আল্লাহ তাআলা কি সব কিছু করতে পারেন নাকি পারেন না?
আল্লাহ তাআলা কি সব কিছু করতে পারেন নাকি পারেন না?
লিখেছেনঃ আহমেদ আল উবায়দুল্লাহ
আল্লাহ তাআলা সব কিছু করেন না। কিন্তু তিনি কী পারেন বা কী পারেন না – সেটা নির্ধারণের আমরা কেউ নই। যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার ক্ষেত্রে তাঁর ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করে দেয়, অনেক আলিম তাকে মুলহিদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন [দলিল এই ভিডিওতে – https://www.youtube.com/watch?v=4w5YYde7tBY ]
উদাহরণ হিসেবে নাস্তিকদের একটা প্রচলিত প্রশ্ন ধরা যাক। আল্লাহ তাআলা কি এমন পাথর সৃষ্টি করতে পারেন যা তিনি নিজেই তুলতে পারেন না? এক্ষেত্রে এই ধরণের প্রশ্নগুলোর উত্তর হল – এই প্রশ্নগুলোই সঠিক নয়, কেননা তা ত্রুটিযুক্ত ও পরস্পরবিরোধী।
একটু চিন্তা করলেই আপনি দেখবেন যে, একটা পাথর তিন মাত্রার বা three dimensional যা সসীম বা finite. আর আল্লাহ তাআলা হলেন অসীম বা infinite; তাহলে যে সৃষ্টিকর্তা অসীম, তিনি সসীম সৃষ্টি পাথরকে অবশ্যই তুলতে পারেন। এখন আপনি প্রথমে বলে দিচ্ছেন যে, পাথর সৃষ্টি হয়েছে যার অর্থ হল পাথরটি সসীম। আর ঠিক তারপরই আপনি বলছেন যে, সৃষ্টিকর্তা পাথর তুলতে পারবেন না, অর্থাৎ পাথরটি তখন অসীম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়ে গেল!
তাহলে কীভাবে একই পাথর একই সাথে সসীম আর অসীম হতে পারে! এটা পরস্পরবিরোধী!
আবার যদি বলা হয়, সৃষ্টিকর্তা কি তাহলে নিজেকে হত্যা করতে পারেন? মিথ্যা বলতে পারেন? তাঁর মত আরেকজন সৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি করতে পারেন? ইত্যাদি ইত্যাদি।
এই প্রশ্নগুলোর ধরণ আসলে একই। আর এর জবাব হল – এই প্রশ্নগুলোই সঠিক নয়।
প্রশ্নগুলো যখন বলেই ফেললাম, তখন ব্যাখ্যা করেই দিই। কেননা অনেকের মনে এগুলো নিয়ে আবার সন্দেহ জাগতে পারে।
সৃষ্টিকর্তা কি তাহলে নিজেকে হত্যা করতে পারেন? প্রশ্নটির দিকে আগে খেয়াল করুন। “হত্যা” থেকে আসলে কী পাওয়া যাচ্ছে? উত্তর হল “মৃত্যু”। এর অর্থ হল, সৃষ্টিকর্তা কি মারা যেতে পারেন? এখন মৃত্যু তখনই সম্ভব যখন জন্ম লাভ হয়েছে। অন্যভাবে বললে, যদি জন্মকে শুরু ধরা হয়, মৃত্যু হবে শেষ। তাই এখানে প্রকৃত সিদ্ধান্ত হল, যার শুরু হয়েছে একমাত্র তারই শেষ আছে। কিন্তু যাঁর শুরুই হয়নি, তাঁর শেষ কীভাবে হতে পারে? সৃষ্টিকর্তা হলেন সেই অস্তিত্ব যাঁর কোনো শুরুই হয়নি (সূরা ইখলাস, আয়াত ৩); তাহলে তাঁর শেষ কীভাবে হতে পারে? অন্যভাবে বললে, যাঁর জন্মই হয়নি, তাঁর মৃত্যু বা হত্যা হওয়া কীভাবে সম্ভব! এগুলো আসলে সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য যা দিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে মাপা বা তুলনা করা সম্ভব নয়!!
