পেয়েছিলাম বলে নিয়েছিলাম। তবে
আমার উদ্দেশ্য ছিল,
বইটা পড়ে আরো কিছু খুঁত যদি পাওয়া
যায়, তবে ধর্মটির
বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে।
আমি যে কপিটা পেয়েছিলাম,
সেটির পাতাগুলো মলিন হয়ে
গিয়েছিল, অনেক পুরনো ছিল সেটি।
কিন্তু আমি যতই পড়তে
থাকলাম, ততই বশীভূত হতে লাগলাম।
আমি আগে যেসব
ধর্মীয় গ্রন্থ পড়েছি, তা থেকে এটা
সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমি
অর্থ সহজেই বুঝতে পারছিলাম। সবকিছুই
ছিল স্পষ্ট।
আমার মনে পড়ল, আমার এক বন্ধু যখন
আমাকে ইসলামে
আল্লাহ কেমন তা বোঝাচ্ছিল, আমি
রেগে গিয়েছিলাম,
কিন্তু এবার পাতার পর পাতা উল্টে
অনেক জায়গায় দেখতে
পেলাম তাতে স্পষ্টভাবে বলা
হয়েছে, ‘অবশ্যই আল্লাহ
ক্ষমাশীল, দয়াময়।’
মনে হলো, পবিত্র কোরআন সরাসরি
আমার সাথে কথা
বলছে, আমার জীবনের সাথে জড়িয়ে
আছে। এটা একটা
‘পুরনো গ্রন্থ’ কিন্তু পুরোপুরি
প্রাসঙ্গিক। এর
কাব্যিকতা, কল্পনাশক্তি এবং
যেভাবে বার্তা পৌঁছে দেয়,
তা আমাকে অন্তর থেকে নাড়া দিল।
এর অভূতপূর্ব
সৌন্দর্য আমি আগে কখনো টের পাইনি।
মরুভূমির দমকা
হাওয়া যেন সবকিছু উল্টে দিল। মনে
হলো আমি যেন কিছু
একটার জন্য দৌড়াচ্ছি।
কোরআন আমার বোধশক্তিতে
প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করল।
নিদের্শনাবলী দেখে তারপর আমাকে
চিন্তা করতে, ভাবতে,
বিবেচনা করতে বলল। এটা অন্ধ বিশ্বাস
প্রত্যাখ্যান করে,
কিন্তু যুক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিকে উৎসাহিত
করে। কোরআন
মানুষকে কল্যাণের দিকে আহ্বান করে,
স্রষ্টাকে স্বীকার করে
নিতে বলে, সেইসাথে আধুনিকতা,
মানবিকতা, সহমর্মিতার
কথা বলে।
অল্প সময়ের মধ্যেই আমার জীবনকে
বদলে দেয়ার আগ্রহ
তীব্র হয়। আমি ইসলাম সম্পর্কে অন্যান্য
বই পড়তে শুরু
করলাম। আমি দেখতে পেলাম,
কোরআনে অনেক
ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে, অনেক
হাদিসেও তেমনটা আছে। আমি
দেখলাম, পবিত্র কোরআনে অনেক
স্থানে নবী
মোহাম্মদকে সংশোধন করা হয়েছে।
আমার কাছে অদ্ভূত
লাগল। এতেই বোঝা যায়, তিনি
গ্রন্থটির লেখক নন।
আমি নতুন পথে হাঁটতে শুরু করলাম, পবিত্র
কোরআনের
জ্যোতি আর নবী মোহাম্মদের
দেখানো রাস্তায়। এই
লোকটির মধ্যে মিথ্যাবাদির কোনো
আলামত দেখা যায়নি।
তিনি সারা রাত নামাজ পড়তেন,
তাঁকে নির্যাতনকারীদের
ক্ষমা করে দিতে বলতেন, দয়া
প্রদর্শনকে উৎসাহিত
করতেন। সম্পদ আর ক্ষমতা তিনি
প্রত্যাখান করতেন,
কেবল আল্লাহর দিকেই নিবেদনের
বিশুদ্ধ বার্তাই প্রচার
করতেন। আর তা করতে গিয়ে নির্মম
নির্যাতন সহ্য
করেছেন।
সব কিছুই সরল, সহজেই বোঝা যায়।
আমাদের সৃষ্টি করা
হয়েছে। এই মহাবিশ্বের জটিল আর
বৈচিত্র্যময় কোনো
কিছুই ঘটনাক্রমে ঘটেনি। তা-ই
সাধারণ বিষয় হলো, সেই
একজন- যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন,
তাকে অনুসরণ করতে
হবে।
আমার অ্যাপার্টমেন্টের কৃত্রিম
লাইটিং এবং বাতাসের
ওজন নিয়ে ভাবতে ভাবতে পবিত্র
কোরআনের এই আয়াতটি
পড়লাম :
কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে,
আকাশমণ্ডলীর ও পৃথিবীর
মুখ বন্ধ ছিল, এরপর আমি উভয়কে খুলে
দিলাম এবং
প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে
সৃষ্টি করলাম। এরপরও
কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না?
(কোরআন ২১:৩০)
এই আয়াত পড়ে আমার মাথা যেন দুই
ভাগ হয়ে গেল। এটাই
তো বিগ ব্যাং তত্ত্ব (এটা স্রেফ একটা
তত্ত্ব নয়)... সব
জীবন্ত সত্তাই পানি থেকে সৃষ্টি
হয়েছে, বিজ্ঞানীরা মাত্র
এটা আবিষ্কার করেছে। এটা ছিল
অবাক করা বিষয়। এটা ছিল
আমার জীবনের সবচেয়ে উত্তেজনাকর
এবং সবচেয়ে ভীতিকর
সময়।
আমি বইয়ের পর বই অধ্যায়ন করতে
লাগলাম, তথ্যগুলো
যাচাই করতে থাকলাম। এক রাতে আমি
প্র্যাট ইনস্টিটিউট
লাইব্রেরিতে বসে খোলা বইগুলোর
দিকে তাকিয়ে ছিলাম।
আমার মুখটা হয়তো কিছুটা ফাঁক হয়ে
গিয়েছিল। কী ঘটতে
যাচ্ছে, আমি বুঝতে পারছিলাম না।
তবে এটুকু অনুভব
করলাম, আমার সামনে যা রয়েছে, তা
হলো সত্য। আগে
আমি যেটাকে সত্য ভাবতাম, সেটার
আর কোনা অস্তিত্ব
ছিল না।
এখন কীআমার সামনে দুটি বিকল্প ছিল।
একটা আসলে
কোনো বিকল্পই ছিল না। আমি যা
আবিষ্কার করেছিলাম,
তা অস্বীকার করতে পারছিলাম না,
অগ্রাহ্য করতে
পারছিলাম না। আগের মতোই চলব,
এমনটাও ভাবছিলাম
সামান্য সময়ের জন্য। সেটাও সম্ভব ছিল
না। আমার কাছে
পথ খোলা ছিল কেবল একটাই।
ইসলাম গ্রহণ করা ছাড়া আর কোনো পথ
খোলা ছিল না
আমার সামনে। অন্য কিছু করা মানেই
ছিল সত্যকে
অস্বীকার করা।
(লেখিকা ড্যানিয়েলে লোডুকা
ইউরোপিয়ান বংশোদ্ভূত
আমেরিকান। ক্যাথলিক পরিবারে
জন্মগ্রহণ করেছিলেন
তিনি। ২০০২ সালে তিনি ইসলাম গ্রহণ
করেন। পেশায় তিনি
শিল্পী। ব্যক্তিজীবনে পাঁচ সন্তানের
মা। ইসলাম নিয়ে
নিয়মিত লেখালেখি করেন।)
অনুবাদ : আসিফ হাসান, সূত্র- নয়া দিগন্ত
===============================================
বিখ্যাত খৃষ্টান ধর্ম প্রচারক সুই ওয়াটসন পোপ-এর ইসলাম গ্রহন করার বাস্তব গল্প
=========================
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্মগ্রহণকারী অধ্যাপক খাদিজা ওয়াটসনের পূর্ব নাম ছিল সুই ওয়াটসন। তার মতে তিনি ছিলেন গোড়া খ্রিস্টান মৌলবাদী।

