হিজাব : দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ

হিজাব : দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ


পর্দার আরবি শব্দ হিজাব, যার আভিধানিক এবং পারিভাষিক অর্থ হলো নারীকে পর পুরুষের সাথে অবাধ মেলা মেশার হাত থেকে রা করা। পর্দা কোন গতানুগতিক তথাকথিত সামাজিক প্রথা নয়। ইসলাম অন্ধ কামশক্তির স্বেচ্ছাচারিতা রোধ কল্পে এবং উহাকে উহার যথাযথ সীমারেখার মধ্যে নিয়ন্ত্রিত রাখার যে সুন্দর দিক নির্দেশনা পেশ করেছেন তারই সুসংপ্তি নামই পর্দা। বস্তুত যৌন আবেদনের প্রভাব, উৎকট কামপ্রবৃত্তি চরিতার্থের অদম্য স্পৃহা, নর-নারীর দৈহিক গঠন বিন্যাস, মানসিক ও চারিত্রিক পার্থক্যজনিত স্বাভাবিক আকর্ষণের উপর ভিত্তি করেই ইসলাম পর্দা প্রথার নির্দেশ দেয়। ইহা অনস্বীকার্য যে, জীব মাত্রই কামজ। এই কামজকে এড়িয়ে কোনো মানব পৃথিবীতে জন্ম নিতে পারে না। প্রেম ও পবিত্রতায় ভরা বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে নর-নারীর কাম-কামনা মানবসভ্যতাকে টিকিয়ে রেখেছে। মানুষকে বর্তমান পৃথিবীর স্বর্ণ শিখরে পৌঁছাতে সহায়তা করছে। আবার ঐ কামভাবই অপব্যবহারের কারণে মানুষকে পশুত্বের নিম্নতর স্তরে নিমজ্জিত করেছে। সুতরাং মানবতার খাতিরে একে এর সীমার মধ্যে রাখা আমাদের একান্ত কর্তব্য। পর্দা প্রথা তারই সুফল রূপরেখা মাত্র। পর্দা প্রথাই নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশাকে অবৈধ ঘোষণা করে। নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশার ফলে পারস্পরিক যৌন আকর্ষণ তাদের দেহ মনে এক অপ্রতিরোধ্য আলোড়ন সৃষ্টি করে। যা পরবর্তীতে ব্যভিচার তথা জিনার প্রতি ধাবিত করে। যার কুফল মানবতার জন্য মারাত্মক। এ সম্পর্কে জার্মান দার্শনিক নিটশে বলেছেন, নারীকে পুরুষের সাথে মেলা মেশার অবাধ সুযোগ দিলে নারীদের প্রজনন শক্তি শিগগিরই নিস্তেজ হয়ে যাবে। ফলে এমন একদিন আসবে যেই দিন পৃথিবী হতে মানব বংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। নারী পুরুষের অবৈধ যৌন মিলনে যে, জিনা হয় তা নয় বরং কামভাব ও উত্তেজনার সাথে নর-নারী পরস্পর একে অন্যকে স্পর্শ করলে, কিংবা কুমতলবের সাথে একে অন্যের প্রতি দৃষ্টি নিপে করলে ইসলাম অতি সতর্কতার সাথে একে জিনার সাথে তুলনা করেছেন। কেননা এগুলো অবৈধ কাজের উদ্ভাবক। এছাড়া মনোবিজ্ঞানীরা গবেষণা করে প্রমাণ করেছেন, অবৈধ নারী দর্শনে এবং স্পর্শে অচেতন মনের উপর যে অদৃশ্য কুচিন্তা ও কুভাবনার চাপ পড়ে, পরিণামে তা মারাত্মক ব্যাধিতে রূপান্তর হয়। এ সকল কু-ধারণা মানব দেহের সু কোষগুলোকে বিকৃত ও বিষাক্ত করে নানা প্রকার শারীরিক ও মানসিক ব্যাধির সৃষ্টি করে, মেধা শক্তি লোপ করে।