একইভাবে সৃষ্টিকর্তা কি মিথ্যা বলতে পারেন? মিথ্যা বলা সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য, সৃষ্টিকর্তাকে এটা দিয়ে মাপা সম্ভব নয়। মানুষ তার নিজ প্রয়োজনে মিথ্যা বলে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলার কোনো কিছুর প্রয়োজন হয় না (সূরা ইখলাস, আয়াত ২), তাই মিথ্যা বলার বৈশিষ্ট্য সৃষ্টিকর্তার সাথে তুলনাযোগ্যই নয়।
আল্লাহ কি তাঁর মত আরেকজন সৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি করতে পারেন? সৃষ্টিকর্তা সংজ্ঞা অনুযায়ীই সৃষ্টিহীন। তাই আরেকজন সৃষ্টিকর্তাও হবেন সৃষ্টিহীন। আবার বলা হচ্ছে যে, সেই আরেকজন সৃষ্টিকর্তাকে আল্লাহ সৃষ্টি করবেন! তার মানে আরেকজন সৃষ্টিকর্তা একই সাথে সৃষ্টিহীন আবার সৃষ্টির আওতাধীন; অর্থাৎ একইসাথে আরেকজন সৃষ্টিকর্তার কোনো শুরু নেই, আবার শুরু আছে! এটা পরস্পরবিরোধী অযৌক্তিক বক্তব্য।
এভাবে আসলে যে প্রশ্নগুলো করা হয়, সেগুলো নিজেরাই ত্রুটিযুক্ত ও পরস্পরবিরোধী আর এগুলোর মধ্যে সৃষ্টির এমন সীমাবদ্ধতা ফুটে ওঠে যা দিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে তুলনা করাই সম্ভব নয়!
যেমন যদি বলা হয়, আপনি কি সিগারেট খাওয়া থামিয়েছেন? এখন মনে করুন, আপনি সিগারেট খানই না, আর কোনো দিন খানও নি। সেক্ষেত্রে আপনি যদি উত্তর দেন – হ্যাঁ, তার মানে আপনি আগে সিগারেট খেতেন, এখন আর খান না। কিন্তু আপনি তো সিগারেট কোনো দিন খানই নি!
আবার যদি উত্তর দেন – না, তার মানে আপনি এখনও সিগারেট খান। কিন্তু সিগারেট খাওয়া তো আপনার বৈশিষ্ট্যই নয়।
এক্ষেত্রে এই প্রশ্নটাই আপনার জন্য ভুল। কারণ সিগারেট খাওয়া থামিয়েছেন কি থামান নি, এই প্রসঙ্গ দিয়ে আপনাকে তুলনা করাই সম্ভব নয়।
একইভাবে আল্লাহ তাআলাকেও সৃষ্টির সীমাবদ্ধতা আর পরস্পরবিরোধী বা অযৌক্তিক বিষয় দিয়েও তুলনা করা সম্ভব নয়। যেগুলো সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট্যই নয়, সেগুলো তাঁর সাথে তুলনাযোগ্যই নয়। যেমন আল্লাহ তাআলা অবতাররূপে পৃথিবীতে নেমে আসেন না; এর অর্থ এটা নয় যে, তিনি নেমে আসতে পারেন কী পারেন না। বরং এর অর্থ হল এই অবতারবাদের মত মুশরিকি ধারণার সাথে আল্লাহ তাআলা তুলনাযোগ্যই নন।
একইভাবে আল্লাহ তাআলা রাত্রিকালে নিম্ন আসমানে নেমে আসেন, এর অর্থ এটা নয় যে, তিনি সৃষ্টির ন্যায় নেমে আসেন। এর অর্থ হল এই “নেমে আসা” ভঙ্গিকে হাদিসে আমাদের বোঝার ভাষাতেই ব্যবহার করা হয়েছে যাতে করে আমরা সত্যের নিকটবর্তী হয়ে সেই বিষয়ের বোধগম্যতা বা উপলব্ধির কাছাকাছি যেতে পারি যদিও সেটি পুরোপুরি বোঝার সক্ষমতা আমাদের দেওয়া হয়নি; কেননা এই ক্ষুদ্র ক্ষমতা প্রদানের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমাদের পরীক্ষা করবেন আর প্রকাশ করে দেবেন যে, আমরা আদৌ আল্লাহকে বিশ্বাস করি কিনা!