তিনি ছিলেন ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক। ধর্মতত্ত্বে তিনি বিএ এবং এমএ পাস করেছেন। ফিলিপাইনের খ্রিস্টান ধর্ম প্রচারে তিনি সাত বছর কাটিয়েছেন। তবে সেসব বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা। এখন তিনি মুসলিম এবং জেদ্দার আল-হামরা ইসলামিক এডুকেশন ফাউন্ডেশনের শিক্ষক।
অধ্যাপক খাদিজার ইসলাম গ্রহণের ঘটনা তার নিজের ভাষায় এখানে তুলে ধরা হল।

খাদিজা বলেন, ‘যখন আমি ইসলামে দাখিল হই তখন স্বাভাবিকভাবেই আমার সহকর্মী, সহপাঠী, বন্ধুবান্ধব এবং সহ-ধর্মপ্রচারকারীরা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল আমার কি হয়েছে। আমি তাদেরকে দোষ দেই না কারণ আমি একেবারেই ধর্ম পরিবর্তন করার মত কেউ ছিলাম না।

আমি একজন অধ্যাপক, ধর্মপ্রচারকারী মিশনারি পণ্ডিত ছিলাম। যদি কাউকে গোড়া মৌলবাদি বলা হয় তাহলে আমি তাই ছিলাম।

আমার মাস্টার ডিগ্রি শেষ হওয়ার ৫ মাস আগে এক মহিলার সাথে আমার সাক্ষাত হয় যে সৌদি আরবে কাজ করতে গিয়েছিল এবং সেখানে ইসলাম গ্রহণ করেন। আমি তাকে ইসলামে মহিলাদের সাথে কিরকম আচরণ করা হয় সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তার জবাব শুনে আমি বিস্মিত হয়েছিলাম। এবং এ ধরণের উত্তর আমি প্রত্যাশাও করিনি কখনো।

তারপর প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে স্রষ্টা এবং নবী মুহাম্মদ সা. সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। সে আমাকে বললো, আমি তোমাকে একটি ইসলামিক সেন্টারে নিয়ে যাব সেখানে তুমি আরো ভালো করে তোমার উত্তরগুলো জানতে পারবে।

তার কথামত আমি সেই ইসলামিক সেন্টারে গেলাম। সেখানে তাদের ব্যবহার আমাকে খানিকটা অবাক করলো। একেবারেই সরাসরি, সামনাসামনি উত্তর। এতে কোনো রকম হুমকি, হয়রানি, মানসিক চাপ তৈরি অথবা আভ্যন্তরীন প্রভাব বিস্তারের বিষয় ছিল না। এটা ছিল অবিশ্বাস্য ব্যাপার। তারা আমাকে কিছু বই দিল এবং বললো আমার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে তাদের অফিসেও তাদেরকে পাওয়া যাবে।

ওইদিন রাতে আমি সেসব বইগুলো পড়ে ফেলি যেগুলো তারা আমাকে দিয়েছিল। প্রথমবারের মত আমি কোনো মুসলিমের লেখা বই পড়লাম। এর আগে আমরা ইসলাম সম্পর্কে যেসব বই পড়েছি তা ছিল খ্রিস্টান লেখকদের লেখা। পরেরদিন আমি আবার তাদের অফিসে যাই এবং ৩ ঘণ্টা যাবত তাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করি। এইভাবে প্রায় এক সপ্তাহ পার করি। এর মধ্যে আমি ১২টি বই পড়ি এবং বুঝতে পারি কেন মুসলিমদের জন্য খ্রিস্টানধর্মে দীক্ষিত হওয়া সবচেয়ে কঠিন বিষয়। কারণ তাদের জন্য এখানে কিছুই নেই! ইসলামে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক, পাপের জন্য ক্ষমা এবং পরকালীন জীবনের ওয়াদা এবং মুক্তির বিষয় রয়েছে।

মজার ব্যাপার হলো প্রথম ৩০০ বছর চার্চের পুরোহিতরা শিক্ষা দিত যে যিশু হচ্ছেন (ঈসা নবী) স্রষ্টার প্রেরিত রাসুল এবং শিক্ষক। তারপর সম্রাট কন্সটান্টেইন এসে বললেন যিশু হচ্ছেন স্রস্টার তিন রূপের একজন।

কন্সটান্টেইন ব্যবিলনের সময়কার পৌত্তলিকদের পদ্ধতির সাথে সবাইকে পরিচিত করালেন। তিনি বলেন, মহাশূন্যের ভিতরকার মূল বিষয়গুলোর ব্যাপারে আমাকে জানানো হয়নি তবে স্রস্টার ইচ্ছায় আমরা আরেকটি সময় পাব।

আমি একটি বিষয় ইঙ্গিত করছি তাহলো ‘ট্রিনিটি’ বা ত্রিত্ববাদ কথাটি বাইবেলের কোনো অনুবাদেই পাওয়া যায়নি, না রয়েছে এর আদি ভাষা হিব্রু অথবা গ্রিকেও।’

আমার অন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি ছিল নবী মুহাম্মদ সা.কে নিয়ে। আমি দেখলাম মুসলিমরা তার ইবাদত করে না যেমনটা খ্রিস্টানরা ঈসার ইবাদত করে থাকে। সে কোনো মাধ্যম নয় এবং তার ইবাদত করাও নিষিদ্ধ। আমরা তার জন্য রহমত কামনা করি যেমনটা ইব্রাহিমের জন্য করি। সে একজন সর্বশেষ নবী এবং বার্তাবাহক। আরো বিষয় হলো ১৪০০ বছর পরেও তার পরে আর কোনো নবী আসেনি। তার বাণী সবার জন্যই, এটা ঈসার বাণীর বিপরীত নয় যাকে ইহুদের প্রতি পাঠানো হয়েছিল। ‘শোনো ইহুদিরা, এ বাণী স্রষ্টার বাণী। স্রষ্টা একজনই এবং তোমাদের আর কোনো স্রষ্টা নেই আমি ছাড়া।(মার্ক-১২:২৯) ’

খ্রিস্টান জীবনে প্রার্থনা অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল আমার জন্য এবং মুসলিমরা কি প্রার্থনা করে এটা জানার আগ্রহও ছিল অনেক। একজন খ্রিস্টান হিসেবে মুসলিমদের বিশ্বাসকে আমরা উপেক্ষা করি। আমরা ভাবতাম এবং বলাবলি করতাম যে মুসলিমরা মক্কার কাবার পূজা করে। আমি আবারো বিস্মিত হলাম একথা জেনে যে তারা স্রষ্টার নির্দেশিত পদ্ধতিতে এটা করে। মুনাজাত বা প্রার্থনার কথাগুলোতে একজনের জন্য উচু প্রশংসা করা হয়। প্রার্থনা করার পুর্বে পরিচ্ছন্নতাও আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় হয়ে থাকে।