আমেরিকার অন্যতম মানসিক রোগের চিকিৎসক ড. এডওয়ার্ড বগলার বলেন, প্রত্যেক মানুষের মনের আড়ালে একটি আত্ম ধ্বংসকারী উপাদান অতি সংগোপনে অবস্থান করছে, এর অস্তিত্ব সম্পর্কে মানুষ সচেতন নয়। অনেক সময় এর প্রভাবে মানুষ অজানা কারণে মানবিক অস্বস্তি ও অহেতুক নানা প্রকার শারিরীক ও মানসিক ব্যাধিতে ভুগে থাকেন। এই মারাত্মক উপাদানই স্নায়ুবিক বিকৃতি ও দুর্বলতার মূল কারণ। কুচিন্তা ও কুভাবনা এই উপাদানকে আরো শক্তিশালী করে তোলে। একমাত্র কুচিন্তা ও কুভাবনা পরিহারই এই ক্রিয়াকে নিষ্ক্রিয় ও দমন করতে পারে। বলা বাহুল্য যে, এই কুচিন্তা ও কুভাবনার আত্মঘাতী বিষক্রিয়া হতে মানুষকে রা করার জন্য নারী জাতিকে পর্দার আড়ালে অবস্থানের জন্য ইসলাম কঠোরভাবে নির্দেশ দেয়। পবিত্র কুরআনের ভাষায় অর্থাৎ “হে নারীগণ! তোমরা তোমাদের স্ব স্ব ঘরের মধ্যে অবস্থান কর। প্রাথমিক বর্বর যুগের নারীরা যেমন সৌন্দর্য প্রদর্শনের জন্য সুসজ্জিত হইয়া যথেচ্ছা বিচরণ করিত তোমরা তেমনি হইওনা” (আল-কুরআন)।

জনজীবনে নারী পুরুষের স্বাভাবিক পার্থক্যের অস্বীকৃতি, পর্দা প্রথার জাতীয় উপকারিতা ও বেপর্দার অপকারীতা সমন্ধে সঠিক জ্ঞানের অভাব, পর্দা প্রথা জাতীয় উন্নতির অন্তরায়” এরূপ অমূলক ভ্রান্ত ধারণা নারীকে পুরুষের একমাত্র ভোগের সামগ্রী মনে করা, নারীদের আত্মসচেতনতার অভাব। পুরুষদের দায়ুসী তথা লাম্পট্য প্রবণ মনোভাব এবং পর পুরুষের সঙ্গে নিজেদের স্ত্রীদের অবাধ আলাপ আলোচনা করাকে পছন্দ করা। ইসলামী বিধির প্রতি উদাসীন মনোভাব এবং বিজাতীয় নগ্নতা ও অপসংস্কৃতি, বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতা, অশালীন টিভি সিনেমায় প্রদর্শিত ছবি থেকে বেপর্দার সৃষ্টি, শুধু তাই নয়, ভারত ও ইংরেজদের অশালীন নগ্ন সিনেমা, সর্বজন গৃহীত শব্দ আধুনিকতা? আজকে আধুনিকতার দোহাই দিয়ে নারীরা পুরুষের পোশাক ব্যবহার করছে, অথচ এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) দ্ব্যর্থহীন ভাষায়, তাদেরকে অভিশাপ দিয়েছেন। আধুনিকতার নাম দিয়ে আজকে নারীরা পর্দা প্রথাকে বাদ দিচ্ছে। আধুনিকতার সংস্পর্শে এসে তারা বলে পর্দা? পর্দা প্রথা অনেক পুরানো। বর্তমান যুগে পর্দা প্রথার কোন প্রয়োজন নেই। যারা পর্দা করে তারা আধুনিকতার স্পর্শ থেকে বঞ্চিত। অথচ, সে আধুনিকতাই আজকে নারী জাতিকে সবচেয়ে সর্বনিকৃষ্ট পণ্যে পরিণত করছে। যার সামান্য দৃষ্টান্ত আমরা পাবো, আধুনিকতা নারী সমাজকে কী দিল অংশে।

