উপদেশ ভাল , জীবন করো সত্য
উপদেশ ভাল , জীবন করো সত্য
///////////////////////////////////////////////////////
অসাধারণ একটি জীবন্ত হাদিস.........
( লোকে কি বলবে! এই চিন্তা করে কতজন যে ফিতনায় পা দিয়েছে, আল্লাহ্ ভালো জানেন... হায়রে সমাজ!)
ইমাম আবু সুলইমান খাত্তাবী রহ. (মৃ: ২৮৮ হি:) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে নিজ সনদে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-
– ‘অবশ্যই মানুষের উপর (এমন একটি) জামানা আসবে, (যখন বদদ্বীনীর কারণে দ্বীন মতো চলা এত কঠিন হয়ে যাবে যে), দ্বীনদার ব্যাক্তির জন্য তার দ্বীনকে নিয়ে শিয়ালের কৌশলে পালানোর ন্যায় এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে, এক চুড়া থেকে অন্য চুড়া’য় এবং এক পাহাড়ী-গুহা থেকে অন্য পাহাড়ী-গুহা’য় পালিয়ে ফেরা ছাড়া (কেউ তার দ্বীনকে) নিরাপদে রাখতে পারবে না।
জিজ্ঞেস করা হল: সেটা কখন হবে -ইয়া রাসুলাল্লাহ?
তিনি বললেন: যখন (উপার্জনের উপায়-উপকরণের মধ্যে নাজায়েয বিষয় এত ব্যপকভাবে জড়িত থাকবে যে, তখন) আল্লাহ তাআলা’র (অসন্তুষ্টি ও) ক্রধ ব্যতীত আয়-রোজগার করা যাবে না। যখন এরকম জামানা হবে, তখন অবিবাহিত থাকাকে হালাল করে নিবে।
বলা হল: সেটা কেমন করে হতে পারে -ইয়া রাসুলাল্লাহ, অথচ আপনি আমাদেরকে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছেন!?
তিনি বললেন: কারণ, যখন সেই জামানাটি আসবে, তখন পুরুষ তার পিতা-মাতার হাতে বরবাদ হয়ে যাবে। যদি সে তার পিতা-মাতার হাতে (বরবাদ) না হয়, তাহলে সে তার স্ত্রী ও সন্তানের হাতে (বরবাদ হবে)। যদি তার স্ত্রীর হাতেও না হয়, সন্তানের হাতে না হয়, তাহলে সে তার আত্বীয়-স্বজনের হাতে (বরবাদ হবে)।
লোকেরা জিজ্ঞেস করলো: (সেটা) কেমন করে হবে -ইয়া রাসুলাল্লাহ!
রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ বললেন: তারা তাকে (সামাজিকতার খাতিরে ভাল মানের) আয়-রোজগার করার জন্য কঠর পরিশ্রম করতে জোড়াজুড়ি করতে থাকবে, পরে তারা তার উপর (এমন মানুষিক ও সামাজিক) বোঝা চাপিয়ে দিবে, যা সে ধারন করতে পারবে না। অবশেষে সে (অর্থকড়ি উপার্জনের জন্য নাজায়েয ও) বরবাদীর উপকরনাদির দিকে ধাবিত হবে’।
[আল-উযলাহ, ইমাম খাত্তাবী– ১/১০ হাদিস ৯; আল-যুহদুল কাবীর, বাইহাকী, হাদিস ৪৪৫] الله اعلم بالصواب
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
ইতিহাসঃ
নাস্তিক দাদাদের জন্যে উপহার !!যারা ইউরোপ আমেরিকার শিক্ষা, ইতিহাস ও কালচার নিয়ে খুব গর্ববোধ করেন!!
ইসলামের কঠোর সমালোচক হওয়া সত্ত্বেও বিখ্যাত সাহিত্যিক এইচ.জি. ওয়েলস এ বাস্তবতা স্বীকার করে লিখেন,
“নবধারা ও সতেজ প্রাণশক্তিপূর্ণ আরব মেধা কল্যাণকর জ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটি পালন করেছিল সুষ্ঠুভাবে, যে ধারা এক সময় গ্রীকরা শুরু করে ছেড়ে দিয়েছিল।…
আজকের আধুনিক বিশ্ব, জ্ঞানের সেই আলো ও শক্তির উপহার ল্যাটিন সূত্রে লাভ করেনি, করেছে আরবদের মাধ্যমে।…
তারা পশ্চিমের চেয়ে প্রায় এক শতাব্দি এগিয়ে থেকে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র গড়ে তুলেছিল।…
পূর্ব কিংবা পশ্চিম, চারিদিক থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে এসে জড়ো হত।…আরব দর্শন পরবর্তীতে লক্ষণীয়ভাবে প্রভাবিত করেছিল পশ্চিম ইউরোপীয় চিন্তাধারাকে বিশেষত প্যারিস, অক্সফোর্ড ও উত্তর ইটালির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে।…”
H.G. Wells, The Outline of History: Being a Plain History of Life and Mankind; vol. II, p. 335-336 (London, The Waverley Book Company, Limited, 1920)
-----------------------------------------------------------------------------------------
মানুষ যেহেতু তার ভাগ্য সম্পর্কে জানে না, সেহেতু তাকে সর্বদা জান্নাত লাভের আশায় উক্ত পথেই কাজ করে যেতে হবে। সাধ্যমত চেষ্টা সত্ত্বেও ব্যর্থ হ’লে বুঝতে হবে যে, ওটাই তার তাকদীরের লিখন ছিল। বান্দাকে ভাল ও মন্দ দু’টি করারই স্বাধীন এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। আর এই ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগের স্বাধীনতার কারণেই বনু আদম (আঃ) আল্লাহর সেরা সৃষ্টির মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছে। আর একারণেই তাকে তার ভাল ও মন্দ কাজের পরিণতি ভোগ করতে হয়।
এখানে আদম (আঃ)ের ঔরস বলতে আদম (আঃ) ও তার ভবিষ্যৎ সন্তানদের ঔরস বুঝানো হয়েছে। এখানে ‘বংশধর’ বলতে তাদের অশরীরী আত্মাকে বুঝানো হয়নি, বরং আত্মা ও দেহের সমন্বয়ে জ্ঞান ও চেতনা সম্পন্ন ক্ষুদ্র অবয়ব সমূহকে বুঝানো হয়েছে, যাদের কাছ থেকে সেদিন সজ্ঞানে তাদের প্রতিজ্ঞা ও প্রতিশ্রুতি নেওয়া হয়েছিল। আর এটা আল্লাহর জন্য খুবই সহজ। আজকের বিজ্ঞান একটা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণুর ভিতরে গোটা সৌরমন্ডলীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে। ফিল্মের মাধ্যমে একটি বিরাটকায় বস্ত্তকে একটি ছোট্ট বিন্দুর আয়তনে দেখানো হচ্ছে। কাজেই আল্লাহ তা‘আলা যদি উক্ত অঙ্গীকার অনুষ্ঠানে সকল আদম (আঃ) সন্তানকে জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন করে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দেহে অণু-বিন্দুতে অস্তিত্ব দান করে থাকেন, তবে তাতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। তাছাড়া জ্ঞানসম্পন্ন না হ’লে এবং বিষয়টি তাদের অনুধাবনে ও উপলব্ধিতে না আসলে এ ধরনের প্রতিশ্রুতি গ্রহণের ও অঙ্গীকার ঘোষণার কোন গুরুত্ব থাকে না।
প্রশ্ন হ’তে পারে যে, সৃষ্টির সূচনায় গৃহীত এই প্রতিজ্ঞা ও প্রতিশ্রুতির কথা পরবর্তীতে মানুষের ভুলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তাহ’লে এ ধরনের প্রতিশ্রুতি গ্রহণের ফলাফলটা কি? এর জবাব এই যে, আদি পিতা-মাতা আদম (আঃ)-হাওয়ার রক্ত ও মানসিকতার প্রভাব যেমন যুগে-যুগে দেশে-দেশে সকল ভাষা ও বর্ণের মানুষের মধ্যে সমভাবে পরিদৃষ্ট হয়, তেমনিভাবে সেদিনে গৃহীত তাওহীদের স্বীকৃতি ও প্রতিশ্রুতির প্রভাব সকল মানুষের মধ্যেই কমবেশী বিদ্যমান রয়েছে। মানুষের অস্তিত্বই মানুষকে তার সৃষ্টিকর্তার সন্ধান দেয় ও বিপন্ন অবস্থায় তার কাছে আশ্রয় গ্রহণের জন্য তার হৃদয় ব্যাকুল হয়ে ওঠে।
তাই তো দেখা গেছে, বিশ্ব ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম শাসক ও আল্লাহদ্রোহী ফেরাঊন ডুবে মরার সময় চীৎকার দিয়ে আল্লাহর উপরে তার বিশ্বাস ঘোষণা করেছিল’ (ইউনুস ১০/৯০-৯১)। মক্কা-মদীনার কাফের-মুশরিকরা শেষনবীর সাথে শত্রুতা পোষণ করলেও কখনো আল্লাহকে অস্বীকার করেনি। আধুনিক বিশ্বের নাস্তিকসেরা স্ট্যালিনকে পর্যন্ত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পূর্ব মুহূর্তে ‘ওহ মাই গড’ বলে চীৎকার করে উঠতে শোনা গেছে। প্রকৃতপক্ষে সৃষ্টির সূচনালগ্নে গৃহীত উক্ত স্বীকারোক্তি প্রত্যেকটি মানুষের হৃদয়ে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাসের বীজ বপন করে দিয়েছে। চাই তার বিকাশ কোন শিরকী ও ভ্রান্ত পদ্ধতিতে হৌক বা নবীদের দেখানো সঠিক তাওহীদী পদ্ধতিতে হৌক।
এ কথাটাই হাদীছে এসেছে এভাবে যে, مَامِنْ مَوْلُوْدٍ إلاَّ يُوْلَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبْوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ اَوْ يُنَصِّرَانِهِ أَوْ يُمَجِّسَانِهِ... ‘প্রত্যেক মানবশিশুই ফিৎরাতের উপরে জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর তার পিতা-মাতা তাকে ইহুদী-নাছারা বা মজূসী (অগ্নিউপাসক) বানায়’।[21] এখানে ‘ফিৎরাত’ অর্থ স্বভাবধর্ম ইসলাম।[22] অর্থাৎ মানব শিশু কোন শিরকী ও কুফরী চেতনা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না। বরং আল্লাহকে চেনা ও তার প্রতি আনুগত্য ও আত্মসমর্পণের চেতনা ও যোগ্যতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এর ফলে নবীদের প্রদত্ত তাওহীদের শিক্ষাকে সে অত্যন্ত সহজে ও সাগ্রহে বরণ করে নেয়। কেননা শুধু জন্মগত চেতনার কারণেই কেউ মুসলমান হ’তে পারে না। যতক্ষণ না সে নবীর মাধ্যমে প্রেরিত দ্বীন সজ্ঞানে স্বেচ্ছায় কবুল করে।
ছহীহ মুসলিমের অপর বর্ণনায় এসেছে, وَإِنِّىْ خَلَقْتُ عِبَادِيْ حُنَفَاءَ كُلَّهُمْ وَأَنَّهُمْ أَتَتْهُمْ الشَّيَاطِيْنُ فَاجْتَالَتْهُمْ عَنْ دِيْنِهِمْ... ‘আল্লাহ বলেছেন, যে আমি আমার বান্দাদের ‘হানীফ’ অর্থাৎ ‘আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ’ রূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর শয়তান তার পিছে লেগে তাকে আল্লাহর পথ থেকে দূরে নিয়ে গেছে।[23] আল্লাহ বলেন, فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِيْ فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لاَ تَبْدِيْلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ‘আল্লাহর ফিৎরত, যার উপরে তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর এই সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই’ (রূম ৩০/৩০)।
মোট কথা প্রত্যেক মানবশিশু স্বভাবধর্ম ইসলামের উপরে জন্মগ্রহণ করে এবং নিজ সৃষ্টিকর্তাকে চেনার ও তাকে মেনে চলার অনুভূতি ও যোগ্যতা নিয়ে সৃষ্টি হয়। যদিও পিতা-মাতা ও পরিবেশের কারণে কিংবা শয়তানের ওয়াসওয়াসায় পরবর্তীতে অনেকে বিভ্রান্ত হয়। অতএব কাফির-মুমিন-মুশরিক সবার মধ্যে আল্লাহকে চেনার ও তাঁর ইবাদত ও আনুগত্যের চেতনা ও যোগ্যতা বিদ্যমান রয়েছে। এই সৃষ্টিগত চেতনা ও অনুভূতিকে কেউ পরিবর্তন করতে পারে না। অর্থাৎ কুশিক্ষা, কুসঙ্গ ও শয়তানী সাহিত্য পাঠ করে বা নষ্ট ব্লু ফিল্মের নীল দংশনে উক্ত চেতনাকে পরিবর্তনের চেষ্টা করা আল্লাহর সৃষ্টির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার শামিল। অতএব উক্ত সৃষ্টিগত চেতনাকে সমুন্নত রাখাই ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের কর্তব্য।