ঐ সপ্তাহ শেষে আমি একটা ধারণা পেলাম তা হল ইসলামই সঠিক পথ। তবে আমি তখনই তা গ্রহণ করিনি কারণ আমি এটাকে মন থেকে গ্রহণ করতে পারছিলাম না। আমি প্রতিনিয়ত প্রার্থনা করতে থাকলাম এবং বাইবেল পড়তে থাকলাম সাথে সাথে ইসলামিক সেন্টারেও যাতায়াত অব্যাহত রাখলাম। আমি খুব আন্তরিকভাবে চাইছিলাম যেন স্রষ্টা আমাকে সঠিক পথ দেখান। ধর্ম পরিবর্তন করা কোনো সহজ কাজ নয়। কোনোভাবেই আমি আমার মুক্তির রাস্তা বন্ধ করতে চাচ্ছিলাম না যদি তা প্রকৃত মুক্তির রাস্তা হয়।

আমি প্রতিনিয়ত বিস্মিত হচ্ছিলাম এটা জেনে যে আমি কি শিখেছিলাম। কারণ আমি তাই শিখেছিলাম যা ইসলাম বিশ্বাস করে না। মাস্টার্সে পড়ার সময় আমি একজন অধ্যাপককে সম্মান করতাম যার ইসলাম সম্পর্কে বেশ কিছু লেখা ছিল, কিন্তু খ্রিষ্টবাদ বিষয়েও তার শিক্ষা পদ্ধতিতে ব্যাপক ভুল বুঝাবুঝির বিষয় ছিল। সে এবং তার মত অন্যান্য খ্রিষ্টানরা সচেতন তবে সচেতনভাবেই তারা ভুলের মধ্যে আছেন।

দুই মাস পর আমি আবার প্রার্থনা করলাম স্রষ্টার নির্দেশের জন্য। আমি অনুভব করলাম আমার মধ্যে কিছু একটা পড়লো। আমি বসে পড়লাম এবং প্রথমবারের মত আমি স্রষ্টার নাম উল্লেখ করলাম। এবং বললাম, হে প্রভু, আমি বিশ্বাস করি তুমি এক এবং একমাত্র আসল স্রষ্টা। তখন আমার দেহের মাঝে এক শান্তির পরশ বয়ে গেল। তারপর থেকে গত ৪ বছর ধরে আমি ইসলামের দীক্ষা নিতে পিছপা হইনি। আমার এই সিদ্ধান্ত যাচাই ছাড়া আসেনি।

আমি যে দুটো কলেজে বাইবেল পড়াতাম সেখান থেকে একই সময়ে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। আমার সাবেক সহপাঠী, অধ্যাপক এবং সহকর্মীরা আমাকে একঘরে করে ফেলল, শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা আমাকে অসম্মান করলো, আমার সন্তান আমাকে ভুল বুঝলো এবং সরকার আমাকে সন্দেহ করলো। ঐশ্বরিক এই বিশ্বাস ছাড়া এসব শয়তানি শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। মুসলিম হতে পারায় আমি স্রষ্টার কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো এবং মুসলিম হয়েই যেন বাচতে পারি এবং মৃত্যুবরণ করতে পারি।

‘নিশ্চই আমার ইবাদত, আমার ত্যাগ, আমার জীবন এবং মরণ বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তার জন্যই। তার কোনো অংশীদার নেই। বলুন, আমি আদেশ প্রাপ্ত এবং আমিই প্রথম আনুগত্যশীল।’ (সূরা আন-আ’মঃ ১৬২-১৬৩)’

