ইসলাম ধর্ম হলো সম্পূর্ণ একটি কপি পেস্ট ধর্ম ?
ইসলাম ধর্ম হলো সম্পূর্ণ একটি কপি পেস্ট ধর্ম। সবকিছু ইহুদি খ্রিষ্টানদের কাছ থেকে নেওয়া। তথাকথিত সকল নবীই হলো, ইহুদীর বংশের।
এদের অনেকে ইহুদী রাষ্ট্র নায়ক ছিলো রাজা ছিলো। মুহম্মদই ছিলো একমাত্র পৌত্তলিক পরিবারের সন্তান। যে নিজেকে হঠাৎ নবী দাবী করা শুরু করে।
লিখেছেনঃ মোঃ নাসির শেখ
#ANS-
কপি পেস্ট এর ব্যবহারিক প্রয়োগ আমরা সবাই জানি। মানে দেখে দেখে অন্য কোথাও হুবহু লেখাকে বোঝায়। ইলেকট্রনিক ডিভাইসে কপি পেস্ট করার মাধ্যমে সহজেই সবাই তা বুঝতে পারি যে তাতে একটা অক্ষরও চেঞ্জ হয় না। যা কপি করা হয় পেস্ট করার পর তাইই লেখা আসে। এখানে পোস্টকারী আরো স্পষ্ট ভাষায় বলছেন সম্পূর্ণ কপি পেস্ট করে নাকি ইসলাম বানানো। যাইহোক, কতগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে যে ইসলাম কপি পেস্টের মাধ্যমে এসছে কি না।
এমন দাবিতে প্রথম যে কথাটি আসে তাহল, কপি পেস্ট হলে ইসলাম ও উল্লেখিত (ইহুদি ও খ্রিস্টান) ধর্মের মধ্যে পার্থক্য হওয়ার কথা না; তবে পার্থক্য কেন?
স্রষ্টা কর্তৃক সন্তান জন্ম দেয়া না দেয়ার পার্থক্যই কেন হবে? সকল ধর্মে স্রষ্টাকে নিয়ে অনেক ধারণা দেয়া আছে। ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মে স্রষ্টা যথাক্রমে উজাইর (কোরআন ৯ঃ৩০ এর তাফসীর। তৎকালীন সময়ে ইহুদিদের কিছু অংশ মনে করতো) ও যীশু ঈশ্বরের পুত্র। বাইবেল, মথি- ৩ঃ১৬,১৭, যোহন- ১৪ঃ২৮,০৯ ইত্যাদি।
অথচ ইসলাম এই দাবির সাথে একাত্মতা তো করেইনি এবং বিনা বাক্যব্যয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। কোরআনে (৯ঃ৩০) "ইয়াহূদীরা বলে: উযাইর আল্লাহ তা‘আলার ছেলে আর খ্রিস্টানরা বলে, ঈসা (রাঃ) আল্লাহ তা‘আলার ছেলে। উভয় দলই এ কথা বলার কারণে কাফির।"
কোরআনে আরো বলা হয়েছে, তিনি (আল্লাহ) কাউকে জন্মদান করেননি এবং কারো থেকে জন্মগ্রহন করেননি। (কোরআন 112:3)
এখন, মুহাম্মাদ সঃ যদি বাইবেল থেকে "যীশু আল্লাহর পুত্র" কপি করেন তবে কোরআনে পেস্ট করার সময় কেন "যীশু আল্লাহর পুত্র নন" হয়ে গেলো? কপি পেস্টে কি এমন হয়? যদি হয় তবে আপনি কপি পেস্ট জানেনও না বোঝেনও না।
ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ যা খ্রিস্টানদেরও ধর্মগ্রন্থ ওল্ড টেস্টামেন্ট হিসেবে পরিচিত। তাতে বলা হচ্ছে, সুলায়মান আঃ জীবনের শেষের দিকে মূর্তিপূজা করেন ও মন্দির স্থাপন করেন। বাইবেল, ১ রাজাবলী(1 Kings) ১১:১-১০ দ্রষ্টব্য। এখানে ৪-৭ নাম্বারের ভার্স দেয়া হল-
৪। শলোমনের তখন বয়স হয়েছিল, স্ত্রীদের পাল্লায় পড়ে তিনি অন্যান্য মূর্ত্তির পূজা করতে শুরু করেন। তাঁর পিতা রাজা দায়ূদের মতো একনিষ্ঠ ভাবে শলোমন শেষ পর্য়ন্ত প্রভুকে অনুসরণ করেন নি।
৫। শলোমন সীদোনীয় দেবী অষ্টোরত এবং অম্মোনীয়দের ঘৃণ্য পাষাণ মূর্ত্তি মিল্কমের অনুগত হন।
