ইসলামে ঋতুমতী নারীরা অপবিত্র ?
নাস্তিকের মিথ্যাচার ও তার জবাবঃ
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
প্রশ্নঃ
ঋতুমতী নারীরা অপবিত্র,ইবাদতের অযোগ্য, তারা মসজিদে প্রবেশের অধিকার রাখেনা। এটাই হল ইসলামে নারীর মর্যাদা ?
জবাবঃ
:::::::::::
দ্বীনে ইসলাম মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে কোনো বিধান চাপিয়ে দেয়নি। মাসিক নারীদের একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। মাসিক একটি কষ্টদায়ক অবস্থা। স্বাভাবিক অবস্থা থেকে এ সময় কিছু ছাড় রয়েছে। রয়েছে কিছু বিধি-নিষেধ। মাসিকের সময় মাহিলাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে আল্লাহ্ তাদের ইবাদতের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ ছাড় দিয়েছেন। আর এগুলোকে নিয়ে অপব্যাখ্যা আর মিথ্যাচার করছে নাস্তিকরা।
এসময় মহিলাদের দেয়া বিশেষ সুযোগ গুলো আলোচনার চেষ্টা করছি।এতে সবাই বুঝতে পারেবেন বিধিনিষেধ গুলোর যৌক্তিকতাঃ
১)
ঋতুবতী মহিলার সাথে সহবাসে লিপ্ত হওয়া হারামঃ
***************************************************
আল্লাহ তা’আলা বলেছেন:
“আর তারা তোমার কাছে জিজ্ঞাসা করে হায়েজ (মাসিক) সম্পর্কে। বলে দাও, এটা কষ্টদায়ক জিনিস। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রী মিলন থেকে বিরত থাক। তখন তাদের সাথে সহবাসে লিপ্ত হবে না; যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়। যখন উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন গমন কর তাদের কাছে। যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন।” (সূরা বাক্বারা- ২২২)
হাদিস হচ্ছে--
ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন না করা পর্যন্ত স্ত্রী মিলন সম্পূর্ণ হারাম বা অবৈধ। অবশ্য এ অবস্থায় যৌনাঙ্গে সঙ্গম ব্যতীত স্ত্রীর সাথে অন্য কিছু করা হারাম নয়। হাদীসে এরশাদ হচ্ছে: “যৌন সঙ্গম ছাড়া তুমি সব কিছু করতে পার।” (সহীহ্ মুসলিম)
কেন হারামঃ
***********
মাসিকের সময় দেহ যা বের করে দিতে যাচ্ছে, সেটা আবার ধাক্কা দিয়ে দেহের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়াটা যে ক্ষতিকর, এনিয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। গবেষণায় দেখে গেছে এর ফলে HIV এবং STD (যৌনতা জনিত অসুখ) হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণে বেড়ে যায়।Bacterial vaginosis (BV) হচ্ছে এক ধরনের অসুখ যখন প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়ার কলোনি তৈরি হয়ে মাছের আঁশের মতো দুর্গন্ধ হয়, সাদা স্রাব বের হয়। এটা পুরুষদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। মাসিকের প্রথম ৭ দিনে এটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এই সময় পুরুষদের অবশ্যই দূরে থাকা উচিত, না হলে জটিল ইনফেকশনে ভোগার সম্ভাবনা আছে। Staphylococcus aureus নামের এক জটিল ইনফেকশন হওয়ার সাথে মাসিকের সরাসরি যোগাযোগের যথেষ্ট পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। এটা থেকে জটিল ধরনের রক্তের ইনফেকশন হয়। একারণে মাসিকের সময় নারীদের ভালো করে পরিষ্কার থাকাটা, এবং পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করাটা খুবই জরুরি।
এটা কি অযৌক্তিক নির্দেশনা? কলা বিজ্ঞানি নাস্তিকরা কি এসময় সহবাস করা উচিত বলে মনেকরেন?