اِنَّمَا تُنۡذِرُ مَنِ اتَّبَعَ الذِّکۡرَ وَ خَشِیَ الرَّحۡمٰنَ بِالۡغَیۡبِ ۚ فَبَشِّرۡہُ بِمَغۡفِرَۃٍ وَّ اَجۡرٍ کَرِیۡمٍ ﴿۱۱﴾
"তুমি তো কেবল তাকেই সতর্ক করবে যে উপদেশ মেনে চলে এবং না দেখেও পরম করুণাময় আল্লাহকে ভয় করে। অতএব তাকে তুমি ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের সুসংবাদ দাও।" (আল-কোরআন, ৩৬:১১)
.
.
وَ لَقَدۡ فَتَنَّا الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ فَلَیَعۡلَمَنَّ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ صَدَقُوۡا وَ لَیَعۡلَمَنَّ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۳﴾
.
.
وَ لَقَدۡ فَتَنَّا الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ فَلَیَعۡلَمَنَّ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ صَدَقُوۡا وَ لَیَعۡلَمَنَّ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۳﴾
"তাদের পূর্বে যারা ছিল আমি তো তাদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম। আল্লাহ অবশ্যই সত্যবাদী আর মিথ্যাবাদীদেরকে (সুস্পষ্টভাবে) প্রকাশ করে দেবেন।" (আল-কোরআন, ২৯:৩)
তাহলে নেমে আসা বললে আপনি বোঝেন, উঁচু স্থান থেকে নীচু স্থানে নেমে আসা। কিন্তু, যে আল্লাহ স্থান, কাল সৃষ্টি করেছেন, তিনি সেই স্থান, সময় সৃষ্টির আগেই বিরাজমান ছিলেন। তাহলে যদি স্থান সৃষ্টির আগেই তিনি বিরাজমান থাকেন, এর অর্থ দাঁড়াবে এই যে, তাঁকে স্থানের ধারণা দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়! তাহলে এই “নেমে আসা” এর প্রকৃতি আসলে কী, সেটা আপনি আর আমি জানিই না বা এটা উপলব্ধি করাও আমাদের মত ক্ষুদ্র ক্ষমতাসম্পন্ন জীবের পক্ষে সম্ভবও না। আমাদের কেবল সত্যটা জানানো হয়েছে আর যেগুলো বোঝা আমাদের ক্ষমতার বাইরে, সেগুলোর পিছনে অনর্থক ব্যাখ্যা তৈরি করে ফিতনা বৃদ্ধির পরিবর্তে সেগুলোতে ঈমান আনতে বলা হয়েছে (সূরা ইমরান, আয়াত ৭)।
শায়েখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
"যে ব্যক্তি এ বিশ্বাস পোষণ করবে যে, আল্লাহর সিফাত তথা গুণাবলী মানুষের গুণাবলীর মতই সে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। কেননা কুরআনের ভাষ্য অনুযায়ী আল্লাহর গুণাবলী মানুষের গুণাবলীর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ﴾ [الشورا: ١١]
“তাঁর অনুরূপ আর কেউ নেই তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।” [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১১]
দু’টি জিনিসের নাম ও গুণ এক হলেই জিনিস দু’টি সকল দিক থেকে এক হওয়া জরুরি নয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি। মানুষের মুখমণ্ডল আছে। উটেরও মুখমণ্ডল আছে। মুখ দু’টি কি একই রকম? কখনই নয়। অনুরূপভাবে উটের হাত আছে পিপিলিকারও হাত আছে। হাত দু‘টি কি সমান? তাহলে কেন আমরা বলব না যে, আল্লাহর চেহারা আছে। তা মাখলুকাতের চেহারার অনুরূপ নয়। আল্লাহর হাত আছে। কিন্তু তা মানুষের হাতের মত নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَا قَدَرُواْ ٱللَّهَ حَقَّ قَدۡرِهِۦ وَٱلۡأَرۡضُ جَمِيعٗا قَبۡضَتُهُۥ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ وَٱلسَّمَٰوَٰتُ مَطۡوِيَّٰتُۢ بِيَمِينِهِ﴾ [الزمر: ٦٧]