৬। অতএব শলোমন প্রভুর সামনে ভুল কাজ করলেন। তিনি পুরোপুরি প্রভুর শরণাগত হননি য়ে ভাবে তাঁর পিতা দায়ূদ হয়েছিলেন।
৫। শলোমন সীদোনীয় দেবী অষ্টোরত এবং অম্মোনীয়দের ঘৃণ্য পাষাণ মূর্ত্তি মিল্কমের অনুগত হন।
৬। অতএব শলোমন প্রভুর সামনে ভুল কাজ করলেন। তিনি পুরোপুরি প্রভুর শরণাগত হননি য়ে ভাবে তাঁর পিতা দায়ূদ হয়েছিলেন।
৭। এমনকি তিনি মোয়াবীয়দের ঘৃণ্য মূর্ত্তি কমোশের আরাধনার জন্য জেরুশালেমের পাশেই পাহাড়ে একটা জায়গা বানিয়ে দিয়েছিলেন। ঐ একই পাহাড়ে তিনি ঐ ভযংকর মূর্ত্তির আরাধনার জন্যও একটি জায়গা বানিয়ে ছিলেন।
১০ নাম্বার আয়াত আরো ভয়াবহ। ভয়াবহ একজন্য যে তা কোরআনের সাথে পুরোপুরিভাবে সাংঘর্ষিক। আসুন দেখে নেই-
১০। তাঁকে অন্য মূর্তির পূজা করতে নিষেধ করা সত্ত্বেও শলোমন সেই নিষেধ মানেন নি।
কোরআন অনুযায়ী কোন নবী পাপী ছিলেন না, সরাসরি বলে যে সুলাইমান(আ.) কুফরী করেননি। দেখুন সুরা বাকারাহ ২:১০২
"তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত। তারা উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের হয়ো না। অতঃপর তারা তাদের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যদ্দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তারা আল্লাহর আদেশ ছাড়া তদ্দ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারত না। যা তাদের ক্ষতি করে এবং উপকার না করে, তারা তাই শিখে। তারা ভালরূপে জানে যে, যে কেউ জাদু অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা আত্নবিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত।"
সুলাইমান (আ.) কখনো আল্লাহর সাথে শির্ক করেননি। দেখুন সুরা আন'আম ৬:৮৪-৮৮
"আমি তাঁকে দান করেছি ইসহাক এবং এয়াকুব। প্রত্যেককেই আমি পথ প্রদর্শন করেছি এবং পূর্বে আমি নূহকে পথ প্রদর্শন করেছি-তাঁর সন্তানদের মধ্যে দাউদ, সোলায়মান, আইউব, ইউসুফ, মূসা ও হারুনকে। এমনিভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি (৮৪)। আর ও যাকারিয়া, ইয়াহিয়া, ঈসা এবং ইলিয়াসকে। তারা সবাই পুণ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত ছিল (৮৫)। এবং ইসরাঈল, ইয়াসা, ইউনূস, লূতকে প্রত্যেককেই আমি সারা বিশ্বের উপর গৌরবাম্বিত করেছি (৮৬)। আর ও তাদের কিছু সংখ্যক পিতৃপুরুষ, সন্তান-সন্ততি ও ভ্রাতাদেরকে; আমি তাদেরকে মনোনীত করেছি এবং সরল পথ প্রদর্শন করেছি (৮৭)। এটি আল্লাহর হেদায়েত। স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা, এপথে চালান। যদি তারা শিরকি★ করত, তবে তাদের কাজ কর্ম তাদের জন্যে ব্যর্থ হয়ে যেত (৮৮)।
★ শিরকি মানে হচ্ছে আল্লাহকে শরীক করা। তিনি (সুলায়মান আঃ) শিরক করেন নাই। যা বাইবেলের বর্ণনায় মূর্তিপূজার ঘটনার সাথে সাংঘর্ষিক।
রাসুলুল্লাহ সাঃ বাইবেল থেকে (মূর্তিপূজক বা মুশরিক) কপি করলে পেস্টে গিয়ে কোরআনে ভিন্ন কথা (নন-মুশরিক) হল কেন?