২)
ঋতুবতী মহিলার জন্য নামায-রোযা রাখতে হবে নাঃ
**************************************************
এটা নারীদের জন্য এক বিশেষ সুবিধা। হায়েজের সময় নারীরা অনেক সমস্যায় ভোগেন। তাই আল্লাহ্ এসময় তাদেরকে সব ধরনের ইবাদত থেকে অব্যহতি দিয়েছেন। তবে রোজা পরবর্তিতে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সুস্থ হওয়ার পরে রোজা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মা আয়েশা (রা:) বলেন, “আমরা রাসুলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে ঋতুবতী হলে রোযার কাজা আদায়ের ব্যাপারে নির্দেশিত হতাম। নামাযের কাযা আদায়ের ব্যাপারে নির্দেশিত হতাম না।” (বুখারী ও মুসলিম)
নামাজ সর্বাবস্থায় বাধ্যতামূলক। অথচ মহিলাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে আল্লাহ্ তাদের বিশেষ সুযোগ দিয়েছেন।
প্রশ্ন হচ্ছে- এটাকি অনুগ্রহ না শাস্তি?
৩)
ঋতুবতী নারী আবরণ ব্যতীত পবিত্র কুরআন স্পর্শ করা নিষেধ:
***************************************************************
আল্লাহ বলেন: (لاَيَمَسُّهُ إلاَّ الْمُطَّهَّرُوْنَ) অর্থাৎ “যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে (কুরআনকে) স্পর্শ করবে না। (সূরা ওয়াক্বিয়া- ৭৯)
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমর ইবনে হাযম (রা:) এর নিকট যে পত্র প্রেরণ করেছিলেন, তাতে লিখেছেন, (لاَيَمَسَّ الْقُرآنَ إلاَّ طَاهِرٌ) অর্থাৎ “পবিত্র ব্যক্তি ব্যতীত কেহ কুরআন স্পর্শ করবে না।” (মুয়াত্তা মালিক)
স্পর্শ করে ঋতুবতীর মুখস্থ কুরআন পড়ার ব্যাপারে ওলামাদের মধ্যে মতবিরোধ বিদ্যমান। তবে না পড়াই উচিত। অবশ্য একান্ত প্রয়োজন যেমন- ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে মুখস্থ পাঠ করতে পারে।
ঋতুবতীর দু’আ, তাসবীহ্, তাহমীদ, তাহলীল ইত্যাদি পাঠ করতে কোনো অসুবিধা নেই।
খেয়াল করুন:
এই নির্দেশ নারী পুরুষ উভয়ের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।
এখানে নারী বা পুরুষ বলা হয়নি। এখানে বলা হয়েছে অপবিত্র যেই হোক সে যেন কোরআন স্পর্শ না করে।
তাহলে এখানে নারীদের কোরআন স্পর্শ নিষেধ বলে নাস্তিকদের লাফানোর মানে কি?
৪)
ঋতুবতীর বাইতুল্লাহর তওয়াফ করা হারাম:
*******************************************
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মা আয়েশা (রা:) কে বলেছিলেন: “হজ্জ সম্পাদনকারী একজন ব্যক্তি যা করে তুমিও তা করতে থাক। তবে পবিত্রতা অর্জন পর্যন্ত পবিত্র ঘর কা’বার তওয়াফ থেকে বিরত থাকবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
হায়েজ অবস্থায় নারীরা অপবিত্র থাকে। তাই তাওয়াফ ব্যাতিত সকল কাজ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এনির্দেশ শুধু নারীদের ক্ষেত্রে নয়।
পুরুষদেরও অপবিত্র অবস্থায় তাওয়াফ করা নিষেধ।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “বায়তুল্লাহ্কে তাওয়াফ করা নামাযতুল্য; তবে তোমরা তাওয়াফের মধ্যে কথা বলতে পার।”[সুনানে তিরমিযি (৯৬০), আলবানী ‘ইরওয়াউল গালিল’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
৫)
ঋতুবতী মহিলার জন্য মসজিদে অবস্থান করা নাজায়েজ:
********************************************************
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“কোন ঋতুবতী এবং নাপাক ব্যক্তির জন্য (যার উপর গোসল ফরয) মসজিদে অবস্থান করা আমি বৈধ করিনি।” (আবু দাউদ)
তবে মসজিদ থেকে কোন জিনিস নেয়ার দরকার থাকলে তা নিতে পারবে। রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা আয়েশা (রা:)কে বললেন: “মসজিদ থেকে (আমার) চাদরটি এনে দাও। তিনি বললেন- আমি তো ঋতুবতী? তিনি জবাবে বললেন: তোমার হাতে তো হায়েয নেই।” (মুসলিম)
খেয়াল করুন!!