একথা ব্যক্ত করে আল্লাহ বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلاَّ لِيَعْبُدُوْنِ- ‘আমি জিন ও ইনসানকে আমার ইবাদত ব্যতীত অন্য কোন কাজের জন্য সৃষ্টি করিনি’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)। অর্থাৎ আমি তার প্রকৃতিতে আমার প্রতি ইবাদত ও দাসত্বের আগ্রহ ও যোগ্যতা সৃষ্টি করে দিয়েছি। এটাকে সঠিক অর্থে কাজে লাগালে আমার অবাধ্যতামূলক কোন কাজ বান্দার দ্বারা সংঘটিত হবে না এবং জগতসংসারেও কোন অশান্তি ঘটবে না। যেমনভাবে কোন মুসলিম শিশু জন্মগ্রহণের সাথে সাথে তার কানে আযান শোনানো হয়।[24] অথচ ঐ শিশু আযানের মর্ম বুঝে না বা বড় হয়েও তার সেকথা মনে থাকে না। অথচ ঐ আযানের মাধ্যমে তার হৃদয়ে প্রোথিত হয়ে যায় তাওহীদ, রিসালাত ও ইবাদতের বীজ। যার প্রভাব সে আজীবন অনুভব করে। সে বে-আমল হ’লেও ‘ইসলাম’-এর গন্ডী থেকে খারিজ হয়ে যেতে তার অন্তর কখনোই সায় দেয় না। তার অবচেতন মনে আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি আনুগত্য বোধ অক্ষুণ্ণ থাকে। বিশেষ করে হতাশা ও বিপন্ন অবস্থায় সে তার প্রভুর সাহায্য ও সান্নিধ্য লাভের জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে।
অর্থ না বুঝলেও কুরআন পাঠ ও আযানের ধ্বনি মানুষের মনকে যেভাবে আকৃষ্ট করে এবং হৃদয়ে যে স্থায়ী প্রভাব ফেলে তার কোন তুলনা নেই। একারণেই কাফির আরব নেতারা মানুষকে কুরআন শুনতে দিত না। অথচ নিজেরা রাতের অন্ধকারে তা গোপনে আড়ি পেতে শুনত এবং একে জাদু বলত। শ্রেষ্ঠ আরব কবিগণ কুরআনের অলৌকিকত্বের কাছে আত্মসমর্পণ করেন এমনকি অন্যতম শ্রেষ্ঠ আরবী কবি লাবীদ বিন রাবী‘আহ কুরআন শোনার পর কাব্যচর্চা পরিত্যাগ করেন। গত শতাব্দীর শুরুতে তুরষ্কে ওছমানীয় খেলাফত উৎখাত করে কামাল পাশা ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করেন এবং মসজিদ সমূহে আরবী আযান বন্ধ করে তুর্কী ভাষায় আযান দেওয়ার নির্দেশ জারি করেন। কিন্তু তাতে আরবী আযানের প্রতি মানুষের হৃদয়াবেগ আরও বৃদ্ধি পায়। ফলে গণবিদ্রোহ দেখা দিলে তিনি উক্ত আদেশ বাতিল করতে বাধ্য হন।
আধুনিক বিজ্ঞানও প্রমাণ করে দিয়েছে যে, শব্দ মানব মনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। তাই আল্লাহ প্রেরিত আযানের ধ্বনি সদ্যপ্রসূত শিশুর কচি মনে আজীবনের জন্য সুদূরপ্রসারী স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করবে- এটাই স্বাভাবিক। অতএব সৃষ্টির সূচনাকালের গৃহীত ‘আহ্দে আলাস্ত্ত’ বা আল্লাহর প্রতি ইবাদত ও আনুগত্যের প্রতিজ্ঞা ও প্রতিশ্রুতি মানব মনে জীবনব্যাপী স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করে থাকে। যার কথা বারবার বান্দাকে স্মরণ করিয়ে দিতে হয় এবং যার বিরোধিতা করা আত্মপ্রবঞ্চনা করার শামিল।
___________________________________________________________________
আসসালামু আলাইকুম,
#কুরাআন ও হাদীস থেকে পর্দার দলীলঃ
নিম্নে বর্ণিত দীললসমূহ পর্দা ফরযের উজ্জল প্রমাণ এবং যারা মনে করে যে, পর্দা একটি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অভ্যাস বা ইসলামের প্রাথমিক যুগের জন্যই মানানসই ছিল।
প্রথমত: করআন থেকে দলীল:
প্রথম দলীল: আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
“(হে নবী!) ঈমানদার নারীদেরকে বল: তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে, তারা যেন যা সাধারণত; প্রকাশ থাকে তা ব্যতীত তাদের শোভা প্রদর্শন না করে, তাদের গলদেশ ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে, তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা (দাদা-নানাসহ), শশুর (দাদা শশুর-নানা শশুরসহ), পুত্র (ও নাতি), স্বামীর পুত্র (নাতিসহ), ভাই (সহোদর ও সৎভাই), ভাতিজা, ভাগ্নে, আপন (মুসলিম) নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাস- দাসী, এমন অধিনস্থ পুরুষ যাদের মধ্যে পৌরুষত্ব বিলুপ্ত এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারো নিকট তাদের শোভা প্রকাশ না করে। তারা যেন সজোরে পদক্ষেপ না নেয় যাতে তাদের গোপন শোভা প্রকাশ পায়। হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩১]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আল্লাহ প্রথম পর্যায়ের হিজরতকারী মহিলাদের প্রতি অনুগ্রহ করুন: যখন আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন:
﴿وَلۡيَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ﴾ [النور: ٣١]
“(তাদের গলদেশ ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে) সাথে সাথে তারা স্বীয় চাদরসমূহ চিরে টুকরা করে তা দ্বারা আবৃত করেন।” (সহীহ বুখারী)
দ্বিতীয় দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَٱلۡقَوَٰعِدُ مِنَ ٱلنِّسَآءِ ٱلَّٰتِي لَا يَرۡجُونَ نِكَاحٗا فَلَيۡسَ عَلَيۡهِنَّ جُنَاحٌ أَن يَضَعۡنَ ثِيَابَهُنَّ غَيۡرَ مُتَبَرِّجَٰتِۢ بِزِينَةٖۖ وَأَن يَسۡتَعۡفِفۡنَ خَيۡرٞ لَّهُنَّۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٞ ٦٠﴾ [النور: ٦٠]
“আর এমন বৃদ্ধ নারীগণ যারা বিবাহের আশা রাখে না, তাদের জন্য দোষ নেই যদি তারা তাদের শোভা প্রদর্শন না করে তাদের (বাহ্যিক অতিরিক্ত চাদর উড়না) বস্ত্র খুলে রাখে, তবে সংযমী হয়ে বিরত থাকলে তা তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞ।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৬০]
তৃতীয় দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ قُل لِّأَزۡوَٰجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ يُدۡنِينَ عَلَيۡهِنَّ مِن جَلَٰبِيبِهِنَّۚ ذَٰلِكَ أَدۡنَىٰٓ أَن يُعۡرَفۡنَ فَلَا يُؤۡذَيۡنَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ٥٩﴾ [الاحزاب: ٥٩]
“হে নবী তুমি তোমার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে ও মুমিনদের নারীগণকে বল, তারা যেন তাদের উড়না বা চাদরের কিছু অংশ নিজেদের (চেহারা ও বুকের) উপর টেনে দেয়, এতে তাদের চেনা সহজতর হবে, (বুঝা যাবে যে তারা স্বাধীন ও সম্ভ্রান্ত) ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৯]
চতুর্থ দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَقَرۡنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجۡنَ تَبَرُّجَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ ٱلۡأُولَىٰ﴾ [الاحزاب: ٣٣]
“আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে, প্রাচীন জাহেলী যুগের মতো তোমরা সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বেড়াবে না।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৩৩]
পঞ্চম দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَسَۡٔلُوهُنَّ مِن وَرَآءِ حِجَابٖۚ ذَٰلِكُمۡ أَطۡهَرُ لِقُلُوبِكُمۡ وَقُلُوبِهِنَّۚ﴾ [الاحزاب: ٥٣]
“আর যখন তোমরা তাদের নিকট কিছু চাইবে পর্দার অন্তরাল থেকে চাইবে, এ বিধান তোমাদের ও তাদের হৃদয়ের জন্য অধিকতর পবিত্র।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৩]
দ্বিতীয়তঃ হাদীস থেকে পর্দার দলীল:
প্রথম দলীল: সহীহ বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার স্ত্রীদেরকে পর্দা করতে বলুন, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, এরপর আল্লাহ পর্দার আয়াত অবতীর্ণ করেন। সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এ বর্ণনাও রয়েছে যে, উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, যদি আপনি মুমিনদের জননীদেরকে পর্দার আদেশ দিতেন; এরপর আল্লাহ পর্দার আয়াত অবতীর্ণ করেন।
দ্বিতীয় দলীল: ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করে বলেন, “নারীরা হলো গোপনীয় বস্তু।” (তিরমিযী এবং এটিকে আলাবনী সহীহ বলেছেন)
তৃতীয় দলীল: ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি অহংকারবশতঃ স্বীয় কাপড় টাখনুর নিচে রাখলো কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না। অতঃপর উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তবে মহিলারা তাদের নিম্নাংশের ঝালরের ব্যাপারে কী করবে? তিনি বলেন, এক বিঘত (গোছার নিচে) ঝুলিয়ে দিবে, উম্মে সালামা বলেন, তবে এতে তাদের পা বেরিয়ে থাকবে, তিনি বলেন, তবে তা (গোছার নিচে) এক হাত ঝুলিয়ে দিবে এর বেশি করবে না।” (আবু দাউদ ও তিরমিযী এবং তিনি বলেন, হাদীসটি হাসান-সহীহ)।
কুরআন ও হাদীসে চেহারা আবৃত করা দলীলসমূহঃ
প্রথমত: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلۡيَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّۖ﴾ [النور: ٣١]
“তাদের গলদেশ ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় (ওড়না বা চাদর) দ্বারা আবৃত করে।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩১]
আল্লামা ইবন উসাইমীন রহ. বলেন, (আয়াতে বর্ণিত) খিমার হলো: যার দ্বারা মহিলা ঘোমটা দিয়ে স্বীয় মাথা আবৃত করে থাকে।
সুতরাং মহিলা যেহেতু চাদর বা ওড়না দ্বারা তার বক্ষদেশ আবৃত করার জন্য আদিষ্ট, অতএব সে তার চেহারা আবৃত করার জন্যও আদিষ্ট।
দ্বিতীয়ত: আল্লাহর বাণী:
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ قُل لِّأَزۡوَٰجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ يُدۡنِينَ عَلَيۡهِنَّ مِن جَلَٰبِيبِهِنَّ﴾ [الاحزاب: ٥٩]
“হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রী, কন্যাগণকে ও মুমিনদের নারীগণকে বল: তারা যেন তাদের ওড়না বা চাদরের কিছু অংশ নিজেদের (চেহারা ও বুকের) উপর টেনে দেয়।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৯]
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মানুষ থাকলে তার আত্মীয়-স্বজন থাকবে এবং বাড়ীতে মেহমানও আসবে। তাই মেহমানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহে রাখা যরূরী। রসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,فِرَاشٌ لِلرَّجُلِ وَفِرَاشٌ لاِمْرَأَتِهِ وَالثَّالِثُ لِلضَّيْفِ وَالرَّابِعُ لِلشَّيْطَانِ- ‘একটি শয্যা পুরুষের, দ্বিতীয় শয্যা তার স্ত্রীর, তৃতীয়টি অতিথির জন্য আর চতুর্থটি (যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়) শয়তানের জন্য’।[মুসলিম হা/২০৮৪; আবু দাউদ হা/৪১৪২; মিশকাত হা/৪৩১০।]
এ হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, প্রত্যেক মুসলমানের জন্য যরূরী হচ্ছে মেহমানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস বাড়ীতে সংরক্ষণ করা তাহ’লে মেহমানকে বাড়ী রাখা সম্ভব হবে এবং তার আপ্যায়ন করা সহজ হবে।
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
বোন, সময় থাকতে বিয়ে করুন!