-রেফারেন্সঃ
http://www.arabnews.com/islam-perspective/news/910261

===============================================
♠প্রশান্তি খুঁজে পেলাম ইসলামেই♠
♦মার্কিন নও মুসলিম ববি ইভান্স ইসলাম গ্রহনের ঘটনা♦
♥১১ই সেপ্টেম্বরের ( টুইন টাওয়ার ধ্বংস) ঘটনার প্রভাবে মুসলমান হন মার্কিন নারী ববি ইভান্স♥
“যারা মনোযোগ দিয়ে নানা বক্তব্য বা দৃষ্টিভঙ্গি শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান।”(সুরা জুমার-১৭)
পবিত্র কুরআনের এই আহ্বান প্রমাণ করে যে ইসলাম মানুষকে যুক্তি, বুদ্ধিবৃত্তি ও বিবেকের অনুসরণ করতে বলে। জোর করে কাউকে মুসলমান বানানো ইসলামের নীতি নয়। মার্কিন নও-মুসলিম খাদিজা ইভান্সও ব্যাপক গবেষণার পর স্বেচ্ছায় ও সজ্ঞানে ইসলামকে শ্রেষ্ঠ ধর্ম হিসেবে নিজের জন্য বেছে নিয়েছেন।
♦♦সাবেক ববি ইভান্স নিজের জন্য রাসূল (সা.)এর স্ত্রী হযরত খাদিজা (সা.)এর নাম বেছে নিয়েছেন। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন স্রস্টা ও সত্য সম্পর্কে কৌতুহলী। মিসেস ববি ইভান্সের বাবা মা ছিলেন খ্রিস্টান। শৈশবে ৭ বা ৮ বছর বয়সে স্রস্টার উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেছিলেন ইভান্স, যদিও খোদার অস্তিত্ব সম্পর্কে তিনি সে সময় নিশ্চিত ছিলেন না। প্রায় দশ বছর বয়সে আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখে ঘরের ফায়ার-প্লেসের কোনায় লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি। তার আশা ছিল এই চিঠির জবাব আসবে। কিন্তু কোনো জবাব আসেনি। তাই স্রস্টার অস্তিত্ব ও গির্জার শিক্ষা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করতেন। বাবা-মা ধার্মিক না হওয়া সত্ত্বেও ইভান্স ও তার দুই ভাইকে মাঝে মধ্যে বাবা-মায়ের নির্দেশে গির্জায় যেতে হত। এভাবে কেটে গেছে ইভান্সের জীবনের ১৩টি বসন্ত। তিনি বলেছেন:
সে বছর আমরা বাসা বদল করে একটি ছোট্ট শহরে গিয়েছিলাম। এই বাসার কাছে কোনো গির্জা ছিল না। আর বাবা-মাওসকালের ঘুমও ছাড়তে পারছিলেন না। ফলে আমাদের খ্রিস্ট ধর্ম শিক্ষা থেমে যায় এখানেই। কিন্তু দুই বছর পর আমার মা হঠাত করে করে আবারও গির্জায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি মাঝে মধ্যে বাবাকেও সেখানে নিয়ে যেতেন। আর আমিও যেতাম সেখানে মাঝে মধ্যে। সে সময় থেকেই আমার মধ্যে শুরু হয়েছিল আল্লাহকে খুঁজে পাওয়ার অনুভূতি। এই অনুসন্ধান অব্যাহত থাকে ৪২ বছর বয়স পর্যন্ত।
মার্কিন নও-মুসলিম খাদিজা ইভান্স ক্যাথলিক গ্রুপসহ খ্রিস্ট ধর্মের নানা গ্রুপের সঙ্গে মিশেছেন। কিন্তু কোথাও পাননি কাঙ্ক্ষিত প্রশান্তি এবং জীবন, জগত ও ধর্ম সম্পর্কিত নানা জরুরি প্রশ্নের উত্তর। ত্রিশ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেন এমন একজন খ্রিস্টানকে যিনি ক্যাথলিক
ছিলেন না। এভাবে গির্জাও যাওয়া আবারও বন্ধ করে দেন। কিন্তু তার মনের মধ্যে সত্যকে পাওয়ার সে আকুতি কখনও নিভে যায় নি, যে সত্যের আকর্ষণ পার্থিব বিষয়ের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। মৃত্যুর পরের জীবন বা পরকালীন জীবনে উপনীত হওয়ার পথ- এসব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন জাগত সাবেক ববি ইভান্সের জীবনে।
এ অবস্থায় আরো একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের শরণাপন্ন হয়েছিলেন মিসেস ইভান্স। কিন্তু কয়েক মাসে ধরে তাদের কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার পর এই সম্প্রদায়ের ব্যাপারেও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন ইভান্স। এভাবে কোনো সম্প্রদায়ের কাছেই নতুন কোনো বক্তব্য খুঁজে পাননি তিনি। ইভান্সের মতে প্রকৃত বিশ্বাস বা ঈমান ও এইসব সম্প্রদায়ের শিক্ষার মধ্যে ব্যাপক ব্যবধান বা দূরত্ব ছিল। আর এইসব শিক্ষাকে কোনো যুক্তি ছাড়াই মেনে নিতে বলা হয়। কিন্তু ইভান্স তার বিশ্বাস বা দৃষ্টিভঙ্গিগুলোকে কোনো একটি বইয়ের কিছু অযৌক্তিক বাক্যের ভিত্তিতে গড়ে তুলতে চাননি।
বাইবেল অধ্যয়নের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মার্কিন নও-মুসলিম খাদিজা ইভান্স বলেছেন: “আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ খুঁজে পাব, এই আশা নিয়ে বাইবেল পড়ছিলাম। কিন্তু এর মধ্যে কিছু কথা ছিল আমার বুদ্ধিবৃত্তির উপলব্ধির সাধ্যাতীত এবং এ বইয়ের অনেক অদ্ভুত কথারই কোনো ব্যাখ্যা দেয়া যায় না। তাই কিছু অধ্যায় পড়ার পর তা পড়া ছেড়ে দেই। এভাবে আল্লাহকে জানার প্রবল আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে গবেষণা করা বন্ধ করে দেই এবং ধর্ম সম্পর্কে পুরোপুরি উদাসীন বা নির্লিপ্ত হয়ে পড়ি।”
২০০১ সালের ১১ ই সেপ্টেম্বরের ঘটনা বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম প্রধান স্মরণীয় ও রহস্যময় সন্ত্রাসী ঘটনা। মার্কিন সরকার এই হামলার ঘটনাকে মুসলমানদের কাজ বলে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। ওই ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানরা অত্যন্ত কঠিন চাপের মুখে রয়েছে। সেই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ইসলাম-আতঙ্কও জোরদার হয়েছে। মুসলমানদের ওপর বেড়েছে নির্যাতন ও হয়রানি।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন আসলে ১১ ই সেপ্টেম্বরের হামলার ঘটনাগুলো ঘটানো হয়েছিল বিশ্বব্যাপী ইসলাম-বিদ্বেষী ততপরতা ও ইসলাম-আতঙ্ক জোরদারেরজন্য। এ ঘটনার পর থেকে গৃহীত মার্কিন ও ইসরাইলি পদক্ষেপগুলোই এই ধারণার অত্যন্ত জোরালো ভিত্তি। কিন্তু তাদের এ পদক্ষেপ বরং বুমেরাং হয়েছে ও হচ্ছে। ১১ই সেপ্টেম্বরের রহস্যময় ঘটনার পর বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলামের প্রতি মানুষের আগ্রহ জোরদার হয়েছে। ফলে অনেকেই ইসলাম সম্পর্কে জানতে গিয়ে মুসলমান হচ্ছেন। খাদিজা ইভান্সও সেই সৌভাগ্যবান নও-মুসলিমদের মধ্যে একজন। অন্য কথায় ১১ই সেপ্টেম্বরের ঘটনা ইভান্সের জন্য সৌভাগ্যের পথ খুলে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন:
২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরের সকাল বেলায় কম্পিউটারের সামনে বসেছিলাম। তখনও নয়টা বাজেনি। আমার ডানদিকে থাকা টেলিভিশনটিও খোলা ছিল। হঠাত শুনলাম বিশেষ জরুরি খবর, একটি বিমান বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের টুইন টাওয়ারে আঘাত হেনেছে। তখনও খ্রিস্টান ছিলাম। কিন্তু এই ঘটনাগুলো আমাকে পুরোপুরি হ-য-ব-র-ল অবস্থায় ফেলে দেয়। গণমাধ্যমগুলো ইসলামকেই এইসব সন্ত্রাসী হামলার কারণ ও হোতা বলে প্রচার করছিল। আমার কাছে এটা খুবই অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল যে একটা ধর্ম কিভাবে সহিংসতার বিস্তারকারী হতে পারে? এটা আমার বুদ্ধিমত্তা বা বিবেকের সঙ্গে মিল খাচ্ছিল না। তাই আমি নিজেই এ ব্যাপারে তদন্তের ও গবেষণার সিদ্ধান্ত নিলাম। ইসলাম বিষয়ক ওয়েব সাইটগুলো ভিজিট করতে লাগলাম এবং মুসলিম মহিলাদের ওয়েব-ভিত্তিক বিশেষ কিছু গ্রুপের সদস্য হলাম। আমার নানা প্রশ্ন তুলে ধরলাম ই-মেইলে। যেসব জবাব পেলাম সেগুলো নিয়ে গবেষণা করে দেখলাম উত্তরগুলো পুরোপুরি সঠিক।
নও-মুসলিম খাদিজা ইভান্সও আরও বলেন:
আমি সাধারণত কোনো বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সে বিষয়ে কোনো মত গ্রহণ করি না। মানুষের কথা শুনেই কোনো কিছু বিশ্বাস করি না আমি। বিবেক-বুদ্ধি খাটিয়ে তা যাচাই করতে থাকি। গবেষণা করে দেখলাম যে মুসলমাদের খোদা তথা আল্লাহ খ্রিস্টান ও ইহুদিদেরই খোদা একই এবং তিনিই হযরত মুসা (আ.) ও ইব্রাহিম (আ.)এর খোদা। এটাও বুঝলাম যে ইসলাম অমুসলমানদের প্রতি ঘৃণা ছড়ায় না। এ ধরনের কাজকে সহ্যও করে না এবং নিরপরাধ মানুষ হত্যা করাকেও সহজেই মেনে নেয় না। আমার এ গবেষণায় ইসলাম সম্পর্কে এমন চিত্র পেলাম যে গণমাধ্যমে তার কোনো ইশারাও দেখা যায় না এবং এ সিদ্ধান্তে পৌঁছলাম যে ইসলামই সত্য ধর্ম। এ ব্যাপারে অনেক দলিল প্রমাণও পেলাম। মজার ব্যাপার হল, এইসব দলিল-প্রমাণই পবিত্র কুরআনেই পেলাম। এ মহাগ্রন্থে যেসব বৈজ্ঞানিক সত্য তুলে ধরা হয়েছে, সেগুলো বিজ্ঞানীরা কেবল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আবিষ্কার করেছেন। কেবল মহান আল্লাহই ১৪০০ বছর আগে এইসব বৈজ্ঞানিক সত্য বা তথ্যের খবর দিতে সক্ষম।
নও-মুসলিম খাদিজা ইভান্স নানা যুক্তি প্রমাণ ও আন্তরিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে মুসলমান হন। তার মতে, ইসলাম গ্রহণই তার জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা। কলেমায়ে শাহাদাতাইন পাঠের স্মরণীয় দিনটিতেই তিনি স্বীকার করেন যে ইসলাম মুক্তির ধর্ম ও বেহেশত লাভের পথ। ইভান্স এর মাধ্যমে ইসলাম অনুযায়ী কাজ করারও সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেছেন, মুসলমান হওয়ার পর আমার জীবন এখন লক্ষ্য ও অর্থপূর্ণ। আমি এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, পৃথিবীর জীবন মাত্র কয়েক দিনের। পরকালের পুরস্কার দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী আনন্দের চেয়ে অনেক গুণ বেশি ও ব্যাপক। আমি এখন মৃত্যু পরবর্তী জীবন সম্পর্কে প্রশান্তি অনুভব করছি যে অনুভূতি আমার অতীতে কখনও ছিল না। এখন আমি বুঝতে পেরেছি যে আগে আমি যেসব সমস্যাকে খুব বড় মনে করতাম সেগুলো ছিল আমাকে ওপরে তোলার মঞ্চ মাত্র। আমার যা ছিল না ও বর্তমানে যা আছে তার জন্য আমি আল্লাহর কাছে শোকর করছি।#
রেডিও তেহরান/আএস/৩২ “ নও-মুসলিমদের আত্মকথা-৩২
”সোমবার, 28 জানুয়ারী 2013 15:07
===================================================
 মার্কিন নওমুসলিম আমিনা জাহিরাহ’র ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কাহিনী♣
17/06/2016 09:32:00
সেলিনা জাহান প্রিয়া, ব্যুরো চিফ, বাংলাদেশ

