আল্লাহকে কে বানাইছে? আল্লাহকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সব কিছুর সৃষ্টি কর্তা থাকলে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করছেন?
প্রশ্ন: আল্লাহকে কে বানাইছে? আল্লাহকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সব কিছুর সৃষ্টি কর্তা থাকলে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করছেন?
উত্তর ১: সময় বা Time সৃষ্টি হয় ১৫ বিলিয়ন বছর আগে বিগব্যাং এর মাধ্যমে। এই ১৫ বিলিয়ন বছর পুর্বের কোন কিছু exact সময় দ্বারা নির্দেশ করা যাবে না। আর কোনকিছু যখন সৃষ্ট, তখন সৃষ্টিটি করেছে বাইরের কেউ। ধরুন, আপনি একটি মেমরি কার্ড বানালেন, সেই মেমরি কার্ডের একটা লিমিটেড স্পেসিফিকেশন আছে যা আপনি সেট করেছেন, তাই ৮ জিবি মেমরি কার্ডে আপনি ১৬ জিবি ডাটা ধারণ করতে পারবেন না। তেমনি আমাদের চিন্তাভাবনাও লিমিটেড একটা পর্যায়ে গিয়ে আর চলে না, "ধ্বংস/সৃষ্টি/শুরু/শেষ" টার্মগুলো শুধুমাত্র আল্লাহর সৃষ্টির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, আল্লাহর ক্ষেত্রে নয়। আল্লাহর শুরু নেই, শুরু হতে গেলে "সময়" লাগে কিন্তু "সময়" জিনিসটি একটি সৃষ্ট ব্যাপার। শুরু আর শেষের ব্যাখ্যা শেষে দিচ্ছি। তবে এখন যদি প্রশ্ন করা হয় "কিভাবে সম্ভব আমরা এতদূর চিন্তা কেন করতে পারব না?"
উত্তর এটাই যে মানুষের চিন্তা লিমিটেড বা সীমাবদ্ধ। নির্দিষ্ট একটা সীমার বাইরে মানুষের চিন্তাধারা কাজ করবে না। ধরুন একটা পোকা হেটে যাচ্ছে। তার ১০ হাত দূরে একটা ব্যাঙ বসে আছে, আপনি স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছেন ব্যাঙ ওই পোকাটির দফা রফা করে দিবে, কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ওই পোকার ভবিষ্যত শুধুই আপনি দেখতে পারছেন। পিঁপড়ার এই ব্যাপারে কোন জ্ঞানই নেই। একে বলে 1D আর আপনাকে যিনি উপর থেকে দেখছেন তাকে বলে 7D এখন এই পিঁপড়ার মত আপনার আল্লাহ সম্পর্কে জ্ঞান লিমিটেড কারণ একজন পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষককে আপনি জিজ্ঞেস করুন স্যার দুনিয়াতে যত পদার্থ বিজ্ঞানের বই আছে, যত সূত্র আছে, তত্ত্বসমূহ আছে এর মধ্যে আপনার জ্ঞান কত? উত্তরে তিনি বলবেন হয়তো আমি ১০% সম্পর্কে জানি। আমি একজন সাইবার স্পেশালিষ্ট, তবু যদি আমাকে জিজ্ঞাস করা হয় যে "সাইবার ওয়ার্ল্ড সম্পর্কে আমার ধারণা কতটুকু? আমার জবাব হবে ১০% এর বেশি নয়। তো আপনার এই ১০% জ্ঞানে হয়তো আপনি আল্লাহকে খুঁজে পাচ্ছেন না? হতে কি পারে না আল্লাহ ওই ৯০% জ্ঞান এর মধ্যে আছেন? যখন প্রশ্ন করেন "আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছেন?" তখন মনে করি আল্লাহর শক্তি বা নেচার হয়তো লিমিটেড। লিমিটেড আল্লাহকে মানুষ ক্রুশবিদ্ধ করে মারতে পারে। লিমিটেড আল্লাহ দেখতে হয় মানুষের মত, তাদের হাত পা থাকে। (নাউযুবিল্লাহ)। হ্যা আল্লাহর হাত পা থাকতে পারে তবে সে বিষয়ে মানুষ সম্পূর্ণভাবে অজ্ঞ।
আমার আল্লাহ পাক দেখতে মানুষের মত না বা তিনি কোন কিছুতে সীমাবদ্ধ না। সীমাবদ্ধ আমরা, সীমাবদ্ধ এই পৃথিবী। কেপলার গ্রহ পৃথিবীর আয়তনের দ্বিগুন, নেপচুন কেপলারের দ্বিগুন, সেরিয়াস সূর্যের দ্বিগুন, UY Scuti গ্রহের সামনে অলডেব্রান সরিষার চাইতেও ছোট আর পৃথিবী কতটুকু? ৭০০০ বার জুম করলেও হয়তো আপনি দেখতে পারবেন না। এই রকম কোটি UY Scuti গ্রহ নিয়ে সৃষ্ট একটি মিল্কিওয়ে আর রকমারি বিলিয়ন মিল্কিওয়ে মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে যার সামনে এই পৃথিবীর শক্তি সীমাবদ্ধ, পৃথিবীতে বসা ক্ষুদ্র বালি পরিমান আপনি "নাস্তিক" সীমাবদ্ধ। আপনার মগজ সীমাবদ্ধ ঠিক সেই গর্ভে বাস করা যমজ শিশুর মত।