“তারা যথার্থভাবে আল্লাহর ক্ষমতা ও সম্মান বুঝতে পারে নি। কিয়ামতের দিন গোটা পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আসমানসমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৬৭]
আল্লাহ আরো বলেন,
﴿يَوۡمَ نَطۡوِي ٱلسَّمَآءَ كَطَيِّ ٱلسِّجِلِّ لِلۡكُتُبِۚ﴾ [الانبياء: ١٠٤]
“সেদিন আমরা আকাশকে গুটিয়ে নেব, যেভাবে গুটানো হয় লিখিত কাগজপত্র।” [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ১০৪] কোনো মাখলুকের কি এ ধরণের হাত রয়েছে? কখনই নয়। সুতরাং আমাদের জেনে রাখা উচিৎ যে, যিনি সৃষ্টিকর্তা তিনি সৃষ্টিজীবের মতো নন। না সত্ত্বায় না গুণাবলীতে। لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ “তাঁর মতো আর কেউ নেই তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।” [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১১] এ জন্যই আল্লাহর কোনো সিফাতের ধরণ গঠন বা প্রকৃতি অনুসন্ধান করা ঠিক নয় কিংবা এ রকম ধারণা করা ঠিক নয় যে, আল্লাহর গুণসমূহ মানুষের গুণাবলীর মতোই।"
(গ্রন্থঃ ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম
অধ্যায়ঃ ঈমান/প্রশ্ন: (৪০) আল্লাহর গুণাবলী কি মানুষের গুণাবলীর মতোই?) source - http://www.hadithbd.com/shareqa.php?qa=572
.
.
এই ব্যাপারটি অন্ধবিশ্বাস মনে হলেও ব্যাপারটি মোটেও অন্ধবিশ্বাস নয়, বরং এটি আসলে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। আপনি কোয়ান্টাম ফিজিক্স বা কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানে গিয়ে দেখুন যে, বর্তমানে অণু, পরমাণুরও অভ্যন্তরে আরও ক্ষুদ্র কোয়ার্ক, লেপ্টন ইত্যাদির জগতে প্রতিনিয়ত বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে আশ্চর্য বিষয় দেখছেন যেগুলো বাস্তব, অথচ সেগুলো আমাদের চারপাশের বিষয় দ্বারা পুরোপুরি হজম করা সম্ভব নয়। কোয়ান্টাম জগতে (পরমাণুরও ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর জগতে) অতীতকাল অনেক ক্ষেত্রে আচরণ করে ভবিষ্যৎ কালের মত; একই কণা একই সময় একের অধিক জায়গায় অবস্থান করতে পারে; কোনো কণা হঠাৎ করে অদৃশ্য হয়ে গিয়ে বহু দূরে আবার তার আবির্ভাব ঘটতে পারে; পরস্পর বহু দূরে অবস্থিত দুটি কণার মধ্যে কোনোরূপ সরাসরি সংযোগ ছাড়াই একটি কণার ওপর প্রভাব বিস্তার হলে সাথে সাথেই বিনা সময় ব্যয়েই অপর কণার ওপর প্রভাব বিস্তার হতে পারে ইত্যাদি ইত্যাদি যা আপনি আমি আমাদের সাধারণ জগতের চারপাশের অনুভূতি দিয়ে পুরোপুরি সন্তোষজনকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারব না।
[বিস্তারিত জানতে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন - https://youtu.be/tiisXX7EfBA ]
অধ্যায়ঃ ঈমান/প্রশ্ন: (৪০) আল্লাহর গুণাবলী কি মানুষের গুণাবলীর মতোই?) source - http://www.hadithbd.com/shareqa.php?qa=572
.
.