বিজ্ঞানের দৃষ্টি ভঙ্গিতে বলা হয় নারী দেহ অশ্লীয় ও চুম্বকধর্মী এবং পুরুষের দেহ ক্ষারীয় ও বিদ্যুৎধর্মী। সাধারণত অম্লের সাথে ক্ষারের একটি স্বাভাবিক আকর্ষণ বা টান আছে। বিজ্ঞানের ভাষায় একে এফিনিটি বলা হয়। এই আকর্ষণ এত তীব্র ও কার্যকর যে ইহা রোধ করা কিছুতেই সম্ভব নয়। তাই কেউ অপরকে অম্ল বা টক খেতে দেখলে অনায়াসে অজ্ঞাত কারণে মুখ থেকে ক্ষারধর্মীয় লালা বের হয়ে আসে। সুতারাং ইহা ধ্রুব সত্য যে ক্ষারধর্মী দেহ ও অম্লধর্মী দেহের মধ্যে চুম্বকের মতো দুর্দমনীয় একটি প্রাকৃতিক আকর্ষণ আছে। ক্ষারের একট সাধারণ স্বভাব বা গুণ আছে, ইহা অম্লের সংস্পর্শে আসলে অম্লের কার্যকরী গুণ নষ্ট করে দেয়। যাকে রসায়ন শাস্ত্রের পরিভাষায় নিউটিলাইজেশন বা নিরপেক্ষ করণ বলা হয়। তাই অনাবৃত অম্ল ও চুম্বকধর্মী নারী দেহের উপর ক্ষার ও বিদ্যুৎধর্মী পুরুষের দেহের প্রতিফলন ক্রিয়া ঘন ঘন প্রতিফলিত হতে থাকলে নারী দেহের চুম্বকত্ব ও অম্লত্ব নষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে অজ্ঞাত সারে নারীত্বের গুণাবলী লোপ পেতে থাকে। নানা জাতীয় পুরুষ দেহের ঘন ঘন প্রতিপলন নারী দেহের সূè কোষগুলোর উপর যে সংঘাত নিপে করে, তা শরীরের প্রত্যেকটি কোষ এমনকী ডিম্ব কোষকে পর্যন্ত সূè আনবিক ক্রিয়া দ্বারা বিধস্ত করে ফেলে। ফলে নারী দেহের অম্লত্ব ও চুম্বকত্ব নষ্ট হয়ে নারী তার গন্ধ, কোমলতা, ও রূপ লাবন্যতা হারিয়ে ফেলে। আজকের ইউরোপ তার জ্বলন্ত প্রমাণ। তাইতো, রাসূলুল্লাহ (সা.) পর্দাশীল নারীদেরকে পর পুরুষতো দূরের কথা বেপর্দাশীল নারীর নিকটও মিশতে নিষেধ করেছেন। আমরা পরিসংখ্যান করলে দেখতে পাই অথবা নারী জাতির দিকে তাকালে দেখতে পাই এই পর্যন্ত যত নারী এসিড নিেেপ জ্বলছে তাদের সবই বেপর্দা, পর্দা করে কিংবা বোরখা পরে এমন নারীকে এসিড মেরেছে এমন নজীর খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর। যত নারী আত্মহত্যা করেছে কিংবা বখাটে ছেলেদের জ্বালায় নির্যাতিত হয়েছে। তার সবই বেপর্দা । ইভটিজিং তথা বখাটেপনা আজকে বেপর্দারই ফসল। আজকের ইউরোপ আমেরিকায় প্রতি ৪৬ সেকেন্ডে একজন নারী ধর্ষিত এবং ৪৩% এর বেশি মানুষ জারজ এসবই বেপর্দার ফসল। পর্দা প্রথা বলে নারী জাতিকে তার সৌন্দর্য ঢেকে রাখতে যা সাধারণত বিপরীত লিঙ্গকে বেশি আকৃষ্ট করে, পর্দা করলে নারীর সম্মান বাড়বে, পর্দা প্রথা অর্থাৎ হিজাব যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত থাকতো এটা দ্বার্থহীন ভাষায় বলা যায়, যারা আজকে বখাটেপনার স্বীকার হচ্ছে তারা মুক্তি পেত। পর্দা না করার কারণে মেয়েদের বাহ্যিক সৌন্দর্য, বখাটেদের বেশি মাত্রায় আকৃষ্ট করে। আমরা পরিসংখ্যান করলে দেখী আজ পর্যন্ত বখাটেপনার শিকার হয়ে যত নারী আত্মহত্যা কিংবা অকাল মৃত্যুতে পতিত হয়েছে তার অধিকাংশই পর্দাকে উপো করছে। তারপরও কী আমরা পৃথিবীর সভ্য জাতি হিসাবে পর্দা প্রথাকে প্রতিষ্ঠিত করে এমন সব অত্যাচার নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে চাই না? আমার প্রশ্ন আপনারা কী আধুনিকতার শীর্ষে আমেরিকার মতো বাংলাদেশ চান? যেখানে প্রতি ৪৬ সেকেন্ডে একজন নারী ধর্ষিত হচ্ছে। যেখানে নারী পুরুষ অবাধ মেলামেশায় ৪৩% এর বেশি মানুষ জারজ হচ্ছে।