একটা শিশু প্রসব পরবর্তী জীবনে বিশ্বাস করতো, আরেকজনে কাছে এগুলা ছিল অলীক কল্পনা ও রুপক গল্প যেমনভাবে নাস্তিকরা আখিরাতের জীবনকে অলীক কল্পনা ও রুপক গল্প ভেবে থাকে। প্রথম শিশু বিশ্বাস করতো প্রসব পরবর্তী জীবনে মাতৃগর্ভের তুলনায় আলো অনেক বেশি, সেখানে পা দিয়ে হাঁটা যায়, মুখ দিয়ে খাদ্য গ্রহণ করা যায়। এইসব শুনে দ্বিতীয় শিশুটি বলে "বোকা, প্রসব পরবর্তী কোন জীবন নেই। প্রসব পরবর্তী জীবন বলে কি কিছু দেখেছো তুমি নিজ চোখে?" এই শুনে প্রথম শিশুটি বললো "হতে পারে সে জগতে আমাদের সাথে আমাদের মায়ের দেখা হবে। মা হয়তো সে জগতে আমাদের দেখাশুনা করবেন।' দ্বিতীয় শিশু হেসে বলে "মা! মা আবার কি? মাকে দেখা যায় না কেন? মা বলে আসলে কিছু নাই।"
এবার আপনারাই বলুন সত্যিকারের প্রসব পরবর্তী জীবন কি আছে? যদি না থাকে তাহলে আপনি এখন কোথায় আছেন? আর যদি থেকেই থাকে তাহলে আখিরাত থাকতে পারবে না কেন? অনুর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা: আল্লাহ? আল্লাহ আবার কি?
শোন তাহলে আমার আল্লাহ কি:
- যত মানুষ আজ পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে হেঁটেছে, হাঁটবে, যত প্রাণী জন্ম নিয়েছে, যত মৎস পানির নিচে সাতার কেটেছে, যত পাখি আকাশের বুকে উড়ে বেরিয়েছে, পৃথিবীর সমস্ত জমি, দেশ, তাদের সরকার, মিলিটারি ফোর্স, তাদের গবেষণা, বিজ্ঞান, জ্ঞান, টাকা, পয়সা, পৃথিবীর সমস্ত গাছ, সমস্ত ধুলা, যত নদী, সাগর, মহাসাগর, তার উপরে আকাশ, সমস্ত গ্রহ, উপগ্রহ, এক একটা প্ল্যানেট, প্রতিদিন ৭০,০০০ জন্ম নেয়া এক একটি ফেরেশতা, মিকাইল, জিব্রাইল, ইস্রাফিল, প্রথম স্বর্গ, দ্বিতীয় স্বর্গ, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ট, সপ্তম স্বর্গ, তার উপরের বিশাল সাগর, তার উপরের ইস্তাওয়া যা আল্লাহর আরশ বহন করে-সব, সব, সব, সব সবকিছু মৃত। কিছু চলছে না, কিছু ঘুরছে না, কিছু থামছে না, কিছু সাতরাচ্ছে না, কিছু উড়ছে না। কোন কিছুর সামর্থ্য নেই বানানোর, সামর্থ্য নেই ভাঙার, সামর্থ্য নেই তোলার, সামর্থ্য নেই ছুড়ে ফেলার- কিন্তু এইগুলো তো হচ্ছে ভাঙছে, গড়ছে, উড়ছে, জন্ম নিচ্ছে। কেমনে নিচ্ছে?
YES এইগুলা সম্ভব হচ্ছে একমাত্র ইলাহ আমার মাবুদের দয়ায়।
আল্লাহ বলছেন:
"ও আমার গোলাম তোমরা সবাই নগ্ন। তারা ছাড়া যাদের আমি বস্ত্র দান করি, তোমরা সবাই ক্ষুধার্ত তারা ছাড়া যাদের আমি খাদ্য দান করি"
He is the one, he doesnt need us as we need him, he is ever living he is আল হাইয়ুম কাইয়ুম, আপনি এখন হেসেই বলতে পারেন i am living what so special about that হ্যা আপনি বেঁচে আছেন আর আপনার বেঁচে থাকাটাই তার অস্তিত্বের বড় প্রমাণ।
"ও আমার গোলাম তোমরা সবাই নগ্ন। তারা ছাড়া যাদের আমি বস্ত্র দান করি, তোমরা সবাই ক্ষুধার্ত তারা ছাড়া যাদের আমি খাদ্য দান করি"
He is the one, he doesnt need us as we need him, he is ever living he is আল হাইয়ুম কাইয়ুম, আপনি এখন হেসেই বলতে পারেন i am living what so special about that হ্যা আপনি বেঁচে আছেন আর আপনার বেঁচে থাকাটাই তার অস্তিত্বের বড় প্রমাণ।
তাই "আল্লাহ কে" এই প্রশ্ন না করে প্রশ্ন করো, আল্লাহর সামনে আপনি তুমি তুই কে?