মনে রাখবেন, সময় ও স্রোত কারো জন্য বসে থাকে না। সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করা বুদ্ধিমানের পরিচয়। তাই সময়ের কাজ সময় থাকতেই করতে হয়। তা না হলে জীবন শায়ান্থে এসে আফসুস করা ছাড়া উপায় থাকে না।
আমাদের সমাজের চিত্র এমন যে, লেখাপড়া ক্যারিয়ার ইত্যাদির জন্য অনেক মেয়ে বিয়ের ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। কিন্তু যত বড় ক্যারিয়ার থাকুক না কেন ছেলেরা চাইবে তার চাইতে কমপক্ষে ৫/৬ বছর ছোট কোন মেয়েকে বিয়ে করতে। সেই হিসেবে শিক্ষিত সমাজে সবচেয়ে বেশি ডিমান্ডের মেয়েরা হয় ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী। ইদানীং ছেলে মেয়েদের অবৈধ সম্পর্ক বেড়ে যাওয়ার কারনে ছেলেরা ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বৌ হিসেবে চায়। কারন ছেলেদের ধারনা প্রেম-প্রীতির এই যুগে মেয়েরা ১৬/১৭ বয়সেই প্রেমে পড়ে যায়, যাদের একটা অংশ ১৮ পার না হতেই সতীত্ব হারায়। মেয়েদের প্রতি এই অবিশ্বাসের কারনে ছেলে পাত্ররা অনুর্ধ ১৮ মেয়েদেরকেই পছন্দ করে!
এছাড়া মেয়েদের চেহারায় যে কোমলতা থাকে তা ২৫/২৬ বছর পর থেকে ধীরে ধীরে মুছে যেতে থাকে এবং এক সময় তা মুরুব্বি টাইপের চেহারায় রূপান্তরিত হয়। তাইতো আমরা কখনও কোন গল্পের নায়িকার বয়স ৩০ দেখি না। এমনকি কোন নাটকে নায়িকাকে নায়কের চাইতে বয়সে বড় হতেও দেখা যায় না। দেখা যায় না কোন কবিকে তিরিশোর্ধ নারীকে নিয়ে কবিতা লিখতে। আর ছেলেরা তাদের আড্ডায় যেসব মেয়েদের নিয়ে রসালো আলাপ করে তাদের কারো বয়স ২৪/২৫ এর বেশি না।
আমার স্কুল বয়েসের সহপাঠী বান্ধবীদের দেখলে আজ খুব লজ্জা পাই। মুখ দিয়ে তুই-তুমি বের হতে চায় না, কারণ তাদেরকে এখন মুরুব্বী মুরুব্বী লাগে। আমার যৌবন বয়সে আমার চাইতে অনেক ছোট যে মেয়েকে দেখে উদাসীন হয়ে যেতাম, তাকে এখন দেখলে 'খালাম্মা খালাম্মা' লাগে।
আমার বন্ধুদের একজনের বড় বোন ডাক্তার। ৬ বছর ধরে 'যোগ্য' পাত্র খুজতে খুজতে তিনি নিজেই অযোগ্য হবার যোগাড় হয়েছেন। বয়স ৩৫ চলছে। ওনার পরিবারের প্রথম টার্গেট ছিল ডাক্তার পাত্র ছাড়া বিয়ে করবে না। ২৯ বছর বয়সে যখন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিল তখন কিছু সিনিয়ার অবিবাহিত ডাক্তার পাত্র পাওয়া যাচ্ছিল কিন্তু সেগুলো তাদের পছন্দ হচ্ছিল না। পাত্র খুজতে খুজতে বয়স এখন ৩৫-এ এসে দাঁড়িয়েছে। এখন আর ডাক্তার পাত্র পাচ্ছে না। মনে হয় আর পাবেনও না। এখন 'অ-ডাক্তার' ছেলে পেলেও চলবে। ইভেন জুনিয়ার কোন ব্যাপার না। হা হা হা!
আমার বন্ধুর মামাত বোন। বর্তমানে এই আপুটি একজন উচ্চ শিক্ষিত, বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রী নিতে গিয়ে বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। ওনার জীবনের লক্ষ্যই ছিল উচ্চতর ডিগ্রী নেয়া। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে কিন্তু ততক্ষনে বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। এখন এত এর ডিগ্রী সত্ত্বেও পাত্র পাচ্ছেন না। ৩৮+ এই আপুটির আজ উচ্চতর ডিগ্রী আছে কিন্তু সংসার করার মানুষটি নাই; আফসোস।
৩৮ বছর বয়সী আর এক আপুর সাথে পরিচয় সামুয়ার ব্লগে। আমাকে তার বিয়ের জন্য ঘটকালীর দায়িত্ব দিয়েছেন। পারিবারিক কী এক ঝামেলার কারনে এখনো বিয়ে করতে পারেননি। এখন সব ঝামেলা থেকে তিনি মুক্ত। বিয়ে করতে পুরোপুরি প্রস্তুত। কিন্তু তার এই প্রস্তুতি নিতে নিতে যে তার বিয়ের পাত্র হারিয়ে গেছে সেটা তিনি টের পান নাই!
আসলে সময় ও স্রোত কারো জন্য বসে থাকে না -শিশুকালে ভাব সম্প্রসারণ লিখে গাদা গাদা নাম্বার পাওয়া এসব শিক্ষনীয় প্রবাদকে আমরা পরীক্ষার খাতাতেই সীমাবদ্ধ করে রেখেছি, বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করি নাই, তাই তো বাংলাদেশের প্রতি ১০ জন মেয়ের মধ্যে ১ জনের আজ স্বামী নাই!