এখানে হায়েজ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান করতে নিষেধ করেছেন কিন্তু প্রবেশ করতে নিষেধ করেননি।
একই নির্দেশ রয়েছে পুরুষের ক্ষেত্রে।
আল্লাহ্ বলেন:
]يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى حَتَّى تَعْلَمُوا مَا تَقُولُونَ وَلَا جُنُبًا إِلَّا عَابِرِي سَبِيلٍ حَتَّى تَغْتَسِلُوا[
“হে ঈমানদারগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা নামাযের নিকটে যেয়ো না, যে পর্যন্ত তোমরা কি বলছ তা বুঝতে না পার। এবং নাপাক অবস্থাতেও না, যতক্ষণ তোমরা গোসল না কর। তবে মসজিদে (অবস্থান না করে তার) ভিতর দিয়ে রাস্তা অতিক্রম করতে চাইলে ভিন্ন কথা।” (সূরা নিসা- ৪৩)
তাহলে নারীদের ছোট বা হেয় করা হল কিভাবে?
উপরোক্ত বিষয় পর্যালোচনা করে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে ঋতুমতিদের প্রতি প্রদত্ত নির্দেশনায় নারীদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে বিশেষ অনুগ্রহে বাড়তি সুযোগ দেয়া হয়েছে।
বস্তুত অপব্যাখ্যা আর মিথ্যাচার করা নাস্তিকদের অস্তি মজ্জাতে মিশে গেছে।তাই সত্যকে মেনে নিতে তারা অক্ষম।
আল্লাহ্ তাদের মিথ্যাচার থেকে আমাদের হেফাজত করুন,আমিন।
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
প্রশ্নঃ
ঋতুমতী নারীরা অপবিত্র,ইবাদতের অযোগ্য, তারা মসজিদে প্রবেশের অধিকার রাখেনা। এটাই হল ইসলামে নারীর মর্যাদা ?
জবাবঃ
:::::::::::
দ্বীনে ইসলাম মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে কোনো বিধান চাপিয়ে দেয়নি। মাসিক নারীদের একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। মাসিক একটি কষ্টদায়ক অবস্থা। স্বাভাবিক অবস্থা থেকে এ সময় কিছু ছাড় রয়েছে। রয়েছে কিছু বিধি-নিষেধ। মাসিকের সময় মাহিলাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে আল্লাহ্ তাদের ইবাদতের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ ছাড় দিয়েছেন। আর এগুলোকে নিয়ে অপব্যাখ্যা আর মিথ্যাচার করছে নাস্তিকরা।
এসময় মহিলাদের দেয়া বিশেষ সুযোগ গুলো আলোচনার চেষ্টা করছি।এতে সবাই বুঝতে পারেবেন বিধিনিষেধ গুলোর যৌক্তিকতাঃ
১)
ঋতুবতী মহিলার সাথে সহবাসে লিপ্ত হওয়া হারামঃ
***************************************************
আল্লাহ তা’আলা বলেছেন:
“আর তারা তোমার কাছে জিজ্ঞাসা করে হায়েজ (মাসিক) সম্পর্কে। বলে দাও, এটা কষ্টদায়ক জিনিস। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রী মিলন থেকে বিরত থাক। তখন তাদের সাথে সহবাসে লিপ্ত হবে না; যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়। যখন উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন গমন কর তাদের কাছে। যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন।” (সূরা বাক্বারা- ২২২)
হাদিস হচ্ছে--
ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন না করা পর্যন্ত স্ত্রী মিলন সম্পূর্ণ হারাম বা অবৈধ। অবশ্য এ অবস্থায় যৌনাঙ্গে সঙ্গম ব্যতীত স্ত্রীর সাথে অন্য কিছু করা হারাম নয়। হাদীসে এরশাদ হচ্ছে: “যৌন সঙ্গম ছাড়া তুমি সব কিছু করতে পার।” (সহীহ্ মুসলিম)
কেন হারামঃ