আরো দুর্দান্ত বলছেন আমাদের সবার শ্রদ্ধাভাজন আরিফ আজাদ ভাই তার প্যারাডক্সিকাল সাজিদ সিরিজের প্রথম বইয়ের ৯৩ পৃষ্টায়। সেখানে গল্পের এক পর্যায় আসে কোরআন কপি কিনা। বলা হয়, মুসা আঃ এর যুগে শাসককে "ফেরাউন" আর ইউসুফ আঃ এর যুগে শাসককে "রাজা" বলা হত। এটা ঐতিহাসিকভাবে প্রমানিত। বাইবেলে দুই যুগের শাসককেই "ফেরাউন" বলা হয়েছে যা ভুল। কিন্তু, কোরআনে মুসা আঃ এর যুগের শাসককে "ফেরাউন" এবং ইউসুফ আঃ এর যুগের শাসককে "রাজা" বলা হয়েছে।
লেখাপড়া না জানা, আগে কোন কিতাব না লেখা, ইতিহাস না জানা একটা মানুষ কিভাবে তা নির্ভুলভাবে তা লিখতে পেরেছিলেন?
এমন প্রসঙ্গে স্বয়ং আল্লাহ তাদের এমন ভূয়া দাবির উত্তর দিয়েছেন চৌদ্দশত বছর আগেই। ইমতিয়াজ ভাইয়েরা হয়তো জানেন না। আল্লাহ বলেন,
এমন প্রসঙ্গে স্বয়ং আল্লাহ তাদের এমন ভূয়া দাবির উত্তর দিয়েছেন চৌদ্দশত বছর আগেই। ইমতিয়াজ ভাইয়েরা হয়তো জানেন না। আল্লাহ বলেন,
وَ مَا کُنۡتَ تَتۡلُوۡا مِنۡ قَبۡلِہٖ مِنۡ کِتٰبٍ وَّ لَا تَخُطُّہٗ بِیَمِیۡنِکَ اِذًا لَّارۡتَابَ الۡمُبۡطِلُوۡنَ ﴿۴۸﴾
29:48
তুমি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করনি, আর তুমি নিজ হাতে কোন কিতাব লেখনি, এমন হলে মিথ্যাবাদীরা সন্দেহ পোষণ করত।
তুমি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করনি, আর তুমি নিজ হাতে কোন কিতাব লেখনি, এমন হলে মিথ্যাবাদীরা সন্দেহ পোষণ করত।
আহসানুল বায়ান
তুমি তো এর পূর্বে কোন গ্রন্থ পাঠ করতে না[১] এবং তা নিজ হাতে লিখতেও না[২] যে, মিথ্যাবাদীরা (তা দেখে) সন্দেহ পোষণ করবে।[৩]
তুমি তো এর পূর্বে কোন গ্রন্থ পাঠ করতে না[১] এবং তা নিজ হাতে লিখতেও না[২] যে, মিথ্যাবাদীরা (তা দেখে) সন্দেহ পোষণ করবে।[৩]
[১] কারণ, তিনি নিরক্ষর ছিলেন।
[২] কারণ, লেখার জন্যও শিক্ষা আবশ্যিক, যা তিনি কারোর নিকট থেকে অর্জন করেননি।
[৩] অর্থাৎ, যদি তিনি শিক্ষিত ব্যক্তি হতেন বা কোন শিক্ষকের নিকট কিছু শিখতেন, তাহলে লোকে বলত যে, কুরআন মাজীদ অমুকের সাহায্যে (রচিত গ্রন্থ) বা অমুকের নিকট শিক্ষার ফল।
এমন আয়াত নাজিলের পর যদি তা সঠিক না হত তবে সাহাবীরা তা মেনে নিতে পারতেন না এবং রাসুলুল্লাহ সাঃ এর বিরোধীতা করতেন। ফলে তার অনুসারী পাওয়া যেতো না। যা ঘটেনি। এই আয়াত দ্বারাই প্রমান যথেষ্ট যে নবী মুহাম্মাদ সঃ বাইবেল থেকে কপি করেননি।
বাইবেল থেকে "ফেরাউন" কপি করলে কোরআন পেস্ট করার সময় "রাজা"হয়ে গেল কেন? এ কেমন কপি! এমন উদাহরণ অনেক দেয়া যাবে। তারপরেও বিবেকহীন হলে বলতে পারেন কোরআন বা ইসলাম কপি করা।