#বিশিষ্ট লেখক, কবি, শিল্পী ও ডিজাইনার আমিনা জাহিরাহ বা সাবেক ব্রান্ডি চেজ জন্ম গ্রহণ করেছিলেন আমেরিকার অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের তুসা’ন শহরে। কিন্তু তিনি এশিয়ার সুসান বা লিলি ফুল খুব পছন্দ করেন।

সুক্ষ্মদর্শী ও কবিসুলভ মনের অধিকারী এই নারী বলেছেন, “আমি একজন সৃষ্টিশীল ও আদর্শবাদী নারী যে বেহেশতের পথ পেতে চায়। আমার মনে হয় আমি জন্ম নিয়েছি দ্বিতীয় বার, আর এখন অপ্রস্ফুটিত ফুলের কুড়ির মতই ফুটে ওঠার শ্রেষ্ঠ মুহূর্তের অপেক্ষায় আছি যে, কখন পল্লবিত হব এবং আমার সুন্দর রঙ্গগুলো মেলে ধরব দুনিয়ায়।”

পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমের নানা অপপ্রচারের কারণে পাশ্চাত্যের অনেকেই মনে করেন মুসলিম নারী, স্ত্রী ও কন্যারা বড়ই অসহায় এবং দাসীর মতই তাদের জীবন; তাদের অধিকারগুলো পদদলিত হয় মুসলিম পুরুষদের হাতে, ইত্যাদি। মুসলিম বিশ্বের নারী সমাজ সম্পর্কে পাশ্চাত্যের এ ধরনের অপপ্রচার সত্ত্বেও ইসলামের প্রতি পশ্চিমা নারী সমাজের আকর্ষণ দিনকে দিন বাড়ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হিজাবধারী মুসলিম মহিলারা পরিবার ও সমাজ উভয় ক্ষেত্রেই সক্রিয় ভূমিকা রেখে এ ভুল ধারণা বা প্রচারণার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছেন যে তারা বন্দী বা অসহায় হয়ে আছেন।

নওমুসলিম মহিলারা বলছেন, ইসলাম তাদেরকে বন্দী বা ঘরকুনো করে রাখেনি, বরং হিজাব পরার ফলে তারা নৈতিক অবক্ষয় কবলিত পাশ্চাত্যে অশালীনতা ও লজ্জাহীনতার স্রোতের মধ্যেও লজ্জাশীলতা বজায় রাখার ও শালীন পোশাকে সজ্জিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

মার্কিন নওমুসলিম আমিনা জাহিরাহ তার ইসলাম গ্রহণের কাহিনী তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, “আমি খ্রিস্টান হিসেবে জন্ম নিয়েছিলাম। কিন্তু মাত্র ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত এই পরিচয় বজায় রেখেছিলাম। কিন্তু এ ধর্মের মধ্যে আমি আমার চাহিদাগুলোর জবাব দেখতে পাইনি, তাই এ ধর্ম পরিত্যাগ করে নাস্তিক হয়ে পড়ি। কিন্তু কিছুকাল পর জীবনের কাজে আসবে এমন একটি ধর্ম খোঁজা শুরু করি। আলহামদুল্লিাহ, আল্লাহ আমাকে যৌবনেই ইসলাম ধর্ম উপহার দিয়েছেন।”

ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর সাবেক ব্রান্ডি চেজ বা বর্তমান আমিনা জাহিরাহ’র শিল্পচর্চা ও লেখালেখির ধারায়ও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। তিনি বলেছেন, “আমার আঁকা কার্টুনগুলো মার্কিন সমাজের রীতি অনুযায়ী ছিল স্বাভাবিক, কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। এখন কার্টুন ও গল্প রচনার বিষয়বস্তু এবং চরিত্রের ক্ষেত্রে আমি আগে দেখি যে সেগুলো ভালো না মন্দ। আগে আমার কবিতায় ধর্ম ও খোদার প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ বা কটাক্ষ থাকত। আর এখন লেখালেখিতে মহান আল্লাহর সৌন্দর্য এবং অন্যদের কাছে ইসলামের আনন্দ ও প্রশান্তি তুলে ধরা আমার খুবই প্রিয় কাজ।”

আমিনা জাহিরাহ আরো বলেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আমার কোনো কোনো বইকে ইসলাম ধর্ম বোঝা ও এর নানা দিক সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে প্রেরণাদায়ক বলে উল্লেখ করেছেন অনেক অমুসলমান। আমার পরিবার মুসলমান না হওয়া সত্ত্বেও আমার লেখা গল্প ও কবিতা পড়ে এবং আমার শিল্পকর্মগুলো দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। তারা বলছেন, মুসলমান না হওয়া সত্ত্বেও তারা আমার শিল্পকর্মের বার্তা উপলব্ধি করতে পেরেছেন।”

ইসলাম মুসলমানদের মধ্যে গঠনমূলক সহাবস্থান ও সমচিন্তাকে গুরুত্ব দেয়। ইসলাম সৃষ্টির সেবাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের পন্থা বলে মনে করে ও ইবাদতের মর্যাদা দেয়। যে মানুষ আল্লাহকে জানা ও চেনার ক্ষেত্রে যত বেশি অগ্রসর হয় সে তত বেশি মানব সেবায় নিবেদিত হয়। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, “আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও তাঁর বান্দাদের সেবায় নিয়োজিত হওয়া এমন দুটি পুণ্য গুণ যে এর চেয়ে বড় কিছু নেই।”

পরকাল ও ইসলামে বিশ্বাসী আমিনা জাহিরাহও অন্যদের সহায়তা ও মুসলমানদের সাহায্য করাকে জীবনের অন্যতম প্রধান মূল নীতি বলে মনে করেন। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “দুনিয়াতে আমরা যা দিয়েছি ও নিয়েছি সে জন্য অবশেষে কিয়ামত বা বিচার দিবসে জবাবদিহি করতে হবে। কোনো একটি দেশের সীমান্ত ও নির্ভরতার বিষয়গুলো প্রতিদিনই বদলে যেতে পারে, কিন্তু ইসলামের মূল নীতিমালা সব সময়ই অপরিবর্তনীয়। ইসলাম আমাদের শেখায় প্রথমে মুসলিম ভাইবোনদের সাহায্য কর। এরপর সাহায্যের হাত অন্যদের দিকে বাড়িয়ে দিতে হবে। তাই আমি মনে করি মুসলমানদের উচিত আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ হওয়া।”