***********
মাসিকের সময় দেহ যা বের করে দিতে যাচ্ছে, সেটা আবার ধাক্কা দিয়ে দেহের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়াটা যে ক্ষতিকর, এনিয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। গবেষণায় দেখে গেছে এর ফলে HIV এবং STD (যৌনতা জনিত অসুখ) হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণে বেড়ে যায়।Bacterial vaginosis (BV) হচ্ছে এক ধরনের অসুখ যখন প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়ার কলোনি তৈরি হয়ে মাছের আঁশের মতো দুর্গন্ধ হয়, সাদা স্রাব বের হয়। এটা পুরুষদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। মাসিকের প্রথম ৭ দিনে এটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এই সময় পুরুষদের অবশ্যই দূরে থাকা উচিত, না হলে জটিল ইনফেকশনে ভোগার সম্ভাবনা আছে। Staphylococcus aureus নামের এক জটিল ইনফেকশন হওয়ার সাথে মাসিকের সরাসরি যোগাযোগের যথেষ্ট পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। এটা থেকে জটিল ধরনের রক্তের ইনফেকশন হয়। একারণে মাসিকের সময় নারীদের ভালো করে পরিষ্কার থাকাটা, এবং পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করাটা খুবই জরুরি।
এটা কি অযৌক্তিক নির্দেশনা? কলা বিজ্ঞানি নাস্তিকরা কি এসময় সহবাস করা উচিত বলে মনেকরেন?
২)
ঋতুবতী মহিলার জন্য নামায-রোযা রাখতে হবে নাঃ
**************************************************
এটা নারীদের জন্য এক বিশেষ সুবিধা। হায়েজের সময় নারীরা অনেক সমস্যায় ভোগেন। তাই আল্লাহ্ এসময় তাদেরকে সব ধরনের ইবাদত থেকে অব্যহতি দিয়েছেন। তবে রোজা পরবর্তিতে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সুস্থ হওয়ার পরে রোজা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মা আয়েশা (রা:) বলেন, “আমরা রাসুলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে ঋতুবতী হলে রোযার কাজা আদায়ের ব্যাপারে নির্দেশিত হতাম। নামাযের কাযা আদায়ের ব্যাপারে নির্দেশিত হতাম না।” (বুখারী ও মুসলিম)
নামাজ সর্বাবস্থায় বাধ্যতামূলক। অথচ মহিলাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে আল্লাহ্ তাদের বিশেষ সুযোগ দিয়েছেন।
প্রশ্ন হচ্ছে- এটাকি অনুগ্রহ না শাস্তি?
৩)
ঋতুবতী নারী আবরণ ব্যতীত পবিত্র কুরআন স্পর্শ করা নিষেধ:
***************************************************************
আল্লাহ বলেন: (لاَيَمَسُّهُ إلاَّ الْمُطَّهَّرُوْنَ) অর্থাৎ “যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে (কুরআনকে) স্পর্শ করবে না। (সূরা ওয়াক্বিয়া- ৭৯)
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমর ইবনে হাযম (রা:) এর নিকট যে পত্র প্রেরণ করেছিলেন, তাতে লিখেছেন, (لاَيَمَسَّ الْقُرآنَ إلاَّ طَاهِرٌ) অর্থাৎ “পবিত্র ব্যক্তি ব্যতীত কেহ কুরআন স্পর্শ করবে না।” (মুয়াত্তা মালিক)
স্পর্শ করে ঋতুবতীর মুখস্থ কুরআন পড়ার ব্যাপারে ওলামাদের মধ্যে মতবিরোধ বিদ্যমান। তবে না পড়াই উচিত। অবশ্য একান্ত প্রয়োজন যেমন- ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে মুখস্থ পাঠ করতে পারে।
ঋতুবতীর দু’আ, তাসবীহ্, তাহমীদ, তাহলীল ইত্যাদি পাঠ করতে কোনো অসুবিধা নেই।
খেয়াল করুন:
এই নির্দেশ নারী পুরুষ উভয়ের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।
এখানে নারী বা পুরুষ বলা হয়নি। এখানে বলা হয়েছে অপবিত্র যেই হোক সে যেন কোরআন স্পর্শ না করে।
তাহলে এখানে নারীদের কোরআন স্পর্শ নিষেধ বলে নাস্তিকদের লাফানোর মানে কি?