ইহুদি খ্রিষ্টানদের সাথে কিছুটা মিল হওয়ার কারণ দেখে নেই। ধর্মগুলো আব্রাহামিক ধর্ম থেকে এসছে যা সময়ের সাথে বিকৃত হয়েছে।
“অবশ্যই আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন (জীবন ধারণের সঠিক ব্যবস্থা) হচ্ছে ইসলাম (আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ)।” (কোরআন ৩:১৯) “আজকে আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে(জীবন ব্যবস্থার আইন কানুন) পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার সকল নেয়ামত (রহমত) সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে(আত্মসমর্পণ করাকে) তোমাদের দ্বীন (জীবন ব্যবস্থা) হিসেবে মনোনীত করলাম।” (কোরআন ৫:৩)
“অবশ্যই আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন (জীবন ধারণের সঠিক ব্যবস্থা) হচ্ছে ইসলাম (আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ)।” (কোরআন ৩:১৯) “আজকে আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে(জীবন ব্যবস্থার আইন কানুন) পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার সকল নেয়ামত (রহমত) সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে(আত্মসমর্পণ করাকে) তোমাদের দ্বীন (জীবন ব্যবস্থা) হিসেবে মনোনীত করলাম।” (কোরআন ৫:৩)
পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম এই কথার দ্বারা বোঝা যাচ্ছে দ্বীন (ইসলাম) ব্যবস্থাটি একদিন দুইদিনে আসেনি। এসেছে মানব জাতীর মেধা মননের বিকাশের সাথে সাথে ক্রমান্নয়ে পৃথিবীতে মানব আগমণের সূচনা থেকে সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সাঃ এর মাধ্যমে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেছেন “বল (হে মুসলমানগণ): আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি, আমাদের জন্য যে জীবন ব্যবস্থা নাযিল হয়েছে তার প্রতি এবং যা ইবরাহীম, ইসমাইল, ইয়াকুব ও ইয়াকুবের বংশধরদের প্রতি নাযিল হয়েছে আর যা মূসা, ঈসা ও অন্যান্য সকল নবীকে তাদের রবের তরফ হতে দেওয়া হয়েছিল, তার প্রতি। আমরা তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না এবং আমরা আল্লাহরই নিকটে আত্মসমর্পনকারী।” (কুরআন ২:১৩৬)
তাই, কোরআনে ইহুদি-খৃষ্টান, তৌরাহ-ইঞ্জিল, বাইবেল এর কোন কিছুর সাথে মিল পাওয়া স্বাভাবিক। আল্লাহ্ কিংবা মুহাম্মদ সাঃ কখনও এমন দাবি করেন নাই যে নতুন কোন জীবন বিধান নিয়ে এসছেন।
ইহুদি খ্রিস্টান ধর্ম থেকে কপি করা হলে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সাথে মক্কার লোকদের বিরোধীতা হবার কথা নয়। কথাটা বলার আগে কি ভাবার দরকার ছিলো না?