নারী জাতির শোচনীয়তা কেবলমাত্র আইয়ামে জাহেলিয়াতে সীমাবদ্ধ নয়, বরং জাহেলিয়াতের পর নারী আজ আবার ইসলামের আদর্শকে বাদ দিয়ে সর্বগ্রাসী আনন্দ উল্লাসের এক উপাদেয় বস্তুতে পরিণত হচ্ছে। আজকের বিশ্ব তার জ্বলন্ত প্রমাণ। আধুনিকতার শীর্ষে আমেরিকার কথা যারা বলে আমেরিকা নারী স্বাধীনতার দেশ। অথচ সেখানেই প্রতি ৪৬ সেকেন্ডে একজন নারী ধর্ষিত হয়। তারা বলে আমেরিকা সভ্যতার দেশ অথচ সেখানে প্রায় ৪৩% এর বেশি মানুষ জারজ সন্তান। তারা বলে আমেরিকা সোনার হরিণের দেশ অথচ সেখানেই সবচেয়ে বেশি মানুষ আত্মহত্যা করে। জাতির কাছে প্রশ্ন এটাই কী আধুনিকতা? এই প্রোপটে আমেরিকার এককালের খ্যাতিমান বিশ্লেষক জিমি সোয়াগাট আর্তনাদ করে বলেছেন আমেরিকা বিধাতা অবশ্যই তোমার বিচার করবেন। আর তিনি যদি তোমার বিচার না করেন তাহলে নৈতিক অপরাধ এবং লালসা চরিতার্থ করার অপরাধ সডোম ও ঘোমরার জনপদের (আদ, সামুদ, আর লুত সম্প্রদায়) অধিবাসিদের কেন ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল।

এক সময় ইউরোপ মেয়েদের কোন আত্মা আছে কিনা সন্দিহান ছিল, এমনকী তারা নারীদের শাস্তি দানের জন্য ইংল্যান্ডে এক পালার্মেন্ট গঠন করেছিল। গ্রীক দার্শনিকদের মতে সাপে দংশন করলে কিংবা আগুনে পুড়ালে চিকিৎসা সম্ভব, কিন্তু নারীর অনিষ্টের চিকিৎসা সম্ভব নয়। ভারতের সতীদাহ প্রথা আজও মানুষকে কাঁপিয়ে তোলে। আমরা লজ্জিত যে আধুনিক বাংলার নারী সমাজ নিজেকে স্ত্রী অথবা পরিবার শব্দের মাধ্যমে পরিচয় দিতে কুন্ঠিত হয়ে ইংরেজি শব্দ (WIFE) ব্যবহার করে পরিচয় দিতে তৃপ্তি পান। অথচ এর বিশ্লেষণ উগ্রপন্থীরা এভাবে করে থাকেন। W= wonderful, I= instrument F= for, E= Enjoymen: অর্থাৎ আনন্দ উল্লাসের এক উপভোগের এক অভূতপূর্ব যন্ত্র বিশেষ।

ইতালিতে প্রতি তিন ঘণ্টায় একজন নারী তার সতীত্ব হারায়। যার প্রতিবাদে প্রথম দিনই দুহাজার নারী রাস্তায় নামে। ১৯৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জন স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রে পনের বছরের কম বয়সের মেয়েদের প্রতি হাজারে ছয়শত আশি জন মেয়ে জারজ সন্তানের মা হচ্ছে। আমেরিকায় পাঁচ লাখেরও বেশি মেয়ে শুধু (Prostitute) হিসাবে জীবন কাটায়। এরা পনের ষোল বছরে উক্ত সেন্টারে আসে ত্রিশ পয়ত্রিশ বছর বয়সে ঐ স্থান ত্যাগ করে বিভিন্ন কর্ম েেত্র বাকী জীবন কাটায়। দার্শনিক নিটশের ভাষায় নারীকে এভাবে নগ্ন দেহ নিয়ে চলতে দিলে নারী এক সময় তার প্রজনন শক্তি হারিয়ে ফেলবে। তাইতো ইউরোপীয় ফ্রি-সেক্স এর দেশসমূহে নারীদের প্রজনন মতা কম। দু-একটি সন্তানের পর স্বভাবত তারা সন্তান ধারণের মতা হারিয়ে ফেলে। অতএব হে নারী সমাজ প্রগতির উপহার স্বরূপ নারী পর্দা প্রথাকে বাদ দেওয়ায় উপরক্ত ফসলটুকু কী তোমাদের সচেতনতার জন্য যথেষ্ট নয়?

