কুরআন এবং পাহাড় পেরেক

কুরআনের পাহাড়কে পেরেকের মত বলা হয়েছে কিন্তু আসলেই কি পাহাড় পেরেকের মত ? এবং পাহাড়ের জন্য কি দুনিয়া বা পৃথিবী টলে যায় না ?

 #Ans: আসুন এই সম্পর্কে কুরআনের আয়াত কি বলে দেখে নেয়া যাক ।

⦁ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ۖ وَأَلْقَىٰ فِي الْأَرْضِ رَوَاسِيَ أَنْ تَمِيدَ بِكُمْ وَبَثَّ فِيهَا مِنْ كُلِّ دَابَّةٍ ۚ وَأَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَنْبَتْنَا فِيهَا مِنْ كُلِّ زَوْجٍ كَرِيمٍ

⦁ তিনি আকাশমন্ডলী নির্মাণ করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত, তোমরা এটা দেখছ। তিনিই পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পবর্তমালা যাতে এটা তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে এবং এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সর্ব প্রকার জীব-জন্তু এবং আমিই আকাশ হতে বারি বর্ষণ করে এতে উদ্ভব করি সর্বপ্রকার কল্যাণকর উদ্ভিদ।

এই আয়াতের প্রথমে ( তিনিই পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পবর্তমালা যাতে এটা তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে ) এই অংশ নিয়ে কথা বলবো যে , আসলেই পাহাড় কি পেরেকের মত পৃথিবীতে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে ?

এই প্রসঙ্গে বিজ্ঞানী Frank Press তাঁর গ্রন্থ The Earth এর মাঝে লিখেছেন , পাহাড় - পর্বতেরও মূল হয় । এবং সেটি অনেক টা পেরেকের মত বলা যেতে পারে । অর্থাৎ আমরা যখন পেরেক কোন কিছুর মাঝে গুজে দেই সেই পেরেকের মাথা যত উপরে তাঁর অনেকাংশে বেশি অংশ তাঁর নিচে বিরাজ করে ।

ঠিক তেমনিভাবে পাহাড়ের যত অংশ আমরা বাহির থেকে দেখতে পারি তার চেয়ে অনেকাংশে বড় এর গভীরে ।

নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে সকল চিত্রাবলি দেখে আসুন

https://bit.ly/2Ll4aDK

পাহাড়ের কারণে কি পৃথিবী টলে যায় না ?

প্রশ্ন হল যে , আমরা সকলে জানি যে , পাহাড় ভুমিকম্প রোধ করে । কিন্তু কুরআন বলছে পাহাড়ের কারণে পৃথিবী টলে যায়না । আসুন সেই আয়াতটা আবার দেখে নেয়া যাক ।

⦁ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ۖ وَأَلْقَىٰ فِي الْأَرْضِ رَوَاسِيَ أَنْ تَمِيدَ بِكُمْ وَبَثَّ فِيهَا مِنْ كُلِّ دَابَّةٍ ۚ وَأَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَنْبَتْنَا فِيهَا مِنْ كُلِّ زَوْجٍ كَرِيمٍ

⦁ তিনি আকাশমন্ডলী নির্মাণ করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত, তোমরা এটা দেখছ। তিনিই পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পবর্তমালা যাতে এটা তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে এবং এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সর্ব প্রকার জীব-জন্তু এবং আমিই আকাশ হতে বারি বর্ষণ করে এতে উদ্ভব করি সর্বপ্রকার কল্যাণকর উদ্ভিদ। ( সুরা লুকমান আয়াত ১০ )

এখানে বলা হচ্ছে যে , পৃথিবী টলে যায়না । কিন্তু আমাদের একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে , এই আয়াতে الْأَرْضِ শব্দ ব্যাবহার করা হয়েছে এই الْأَرْضِ শব্দের দুটি অর্থ রয়েছে । একটি হল ভূমি যেখানে মানুষ গাছপালা উৎপাদন করে আরেকটি হল পৃথিবী । এই কথাটাকে আরও জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য একটি আয়াত দিচ্ছি ,

নিচের লিঙ্কের আয়াতে আল আরদ শব্দ দিয়ে যথাক্রমে ভুমি এবং পৃথিবী দুটিই বুঝানো হয়েছে তা একবারে Highlight করে দেখানো হয়েছে

https://bit.ly/2LiHG6d

এই আয়াতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে , الْأَرْضِ এর দুটি অর্থ এক পৃথিবী আরেকটি ভুমি । অর্থাৎ Rice শব্দের অর্থ যেমন ভাত হয় আবার চাল হয় ঠিক الْأَرْضِ এর অর্থ পৃথিবী হয় এবং ভূমি হয় । কোন যে জায়গায় যেটা বসার সে জায়গায় বসবে । অনেক অনুবাদ এই আয়াতের মাঝে পৃথিবী নয় বরং যমিন ব্যাবহার করেছে

আল-বায়ান - তিনি খুঁটি ছাড়া আসমানসমূহ সৃষ্টি করেছেন, যা তোমরা দেখছ, আর যমীনে স্থাপন করেছেন সুদৃঢ় পাহাড়, যাতে তা তোমাদেরকে নিয়ে হেলে না পড়ে (বা নরে না যায়) , আর তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন প্রত্যেক প্রকারের প্রাণী; আর আসমান থেকে আমি পানি পাঠাই। অতঃপর তাতে আমি জোড়ায় জোড়ায় কল্যাণকর উদ্ভিদ জন্মাই।

এছাড়া আজ থেকে ৬০০ - ৭০০ বছর আগের ইবনে কাথির তাঁর তাফসীরে বলেছেন ,

ইবনে কাথির - ধরাধামকে দৃঢ় করার জন্যে ও নড়াচড়া করা হতে বাঁচাবার জন্যে তিনি এর উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছেন যাতে মানুষ ভূমিকম্প ও ঝাকুনি হতে রক্ষা পায়। তিনি এতে বেশী ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নানা প্রকার জীব-জন্তু সৃষ্টি করেছেন যেগুলোর সংখ্যা নিরূপণ কেউই করতে পারে না।

আফসোস একটিই আজ থেকে ৬০০ বছর আগের ইবনে কাথির এটি বুঝে গেল কিন্তু তথাকথিত আধুনিকতার লেবাসধারী মানুষেরা এটা বুঝতে পারলনা । আশা করি উত্তর পেয়েছেন ।


No comments

Note: Only a member of this blog may post a comment.

Powered by Blogger.