পোস্টকারীর ভাষায়, তথাকথিত সকল নবীই নাকি ইহুদি বংশের! ইহুদি' শব্দটি এসেছে শব্দ 'ইয়াহুদা' থেকে যিনি ছিলেন নবী মোশির পূর্বপুরুষ ও ইয়াকুব এর পুত্র ও নবী ইউসুফ এর বড় ভাই ৷ যদিও এ ধর্মের প্রবর্তক মুসা কিন্তু ইহুদিরা বলেন এ ধর্মের প্রবর্তক আব্রাহাম। আব্রাহাম বা ইব্রাহিম আঃ ইহুদি ধর্ম চালু করেন কোন যুক্তিতে যেখানে ইয়াকুব আঃ এর পুত্র ইয়াহুদার জন্ম হয় অনেক পরে! এই বংশকে তো ইয়াকুব আঃ এর বংশও বলা যায় এক হিসেবে। ইয়াহুদার জন্মের আগের নবী রাসুল তাহলে এই বংশ থেকে আসেন নাই তা চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায়। পোস্টকারীর দাবি ছিলো সকল নবীই ইহুদি বংশের। কিছুটা ভুল প্রমাণিত হল।
আরেকটু ধাক্কা দিলে পুরো লজিক উড়ে যাবে। ইহুদি খ্রিস্টান নাম কোন নবী-রাসুল দেন নাই। কোন ধর্মগ্রন্থেও এই নাম নাই। এই নাম মানুষের দেয়া। তাঁদের অনুসারীগণ নবীর নামে (ইহুদা হতে ইহুদী, ক্রাইস্ট হতে খৃষ্টান ইত্যাদি) নিজেদের নামকরণ করেন এবং উভয় দল হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-কে তাঁদের সধর্মাবলম্বী বলে দাবী করেন । এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে-
অর্থ-"তোমরা কি বলতে চাও, ইব্রাহীম, ইসমাইল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তাঁর বংশধর ইহুদী কিংবা খৃষ্টান? (হে রাসুল!) বলুন, তোমরা কি আল্লাহ্ অপেক্ষা অধিকতর জ্ঞাত" (সূরা- বাকারা, আয়াত- ১৪০) ।
অর্থ-"তোমরা কি বলতে চাও, ইব্রাহীম, ইসমাইল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তাঁর বংশধর ইহুদী কিংবা খৃষ্টান? (হে রাসুল!) বলুন, তোমরা কি আল্লাহ্ অপেক্ষা অধিকতর জ্ঞাত" (সূরা- বাকারা, আয়াত- ১৪০) ।
'হুনাফা’ শব্দটি পবিত্র কোরআনে বহুবার ব্যবহৃত হয়েছে। যার অর্থ শিরিকমুক্ত একত্ববাদী ধর্ম, যা পবিত্র কোরআনে ইব্রাহিম আঃ এর ধর্ম বলে উল্লেখিত। হযরত ইব্রাহীম আঃ আল্লাহর কাছে এই বলে ফরিয়াদও করেছেন যে তার প্রতিষ্ঠিত সত্য ধর্ম ‘হানিফের’ ওপর যেন তার পরবর্তী বংশধরদের প্রতিষ্ঠিত রাখেন। আল্লাহ পাক হযরত ইব্রাহিম আঃ এর এই দোয়া কবুল করেছিলেন। ইতিহাস পর্যালোচনা করলেও দেখা যায়, মহানবী সাঃ এর আবির্ভাবের আগে আরবের সব লোকই পৌত্তলিক ছিল না। তাদের মধ্যে একেশ্বরবাদী ‘হানিফ’ ধর্মের অনুসারীও ছিলেন, যারা পবিত্র কাবায় হজ্ব ইত্যাদি ধর্ম পালনের উদ্দেশ্যে যেতেন; কিন্তু, মূর্তি পূজা করতেন না। তাছাড়া তাঁদের মধ্যে পূর্ববর্তী নবীদের আঃ অনুসারী ‘আহলে কিতাব’রাও ছিলেন। এছাড়া পবিত্র কোরআনের সুরা আল ইমরানের ১৬৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন,
لَقَدْ مَنَّ اللّٰهُ عَلَی الْمُؤْمِنِیْنَ اِذْ بَعَثَ فِیْهِمْ رَسُوْلًا مِّنْ اَنْفُسِهِمْ یَتْلُوْا عَلَیْهِمْ اٰیٰتِهٖ وَ یُزَكِّیْهِمْ وَ یُعَلِّمُهُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ ۚ وَ اِنْ كَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ۱۶۴
3:164
আল-বায়ান: ১৬৪ অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের উপর অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য থেকে তাদের প্রতি একজন রাসূল পাঠিয়েছেন, যে তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে আর তাদেরকে কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেয়। যদিও তারা ইতঃপূর্বে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে ছিল।