নারীর দৈহিক গঠনাকৃতি, বুদ্ধি ও চরিত্রগত পার্থক্য সমন্ধে পুরুষের সঠিক জ্ঞানের অভাব। যদি পুরুষেরা নারীদের বেপর্দার কারণে তাদের মানসিক ও আত্মঘাতি ব্যাধির কথা উপলব্ধি করতে পারতো তাহলে পুরুষরাই নারীদের বেপর্দার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতো, নারীদের বাধ্য করতো পর্দার জন্য। এ সম্পর্কে কবি ড. আল্লামা ইকবাল বলেছেন, কি বুঝবে যার রগে ঠাণ্ডা রক্ত প্রবাহিত? অর্থাৎ যার অনুভূতি নেই। যেখানে পর্দা নেই সেখানে প্রকৃত শিক্ষাও নেই, নতুন কি পুরাতন, নারীর মর্যাদার ও সংরক একমাত্র পুরুষই হতে পারে, যে জাতি এ বাস্তব সত্য না বুঝতে পারে তার সৌভাগ্যের সূর্য অবশ্যই অস্তমিত হবে। নারীদের যেখানে কোনো সম্মান ছিল না, তারা ছিল বঞ্চিত লাঞ্ছিত, অবহেলিত তাদের স্বামী, মা ও বাবার সম্পত্তিতে কোনো অধিকার ছিলনা অথচ ইসলামই তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে অধিষ্ঠিত করেছিল। ইসলাম নারীদেরকে যে অর্থনৈতিক অধিকার দিয়েছে তা বাস্তব সত্য। ১৯৭০ সালে প্রথম ইংল্যান্ডে বিবাহিত মহিলাকে কারো সাথে পরামর্শ ব্যতিরেকে সম্পদ অর্জন ও বণ্টন করার অধিকার দিয়েছে। অথচ সে অধিকার ইসলাম নারীদেরকে ১৪০০ বছর পূর্বে দান করেছে। সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ, নবী বিশ্ব নবী মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ (সা.) নারীদের অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, তামাম পৃথিবীর সমস্ত জিনিস হল সম্পদ, আর পৃথিবীর সমস্ত সম্পদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ সম্পদ হল নেককারী নারী” রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেন যে, যে নারী ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজান মাসে রোজা রাখে স্বামীর আনুগত্য করবে, সতীত্বের হেফাজত করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহর জান্নাতের যে রাস্তা দিয়ে খুশি সে ঐ রাস্তা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” সুতারাং আমরা, নিসন্দেহে বলতে পারি ইসলামই নারীকে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিয়েছেন। আজকের বেপর্দাহীন আধুনিকতা নয়। আমরা আজকে দ্ব্যার্থহীন ভাষায় একথা বলতে পারি যে পর্দাকে মেনে চলার মাধ্যমে আমরা রা পেতে পারি এসিড সন্ত্রাস ও বখাটেপনার হাত থেকে। পর্দা উপেতি আধুনিকতা নারী সমাজকে যা দিল তা থেকে বের হয়ে আসার কিংবা পরিত্রাণ পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো পর্দা। বিশ্বস্রষ্টা, মহান রাব্বুল আলামিন এ সম্পর্কে বলেন, প্রত্যেকটি বয়সপ্রাপ্ত মেয়েদের এমন একটি চাদর পরা উচিত যে চাদরটা পরলে তার মাথা তার গলা তার বুকটা ঢেকে যাবে ” (সূরা নূর)।


No comments

Note: Only a member of this blog may post a comment.

Powered by Blogger.