এরপরও প্রশ্ন থেকে যায় আল্লাহকে কে বানাইছে?
স্রষ্টা এমন সত্ত্বা যিনি সৃষ্ট নন। প্রত্যেক সৃষ্টির স্রষ্টা আছে কিন্তু খেয়াল রাখবেন যেই জিনিস সৃষ্ট না তার স্রষ্টা আসবে কই থেকে? আল্লাহ অস্তিত্বে আসেননি বরং সর্বদা অস্তিত্বশীল এবং তিনি সৃষ্টিজগতের স্থান কাল কাঠামোর প্রকারভেদের অংশ নন ৷ আর এজন্যই তিনি অসৃষ্ট ফলে তাঁর সৃষ্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই৷ এজন্য "স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছেন" এই প্রশ্নটিই অবান্তর৷ যেমন একটি ছবি কে এঁকেছে? এর উত্তরে একজন চিত্রশিল্পীর অস্তিত্ব থাকা আবশ্যক, কিন্তু চিত্রশিল্পীকে কে এঁকেছে?”এই প্রশ্নটি অবান্তর কেননা চিত্রশিল্পীর অস্তিত্বের ক্ষেত্রে আঁকা"”নামক ক্রিয়াটি প্রযোজ্য নয় ৷ তাই চিত্রশিল্পীর অংকিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, অন্য কথায় চিত্রশিল্পী অংকিত নন।”একইভাবে আল্লাহ সৃষ্ট নন। তাই তার কোন সৃষ্টিকর্তাও নেই। আর একটা কথা খেয়াল রাখবেন বিজ্ঞানে "বাপ এরও বাপ আছে" এই কথার কোন ভিত্তি নেই। কারণ প্রথম মানুষের বাবা ছিল না। প্রথম সিংহ বীর্য থেকে আসেনি, ডিমের আগে মুরগী এসেছে, ঈসা (আ) পিতা ছাড়াই জন্মেছিলেন। এদের প্রত্যেককেই আল্লাহ সরাসরি সৃষ্টি করেছেন।
এবারে প্রশ্ন থেকে যেতে পারে "তাহলে তিনি ছিলেন কবে থেকে? কোথা থেকে আসলেন?
আসলে এখানে গভীর ভাবে ভাবতে হবে। সংখ্যার শুরু
R = [-infinite,....,-3,-2,-1,0,1,2,3,....,infinite] এখানে সংখ্যার শুরু কোথায়? এর উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। আর সংখ্যার শেষ কোথায় এর উত্তরও দেয়া সম্ভব নয়। আপনি যেই সংখ্যাই বলবেন না কেন তার থেকে পুর্ববর্তী ও পরবর্তী সংখ্যা বলা সম্ভব। একমাত্র উত্তর হতে পারে "Infinite" একই ভাবে আল্লাহ ছিলেন শুরু থেকে থাকবেন শেষ পর্যন্ত। এখানেও একমাত্র উত্তর "Infinite" এটিই শুরু শেষের ব্যাখ্যা।
R = [-infinite,....,-3,-2,-1,0,1,2,3,....,infinite] এখানে সংখ্যার শুরু কোথায়? এর উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। আর সংখ্যার শেষ কোথায় এর উত্তরও দেয়া সম্ভব নয়। আপনি যেই সংখ্যাই বলবেন না কেন তার থেকে পুর্ববর্তী ও পরবর্তী সংখ্যা বলা সম্ভব। একমাত্র উত্তর হতে পারে "Infinite" একই ভাবে আল্লাহ ছিলেন শুরু থেকে থাকবেন শেষ পর্যন্ত। এখানেও একমাত্র উত্তর "Infinite" এটিই শুরু শেষের ব্যাখ্যা।
আশা করি এবার জ্ঞানচক্ষু দ্বারা আল্লাহকে দেখতে পেরেছেন। তবে ইন্দ্রিয় চক্ষু দ্বারা দুনিয়াতে বসে আল্লাহকে দেখতে পাবেন না যেমনভাবে মায়ের পেটের শিশু গর্ভাবস্থায় মাকে দেখতে পারে না।
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.