মার্কিন নওমুসলিম আমিনা জাহিরাহ নানা সমস্যা ও চাপ সত্ত্বেও ইসলামকে বেছে নিয়েছেন ধর্ম হিসেবে। ইসলামের যে আলো ও সৌন্দর্য তিনি পেয়েছেন তা তিনি ছড়িয়ে দিতে চান অন্যদের মাঝেও। আর অন্য অনেক মার্কিন মুসলমানের মত এ কাজে সক্রিয় রয়েছেন জাহিরাহ। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, মার্কিন মুসলমানরা সাধারণত দয়ার্দ্র এবং তাদের বেশিরভাগই সত্যবাদী ও সৎকর্মশীল। তাই তারা অমুসলমানদের কাছে ইসলাম প্রচারের সময় এ ব্যাপারে যত্নবান যে তারা যেন ভয় না পান বা তাদের মধ্যে বিকর্ষণ সৃষ্টি না হয়। যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের সমাজ অনেক বড়। তারা তাদের মূল্যবোধকে অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভালবাসেন এবং পূর্ণাঙ্গ ও খাঁটি ইসলামকেই তুলে ধরতে চান। ফলে বেশিরভাগ সময়ই অমুসলমানরা তাদের দাওয়াত গ্রহণ করেন।

ইসলাম নারীকে যে অধিকার দিয়েছে তা নওমুসলিমদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। অন্য ধর্মের তুলনায় নারীর প্রতি ইসলামের বিশেষ সম্মান ও অধিকারকে তারা নিজেরাই বেশি অনুভব করেন নওমুসলিম হিসেবে। মার্কিন নওমুসলিম আমিনা জাহিরাহ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “নওমুসলিম মহিলারা তাদের পোশাক-আশাকে, চালচলনে বা ব্যবহারে এটা ফুটিয়ে তোলেন যে ইসলাম তাদের কাছে কতই না প্রিয়! যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ শহরের মানুষই ইসলাম সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণায় প্রভাবিত হন। সৌদি আরবে কোনো নারীকে তার সন্তান থেকে দূরে রাখা হয়েছে বা আফগানিস্তানে কোনো কারাগারে এক ব্যক্তিকে নির্যাতন করা হয়েছে এমন চাঞ্চল্যকর খবর শুনে তারা ভাবেন মধ্যপ্রাচ্যের সরকারগুলো বিপজ্জনক এবং বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি। কিন্তু ইসলাম নারীর জন্য অবমাননাকর সব বিষয়কে নিষিদ্ধ করেছে এবং নারীকে আত্মমর্যাদাশীল ও আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পথ দেখায়।”

আসলে পাশ্চাত্যে আধ্যাত্মিক শূন্যতাই সেখানকার মানুষকে ইসলামের প্রতি দিনকে দিন গভীর আগ্রহী করে তুলছে। শত শত বছর ধরে তারা ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে আধ্যাত্মিক শূন্যতায় এবং পরিচিতির সংকটে ভুগছে। আধ্যাত্মিক পিপাসায় কাতর পশ্চিমা নাগরিকরা বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মের মত প্রাচ্যের ধর্মগুলোকেও পরখ করে দেখছেন। কিন্তু এসব ধর্ম তাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক চাহিদাগুলো মেটানোর জন্য পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচি দিতে পারছে না বলে পরিপূর্ণ ধর্ম হিসেবে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে প্রাণ জুড়াচ্ছেন। এ ধর্মের মধ্যেই তারা ফিরে পাচ্ছেন তাদের হারানো আত্মাকে।

সৌজন্যে : পার্সটুডে
=====================================================
মৃত্যুর আগে যা বলে গেলেন ইসলামে দীক্ষিত ক্যাথলিক যাজক
রোমান ক্যাথলিক যাজক ইদ্রিস তৌফিক।
######
প্রায় ১৫ বছর আগে তিনি কিসের টানে ইসলামে ধর্মান্তরিত হন তার সেই অভিজ্ঞতা সবার সঙ্গে শেয়ার করেছেন।
&&&&&&
তিনি ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অসুস্থতাজনিত কারণে যুক্তরাজ্যে মারা যান। তিনি বেশ কয়েক বছর যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে ধর্মীয় শিক্ষার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পড়ুন তার সেই আশ্চর্যজনক কাহিনী যা তিনি মৃত্যুর আগে নিজের জীবন সম্পর্কে লিখে গেছেন:
‘আমি একজন যাজক হিসেবে কয়েক বছরমানুষের সেবা করেছি এবং তা আমি উপভোগ করেছি। যাইহোক, এর পরেও ভিতরে ভিতরে আমি খুশি ছিলাম না এবং আমার কাছে কেবল মনে হয়েছে, সেখানে কিছু একটা সঠিক নয়। সৌভাগ্যবশত এবং আল্লাহর ইচ্ছায় আমার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা কাকতালীয়ভাবে আমাকে ইসলামের পথে নিয়ে যায়।’
‘আমার ধারনা ছিল মিশর হচ্ছে পিরামিড, উট, বালি এবং খেজুর গাছের দেশ। আসলে আমি মিশরের হূর্ঘদায় একটি সফরে গিয়েছিলাম। এটা মিশরের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র এবং দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। শহরটি লোহিত সাগর উপকূলে অবস্থিত।’
‘এটা অনেকটা ইউরোপীয় কিছু সমুদ্র সৈকতের অনুরূপ যা আমাকে বিস্মিত করেছিল। আমি প্রথমে বাসযোগে কায়রো যাই। সেখানে আমি আমার জীবনের সবচেয়ে বিস্ময়কর একটি সপ্তাহ অতিবাহিত করি। প্রথমবারের মতো আমি সেখানে ইসলাম ও মুসলমানদের সান্নিধ্যে আসি। সেখানে আমি খেয়াল করলাম মিশরীয়রা কতটা ভদ্র ও ভাল মানুষ কিন্তু খুবই শক্তিশালী।’
‘ওই সময় মুসলমানদের সম্পর্কে সব ব্রিটিশদের মতো আমার চিন্তাধারাও ছিল একই রকম। মুসলিমরা হচ্ছে বোমাবাজ ও যোদ্ধা যা মিডিয়া ও টিলিভিশন থেকে বারবার শুনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। অন্য সবার মতো আমারও ধারনা ছিল, ইসলাম একটি অশান্তির ধর্ম। তবে কায়রোতে এক সপ্তাহ অতিবাহিত করার পর আমি আবিষ্কার করলাম ইসলাম কতটা সুন্দর ও শান্তির ধর্ম।’
‘মসজিদ থেকে আজানের শব্দ শুনতে পেয়ে রাস্তায় পণ্য বিক্রি করা অত্যন্ত সাধারণ মানুষগুলো তাদের বেচাকেনা ফেলে রেখে আল্লাহ দিকে তাদের মুখ নির্দেশ করে মুহূর্তের মধ্যে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতে দেখেছি। আল্লাহর প্রতি তাদের দৃঢ় বিশ্বাস আমাকে মুগ্ধ করে। মৃত্যুর পর স্বর্গ লাভের প্রত্যাশায় তারা নিয়মিত নামাজ পালন, রোজা পালন, অভাবগ্রস্তকে সাহায্য করা এবং মক্কায় গিয়ে হজ পালনের স্বপ্ন দেখে।’
‘সেখান থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আমি আমার পুরানো পেশা ধর্মীয় শিক্ষার কাজে ফিরে যাই। ব্রিটিশ শিক্ষা ব্যবস্থায় একমাত্র বাধ্যতামূলক বিষয় হচ্ছে ধর্ম শিক্ষা অধ্যয়ন। আমি খ্রিস্টান, ইসলাম, ইহুদীধর্ম, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কে শিক্ষা দিতাম। তাই প্রতিদিন আমাকে এসব ধর্ম সম্পর্কে পড়তে হতো। আমার ছাত্রদের অনেকে ছিল আরবের মুসলিম শরণার্থী। অন্য কথায়, ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দিতে গিয়ে আমি এ ধর্ম সম্পর্কে আমি অনেক কিছু শিখতে পারি।’
‘সাধারণত কিশোর-কিশোরী বয়সে অনেক ছেলে-মেয়েই কিছুটা দুষ্ট প্রকৃতির হয়ে থাকে। কিন্তু এই আরব মুসলিম শরণার্থী শিশুরা ভাল মুসলামানের উদাহরণ স্থাপন করে। এই ছাত্র-ছাত্রীরা ছিল খুবই ভদ্র এবং দয়ালু। তাই তাদের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব গভীর হতে থাকে। রমযান মাসে নামাজের জন্য আমার শ্রেণীকক্ষ তারা ব্যবহার করতে পারবে কিনা সেসম্পর্কে তারা আমার মতামত জিজ্ঞাসা করে।’
‘সৌভাগ্যবশত কেবল আমার রুমটিতেই কার্পেট বিছানো ছিল এবং কার্পেটের ওপর শিশুদের মাসব্যাপী নামাজ পড়ার অনুমতি দেই। আর আমি প্রতিদিন পিছে বসে তাদের প্রার্থনা পর্যবেক্ষক করতাম। এটা আমাকে তাদের সঙ্গে রমজানের রোজা রাখতে উৎসাহ যুগিয়েছিল। যদিও আমি তখনো পর্যন্ত মুসলিম ছিলাম না।’