৪)
ঋতুবতীর বাইতুল্লাহর তওয়াফ করা হারাম:
*******************************************
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মা আয়েশা (রা:) কে বলেছিলেন: “হজ্জ সম্পাদনকারী একজন ব্যক্তি যা করে তুমিও তা করতে থাক। তবে পবিত্রতা অর্জন পর্যন্ত পবিত্র ঘর কা’বার তওয়াফ থেকে বিরত থাকবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
হায়েজ অবস্থায় নারীরা অপবিত্র থাকে। তাই তাওয়াফ ব্যাতিত সকল কাজ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এনির্দেশ শুধু নারীদের ক্ষেত্রে নয়।
পুরুষদেরও অপবিত্র অবস্থায় তাওয়াফ করা নিষেধ।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “বায়তুল্লাহ্কে তাওয়াফ করা নামাযতুল্য; তবে তোমরা তাওয়াফের মধ্যে কথা বলতে পার।”[সুনানে তিরমিযি (৯৬০), আলবানী ‘ইরওয়াউল গালিল’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
৫)
ঋতুবতী মহিলার জন্য মসজিদে অবস্থান করা নাজায়েজ:
********************************************************
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“কোন ঋতুবতী এবং নাপাক ব্যক্তির জন্য (যার উপর গোসল ফরয) মসজিদে অবস্থান করা আমি বৈধ করিনি।” (আবু দাউদ)
তবে মসজিদ থেকে কোন জিনিস নেয়ার দরকার থাকলে তা নিতে পারবে। রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা আয়েশা (রা:)কে বললেন: “মসজিদ থেকে (আমার) চাদরটি এনে দাও। তিনি বললেন- আমি তো ঋতুবতী? তিনি জবাবে বললেন: তোমার হাতে তো হায়েয নেই।” (মুসলিম)
খেয়াল করুন!!
এখানে হায়েজ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান করতে নিষেধ করেছেন কিন্তু প্রবেশ করতে নিষেধ করেননি।
একই নির্দেশ রয়েছে পুরুষের ক্ষেত্রে।
আল্লাহ্ বলেন:
]يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى حَتَّى تَعْلَمُوا مَا تَقُولُونَ وَلَا جُنُبًا إِلَّا عَابِرِي سَبِيلٍ حَتَّى تَغْتَسِلُوا[
“হে ঈমানদারগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা নামাযের নিকটে যেয়ো না, যে পর্যন্ত তোমরা কি বলছ তা বুঝতে না পার। এবং নাপাক অবস্থাতেও না, যতক্ষণ তোমরা গোসল না কর। তবে মসজিদে (অবস্থান না করে তার) ভিতর দিয়ে রাস্তা অতিক্রম করতে চাইলে ভিন্ন কথা।” (সূরা নিসা- ৪৩)
তাহলে নারীদের ছোট বা হেয় করা হল কিভাবে?
উপরোক্ত বিষয় পর্যালোচনা করে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে ঋতুমতিদের প্রতি প্রদত্ত নির্দেশনায় নারীদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে বিশেষ অনুগ্রহে বাড়তি সুযোগ দেয়া হয়েছে।
বস্তুত অপব্যাখ্যা আর মিথ্যাচার করা নাস্তিকদের অস্তি মজ্জাতে মিশে গেছে।তাই সত্যকে মেনে নিতে তারা অক্ষম।
আল্লাহ্ তাদের মিথ্যাচার থেকে আমাদের হেফাজত করুন,আমিন।
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.