সব প্রাণী কি মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে ? কুরানের আয়াত কি ভুল ? আফিফ আলী সাদাফ
প্রশ্নঃ প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে ?
লিখেছেনঃ আফিফ আলী সাদাফ
জবাবঃ
প্রশ্ন হচ্ছে যে , কুরআনের মধ্যে একাধিক জায়গায় বলা হয়েছে যে , প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে । কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান বলছে যে , Amoeba ( অ্যামিবা ) , Bacteria ( ব্যাকটেরিয়া ) , Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) , জেলিফিশ ( Jelyfish) , হাইড্রা ( Hydra ) মৃত্যুবরণ করেনা । পাঠকদের মনে এই প্রশ্নের উদ্ভাবন হতে পারে যে , আধুনিক বিজ্ঞান তো বলছে আরও অনেক প্রাণীর কথা কিন্তু আমি কেন মাত্র এই তিনটি অণুজীবের কথা তুললাম ? এর উত্তর যদি দিতে যাই তাহলে অনেক বিস্তর আলোচনা করতে হবে ফলে লেখাটা গোঁজামিল মনে হবে । তাই খুব সংক্ষেপে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ ।
প্রথমত বলতে চাই যে , জীব জগতের মধ্যে যতগুলো প্রাণী বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করতে পেরেছে তাদের মধ্যে প্রতিকূল পরিবেশের টিকে থাকার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি এই তিন শ্রেণীর যা আমি উপরে উল্লেখ করেছি । এই তিন শ্রেণীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টিকে থাকার ক্ষমতা আছে Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) এর এরা মহাকাশেও বিনা সুরক্ষায় খুব সহজে টিকে থাকতে পারে । আধুনিক বিজ্ঞানীদের মতে Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) ই হল সেই প্রাণী যাদের সবচেয়ে বেশি টিকে থাকার ক্ষমতা রয়েছে এর চেয়ে বেশি টিকে থাকা কোন প্রাণীর উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়নি । তাই আমি এই তিন প্রাণী নিলাম এদেরকেও যদি আমি রেফারেন্স দিয়ে নশ্বর প্রমাণ করতে পারি তাহলে অন্যগুলোও আপনা আপনি প্রমাণিত হয়ে যাবে যে , তারা মারা যায় কি বা না ।
প্রথমত আসি আল্লাহ কুরআনে কি বলেছেন আল্লাহ বলেন ,
⦁ كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ۗ وَنَبْلُوكُمْ بِالشَّرِّ وَالْخَيْرِ فِتْنَةً ۖ وَإِلَيْنَا تُرْجَعُونَ
⦁ প্রতিটি প্রাণ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে; আর ভাল ও মন্দ দ্বারা আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি এবং আমার কাছেই তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে। [ 1 ]
এইরকম কথা কুরআনে আরও জায়গায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে । এবং আমরা দেখবো যে কিভাবে অণুজীবগুলো মারা যায় । প্রথমত আসি Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) নিয়ে । অনেকের মনে এই জিনিস গেঁথে আছে যে , এই Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) কখনো মৃত্যুবরণ করেনা । কিন্তু বিজ্ঞানীদের রিসার্চে স্পষ্ট ফুটে এসেছে যে , Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) মৃত্যুবরণ করে । এবং তাদের সহ্য ক্ষমতা একটি নির্দিষ্ট সীমারেখার ভিতর ।
১৯২০ সালে P. G. Rahm of the University of Freidburg Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) এর উপর গবেষণা করে এবং দেখে যে , একটি Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) ১৫১ ডিগ্রী তাপমাত্রায় শুধুমাত্র কিছু মিনিট Survive করতে পেরেছে অনুরুপভাবে ( - ২০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস ) তাপমাত্রায় Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) কিছুদিন Survive করার পরে মৃত্যুবরণ করে ।
এছাড়া এই নিয়ে আরও গবেষণা রয়েছে যেমন , University of Paris এর গবেষক Raul M. May এর গবেষণায় উঠে এসেছে যে , এই পর্যন্ত যত প্রজাতির Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) পাওয়া গেছে তাদের ৫০% কে ধ্বংস করতে হলে 570,00 roentgens যা একটি তেজস্ক্রিয় রশ্মি দরকার ।
Raul M. May from the University of Paris who found that 570,00 roentgens were required to kill 50% of exposed tardigrades (only 500 roentgens would be fatal to a human).