++++++++++++++++++++++++++++++++++++
🌱সূরা আল- ফুরক্বানঃ 68,,69,,70
🍁আর যারা আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডাকে না এবং যারা আল্লাহ যে নাফসকে হত্যা করা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না। আর যারা ব্যভিচার করে না। আর যে তা করবে সে আযাবপ্রাপ্ত হবে।
🌻কিয়ামতের দিন তার আযাব বর্ধিত করা হবে এবং সেখানে সে অপমানিত অবস্থায় স্থায়ী হবে।
🍁তবে যে তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে। পরিণামে আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
________________________________________________
✏মেয়েদের পর্দা বিষয়ক ১৫ টি হাদিস:-
🌷1⃣দেবর মৃত্যু সমতুল্য। (মৃত্যু থেকে মানুষ যেভাবে পলায়ন বা সতর্কতা অবলম্বন করে এক্ষেত্রে তাই করতে হবে)
® (বুখারীঃ ৫২৩২, মুসলিমঃ ২১৭২, তিরমিযীঃ ১১৭১)
🌷2⃣কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে নির্জনে মিলিত হলে নিঃসন্দেহে তাদের তৃতীয়জন হয় শয়তান। ®(তিরমিযীঃ ১১৭১)
🌷3⃣তোমরা সেই মহিলাদের নিকট গমন করো না যাদের স্বামীরা বিদেশে আছে। কারণ, শয়তান তোমাদের রক্ত শিরায় প্রবাহিত হয়।
®(তিরমিযীঃ ১১৭২)
🌷4⃣কোন অবৈধ নারীকে স্পর্শ করার চেয়ে মাথায় লোহার পেরেক পুঁতে যাওয়া ভালো।
®(আস-সিলসিলাতুস সহীহাহঃ ২২৬)
🌷5⃣রাসূল (সঃ) বলেন, “দুই শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামের অধিবাসী যাদেরকে আমি দেখিনি। তারা ভবিষ্যতে আসবে। প্রথম শ্রেণী হবে একদল অত্যাচারী, যাদের সঙ্গে থাকবে গরুর লেজের মত চাবুক যার দ্বারা তারা লোকদেরকে প্রহার করবে। আর দ্বিতীয় শ্রেণী হল সে নারীর দল, যারা কাপড় পরিধান করবে কিন্তু তবুও তারা উলঙ্গ অবস্থায় থাকবে, নিজেরা অন্যদের প্রতি আকৃষ্ট এবং অন্যদেরকেও তাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে, যাদের মস্তক (খোঁপা বাধার কারণে) উটের হেলে যাওয়া কুঁজের মত হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তার গন্ধও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধ বহু দূরবর্তী স্থান থেকেও পাওয়া যাবে।”
® (মুসলিমঃ ২১২৮)
🌷6⃣রাসূল (সঃ) মসজিদের বাহিরে দেখতে পান যে, নারীরা রাস্তায় পুরুষের সাথে মিশে গেছেন। তখন আল্লাহর রাসূল (সঃ) নারীদের বলেন, তোমরা অপেক্ষা কর, কারণ, তোমাদের জন্য রাস্তার মাঝে হাটা উচিত নয়, তোমাদের জন্য হল রাস্তার পাশ। এ কথা শোনে নারী দেয়াল ঘেঁসে হাটা শুরু করে তখন দেখা গেল তাদের অনেকের কাপড় দেয়ালের সাথে মিশে যেত। ®(আবু দাউদঃ ৫২৭২)
🌷7⃣কোন মহিলা যেন মাহরাম পুরুষ ছাড়া একাকিনী সফর না করে, তার নিকট যেন মাহরাম ছাড়া কোনো বেগানা পুরুষ প্রবেশ না করে, এ কথা শোনে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, হে রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমি অমুক অমুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য সৈন্য দলে নাম লিখিয়েছি অথচ আমার স্ত্রী হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন এখন আমি কি করব? রাসূল (সঃ) তাকে উত্তর দিলেন তুমি তার সাথে বের হও।
®(বুখারীঃ ১৮৬২)
🌷8⃣নারী গুপ্ত জিনিস, সুতরাং যখন সে(বাড়ি হতে) বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে রমণীয় করে দেখায়।
®(তিরমিযীঃ ১১৩৭)
🌷9⃣রাসূল (সঃ) আমাদেরকে নিষেধ করেছেন যে, “আমরা যেন মহিলাদের নিকট তাদের স্বামীদের বিনা অনুমতিতে গমন না করি।”
®(তিরমিযীঃ ২৭৭৯)
🌷🔟প্রত্যেক চক্ষুই ব্যভিচারী। আর নারী যদি সুগন্ধি ব্যবহার করে কোনো (পুরুষের) মজলিসের পাশ দিয়ে পার হয়ে যায় তাহলে সে এক বেশ্যা। এমন কি এই অবস্থায় নামাযের জন্য যেতেও নিষিদ্ধ। রাসূল (সঃ) বলেন, “যে মহিলা সেন্ট ব্যবহার করে মসজিদে যায়, সেই মহিলার গোসল না করা পর্যন্ত কোনো নামায কবুল হবে না।”
®(সহীহ আল-জামে আস-সগীর আযযিয়াদাতুহঃ ২৭০)
🌷1⃣1⃣আদম সন্তানের উপর ব্যভিচারের কিছু অংশ লিপিবদ্ধ হয়েছে সে অবশ্যই তার মধ্যে লিপ্ত হবে। দুই চোখের ব্যভিচার হল দৃষ্টি, দুই কানের ব্যভিচার হল শ্রবণ, মুখের ব্যাভিচার হল কথা বলা, হাতের ব্যভিচার হল স্পর্শ করা এবং পায়ের ব্যভিচার হল খারাপ উদ্দেশ্যে অগ্রসর হওয়া। আর অন্তর আশা ও আকাঙ্ক্ষা করতে থাকে। লজ্জা স্থান তাকে বাস্তবায়ন করে অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।
®(মুসলিমঃ ২৬৫৭)
🌷1⃣2⃣যে নারী স্বগৃহ, স্বামীগৃহ বা মায়ের বাড়ি ছাড়া অন্য স্থানে নিজের পর্দা রাখে (কাপড় খোলে) সে তার ও তার রবের মধ্যকার পর্দা ও লজ্জাশীলতাকে বিদীর্ণ করে দেয়।
®(তিরমিযীঃ ২৮০৩)
🌷1⃣3⃣কোন নারীর উপর তোমার দৃষ্টি পড়লে তার প্রতি) বারবার দৃষ্টিপাত করো না। বরং নজর অতিসত্তর ফিরিয়ে নিও, কারণ, তোমার জন্য প্রথমবার ক্ষমা, দ্বিতীয়বার নয়।
®(আহমদঃ ১৩৬৯)
🌹1⃣4⃣নারীদের বেশ ধারী পুরুষের উপর অভিশাপ এবং পুরুষদের বেশ ধারিণী নারীদের উপর আল্লাহর অভিশাপ।
®(ইবনে মাজাহঃ ১৯০৪)
🌷1⃣5⃣যে নারী তার মাথায় এমন চুল বাড়তি লাগায় যা তার মাথার নয়, সে তার মাথায় জালিয়াতি সংযোগ করে।
® (সহীহ আল-জামিউস সাগীরঃ ২৭০৫)
➡লেখাটি ভালো লাগলে এবং উপকৃত হলে শেয়ার করে পৌঁছিয়ে দিন অন্যের কাছে। 👍
কেননা রাসূল (সাঃ) বলেছেন,“যে ব্যক্তি মানুষকে হিদায়াতের দিকে ডাকে তার জন্য ঠিক ঐ পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে, যে পরিমাণ পাবে তাকে অনুসরণকারীরা।
®[সহীহ মুসলিম/২৬৭৪,৬৮০৪]
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
"আল্লাহ তা'আলা দুনিয়ার মানুষকে ডাকছে শুদ্ধ জীবনের দিকে। আর মানুষ দৌড়াচ্ছে দক্ষতার দিকে। জীবনকে যদি সে শুদ্ধ করতে পারে তাহলে আল্লাহ তা'আলা ওয়াদা করছেন তাকে দুনিয়াতেও ভাল জীবন দেবেন, আখেরাতেও ভাল জীবন দেবেন। মানুষ নিজেকে মুল্যবান বানাতে চায়, আর বড় ভূল পদ্ধতিতে, 'দক্ষতা' দিয়ে বানাতে চায়। দক্ষতার দ্বারা তার নিজের জীবন 'মূল্যবান' হয়না, বরং সে মূল্যবান জিনিসের 'উৎপাদনকারী' হয়। একজন কুমার মাটির পাত্র বানায়। সে যদি দক্ষ কুমার হয়, তাহলে সে শুদ্ধ পাতিল বানাতে পারবে, কিন্তু এতে সে নিজে শুদ্ধ হয়না; শুদ্ধ মানুষ হয়না। সে হচ্ছে দক্ষ; 'দক্ষ কুমার' হচ্ছে। ওর কীর্তি শুধু শুদ্ধ পাতিল বানানো, যার মূল্য বড় সাময়িক।
নিজ গুনেও মূল্যবান হয় আর উৎপাদনের গুণেও মুল্যবান হয়। ফুল-ফল নিজ গুণে নিজ দাবিতে মুল্যবান, আর গোবর উৎপাদনের গুণে মূল্যবান। কৃষকরা গোবরকেও মুল্য দিয়ে কিনে, গোবরেরও মূল্য আছে। তো গোবরের যে মূল্য আছে, সেটা তার নিজ গুণে নয় যে, এর গন্ধ ভাল, সুন্দর, এইজন্য কেউ গোবর কিনে না। বরং গোবর এজন্য কেনা হয় যে, এটা সুন্দর ফুল উৎপাদনের সহায়ক। ফুলকে যে কেনা হয়, এটা তার নিজ গুণের কারণে কেনা হয়।
আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাতু ওয়াস সালাম যে পথ এনেছেন সেই পথে একজন মানুষ নিজ দাবীতে মূল্যবান হয়, শুদ্ধ জীবনের জন্য। অন্যদিকে, গোটা দক্ষতার পথ তাকে শুদ্ধ উৎপাদনের সহায়ক বানায়। যতদিন পর্যন্ত ঐ উৎপাদন আছে, ততদিন পর্যন্ত তার মূল্য আছে। গোবরের মূল্য সবার কাছে নয়, শুধু কৃষকের কাছে, তাও আবার তার চাষের মৌসুমে। যখন কৃষকেরও মৌসুম পার হয়ে যাবে, যখন আর সারের দরকার পরবে না, তখন তার কাছেও সেই গোবরের আর কোন মুল্য নেই। কিন্ত ফুল-ফল এগুলো সবার কাছে সবসময় মূল্যবান।
একজন দক্ষ ডাক্তার শুধুমাত্র রোগীর কাছে মূল্যবান, যতদিন পর্যন্ত সে রোগী। অন্যদিকে, একজন শুদ্ধ মানুষ সবার কাছে সবসময় মূল্যবান। এই জন্যে নবীরা যে পথ এনেছেন এ পথে যারা মূল্যবান হয়, তারা তখনও মূল্যবান ছিলেন, আজও মূল্যবান, কেয়ামত পর্যন্ত মূল্যবান থাকবেন। হযরত আবূ বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু, হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু, সব সাহাবাগণ তখনও মূল্যবান ছিলেন, আজও মূল্যবান, আর ভবিষ্যতেও থাকবেন। উনারা যেই পথ দেখিয়ে গেছেন, সেই পথ আজও আমাদের জন্য বড় অর্থপূর্ণ। উনাদেরও অনেকের অনেক দক্ষতা ছিল। কেউ ভাল যোদ্ধা, কেউ দুধ দোহাতে দক্ষ, কিন্তু ঐ দক্ষতার মূল্য শেষ হয়ে গেছে। এখন আর আমরা কেউ তীর দিয়ে যুদ্ধও করি না। সাহাবারা কেউ যদি বড় দক্ষ যোদ্ধা হয়েও থাকেন, আমাদের কাছে সেই দক্ষতার কোন মূল্য নেই, কিন্তু উনাদের সেই শুদ্ধতার মূল্য আছে, এবং থাকবে। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে দাওয়াত দিয়েছেন আমরাও যেন নিজেদেরকে শুদ্ধ জীবনের পথে নিয়ে যাই। যে নিজেকে শুদ্ধ বানাতে পারবে, তার জীবন ধন্য হবে। আল্লাহ তা'আলা এর জন্য দুনিয়াতেও ভাল জীবনের ওয়াদা করেছেন, আখেরাতেও ভাল জীবনের ওয়াদা করেছেন। এই জন্যে বড় জবরদস্ত মেহনতের প্রয়োজন।
পুরা দুনিয়াতে শিক্ষার খুব চর্চা আছে, কিন্তু গোটা দুনিয়ার প্রতিষ্ঠিত প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতিরই একটা বড় দূর্বলতা যে, শিক্ষার লক্ষ্যই হচ্ছে দক্ষতা, শুদ্ধতা নয়। আর মানুষের জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে শুদ্ধতার প্রয়োজন। এটা কোন বিশেষ সমাজ বা কাউকে দোষারোপ করে বলছি না, যেরকম আমাদের এই দেশের এই সমাজের বিশেষ কোন দূর্বলতা বা বিশেষ কোন দোষ, তা নয়।
এজন্যে আল্লাহর পথে বের হয়ে আমরা আমাদের নিজেদেরকে শুদ্ধ বানাই। ঠিক না ভাই ইনশাআল্লাহ! এজন্য সবাই নিয়ত করি চিল্লার জন্যে, তিন চিল্লার জন্যে আল্লাহর পথে বের হবো। আর এই জন্যে বের হবো যে, আল্লাহ তা'আলা যেন আমাদেরকে শুদ্ধ বানাবার পথ দেখিয়ে দেন, যেন আমরা শুদ্ধ হতে পারি। আর শুদ্ধ কারা? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবারা যেরকম ছিলেন।"
-হযরত মুশফিক আহমাদ রহ.