‘একবার ক্লাসে পবিত্র কোরআনের একটি অনুবাদ আবৃত্তি করতে গিয়ে আমি একটি আয়াতে পৌঁছাই। এতে বলা আছে, {আর যখন তারা আমার রাসূলের মাধ্যমে যা অবতীর্ণ হয়েছে তা শোনে, তখন তুমি দেখতে পাবে তাদের চোখে অশ্রু টলমল করছে কারণ তারা সত্যের স্বীকৃতি দিয়েছে} (কোরআন ৫:৮৩)’
‘আমি আবেগে বিস্মিত হয়ে যাই। আমি অনুভব করলাম আমার চোখে অশ্রু ছলছল করছে এবং আমি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তা আড়াল করতে কঠোর চেষ্টা করলাম।’
‘পরেরদিন আমি আন্ডারগ্রাউন্ডে যাই এবং সেখানে গিয়ে খেয়াল করলাম মানুষ ইসলাম সম্পর্কে কতটা আতঙ্কগ্রস্ত। ব্রিটেনে মানুষের এই ধরনের মনোভাবে আমি ভয় পেয়ে যাই। ওই সময়ে পশ্চিমারা এই ধর্ম নিয়ে ভয় পেতে শুরু করে এবং তারা এটিকে সন্ত্রাসবাদের জন্য দায়ী করে।’
‘তবে মুসলমানদের সঙ্গে আমার আগের অভিজ্ঞতার কারণে আমাকে একটি ভিন্ন দিকে নিয়ে যায়। আমি ভাবতে শুরু করি, কেন ইসলাম? কেন আমরা কিছু মানুষের সন্ত্রাসীদের কর্মের জন্য ধর্ম হিসেবে ইসলামকে দোষারোপ করি। যখন কিছু খ্রিস্টান একই কাজ করছে; তখন কেন কেউ খ্রিস্টধর্মকে সন্ত্রাসবাদের ধর্ম বলে অভিযুক্ত করে না?’
‘এই ধর্ম সম্পর্কে জানতে আমি একদিন লন্ডনের সবচেয়ে বড় মসজিদে যাই। লন্ডনের কেন্দ্রীয় মসজিদের প্রবেশ পথে আমি ইউসুফ ইসলামকে পাই। তিনি ছিলেন একজন পপ গায়ক। সেখানে বৃত্তাকারে বসে ইসলাম সম্পর্কে কিছু মানুষের কথা বলা শুনলাম। একটা সময় আমার মন আমাকে জিজ্ঞাসা করতে থাকে, ‘তুমি কি সত্যিই একজন মুসলিম হতে চলেছ?’
‘সেখানে আমাকে একজন বললেন, মুসলমানেরা এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস করে, প্রতিদিন পাঁচবার প্রার্থনা করে এবং রমজান মাসে রোজা পালন করে। আমি তাকে এই বলে থামিয়ে দিলাম, আমি এর সবই বিশ্বাস করি এবং এমনকি রমজানে আমি রোজাও রেখেছি।’
‘তখন তিনি আমাকে বললেন, ‘তাহলে আপনি কিসের জন্য এখনো অপেক্ষা করছো? কি আপনাকে এ পথে আসতে বাধা দিচ্ছে?’ আমি বলেছিলাম, ‘না, আমি ধর্মান্তরিত হতে মনস্থ করি নি।’
‘সেই মুহূর্তে মসজিটিতে আযান দেয়া হলে সবাই প্রস্তুত হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়। আর আমি পিছে বসে অনবরত ক্রন্দন করতে লাগলাম। তারপর আমি নিজেকে বললাম, ‘আমি মূর্খের মতো কি করছি?’ ‘তাদের নামাজ শেষ হলে আমি ইউসুফ ইসলামের কাছে যাই এবং তাকে অনুরোধ করি আমাকে কালেমা শিক্ষা দেয়ার জন্য; যাতে আমি ইসলামে ধর্মান্তর হতে পারি।
তিনি প্রথমে আমাকে ইংরেজিতে কালেমার অর্থ ব্যাখ্যা করে শোনান। পরে আমি তার সঙ্গে সঙ্গে আরবিতে এটি পাঠ করি। এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসূল।’
‘কালেমা পাঠ করার পরে আমি আমার চোখের পানি ধরে রাখতে পারি নি।’
From- Revert Stories : Journey To Islam – ইসলামে আসার গল্প
======================================================
একটি পোস্ট শেয়ার করলাম এতে যদি নাস্তিকদের বোধোদয় হয় ......................
মৃত্যুর আগে স্টিব জবস হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জীবন সম্পর্কে যা বললেনঃ
স্টিভ জবস যখন মারা যান তখন এ্যাপলের ব্যাংক একাউন্টে জমা ছিলো ৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশী। টেকনোলজির এই রাজপূত্র মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে একেবারে অন্তিম মুহুর্তে জীবন সম্পর্কে কিছু অসাধারণ কথা বলেছিলেন-
যা জাপানি, চায়নীজ, হিন্দি, উর্দু, আরবী, স্প্যানিশ, পর্তুগীজ, রুশ সহ প্রায় আঠারোটি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। শুধু তাই নয়- শিশুদের মানসিক উৎকর্ষতা বিধান এবং তাদের সুন্দর মনন গঠনের লক্ষে একাধিক ভাষায় স্টিভ জবসের এই অমর কথাগুলো সহ উনার জীবনী বিভিন্ন দেশের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।)
কথাগুলি নিম্নরূপ :
বাণিজ্যিক দুনিয়ায় আমি সাফল্যের একেবারে সর্বোচ্চ চুড়োয় আরোহণ করেছি।যা আপনাদের কাছে সাফল্যের এক অনুপম দৃষ্টান্ত।কিন্তু,এ কথা ধ্রুব সত্য কাজের বাইরে আমার সামান্যই আনন্দ ছিলো। সম্পদের প্রলোভনে বিভোর ছিলাম সারা জীবন। আজ মৃত্যুশয্যায় শুয়ে যখন জীবনটাকে দেখি-তখন আমার মনে হয়, আমার সব সম্মান, খ্যাতি আর অর্জিত সম্পদ আসন্ন মৃত্যুর সামনে একেবারেই ম্লান, তুচ্ছ আর অর্থহীন।এ্যাপলের বিশাল সাম্রাজ্য আমার নিয়ন্ত্রনে ছিলো-কিন্তু মৃত্যু আজ আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে।পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তি কবরের বিছানায় শুয়ে আছে সেটা আদৌ কোনো বড় ব্যাপার না। প্রতি রাতে নিজের বিছানায় শুয়ার আগে আমি কি করলাম -সেটাই আসল ব্যাপার। অন্ধকার রাতে জীবনরক্ষাকারী মেশিনের সবুজ বাতিগুলোর দিকে চেয়ে আমার বুকের গহীনে হাহাকার করে ওঠে। মেশিনের শব্দের ভিতরে আমি নিকটবর্তী মৃত্যু দেবতার নিঃশ্বাস অনুভব করতে পারি। অনুধাবন করতে পারি-শুধু সম্পদ না, সম্পদের সাথে সম্পর্কহীন জিনিসেরও মানুষের অন্বেষণ করা উচিত।
বেকুবের মতো সম্পদ আহরণই সবকিছুই নয়- আরো অনেককিছু মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।আর তা হলো- মানুষের সাথে সুসম্পর্ক তৈরী করা,সৌন্দর্য্য উপলব্ধি করা আর তারুণ্যে একটি সুন্দর স্বপ্ন নিজের হৃদয়ে লালন করা। শুধু সম্পদের পেছনে ছুটলেই মানুষ আমার মতো এক ভ্রান্ত মানুষে পরিণত হতে পারে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবার হৃদয়ে ভালবাসা অনুভব করার জ্ঞান দিয়েছেন।কেবলমাত্র এই নশ্বর দুনিয়ায় সম্পদের মোহে জড়িয়ে পড়ার জন্য নয়। এই যে মৃত্যু শয্যায় শুয়ে আছি।কই, সব সম্পদতো এই বিছানায় নিয়ে আসতে পারিনি। শুধু আজ সাথে আছে ভালোবাসা, প্রেম, মায়া, মমতার স্ম্বতিগুলোই । এগুলোই শুধু সাথে থেকে সাহস যোগাবে , আলোর পথ দেখাবে। ভালোবাসা পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে আছে- সম্পদ না খুঁজে ভালোবাসাও খোঁজে নিতে হয়। সম্পদ কভু শান্তি আনেনা।মানুষের প্রতি গভীর মমত্ববোধ আর ভালোবাসাই শান্তি আনে।পৃথিবীটাকে দেখো। শুধু সম্পদের পেছনে ছুটে হাহাকার করলে জীবনটাকে উপভোগ করতে পারবে না…
পৃথিবীতে সবচেয়ে দামী বিছানা কি জানেন? তাহলো- হাসপাতালের মৃত্য শয্যা। আপনাকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আপনি একজন গাড়ি চালক রাখতে পারেন। আপনার নিযুক্ত কর্মচারীরা আপনার জন্য অনেক টাকাই আয় করে দিবে।কিন্তু এটাই সবচেয়ে বড় সত্য গোটা পৃথিবী চষে, পৃথিবীর সব সম্পদ দিয়ে দিলেও একজন মানুষও পাবেন না যে আপনার রোগ বয়ে বেড়াবে।
বৈষয়িক যে কোনো জিনিস হারালে আপনি পাবেন। কিন্তু একটা জিনিসই হারালে আর পাওয়া যায়না তা হলো মানুষের জীবন। মানুষ যখন অপারেশান থিয়েটারে যায় তখন সে কেবলি অনুধাবন করে- কেন জীবনের মূল্যটা আগে বুঝিনি!! জীবনের যে স্টেজেই আপনি আজ থাকুন না কেন- ,মৃত্যু পর্দা আপনার জীবনের সামনে হাজির হবেই। সাঙ্গ হবে জীবন। তাই, এই নশ্বর জীবনের পরিসমাপ্তির আগে পরিবারের জন্য, আপনজনের জন্য, বন্ধুদের জন্য হৃদয়ে সবসময় ভালোবাসা রাখুন। নিজের জীবনটাকে ভালোবাসুন। ঠিক নিজের মতো করে অন্যকেও ভালোবাসুন।
কপি : (ইংরেজি হইতে অনুবাদ করা অনুবাদের ত্রুটি মার্জনীয়)
আল-বাক়ারাহ 2:177
Bengali - Muhiuddin Khan
সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।
Bengali - Mujibur Rahman
তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল পূর্ব বা পশ্চিম দিকে প্রত্যাবর্তিত করলেই তাতে পুণ্য নেই, বরং পুণ্য তার যে ব্যক্তি আল্লাহ, আখিরাত, মালাইকা/ফেরেশতা, কিতাব ও নাবীগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাঁরই প্রেমে ধন-সম্পদের প্রতি আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও সে তা আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, দরিদ্র, পথিক ও ভিক্ষুকদেরকে এবং দাসত্ব মোচনের জন্য ব্যয় করে, আর সালাত প্রতিষ্ঠিত করে ও যাকাত প্রদান করে এবং অঙ্গীকার করলে তা পূরণ করে এবং যারা অভাবে ও ক্লেশে এবং যুদ্ধকালে ধৈর্যশীল তারাই সত্য পরায়ণ এবং তারাই ধর্মভীরু।
English version --
STEVE JOBS (founder of Apple) Last Words before he died
------
“I reached the pinnacle of success in the business world.
In others’ eyes, my life is an epitome of success.