যেখানে একজন মানুষের জন্য শুধুমাত্র ৫০০ roentgens যথেষ্ট পরিমাণে প্রাণনাশক ।[ 2 ] । অর্থাৎ এই থেকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে , Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) কোন অবিনশ্বর প্রাণী না বরং এটিও একটি নশ্বর প্রাণী এবং এটিকেও মৃত্যুবরণ করতে হয় । হতে পারে এর টিকে থাকার ক্ষমতা বেশি তারপরেও এটি নশ্বর । এই Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) নিয়ে আরও বহু রিসার্চ আছে তার মধ্যে আরেকটি উল্লেখ করছি ,
University of North Carolina এর একদল গবেষক যারা Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং সেই গবেষণা পরিচালনা করেছিলেন Thomas Boothby আগের থেকে বলে রাখা ভালো যে , Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) সম্পূর্ণ পানিতে থাকে সুন্দরভাবে জীবন পরিচালনার জন্য ।
Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) এর মৃত্যু নিয়ে BBC এর মধ্যে একটি আর্টিকেল লিখা হয়েছিল যার শিরোনাম ছিল
" Tardigrades Return From The Dead " [4 ]
অর্থাৎ তারা যদি মারা নাই যায় তাহলে মৃত্যু থেকে ফিরে আসলো কি করে ? এছাড়া পুরো আর্টিকেল পড়লেই সবকিছু পানির মত পরিষ্কার হয়ে যাবে ।
এখন আসা যাক Bacteria ( ব্যাকটেরিয়া ) তে ব্যাকটেরিয়া মারা যায় এটাই স্বাভাবিক । এটা কোন অস্বাভাবিক কিছুই না । ব্যাকটেরিয়া মারা যায় নানা কারণে যেমন মানুষের যে , নিউমোনিয়া রোগ হয় সেটাও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে হয়ে থাকে যার নাম জীববিজ্ঞানের ভাষায় নিউমোকক্কাস ( Pneumococcus ) যখন নিউমোনিয়ার ভ্যাক্সিন দেয়া হয় বা ঔষধ স্বরূপ অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াতে পরামর্শ দেয় চিকিৎসক তখন সেটার প্রভাবে ভিতরে থাকা সেই ব্যাকটেরিয়া টা মারা যায় ।
অনুরূপভাবে যক্ষ্মা রোগটিও এক প্রকার ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে যার নাম ( Mycobacterium Tuberculosis ) আর যক্ষ্মার টিকা হিসেবে যে , বিসিজি টিকা দেয়া হয় সেই টিকার প্রভাবে সেই ব্যাকটেরিয়ার মৃত্যু ঘটে । এইসকল তথ্য জানতে বেশি দরকার নেই নবম শ্রেণীর পাঠ্য বইটিই যথেষ্ট সেখানেই সুন্দরভাবে সব কিছু বলে দেয়া হয়েছে । আর এই দিক টাই বিবেচনা করে আমরা ধারণা করতে পারি নাস্তিকদের পড়ালেখার দৌর মাপা যায় [ 5 ] ।
অনুরূপভাবে যক্ষ্মা রোগটিও এক প্রকার ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে যার নাম ( Mycobacterium Tuberculosis ) আর যক্ষ্মার টিকা হিসেবে যে , বিসিজি টিকা দেয়া হয় সেই টিকার প্রভাবে সেই ব্যাকটেরিয়ার মৃত্যু ঘটে । এইসকল তথ্য জানতে বেশি দরকার নেই নবম শ্রেণীর পাঠ্য বইটিই যথেষ্ট সেখানেই সুন্দরভাবে সব কিছু বলে দেয়া হয়েছে । আর এই দিক টাই বিবেচনা করে আমরা ধারণা করতে পারি নাস্তিকদের পড়ালেখার দৌর মাপা যায় [ 5 ] ।
এখন আসি Amoeba ( অ্যামিবা ) তে মূলত খাবার ( Nutrition ) ছাড়া Amoeba ( অ্যামিবা ) দুই সপ্তাহ ও বাঁচতে পারেনা । সাধারনত ২/৩ দিন বেচে থাকার পরে বিভাজিত হয়ে যায়। এখন ডটার এমিবাগুলোই প্যরেন্ট এমিবার অবিকল প্রতিলিপি কিনা তা নিয়ে তর্ক করাই যায় , কারন ডটার সেলগুলো সমান সংখ্যক ক্রোমোজম পেলেও সমপরিমান অরগানেল বা সাইটোপ্লাজম প্যরেন্ট সেল থেকে পায় না।এর পরে ও এমিবা যে মরে সেটা আম জনতার বোধগম্য একটি উদাহরন-