[৪ঠা মে ২০০৭, বা'দ মাগরিব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ]
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
///////////////////////////////////////////////////////
অসাধারণ একটি জীবন্ত হাদিস.........
( লোকে কি বলবে! এই চিন্তা করে কতজন যে ফিতনায় পা দিয়েছে, আল্লাহ্ ভালো জানেন... হায়রে সমাজ!)
ইমাম আবু সুলইমান খাত্তাবী রহ. (মৃ: ২৮৮ হি:) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে নিজ সনদে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-
– ‘অবশ্যই মানুষের উপর (এমন একটি) জামানা আসবে, (যখন বদদ্বীনীর কারণে দ্বীন মতো চলা এত কঠিন হয়ে যাবে যে), দ্বীনদার ব্যাক্তির জন্য তার দ্বীনকে নিয়ে শিয়ালের কৌশলে পালানোর ন্যায় এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে, এক চুড়া থেকে অন্য চুড়া’য় এবং এক পাহাড়ী-গুহা থেকে অন্য পাহাড়ী-গুহা’য় পালিয়ে ফেরা ছাড়া (কেউ তার দ্বীনকে) নিরাপদে রাখতে পারবে না।
জিজ্ঞেস করা হল: সেটা কখন হবে -ইয়া রাসুলাল্লাহ?
তিনি বললেন: যখন (উপার্জনের উপায়-উপকরণের মধ্যে নাজায়েয বিষয় এত ব্যপকভাবে জড়িত থাকবে যে, তখন) আল্লাহ তাআলা’র (অসন্তুষ্টি ও) ক্রধ ব্যতীত আয়-রোজগার করা যাবে না। যখন এরকম জামানা হবে, তখন অবিবাহিত থাকাকে হালাল করে নিবে।
বলা হল: সেটা কেমন করে হতে পারে -ইয়া রাসুলাল্লাহ, অথচ আপনি আমাদেরকে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছেন!?
তিনি বললেন: কারণ, যখন সেই জামানাটি আসবে, তখন পুরুষ তার পিতা-মাতার হাতে বরবাদ হয়ে যাবে। যদি সে তার পিতা-মাতার হাতে (বরবাদ) না হয়, তাহলে সে তার স্ত্রী ও সন্তানের হাতে (বরবাদ হবে)। যদি তার স্ত্রীর হাতেও না হয়, সন্তানের হাতে না হয়, তাহলে সে তার আত্বীয়-স্বজনের হাতে (বরবাদ হবে)।
লোকেরা জিজ্ঞেস করলো: (সেটা) কেমন করে হবে -ইয়া রাসুলাল্লাহ!
রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ বললেন: তারা তাকে (সামাজিকতার খাতিরে ভাল মানের) আয়-রোজগার করার জন্য কঠর পরিশ্রম করতে জোড়াজুড়ি করতে থাকবে, পরে তারা তার উপর (এমন মানুষিক ও সামাজিক) বোঝা চাপিয়ে দিবে, যা সে ধারন করতে পারবে না। অবশেষে সে (অর্থকড়ি উপার্জনের জন্য নাজায়েয ও) বরবাদীর উপকরনাদির দিকে ধাবিত হবে’।
[আল-উযলাহ, ইমাম খাত্তাবী– ১/১০ হাদিস ৯; আল-যুহদুল কাবীর, বাইহাকী, হাদিস ৪৪৫] الله اعلم بالصواب
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
ইতিহাসঃ
নাস্তিক দাদাদের জন্যে উপহার !!যারা ইউরোপ আমেরিকার শিক্ষা, ইতিহাস ও কালচার নিয়ে খুব গর্ববোধ করেন!!
ইসলামের কঠোর সমালোচক হওয়া সত্ত্বেও বিখ্যাত সাহিত্যিক এইচ.জি. ওয়েলস এ বাস্তবতা স্বীকার করে লিখেন,
“নবধারা ও সতেজ প্রাণশক্তিপূর্ণ আরব মেধা কল্যাণকর জ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটি পালন করেছিল সুষ্ঠুভাবে, যে ধারা এক সময় গ্রীকরা শুরু করে ছেড়ে দিয়েছিল।…
আজকের আধুনিক বিশ্ব, জ্ঞানের সেই আলো ও শক্তির উপহার ল্যাটিন সূত্রে লাভ করেনি, করেছে আরবদের মাধ্যমে।…
তারা পশ্চিমের চেয়ে প্রায় এক শতাব্দি এগিয়ে থেকে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র গড়ে তুলেছিল।…
পূর্ব কিংবা পশ্চিম, চারিদিক থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে এসে জড়ো হত।…আরব দর্শন পরবর্তীতে লক্ষণীয়ভাবে প্রভাবিত করেছিল পশ্চিম ইউরোপীয় চিন্তাধারাকে বিশেষত প্যারিস, অক্সফোর্ড ও উত্তর ইটালির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে।…”
H.G. Wells, The Outline of History: Being a Plain History of Life and Mankind; vol. II, p. 335-336 (London, The Waverley Book Company, Limited, 1920)
-----------------------------------------------------------------------------------------
মানুষ যেহেতু তার ভাগ্য সম্পর্কে জানে না, সেহেতু তাকে সর্বদা জান্নাত লাভের আশায় উক্ত পথেই কাজ করে যেতে হবে। সাধ্যমত চেষ্টা সত্ত্বেও ব্যর্থ হ’লে বুঝতে হবে যে, ওটাই তার তাকদীরের লিখন ছিল। বান্দাকে ভাল ও মন্দ দু’টি করারই স্বাধীন এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। আর এই ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগের স্বাধীনতার কারণেই বনু আদম (আঃ) আল্লাহর সেরা সৃষ্টির মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছে। আর একারণেই তাকে তার ভাল ও মন্দ কাজের পরিণতি ভোগ করতে হয়।
এখানে আদম (আঃ)ের ঔরস বলতে আদম (আঃ) ও তার ভবিষ্যৎ সন্তানদের ঔরস বুঝানো হয়েছে। এখানে ‘বংশধর’ বলতে তাদের অশরীরী আত্মাকে বুঝানো হয়নি, বরং আত্মা ও দেহের সমন্বয়ে জ্ঞান ও চেতনা সম্পন্ন ক্ষুদ্র অবয়ব সমূহকে বুঝানো হয়েছে, যাদের কাছ থেকে সেদিন সজ্ঞানে তাদের প্রতিজ্ঞা ও প্রতিশ্রুতি নেওয়া হয়েছিল। আর এটা আল্লাহর জন্য খুবই সহজ। আজকের বিজ্ঞান একটা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণুর ভিতরে গোটা সৌরমন্ডলীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে। ফিল্মের মাধ্যমে একটি বিরাটকায় বস্ত্তকে একটি ছোট্ট বিন্দুর আয়তনে দেখানো হচ্ছে। কাজেই আল্লাহ তা‘আলা যদি উক্ত অঙ্গীকার অনুষ্ঠানে সকল আদম (আঃ) সন্তানকে জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন করে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দেহে অণু-বিন্দুতে অস্তিত্ব দান করে থাকেন, তবে তাতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। তাছাড়া জ্ঞানসম্পন্ন না হ’লে এবং বিষয়টি তাদের অনুধাবনে ও উপলব্ধিতে না আসলে এ ধরনের প্রতিশ্রুতি গ্রহণের ও অঙ্গীকার ঘোষণার কোন গুরুত্ব থাকে না।
প্রশ্ন হ’তে পারে যে, সৃষ্টির সূচনায় গৃহীত এই প্রতিজ্ঞা ও প্রতিশ্রুতির কথা পরবর্তীতে মানুষের ভুলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তাহ’লে এ ধরনের প্রতিশ্রুতি গ্রহণের ফলাফলটা কি? এর জবাব এই যে, আদি পিতা-মাতা আদম (আঃ)-হাওয়ার রক্ত ও মানসিকতার প্রভাব যেমন যুগে-যুগে দেশে-দেশে সকল ভাষা ও বর্ণের মানুষের মধ্যে সমভাবে পরিদৃষ্ট হয়, তেমনিভাবে সেদিনে গৃহীত তাওহীদের স্বীকৃতি ও প্রতিশ্রুতির প্রভাব সকল মানুষের মধ্যেই কমবেশী বিদ্যমান রয়েছে। মানুষের অস্তিত্বই মানুষকে তার সৃষ্টিকর্তার সন্ধান দেয় ও বিপন্ন অবস্থায় তার কাছে আশ্রয় গ্রহণের জন্য তার হৃদয় ব্যাকুল হয়ে ওঠে।
তাই তো দেখা গেছে, বিশ্ব ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম শাসক ও আল্লাহদ্রোহী ফেরাঊন ডুবে মরার সময় চীৎকার দিয়ে আল্লাহর উপরে তার বিশ্বাস ঘোষণা করেছিল’ (ইউনুস ১০/৯০-৯১)। মক্কা-মদীনার কাফের-মুশরিকরা শেষনবীর সাথে শত্রুতা পোষণ করলেও কখনো আল্লাহকে অস্বীকার করেনি। আধুনিক বিশ্বের নাস্তিকসেরা স্ট্যালিনকে পর্যন্ত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পূর্ব মুহূর্তে ‘ওহ মাই গড’ বলে চীৎকার করে উঠতে শোনা গেছে। প্রকৃতপক্ষে সৃষ্টির সূচনালগ্নে গৃহীত উক্ত স্বীকারোক্তি প্রত্যেকটি মানুষের হৃদয়ে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাসের বীজ বপন করে দিয়েছে। চাই তার বিকাশ কোন শিরকী ও ভ্রান্ত পদ্ধতিতে হৌক বা নবীদের দেখানো সঠিক তাওহীদী পদ্ধতিতে হৌক।
এ কথাটাই হাদীছে এসেছে এভাবে যে, مَامِنْ مَوْلُوْدٍ إلاَّ يُوْلَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبْوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ اَوْ يُنَصِّرَانِهِ أَوْ يُمَجِّسَانِهِ... ‘প্রত্যেক মানবশিশুই ফিৎরাতের উপরে জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর তার পিতা-মাতা তাকে ইহুদী-নাছারা বা মজূসী (অগ্নিউপাসক) বানায়’।[21] এখানে ‘ফিৎরাত’ অর্থ স্বভাবধর্ম ইসলাম।[22] অর্থাৎ মানব শিশু কোন শিরকী ও কুফরী চেতনা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না। বরং আল্লাহকে চেনা ও তার প্রতি আনুগত্য ও আত্মসমর্পণের চেতনা ও যোগ্যতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এর ফলে নবীদের প্রদত্ত তাওহীদের শিক্ষাকে সে অত্যন্ত সহজে ও সাগ্রহে বরণ করে নেয়। কেননা শুধু জন্মগত চেতনার কারণেই কেউ মুসলমান হ’তে পারে না। যতক্ষণ না সে নবীর মাধ্যমে প্রেরিত দ্বীন সজ্ঞানে স্বেচ্ছায় কবুল করে।
ছহীহ মুসলিমের অপর বর্ণনায় এসেছে, وَإِنِّىْ خَلَقْتُ عِبَادِيْ حُنَفَاءَ كُلَّهُمْ وَأَنَّهُمْ أَتَتْهُمْ الشَّيَاطِيْنُ فَاجْتَالَتْهُمْ عَنْ دِيْنِهِمْ... ‘আল্লাহ বলেছেন, যে আমি আমার বান্দাদের ‘হানীফ’ অর্থাৎ ‘আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ’ রূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর শয়তান তার পিছে লেগে তাকে আল্লাহর পথ থেকে দূরে নিয়ে গেছে।[23] আল্লাহ বলেন, فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِيْ فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لاَ تَبْدِيْلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ‘আল্লাহর ফিৎরত, যার উপরে তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর এই সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই’ (রূম ৩০/৩০)।
মোট কথা প্রত্যেক মানবশিশু স্বভাবধর্ম ইসলামের উপরে জন্মগ্রহণ করে এবং নিজ সৃষ্টিকর্তাকে চেনার ও তাকে মেনে চলার অনুভূতি ও যোগ্যতা নিয়ে সৃষ্টি হয়। যদিও পিতা-মাতা ও পরিবেশের কারণে কিংবা শয়তানের ওয়াসওয়াসায় পরবর্তীতে অনেকে বিভ্রান্ত হয়। অতএব কাফির-মুমিন-মুশরিক সবার মধ্যে আল্লাহকে চেনার ও তাঁর ইবাদত ও আনুগত্যের চেতনা ও যোগ্যতা বিদ্যমান রয়েছে। এই সৃষ্টিগত চেতনা ও অনুভূতিকে কেউ পরিবর্তন করতে পারে না। অর্থাৎ কুশিক্ষা, কুসঙ্গ ও শয়তানী সাহিত্য পাঠ করে বা নষ্ট ব্লু ফিল্মের নীল দংশনে উক্ত চেতনাকে পরিবর্তনের চেষ্টা করা আল্লাহর সৃষ্টির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার শামিল। অতএব উক্ত সৃষ্টিগত চেতনাকে সমুন্নত রাখাই ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের কর্তব্য।