However, aside from work, I have little joy. In the end, wealth is only a fact of life that I am accustomed to.
At this moment, lying on the sick bed and recalling my whole life, I realize that all the recognition and wealth that I took so much pride in, have paled and become meaningless in the face of impending death.
In the darkness, I look at the green lights from the life supporting machines and hear the humming mechanical sounds, I can feel the breath of God and of death drawing closer…
Now I know, when we have accumulated sufficient wealth to last our lifetime, we should pursue other matters that are unrelated to wealth…
Should be something that is more important:
Perhaps relationships, perhaps art, perhaps a dream from younger days …
Non-stop pursuing of wealth will only turn a person into a twisted being, just like me.
God gave us the senses to let us feel the love in everyone’s heart, not the illusions brought about by wealth.
The wealth I have won in my life I cannot bring with me.
What I can bring is only the memories precipitated by love.
That’s the true riches which will follow you, accompany you, giving you strength and light to go on.
Love can travel a thousand miles. Life has no limit. Go where you want to go. Reach the height you want to reach. It is all in your heart and in your hands.
What is the most expensive bed in the world? – “Sick bed” …
You can employ someone to drive the car for you, make money for you but you cannot have someone to bear the sickness for you.
Material things lost can be found. But there is one thing that can never be found when it is lost – “Life”.
When a person goes into the operating room, he will realize that there is one book that he has yet to finish reading – “Book of Healthy Life”.
Whichever stage in life we are at right now, with time, we will face the day when the curtain comes down.
Treasure Love for your family, love for your spouse, love for your friends…
Treat yourself well. Cherish others.”
======================================

No comments

Note: Only a member of this blog may post a comment.

Powered by Blogger.