ইরাম গোত্র নিয়ে মিথ্যাচার করলেন নাস্তিক অন্ধ বিশ্বাসীরা ?
ইরাম গোত্র নিয়ে মিথ্যাচার
লিখেছেনঃ আফিফ আলী সাদাফ
নাস্তিকের ব্লগ পোস্টের প্রথম অসঙ্গতি হল যে, ইরাম সৌদির শহর ছিল। কোন প্রাচীন তাফসীরবিদ এইসব কথা বলেনা এইটা বানিয়ে বলেছেন। ইরাম রা ছিল নুহ আঃ এর বংশধর এবং সৌদিতে তাদের কোন অস্তিত্ব ই পাওয়া যায়না। মূলত নুহ আঃ ছিলেন মেসোপটেমিয়া সভ্যতার যা বিস্তৃত বর্তমান ছিল সিরিয়া হতে কুয়েত অব্দি। মাঝে ছিল ইরাক। এমনকি ইরানেও তাদের কোন সম্পর্ক ছিলনা নিচে ১ নম্বর ছবিটি দেখুন।
আর অনেকে বলেন যে, ইরাম বলতে গোত্র বোঝায় শহর না। মূলত ইরাম বলতে কি বোঝায় সেটাতে পরে আসছি প্রথমে আয়াতটির বিশ্লেষণ করা যাক আয়াতটি হল
89:7
اِرَمَ ذَاتِ الۡعِمَادِ ۪ۙ﴿۷﴾
Bengali - Bayaan Foundation
ইরাম গোত্রের সাথে, যারা ছিল সুউচ্চ স্তম্ভের অধিকারী?
Bengali - Bayaan Foundation
ইরাম গোত্রের সাথে, যারা ছিল সুউচ্চ স্তম্ভের অধিকারী?
এখানে ইরাম দিয়ে একটা সম্প্রদায় বোঝানো হচ্ছে। কেননা এখানে বলা হচ্ছে ذَاتِ যাত বা বাংলায় জাতি বোঝায়। তবে এক্ষেত্রে বিশেষ লক্ষণীয় বিষয় হল কেন তাদের ইরাম বলা হত? মূলত ইরাম কোন আলাদা গোত্র বা জাত না।
আদ ও সামুদ জাতিদ্বয়ের বংশলতিকা উপরের দিকে ইরামে গিয়ে এক হয়ে যায়। তাই আয়াতে বর্ণিত ইরাম শব্দটি ‘আদ ও সামূদ উভয়ের বেলায় প্রযোজ্য। এখানে ইরাম শব্দ ব্যবহার করে ‘আদ-গোত্রের পূর্ববতী বংশধর তথা প্রথম ‘আদকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। তারা দ্বিতীয় ‘আদের তুলনায় ‘আদের পূর্বপুরুষ ইরামের নিকটতম বিধায় ( তাফসীর ডঃ আবু বকর যাকারিয়া)
এইখানে আদ এবং সামুদ জাতি ইরাম এ গিয়ে এক হয়ে যায়।
তারা দ্বিতীয় ‘আদের তুলনায় ‘আদের পূর্বপুরুষ ইরামের নিকটতম বিধায় তাদেরকে عادإرم ‘আদে-ইরাম শব্দে ব্যক্ত করা হয়েছে এবং সূরা আন-নাজমে عَادَانِالْاُوْاٰى শব্দ দ্বারা বর্ণনা করা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর]
এখানে তাদের বিশেষণে বলা হয়েছে ذات العماد মূলত: عملد শব্দের অর্থ স্তম্ভ। তারা অত্যন্ত দীর্ঘকায় জাতি ছিল বিধায় তাদের ذَاتِ الْعِمَادِ বলা হয়েছে। অপর কারো কারো মতে তারা যেহেতু অট্টালিকায় বাস করত সেহেতু তাদেরকে ذَاتِ الْعِمَادِ বলা হয়েছে। কারণ অট্টালিকা নির্মাণ করতে স্তম্ভ নির্মানের প্রয়োজন হয়। তারা সর্বপ্রথম এ জাতীয় অট্টালিকা নির্মাণ করে। দুনিয়ায় তারাই সর্বপ্রথম উঁচু উঁচু স্তম্ভের ওপর ইমারত নির্মাণ করার কাজ শুরু করে। কুরআন মজীদের অন্য জায়গায় তাদের এই বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলা হয়েছে: হূদ আলাইহিস্ সালাম তাদেরকে বললেন, ‘তোমাদের এ কেমন অবস্থা, প্রত্যেক উঁচু জায়গায় অনর্থক একটি স্মৃতিগৃহ তৈরি করছো এবং বড় বড় প্রাসাদ নির্মাণ করছো, যেন তোমরা চিরকাল এখানে থাকবে।” [সূরা আশ শু‘আরা: ১২৮-১২৯]