একথা ব্যক্ত করে আল্লাহ বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلاَّ لِيَعْبُدُوْنِ- ‘আমি জিন ও ইনসানকে আমার ইবাদত ব্যতীত অন্য কোন কাজের জন্য সৃষ্টি করিনি’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)। অর্থাৎ আমি তার প্রকৃতিতে আমার প্রতি ইবাদত ও দাসত্বের আগ্রহ ও যোগ্যতা সৃষ্টি করে দিয়েছি। এটাকে সঠিক অর্থে কাজে লাগালে আমার অবাধ্যতামূলক কোন কাজ বান্দার দ্বারা সংঘটিত হবে না এবং জগতসংসারেও কোন অশান্তি ঘটবে না। যেমনভাবে কোন মুসলিম শিশু জন্মগ্রহণের সাথে সাথে তার কানে আযান শোনানো হয়।[24] অথচ ঐ শিশু আযানের মর্ম বুঝে না বা বড় হয়েও তার সেকথা মনে থাকে না। অথচ ঐ আযানের মাধ্যমে তার হৃদয়ে প্রোথিত হয়ে যায় তাওহীদ, রিসালাত ও ইবাদতের বীজ। যার প্রভাব সে আজীবন অনুভব করে। সে বে-আমল হ’লেও ‘ইসলাম’-এর গন্ডী থেকে খারিজ হয়ে যেতে তার অন্তর কখনোই সায় দেয় না। তার অবচেতন মনে আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি আনুগত্য বোধ অক্ষুণ্ণ থাকে। বিশেষ করে হতাশা ও বিপন্ন অবস্থায় সে তার প্রভুর সাহায্য ও সান্নিধ্য লাভের জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে।
অর্থ না বুঝলেও কুরআন পাঠ ও আযানের ধ্বনি মানুষের মনকে যেভাবে আকৃষ্ট করে এবং হৃদয়ে যে স্থায়ী প্রভাব ফেলে তার কোন তুলনা নেই। একারণেই কাফির আরব নেতারা মানুষকে কুরআন শুনতে দিত না। অথচ নিজেরা রাতের অন্ধকারে তা গোপনে আড়ি পেতে শুনত এবং একে জাদু বলত। শ্রেষ্ঠ আরব কবিগণ কুরআনের অলৌকিকত্বের কাছে আত্মসমর্পণ করেন এমনকি অন্যতম শ্রেষ্ঠ আরবী কবি লাবীদ বিন রাবী‘আহ কুরআন শোনার পর কাব্যচর্চা পরিত্যাগ করেন। গত শতাব্দীর শুরুতে তুরষ্কে ওছমানীয় খেলাফত উৎখাত করে কামাল পাশা ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করেন এবং মসজিদ সমূহে আরবী আযান বন্ধ করে তুর্কী ভাষায় আযান দেওয়ার নির্দেশ জারি করেন। কিন্তু তাতে আরবী আযানের প্রতি মানুষের হৃদয়াবেগ আরও বৃদ্ধি পায়। ফলে গণবিদ্রোহ দেখা দিলে তিনি উক্ত আদেশ বাতিল করতে বাধ্য হন।
আধুনিক বিজ্ঞানও প্রমাণ করে দিয়েছে যে, শব্দ মানব মনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। তাই আল্লাহ প্রেরিত আযানের ধ্বনি সদ্যপ্রসূত শিশুর কচি মনে আজীবনের জন্য সুদূরপ্রসারী স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করবে- এটাই স্বাভাবিক। অতএব সৃষ্টির সূচনাকালের গৃহীত ‘আহ্দে আলাস্ত্ত’ বা আল্লাহর প্রতি ইবাদত ও আনুগত্যের প্রতিজ্ঞা ও প্রতিশ্রুতি মানব মনে জীবনব্যাপী স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করে থাকে। যার কথা বারবার বান্দাকে স্মরণ করিয়ে দিতে হয় এবং যার বিরোধিতা করা আত্মপ্রবঞ্চনা করার শামিল।
___________________________________________________________________
আসসালামু আলাইকুম,
#কুরাআন ও হাদীস থেকে পর্দার দলীলঃ
নিম্নে বর্ণিত দীললসমূহ পর্দা ফরযের উজ্জল প্রমাণ এবং যারা মনে করে যে, পর্দা একটি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অভ্যাস বা ইসলামের প্রাথমিক যুগের জন্যই মানানসই ছিল।
প্রথমত: করআন থেকে দলীল:
প্রথম দলীল: আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
“(হে নবী!) ঈমানদার নারীদেরকে বল: তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে, তারা যেন যা সাধারণত; প্রকাশ থাকে তা ব্যতীত তাদের শোভা প্রদর্শন না করে, তাদের গলদেশ ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে, তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা (দাদা-নানাসহ), শশুর (দাদা শশুর-নানা শশুরসহ), পুত্র (ও নাতি), স্বামীর পুত্র (নাতিসহ), ভাই (সহোদর ও সৎভাই), ভাতিজা, ভাগ্নে, আপন (মুসলিম) নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাস- দাসী, এমন অধিনস্থ পুরুষ যাদের মধ্যে পৌরুষত্ব বিলুপ্ত এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারো নিকট তাদের শোভা প্রকাশ না করে। তারা যেন সজোরে পদক্ষেপ না নেয় যাতে তাদের গোপন শোভা প্রকাশ পায়। হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩১]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আল্লাহ প্রথম পর্যায়ের হিজরতকারী মহিলাদের প্রতি অনুগ্রহ করুন: যখন আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন:
﴿وَلۡيَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ﴾ [النور: ٣١]
“(তাদের গলদেশ ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে) সাথে সাথে তারা স্বীয় চাদরসমূহ চিরে টুকরা করে তা দ্বারা আবৃত করেন।” (সহীহ বুখারী)
দ্বিতীয় দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَٱلۡقَوَٰعِدُ مِنَ ٱلنِّسَآءِ ٱلَّٰتِي لَا يَرۡجُونَ نِكَاحٗا فَلَيۡسَ عَلَيۡهِنَّ جُنَاحٌ أَن يَضَعۡنَ ثِيَابَهُنَّ غَيۡرَ مُتَبَرِّجَٰتِۢ بِزِينَةٖۖ وَأَن يَسۡتَعۡفِفۡنَ خَيۡرٞ لَّهُنَّۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٞ ٦٠﴾ [النور: ٦٠]
“আর এমন বৃদ্ধ নারীগণ যারা বিবাহের আশা রাখে না, তাদের জন্য দোষ নেই যদি তারা তাদের শোভা প্রদর্শন না করে তাদের (বাহ্যিক অতিরিক্ত চাদর উড়না) বস্ত্র খুলে রাখে, তবে সংযমী হয়ে বিরত থাকলে তা তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞ।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৬০]
তৃতীয় দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ قُل لِّأَزۡوَٰجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ يُدۡنِينَ عَلَيۡهِنَّ مِن جَلَٰبِيبِهِنَّۚ ذَٰلِكَ أَدۡنَىٰٓ أَن يُعۡرَفۡنَ فَلَا يُؤۡذَيۡنَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ٥٩﴾ [الاحزاب: ٥٩]
“হে নবী তুমি তোমার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে ও মুমিনদের নারীগণকে বল, তারা যেন তাদের উড়না বা চাদরের কিছু অংশ নিজেদের (চেহারা ও বুকের) উপর টেনে দেয়, এতে তাদের চেনা সহজতর হবে, (বুঝা যাবে যে তারা স্বাধীন ও সম্ভ্রান্ত) ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৯]
চতুর্থ দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَقَرۡنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجۡنَ تَبَرُّجَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ ٱلۡأُولَىٰ﴾ [الاحزاب: ٣٣]
“আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে, প্রাচীন জাহেলী যুগের মতো তোমরা সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বেড়াবে না।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৩৩]
পঞ্চম দলীল: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿فَسَۡٔلُوهُنَّ مِن وَرَآءِ حِجَابٖۚ ذَٰلِكُمۡ أَطۡهَرُ لِقُلُوبِكُمۡ وَقُلُوبِهِنَّۚ﴾ [الاحزاب: ٥٣]
“আর যখন তোমরা তাদের নিকট কিছু চাইবে পর্দার অন্তরাল থেকে চাইবে, এ বিধান তোমাদের ও তাদের হৃদয়ের জন্য অধিকতর পবিত্র।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৩]
দ্বিতীয়তঃ হাদীস থেকে পর্দার দলীল:
প্রথম দলীল: সহীহ বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার স্ত্রীদেরকে পর্দা করতে বলুন, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, এরপর আল্লাহ পর্দার আয়াত অবতীর্ণ করেন। সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এ বর্ণনাও রয়েছে যে, উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, যদি আপনি মুমিনদের জননীদেরকে পর্দার আদেশ দিতেন; এরপর আল্লাহ পর্দার আয়াত অবতীর্ণ করেন।
দ্বিতীয় দলীল: ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করে বলেন, “নারীরা হলো গোপনীয় বস্তু।” (তিরমিযী এবং এটিকে আলাবনী সহীহ বলেছেন)
তৃতীয় দলীল: ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি অহংকারবশতঃ স্বীয় কাপড় টাখনুর নিচে রাখলো কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না। অতঃপর উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তবে মহিলারা তাদের নিম্নাংশের ঝালরের ব্যাপারে কী করবে? তিনি বলেন, এক বিঘত (গোছার নিচে) ঝুলিয়ে দিবে, উম্মে সালামা বলেন, তবে এতে তাদের পা বেরিয়ে থাকবে, তিনি বলেন, তবে তা (গোছার নিচে) এক হাত ঝুলিয়ে দিবে এর বেশি করবে না।” (আবু দাউদ ও তিরমিযী এবং তিনি বলেন, হাদীসটি হাসান-সহীহ)।
কুরআন ও হাদীসে চেহারা আবৃত করা দলীলসমূহঃ
প্রথমত: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلۡيَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّۖ﴾ [النور: ٣١]
“তাদের গলদেশ ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় (ওড়না বা চাদর) দ্বারা আবৃত করে।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩১]
আল্লামা ইবন উসাইমীন রহ. বলেন, (আয়াতে বর্ণিত) খিমার হলো: যার দ্বারা মহিলা ঘোমটা দিয়ে স্বীয় মাথা আবৃত করে থাকে।
সুতরাং মহিলা যেহেতু চাদর বা ওড়না দ্বারা তার বক্ষদেশ আবৃত করার জন্য আদিষ্ট, অতএব সে তার চেহারা আবৃত করার জন্যও আদিষ্ট।
দ্বিতীয়ত: আল্লাহর বাণী:
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ قُل لِّأَزۡوَٰجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ يُدۡنِينَ عَلَيۡهِنَّ مِن جَلَٰبِيبِهِنَّ﴾ [الاحزاب: ٥٩]
“হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রী, কন্যাগণকে ও মুমিনদের নারীগণকে বল: তারা যেন তাদের ওড়না বা চাদরের কিছু অংশ নিজেদের (চেহারা ও বুকের) উপর টেনে দেয়।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫৯]
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মানুষ থাকলে তার আত্মীয়-স্বজন থাকবে এবং বাড়ীতে মেহমানও আসবে। তাই মেহমানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহে রাখা যরূরী। রসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,فِرَاشٌ لِلرَّجُلِ وَفِرَاشٌ لاِمْرَأَتِهِ وَالثَّالِثُ لِلضَّيْفِ وَالرَّابِعُ لِلشَّيْطَانِ- ‘একটি শয্যা পুরুষের, দ্বিতীয় শয্যা তার স্ত্রীর, তৃতীয়টি অতিথির জন্য আর চতুর্থটি (যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়) শয়তানের জন্য’।[মুসলিম হা/২০৮৪; আবু দাউদ হা/৪১৪২; মিশকাত হা/৪৩১০।]
এ হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, প্রত্যেক মুসলমানের জন্য যরূরী হচ্ছে মেহমানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস বাড়ীতে সংরক্ষণ করা তাহ’লে মেহমানকে বাড়ী রাখা সম্ভব হবে এবং তার আপ্যায়ন করা সহজ হবে।
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
বোন, সময় থাকতে বিয়ে করুন!