3:164
আল-বায়ান: ১৬৪ অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের উপর অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য থেকে তাদের প্রতি একজন রাসূল পাঠিয়েছেন, যে তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে আর তাদেরকে কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেয়। যদিও তারা ইতঃপূর্বে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে ছিল।
এছাড়া কোরআনের আয়াত, 95قُلْ صَدَقَ اللّٰهُ ۫ فَاتَّبِعُوْا مِلَّةَ اِبْرٰهِیْمَ حَنِیْفًا ؕ وَ مَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ۹۵ অর্থাৎ, বলো আল্লাহ সত্য বলছেন, অনুসরণ করো ইব্রাহিমের ধর্ম হানিফের। (৩ : ৯৫)
পবিত্র কোরআন এ কথার সাক্ষ্য বহন করে যে হযরত ইব্রাহিমের পরে যত নবী রাসুল এসেছেন, তাঁরা সবাই হযরত ইব্রাহিমের পবিত্র বংশধর থেকেই এসেছেন। সব রাসুল এমনকি আমাদের প্রিয় নবী সাঃ ও ইব্রাহিম আঃ এর হানিফ ধর্মের অনুসারী ছিলেন। যেমন দেখুন পবিত্র কোরআনের আয়াত, ‘অতঃপর আপনার প্রতি প্রত্যাদেশ প্রেরণ করেছি যে আপনি ইব্রাহিমের ধর্ম অনুসরণ করুন।’ (সুরা নহল :১২৩)
সুতরাং রাসুল সাঃ এর পরিবারের মধ্যে যদি মুমিন না থাকতেন, তাহলে আল্লাহতায়ালা এ কথা কেন বললেন যে তিনি মুমিনদের মধ্য থেকে রাসুল পাঠিয়েছেন (৩:১৬৪ এর আয়াত একটু উপরে)? তারা যদি পৌত্তলিক হত তবে তখনকার মানুষেরা এই আয়াতের জন্য ইসলামের উপর ঈমান আনতো না মিথ্যার দায় দিয়ে। সুতরাং, পবিত্র কোরআন এ কথাই প্রমাণ করে যে নবী সাঃ এর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যই ঈমানদার, মুমিন ও হানিফ ছিলেন। তাছাড়া প্রিয় নবী সাঃ এর মা-বাবা, প্রিয় চাচা আবু তালেব কখনো একবারের জন্য হলেও মুর্তি পূজা করেছেন এমন কোন দৃষ্টান্ত কেউ ইতিহাস থেকে দেখাতে পারবে না।
পবিত্র কোরআন এ কথার সাক্ষ্য বহন করে যে হযরত ইব্রাহিমের পরে যত নবী রাসুল এসেছেন, তাঁরা সবাই হযরত ইব্রাহিমের পবিত্র বংশধর থেকেই এসেছেন। সব রাসুল এমনকি আমাদের প্রিয় নবী সাঃ ও ইব্রাহিম আঃ এর হানিফ ধর্মের অনুসারী ছিলেন। যেমন দেখুন পবিত্র কোরআনের আয়াত, ‘অতঃপর আপনার প্রতি প্রত্যাদেশ প্রেরণ করেছি যে আপনি ইব্রাহিমের ধর্ম অনুসরণ করুন।’ (সুরা নহল :১২৩)
সুতরাং রাসুল সাঃ এর পরিবারের মধ্যে যদি মুমিন না থাকতেন, তাহলে আল্লাহতায়ালা এ কথা কেন বললেন যে তিনি মুমিনদের মধ্য থেকে রাসুল পাঠিয়েছেন (৩:১৬৪ এর আয়াত একটু উপরে)? তারা যদি পৌত্তলিক হত তবে তখনকার মানুষেরা এই আয়াতের জন্য ইসলামের উপর ঈমান আনতো না মিথ্যার দায় দিয়ে। সুতরাং, পবিত্র কোরআন এ কথাই প্রমাণ করে যে নবী সাঃ এর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যই ঈমানদার, মুমিন ও হানিফ ছিলেন। তাছাড়া প্রিয় নবী সাঃ এর মা-বাবা, প্রিয় চাচা আবু তালেব কখনো একবারের জন্য হলেও মুর্তি পূজা করেছেন এমন কোন দৃষ্টান্ত কেউ ইতিহাস থেকে দেখাতে পারবে না।
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.