এখানে তাদের বিশেষণে বলা হয়েছে ذات العماد মূলত: عملد শব্দের অর্থ স্তম্ভ। তারা অত্যন্ত দীর্ঘকায় জাতি ছিল বিধায় তাদের ذَاتِ الْعِمَادِ বলা হয়েছে। অপর কারো কারো মতে তারা যেহেতু অট্টালিকায় বাস করত সেহেতু তাদেরকে ذَاتِ الْعِمَادِ বলা হয়েছে। কারণ অট্টালিকা নির্মাণ করতে স্তম্ভ নির্মানের প্রয়োজন হয়। তারা সর্বপ্রথম এ জাতীয় অট্টালিকা নির্মাণ করে। দুনিয়ায় তারাই সর্বপ্রথম উঁচু উঁচু স্তম্ভের ওপর ইমারত নির্মাণ করার কাজ শুরু করে। কুরআন মজীদের অন্য জায়গায় তাদের এই বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলা হয়েছে: হূদ আলাইহিস্ সালাম তাদেরকে বললেন, ‘তোমাদের এ কেমন অবস্থা, প্রত্যেক উঁচু জায়গায় অনর্থক একটি স্মৃতিগৃহ তৈরি করছো এবং বড় বড় প্রাসাদ নির্মাণ করছো, যেন তোমরা চিরকাল এখানে থাকবে।” [সূরা আশ শু‘আরা: ১২৮-১২৯]
অর্থাত ইরাম কোন বিশেষ জাত বা গোত্র নয় বরং আদ এবং সামুদ জাতির লোকেরা ইরামে গিয়ে একত্রিত হয়ে যায়। সেখানে তাদের একটি সভ্যতা গড়ে উঠে সেইটাই ইরাম নামে পরিচিত। তাদের যাতাল ইরাম বলা হত উঁচু উঁচু ইমারত তৈরির জন্য।
প্রশ্ন হল (ইরাম) এই জিনিস বলতে বোঝায় কি? মূলত প্রাচীন আরবরা (ইরাম) সম্পর্কে কিছু জানতো না তারা শুধু জানতো আদ - সামুদ গোত্রের কথা আদ এবং সামুদ গোত্র ইরামে গিয়ে একত্রিত হয় যার ফলে তাদের ইরাম বলে ডাকা হয়েছে। এই (ইরাম) শব্দটি দিয়ে মুফাসসিরদের বহু মতামত আছে
ইবনে কাথির বলেন, ইরাম দিয়ে গোত্র বুঝানো হয়
পক্ষান্তরে তাফসীরে আহসানুল বায়ানে
ইরাম শব্দটি দিয়ে বোঝানো হয়েছে আদ জাতির দাদা বা পিতামহের নাম [রেফারেন্স ১]
তাফসীর তানউইর আল মিক্কবাস মিন তাফসির ইবন আব্বাস এর মাঝে এসেছে
(ইরাম) হল Shem নুহ আঃ এর ছেলে যার একটি ছেলে ছিল যার নাম Shim এবং তার পরে আরেকজন ছেলে যার নাম হাম এবং তার ছেলে আদ।
মুফাসসিরদের মাঝে অনেক মতানৈক্য ছিল এটি একদম ইখতিলাফি বিষয় ছিল একেকজনের একেক মত ছিল কেউই স্পষ্ট করে জানতো না যে ইরাম বলে আদৌ কি বোঝানো হচ্ছে।
তাই এই কথা বলা অসত্য যে ইরাম বলতে গোত্র বোঝানো হত। আসলে ব্যাপারটা তা নয় ততকালীন আরবরাও ইরাম বলতে কি বোঝানো হচ্ছে তা সম্পর্কে জ্ঞান রাখতো যদি রাখতো তবে আদ এবং সামুদ জাতির বর্ণনার মত অবশ্যই একই রকম বর্ণনা প্রাচীন তাফসীরগুলোতে পাওয়া যেত তবে উপোরোক্ত তাফসীর গুলোর মাঝে অনেক আধুনিক তাফসীরও রয়েছে যেখানেও ইরাম বলতে বোঝানো হচ্ছে বিশেষ মানুষ বা অমুকের পিতামহ। বস্তুত ইরাম বলতে প্রকৃত অর্থে কি বোঝানো হচ্ছে তা কোন আরবই বা কোন মুফাসসির শিওর জানতেন না।
তবে National Geographic বইয়ের মাঝে উল্লেখ করা হয় যে, তারা মাটির নিচে একটি পরিত্যক্ত শহর পায় যার মাঝে অনেক Ebla Tablets বা মাটির তৈরী ট্যাবলেট পাওয়া যায় সেখানে ইব্রাহীম আঃ, ইসমাইল আঃ এর নামের পাশাপাশি (ইরাম) শব্দটিও রয়েছে। যেখানে আদ জাতিরা নিজেদের সভ্যতা গড়ে তুলেছিল
এবং সবচেয়ে মজার কথা সেই National Geographic বইটিতে আলাদাভাবে (কুরান) শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে এমনকি সুরা নম্বর সহ নিচে স্ক্রিনশট রইলো বইটির পিডিএফ এখান হতে ডাউনলোড করতে পারেন।
বেশি কিছুই বলব না শুধু অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করুন আজ থেকে হাজার হাজার বছির পুরোনো এমনকি মুহাম্মাদ সাঃ এর জন্মেরও বহু বছর আগের কথা। ১৯৭০ সাল অব্দিও এই শহরের কথা কেউ জানতো কিন্তু একজন মানুষ মরুভুমির মাঝে বসে কিভাবে এই কথা জানলেন??
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.