মানুষের আমাশা হয় এক প্রকারের এমিবার কারনে। এই আমাশা থেকে মুক্তি ঘটে রোগিকে ফ্লাজিল খাইয়ে সেই এমিবাকে মেরে ফেলার মাধ্যমে।
বর্তমান পৃথিবীতে যেসকল প্রাণী আবিষ্কৃত সেটার মধ্যে অন্যতম সবচেয়ে বেশি প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতা হচ্ছে Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) এর । Tardigrade ( টারডিগ্রেড ) এর ক্ষমতা এতই বেশি যে , এরা মহাকাশেও বিনা সুরক্ষায় টিকে থাকতে পারে । অথচ এরাও মারা যায় ।
এরপরে আসি জেলিফিশ ( Jelyfish) এর মধ্যে অমর দাবি করা হয় Backward-aging jellyfish কে । এছাড়া আরও প্রজাতি আছে কিন্তু সেগুলো কি আদৌ অমর ? মূলত কোন প্রাণীই অমর নয় । কোন না কোনভাবে তাকে মারা যেতেই হয় পরিবেশের বাস্তুসংস্থান , খাদ্যজাল , খাদ্যশৃঙ্খল এর ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য । ঠিক সেভাবেও জেলিফিশ ( Jelyfish) নানা প্রাণীর শিকারে মৃত্যুবরণ করে ।
এছাড়া White Bear সাধারণত জেলিফিশ শিকার করে থাকে তখন জেলিফিশ মৃত্যুবরণ করে । আমরা অবিনশ্বরের সংজ্ঞা হতে জানি যে , যে প্রাণীকে কোনরূপেই হত্যা করা যায়না তাকেই অবিনশ্বর বলা হয় । কিন্তু জেলিফিশ মারা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত হোক সেটা খাবারের সুবাদে বা শিকারির শিকারে ।
এবং মোদ্দা কথা হিসেবে যদি বলতে হয় তাহলে পৃথিবীর ধ্বংসের সময় সকল প্রাণী স্বাভাবিকভাবেই মারা যাবে । এবং উপরোক্ত আয়াতে ব্যাবহার করা আরবি এই বাক্য দিয়ে (كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ) ভবিষ্যৎ বলা হচ্ছে বা ভবিষ্যতে হবে এরকম কথা বলা হচ্ছে । সেটা যেকোন সময়েই বা যেকোন পরিপ্রেক্ষিতে হতে পারে সেই ব্যাপারে আল্লাহ সর্বজ্ঞ ।
তথ্যসূত্রঃ
1. সুরা আম্বিয়া আয়াত ৩৫
2. Tardigrade Facts - https://sun.iwu.edu/~tardisdp/tardigrade_facts.html
[ P. G. Rahm of the University of Freidburg , Raul M. May from the University of Paris ]
3. [ www. zmescience .com / Water bears ]
4. BBC Earth - [ " Tardigrades Return From The Dead " ]
5. Biology Text Bok ( Class ix - x ) Chapter 7 Page Number 172 - 173
6. Yahoo Answere / How Do Bacteria Die ??????????
7. সুরা আল আম্বিয়া আয়ার ৩৫
Thanks To Nayan Chowdhury For Give Us Information About Amoeba
1. সুরা আম্বিয়া আয়াত ৩৫
2. Tardigrade Facts - https://sun.iwu.edu/~tardisdp/tardigrade_facts.html
[ P. G. Rahm of the University of Freidburg , Raul M. May from the University of Paris ]
3. [ www. zmescience .com / Water bears ]
4. BBC Earth - [ " Tardigrades Return From The Dead " ]
5. Biology Text Bok ( Class ix - x ) Chapter 7 Page Number 172 - 173
6. Yahoo Answere / How Do Bacteria Die ??????????
7. সুরা আল আম্বিয়া আয়ার ৩৫
Thanks To Nayan Chowdhury For Give Us Information About Amoeba
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.