এই ব্যাপারটি অন্ধবিশ্বাস মনে হলেও ব্যাপারটি মোটেও অন্ধবিশ্বাস নয়, বরং এটি আসলে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। আপনি কোয়ান্টাম ফিজিক্স বা কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানে গিয়ে দেখুন যে, বর্তমানে অণু, পরমাণুরও অভ্যন্তরে আরও ক্ষুদ্র কোয়ার্ক, লেপ্টন ইত্যাদির জগতে প্রতিনিয়ত বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে আশ্চর্য বিষয় দেখছেন যেগুলো বাস্তব, অথচ সেগুলো আমাদের চারপাশের বিষয় দ্বারা পুরোপুরি হজম করা সম্ভব নয়। কোয়ান্টাম জগতে (পরমাণুরও ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর জগতে) অতীতকাল অনেক ক্ষেত্রে আচরণ করে ভবিষ্যৎ কালের মত; একই কণা একই সময় একের অধিক জায়গায় অবস্থান করতে পারে; কোনো কণা হঠাৎ করে অদৃশ্য হয়ে গিয়ে বহু দূরে আবার তার আবির্ভাব ঘটতে পারে; পরস্পর বহু দূরে অবস্থিত দুটি কণার মধ্যে কোনোরূপ সরাসরি সংযোগ ছাড়াই একটি কণার ওপর প্রভাব বিস্তার হলে সাথে সাথেই বিনা সময় ব্যয়েই অপর কণার ওপর প্রভাব বিস্তার হতে পারে ইত্যাদি ইত্যাদি যা আপনি আমি আমাদের সাধারণ জগতের চারপাশের অনুভূতি দিয়ে পুরোপুরি সন্তোষজনকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারব না।
[বিস্তারিত জানতে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন - https://youtu.be/tiisXX7EfBA ]
আমরা এখানে কেবল এই বিষয়গুলো জানতে পারব যে, এরকম বিষয়গুলোর অস্তিত্ব আছে যা আমরা আমাদের সাধারণ বিচারবুদ্ধি দিয়ে পুরোপুরি হজম করতে পারি না। এক্ষেত্রে আপনি সামান্য ক্ষুদ্র জগতের সৃষ্টিকেই আপনার সীমাবদ্ধতায় বুঝে উঠতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন; সেখানে কীভাবে আপনি সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ যিনি সকল সৃষ্টির বহু উর্ধ্বে, তাঁর ক্ষেত্রে আপনার ক্ষুদ্র ক্ষমতার সামান্য যুক্তিবিদ্যা দিয়ে তাঁর ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ করছেন??? আমরা কেবল মুহকামাত আয়াত দিয়ে আল্লাহ তাআলার বাণী যে সত্য তা যাচাই করে বুঝতে পারি আর এথেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে, আল্লাহ তাআলা আছেন আর তাই তিনি তাঁর মুতাশাবিহাত আয়াতে যেগুলো বলেছেন, সেগুলোও সত্য হবে, এটাই যৌক্তিক। কিন্তু তাঁর ক্ষমতা কী বা কতটুকু সেটা আমরা আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষমতা দিয়ে নির্ধারণের ক্ষমতাই রাখি না!
خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ بِٱلْحَقِّۚ تَعَٰلَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ
“তিনি যথাযথভাবে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন; তারা যাকে শরীক করে তিনি তার বহু উর্ধ্বে।” (আল-কোরআন, ১৬:৩)
.
.
سُبْحَٰنَهُۥ وَتَعَٰلَىٰ عَمَّا يَقُولُونَ عُلُوًّا كَبِيرًا
.
.
سُبْحَٰنَهُۥ وَتَعَٰلَىٰ عَمَّا يَقُولُونَ عُلُوًّا كَبِيرًا
“তিনি পবিত্র, মহিমান্বিত এবং তারা যা বলে তা হতে তিনি বহু উর্ধ্বে।” (আল-কোরআন, ১৭:৪৩)
.
.
আল্লাহই ভাল জানেন। কোনোরূপ ভুলত্রুটির জন্য আল্লাহ তাআলা মার্জনা করুন এবং আমাদের সকলকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন। আমিন।
.
.
আল্লাহই ভাল জানেন। কোনোরূপ ভুলত্রুটির জন্য আল্লাহ তাআলা মার্জনা করুন এবং আমাদের সকলকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন। আমিন।
=============================
আমাদের পেজটিতে লাইক দিয়ে ও ফলো করে রাখতে পারেন।
আমাদের পেজটিতে লাইক দিয়ে ও ফলো করে রাখতে পারেন।
Like and follow our page here:
https://www.facebook.com/ahmadalubaydullah/
https://www.facebook.com/ahmadalubaydullah/
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.