মনে রাখবেন, সময় ও স্রোত কারো জন্য বসে থাকে না। সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করা বুদ্ধিমানের পরিচয়। তাই সময়ের কাজ সময় থাকতেই করতে হয়। তা না হলে জীবন শায়ান্থে এসে আফসুস করা ছাড়া উপায় থাকে না।
আমাদের সমাজের চিত্র এমন যে, লেখাপড়া ক্যারিয়ার ইত্যাদির জন্য অনেক মেয়ে বিয়ের ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। কিন্তু যত বড় ক্যারিয়ার থাকুক না কেন ছেলেরা চাইবে তার চাইতে কমপক্ষে ৫/৬ বছর ছোট কোন মেয়েকে বিয়ে করতে। সেই হিসেবে শিক্ষিত সমাজে সবচেয়ে বেশি ডিমান্ডের মেয়েরা হয় ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী। ইদানীং ছেলে মেয়েদের অবৈধ সম্পর্ক বেড়ে যাওয়ার কারনে ছেলেরা ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বৌ হিসেবে চায়। কারন ছেলেদের ধারনা প্রেম-প্রীতির এই যুগে মেয়েরা ১৬/১৭ বয়সেই প্রেমে পড়ে যায়, যাদের একটা অংশ ১৮ পার না হতেই সতীত্ব হারায়। মেয়েদের প্রতি এই অবিশ্বাসের কারনে ছেলে পাত্ররা অনুর্ধ ১৮ মেয়েদেরকেই পছন্দ করে!
এছাড়া মেয়েদের চেহারায় যে কোমলতা থাকে তা ২৫/২৬ বছর পর থেকে ধীরে ধীরে মুছে যেতে থাকে এবং এক সময় তা মুরুব্বি টাইপের চেহারায় রূপান্তরিত হয়। তাইতো আমরা কখনও কোন গল্পের নায়িকার বয়স ৩০ দেখি না। এমনকি কোন নাটকে নায়িকাকে নায়কের চাইতে বয়সে বড় হতেও দেখা যায় না। দেখা যায় না কোন কবিকে তিরিশোর্ধ নারীকে নিয়ে কবিতা লিখতে। আর ছেলেরা তাদের আড্ডায় যেসব মেয়েদের নিয়ে রসালো আলাপ করে তাদের কারো বয়স ২৪/২৫ এর বেশি না।
আমার স্কুল বয়েসের সহপাঠী বান্ধবীদের দেখলে আজ খুব লজ্জা পাই। মুখ দিয়ে তুই-তুমি বের হতে চায় না, কারণ তাদেরকে এখন মুরুব্বী মুরুব্বী লাগে। আমার যৌবন বয়সে আমার চাইতে অনেক ছোট যে মেয়েকে দেখে উদাসীন হয়ে যেতাম, তাকে এখন দেখলে 'খালাম্মা খালাম্মা' লাগে।
আমার বন্ধুদের একজনের বড় বোন ডাক্তার। ৬ বছর ধরে 'যোগ্য' পাত্র খুজতে খুজতে তিনি নিজেই অযোগ্য হবার যোগাড় হয়েছেন। বয়স ৩৫ চলছে। ওনার পরিবারের প্রথম টার্গেট ছিল ডাক্তার পাত্র ছাড়া বিয়ে করবে না। ২৯ বছর বয়সে যখন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিল তখন কিছু সিনিয়ার অবিবাহিত ডাক্তার পাত্র পাওয়া যাচ্ছিল কিন্তু সেগুলো তাদের পছন্দ হচ্ছিল না। পাত্র খুজতে খুজতে বয়স এখন ৩৫-এ এসে দাঁড়িয়েছে। এখন আর ডাক্তার পাত্র পাচ্ছে না। মনে হয় আর পাবেনও না। এখন 'অ-ডাক্তার' ছেলে পেলেও চলবে। ইভেন জুনিয়ার কোন ব্যাপার না। হা হা হা!
আমার বন্ধুর মামাত বোন। বর্তমানে এই আপুটি একজন উচ্চ শিক্ষিত, বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রী নিতে গিয়ে বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। ওনার জীবনের লক্ষ্যই ছিল উচ্চতর ডিগ্রী নেয়া। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে কিন্তু ততক্ষনে বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। এখন এত এর ডিগ্রী সত্ত্বেও পাত্র পাচ্ছেন না। ৩৮+ এই আপুটির আজ উচ্চতর ডিগ্রী আছে কিন্তু সংসার করার মানুষটি নাই; আফসোস।
৩৮ বছর বয়সী আর এক আপুর সাথে পরিচয় সামুয়ার ব্লগে। আমাকে তার বিয়ের জন্য ঘটকালীর দায়িত্ব দিয়েছেন। পারিবারিক কী এক ঝামেলার কারনে এখনো বিয়ে করতে পারেননি। এখন সব ঝামেলা থেকে তিনি মুক্ত। বিয়ে করতে পুরোপুরি প্রস্তুত। কিন্তু তার এই প্রস্তুতি নিতে নিতে যে তার বিয়ের পাত্র হারিয়ে গেছে সেটা তিনি টের পান নাই!
আসলে সময় ও স্রোত কারো জন্য বসে থাকে না -শিশুকালে ভাব সম্প্রসারণ লিখে গাদা গাদা নাম্বার পাওয়া এসব শিক্ষনীয় প্রবাদকে আমরা পরীক্ষার খাতাতেই সীমাবদ্ধ করে রেখেছি, বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করি নাই, তাই তো বাংলাদেশের প্রতি ১০ জন মেয়ের মধ্যে ১ জনের আজ স্বামী নাই!
++++++++++++++++++++++++++++++++++++
🌱সূরা আল- ফুরক্বানঃ 68,,69,,70
🍁আর যারা আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডাকে না এবং যারা আল্লাহ যে নাফসকে হত্যা করা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না। আর যারা ব্যভিচার করে না। আর যে তা করবে সে আযাবপ্রাপ্ত হবে।
🌻কিয়ামতের দিন তার আযাব বর্ধিত করা হবে এবং সেখানে সে অপমানিত অবস্থায় স্থায়ী হবে।
🍁তবে যে তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে। পরিণামে আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
________________________________________________
✏মেয়েদের পর্দা বিষয়ক ১৫ টি হাদিস:-
🌷1⃣দেবর মৃত্যু সমতুল্য। (মৃত্যু থেকে মানুষ যেভাবে পলায়ন বা সতর্কতা অবলম্বন করে এক্ষেত্রে তাই করতে হবে)
® (বুখারীঃ ৫২৩২, মুসলিমঃ ২১৭২, তিরমিযীঃ ১১৭১)
🌷2⃣কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে নির্জনে মিলিত হলে নিঃসন্দেহে তাদের তৃতীয়জন হয় শয়তান। ®(তিরমিযীঃ ১১৭১)
🌷3⃣তোমরা সেই মহিলাদের নিকট গমন করো না যাদের স্বামীরা বিদেশে আছে। কারণ, শয়তান তোমাদের রক্ত শিরায় প্রবাহিত হয়।
®(তিরমিযীঃ ১১৭২)
🌷4⃣কোন অবৈধ নারীকে স্পর্শ করার চেয়ে মাথায় লোহার পেরেক পুঁতে যাওয়া ভালো।
®(আস-সিলসিলাতুস সহীহাহঃ ২২৬)
🌷5⃣রাসূল (সঃ) বলেন, “দুই শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামের অধিবাসী যাদেরকে আমি দেখিনি। তারা ভবিষ্যতে আসবে। প্রথম শ্রেণী হবে একদল অত্যাচারী, যাদের সঙ্গে থাকবে গরুর লেজের মত চাবুক যার দ্বারা তারা লোকদেরকে প্রহার করবে। আর দ্বিতীয় শ্রেণী হল সে নারীর দল, যারা কাপড় পরিধান করবে কিন্তু তবুও তারা উলঙ্গ অবস্থায় থাকবে, নিজেরা অন্যদের প্রতি আকৃষ্ট এবং অন্যদেরকেও তাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে, যাদের মস্তক (খোঁপা বাধার কারণে) উটের হেলে যাওয়া কুঁজের মত হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তার গন্ধও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধ বহু দূরবর্তী স্থান থেকেও পাওয়া যাবে।”
® (মুসলিমঃ ২১২৮)
🌷6⃣রাসূল (সঃ) মসজিদের বাহিরে দেখতে পান যে, নারীরা রাস্তায় পুরুষের সাথে মিশে গেছেন। তখন আল্লাহর রাসূল (সঃ) নারীদের বলেন, তোমরা অপেক্ষা কর, কারণ, তোমাদের জন্য রাস্তার মাঝে হাটা উচিত নয়, তোমাদের জন্য হল রাস্তার পাশ। এ কথা শোনে নারী দেয়াল ঘেঁসে হাটা শুরু করে তখন দেখা গেল তাদের অনেকের কাপড় দেয়ালের সাথে মিশে যেত। ®(আবু দাউদঃ ৫২৭২)
🌷7⃣কোন মহিলা যেন মাহরাম পুরুষ ছাড়া একাকিনী সফর না করে, তার নিকট যেন মাহরাম ছাড়া কোনো বেগানা পুরুষ প্রবেশ না করে, এ কথা শোনে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, হে রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমি অমুক অমুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য সৈন্য দলে নাম লিখিয়েছি অথচ আমার স্ত্রী হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন এখন আমি কি করব? রাসূল (সঃ) তাকে উত্তর দিলেন তুমি তার সাথে বের হও।
®(বুখারীঃ ১৮৬২)
🌷8⃣নারী গুপ্ত জিনিস, সুতরাং যখন সে(বাড়ি হতে) বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে রমণীয় করে দেখায়।
®(তিরমিযীঃ ১১৩৭)
🌷9⃣রাসূল (সঃ) আমাদেরকে নিষেধ করেছেন যে, “আমরা যেন মহিলাদের নিকট তাদের স্বামীদের বিনা অনুমতিতে গমন না করি।”
®(তিরমিযীঃ ২৭৭৯)
🌷🔟প্রত্যেক চক্ষুই ব্যভিচারী। আর নারী যদি সুগন্ধি ব্যবহার করে কোনো (পুরুষের) মজলিসের পাশ দিয়ে পার হয়ে যায় তাহলে সে এক বেশ্যা। এমন কি এই অবস্থায় নামাযের জন্য যেতেও নিষিদ্ধ। রাসূল (সঃ) বলেন, “যে মহিলা সেন্ট ব্যবহার করে মসজিদে যায়, সেই মহিলার গোসল না করা পর্যন্ত কোনো নামায কবুল হবে না।”
®(সহীহ আল-জামে আস-সগীর আযযিয়াদাতুহঃ ২৭০)
🌷1⃣1⃣আদম সন্তানের উপর ব্যভিচারের কিছু অংশ লিপিবদ্ধ হয়েছে সে অবশ্যই তার মধ্যে লিপ্ত হবে। দুই চোখের ব্যভিচার হল দৃষ্টি, দুই কানের ব্যভিচার হল শ্রবণ, মুখের ব্যাভিচার হল কথা বলা, হাতের ব্যভিচার হল স্পর্শ করা এবং পায়ের ব্যভিচার হল খারাপ উদ্দেশ্যে অগ্রসর হওয়া। আর অন্তর আশা ও আকাঙ্ক্ষা করতে থাকে। লজ্জা স্থান তাকে বাস্তবায়ন করে অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।
®(মুসলিমঃ ২৬৫৭)
🌷1⃣2⃣যে নারী স্বগৃহ, স্বামীগৃহ বা মায়ের বাড়ি ছাড়া অন্য স্থানে নিজের পর্দা রাখে (কাপড় খোলে) সে তার ও তার রবের মধ্যকার পর্দা ও লজ্জাশীলতাকে বিদীর্ণ করে দেয়।
®(তিরমিযীঃ ২৮০৩)
🌷1⃣3⃣কোন নারীর উপর তোমার দৃষ্টি পড়লে তার প্রতি) বারবার দৃষ্টিপাত করো না। বরং নজর অতিসত্তর ফিরিয়ে নিও, কারণ, তোমার জন্য প্রথমবার ক্ষমা, দ্বিতীয়বার নয়।
®(আহমদঃ ১৩৬৯)
🌹1⃣4⃣নারীদের বেশ ধারী পুরুষের উপর অভিশাপ এবং পুরুষদের বেশ ধারিণী নারীদের উপর আল্লাহর অভিশাপ।
®(ইবনে মাজাহঃ ১৯০৪)
🌷1⃣5⃣যে নারী তার মাথায় এমন চুল বাড়তি লাগায় যা তার মাথার নয়, সে তার মাথায় জালিয়াতি সংযোগ করে।
® (সহীহ আল-জামিউস সাগীরঃ ২৭০৫)
➡লেখাটি ভালো লাগলে এবং উপকৃত হলে শেয়ার করে পৌঁছিয়ে দিন অন্যের কাছে। 👍
কেননা রাসূল (সাঃ) বলেছেন,“যে ব্যক্তি মানুষকে হিদায়াতের দিকে ডাকে তার জন্য ঠিক ঐ পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে, যে পরিমাণ পাবে তাকে অনুসরণকারীরা।
®[সহীহ মুসলিম/২৬৭৪,৬৮০৪]
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
"আল্লাহ তা'আলা দুনিয়ার মানুষকে ডাকছে শুদ্ধ জীবনের দিকে। আর মানুষ দৌড়াচ্ছে দক্ষতার দিকে। জীবনকে যদি সে শুদ্ধ করতে পারে তাহলে আল্লাহ তা'আলা ওয়াদা করছেন তাকে দুনিয়াতেও ভাল জীবন দেবেন, আখেরাতেও ভাল জীবন দেবেন। মানুষ নিজেকে মুল্যবান বানাতে চায়, আর বড় ভূল পদ্ধতিতে, 'দক্ষতা' দিয়ে বানাতে চায়। দক্ষতার দ্বারা তার নিজের জীবন 'মূল্যবান' হয়না, বরং সে মূল্যবান জিনিসের 'উৎপাদনকারী' হয়। একজন কুমার মাটির পাত্র বানায়। সে যদি দক্ষ কুমার হয়, তাহলে সে শুদ্ধ পাতিল বানাতে পারবে, কিন্তু এতে সে নিজে শুদ্ধ হয়না; শুদ্ধ মানুষ হয়না। সে হচ্ছে দক্ষ; 'দক্ষ কুমার' হচ্ছে। ওর কীর্তি শুধু শুদ্ধ পাতিল বানানো, যার মূল্য বড় সাময়িক।
নিজ গুনেও মূল্যবান হয় আর উৎপাদনের গুণেও মুল্যবান হয়। ফুল-ফল নিজ গুণে নিজ দাবিতে মুল্যবান, আর গোবর উৎপাদনের গুণে মূল্যবান। কৃষকরা গোবরকেও মুল্য দিয়ে কিনে, গোবরেরও মূল্য আছে। তো গোবরের যে মূল্য আছে, সেটা তার নিজ গুণে নয় যে, এর গন্ধ ভাল, সুন্দর, এইজন্য কেউ গোবর কিনে না। বরং গোবর এজন্য কেনা হয় যে, এটা সুন্দর ফুল উৎপাদনের সহায়ক। ফুলকে যে কেনা হয়, এটা তার নিজ গুণের কারণে কেনা হয়।
আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাতু ওয়াস সালাম যে পথ এনেছেন সেই পথে একজন মানুষ নিজ দাবীতে মূল্যবান হয়, শুদ্ধ জীবনের জন্য। অন্যদিকে, গোটা দক্ষতার পথ তাকে শুদ্ধ উৎপাদনের সহায়ক বানায়। যতদিন পর্যন্ত ঐ উৎপাদন আছে, ততদিন পর্যন্ত তার মূল্য আছে। গোবরের মূল্য সবার কাছে নয়, শুধু কৃষকের কাছে, তাও আবার তার চাষের মৌসুমে। যখন কৃষকেরও মৌসুম পার হয়ে যাবে, যখন আর সারের দরকার পরবে না, তখন তার কাছেও সেই গোবরের আর কোন মুল্য নেই। কিন্ত ফুল-ফল এগুলো সবার কাছে সবসময় মূল্যবান।
একজন দক্ষ ডাক্তার শুধুমাত্র রোগীর কাছে মূল্যবান, যতদিন পর্যন্ত সে রোগী। অন্যদিকে, একজন শুদ্ধ মানুষ সবার কাছে সবসময় মূল্যবান। এই জন্যে নবীরা যে পথ এনেছেন এ পথে যারা মূল্যবান হয়, তারা তখনও মূল্যবান ছিলেন, আজও মূল্যবান, কেয়ামত পর্যন্ত মূল্যবান থাকবেন। হযরত আবূ বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু, হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু, সব সাহাবাগণ তখনও মূল্যবান ছিলেন, আজও মূল্যবান, আর ভবিষ্যতেও থাকবেন। উনারা যেই পথ দেখিয়ে গেছেন, সেই পথ আজও আমাদের জন্য বড় অর্থপূর্ণ। উনাদেরও অনেকের অনেক দক্ষতা ছিল। কেউ ভাল যোদ্ধা, কেউ দুধ দোহাতে দক্ষ, কিন্তু ঐ দক্ষতার মূল্য শেষ হয়ে গেছে। এখন আর আমরা কেউ তীর দিয়ে যুদ্ধও করি না। সাহাবারা কেউ যদি বড় দক্ষ যোদ্ধা হয়েও থাকেন, আমাদের কাছে সেই দক্ষতার কোন মূল্য নেই, কিন্তু উনাদের সেই শুদ্ধতার মূল্য আছে, এবং থাকবে। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে দাওয়াত দিয়েছেন আমরাও যেন নিজেদেরকে শুদ্ধ জীবনের পথে নিয়ে যাই। যে নিজেকে শুদ্ধ বানাতে পারবে, তার জীবন ধন্য হবে। আল্লাহ তা'আলা এর জন্য দুনিয়াতেও ভাল জীবনের ওয়াদা করেছেন, আখেরাতেও ভাল জীবনের ওয়াদা করেছেন। এই জন্যে বড় জবরদস্ত মেহনতের প্রয়োজন।
পুরা দুনিয়াতে শিক্ষার খুব চর্চা আছে, কিন্তু গোটা দুনিয়ার প্রতিষ্ঠিত প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতিরই একটা বড় দূর্বলতা যে, শিক্ষার লক্ষ্যই হচ্ছে দক্ষতা, শুদ্ধতা নয়। আর মানুষের জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে শুদ্ধতার প্রয়োজন। এটা কোন বিশেষ সমাজ বা কাউকে দোষারোপ করে বলছি না, যেরকম আমাদের এই দেশের এই সমাজের বিশেষ কোন দূর্বলতা বা বিশেষ কোন দোষ, তা নয়।
এজন্যে আল্লাহর পথে বের হয়ে আমরা আমাদের নিজেদেরকে শুদ্ধ বানাই। ঠিক না ভাই ইনশাআল্লাহ! এজন্য সবাই নিয়ত করি চিল্লার জন্যে, তিন চিল্লার জন্যে আল্লাহর পথে বের হবো। আর এই জন্যে বের হবো যে, আল্লাহ তা'আলা যেন আমাদেরকে শুদ্ধ বানাবার পথ দেখিয়ে দেন, যেন আমরা শুদ্ধ হতে পারি। আর শুদ্ধ কারা? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবারা যেরকম ছিলেন।"
-হযরত মুশফিক আহমাদ রহ.
[৪ঠা মে ২০০৭, বা'দ মাগরিব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ]
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.