নাস্তিক্যতার আদর্শ । আরিফ আজাদ ।
নাস্তিক্যতার আদর্শ
আরিফ আজাদ
(১)
আমাদের হৃদয়ের দগদগে একটি ক্ষতের নাম ৫-ই মে। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের শানে বিদ্রুপ, কটাক্ষ আর অপবাদের বিরুদ্ধে তাওহিদী জনতার একটি বিপ্লবী কাফেলা সেদিন জড়ো হয়েছিলো শাপলা চত্ত্বরে।
এই নিষ্পাপ, নির্লোভ আর নির্দোষ কাফেলার প্রতি যে অন্যায়, অবিচার এবং জুলুম করা হয়েছে, এই জুলুমের কথা আমরা কোনোদিনও ভুলবো না।
শাপলার প্রান্তরে ছোপ ছোপ রক্তের দাগকে যারা রঙ বলে উপহাস করেছে, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ-ঠাট্টা করেছে, তাদের সেই উপহাসকেও আমরা মনের গভীরে গেঁথে রেখেছি। ইন শা আল্লাহ, একদিন সুসময় আসবেই। আমরা প্রতীক্ষায় রইলাম সেদিনের।
এই নিষ্পাপ, নির্লোভ আর নির্দোষ কাফেলার প্রতি যে অন্যায়, অবিচার এবং জুলুম করা হয়েছে, এই জুলুমের কথা আমরা কোনোদিনও ভুলবো না।
শাপলার প্রান্তরে ছোপ ছোপ রক্তের দাগকে যারা রঙ বলে উপহাস করেছে, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ-ঠাট্টা করেছে, তাদের সেই উপহাসকেও আমরা মনের গভীরে গেঁথে রেখেছি। ইন শা আল্লাহ, একদিন সুসময় আসবেই। আমরা প্রতীক্ষায় রইলাম সেদিনের।
(২)
৫-ই মে তে আমরা হারিয়েছি অনেক। প্রিয় প্রাণ। প্রিয় ভাই। প্রিয় সাথী। তবুও, আমাদের প্রাপ্তির খাতা কিন্তু একেবারেই শূন্য নয়। হক এবং বাতিলের মধ্যে, বন্ধু এবং শত্রুর মাঝখানে শাপলা ছিলো একটা স্পষ্ট বিভাজন রেখা।
কথা ছিলো শাপলার ঘটনার পরে সবকিছু স্থবির হয়ে পড়বে। মানুষ ইসলাম পালন করা তো দূর, ইসলাম নিয়ে কথা বলতেই ভয় পাবে। দাঁড়িওয়ালারা সেলুনে দাঁড়িয়ে লাইন ধরে দাঁড়ি কাটবে। লম্বা পাঞ্জাবিগুলো রূপান্তরিত হবে শর্ট ফতুয়ায়। আমরা ভেবেছিলাম, আমাদের চূড়ান্ত পতন বুঝি ঘটেই গেলো।
অথচ, আমরা অবাক বিস্ময়ে খেয়াল করলাম যে, শাপলা চত্ত্বরের সেই ঐতিহাসিক, নির্মম ঘটনার হাত ধরে সূচনা হয়েছে নতুন এক সময়ের।
শাপলার ঠিক পরেই, এতোদিন ধরে 'ট্যাবু' হয়ে থাকা ইসলামটা হঠাৎ করে জনপ্রিয় হয়ে উঠলো। বিশেষ করে তরুণদের কাছে। চারদিকে যেন নতুন করে জেগে উঠার একটা রোল শোনা যাচ্ছে। ইসলামটা মসজিদ আর মাদ্রাসায় আবদ্ধ না থেকে রাজনীতির গোলটেবিলের আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠলো। কি মাদ্রাসা আর কি জেনারেল শিক্ষিত- সবার মধ্যেই এক অন্যরকম উৎসাহ-উদ্দীপনা। ছেলেরা দাঁড়ি রাখছে। টাখনুর উপরে কাপড় তুলে দিচ্ছে। গায়ে ঝুলাচ্ছে লম্বা পাঞ্জাবি। মেয়েরাও কম যায়না একদম। হিজাব-নিকাবের মধ্যে নিজেকে সংরক্ষণ করার মধ্যে তারা যেন অন্যরকম একটা আনন্দ খুঁজে পেতে শুরু করলো। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে শিক্ষার্থীদের আমরা বদলে যেতে দেখেছি। এমনকি, আমি নিজেও তার একটা বাস্তব সাক্ষী। আলহামদুলিল্লাহ্।
শাপলার অনেক হারানোর মধ্যেও এগুলোই ছিলো আমাদের প্রাপ্তি।
কথা ছিলো শাপলার ঘটনার পরে সবকিছু স্থবির হয়ে পড়বে। মানুষ ইসলাম পালন করা তো দূর, ইসলাম নিয়ে কথা বলতেই ভয় পাবে। দাঁড়িওয়ালারা সেলুনে দাঁড়িয়ে লাইন ধরে দাঁড়ি কাটবে। লম্বা পাঞ্জাবিগুলো রূপান্তরিত হবে শর্ট ফতুয়ায়। আমরা ভেবেছিলাম, আমাদের চূড়ান্ত পতন বুঝি ঘটেই গেলো।
অথচ, আমরা অবাক বিস্ময়ে খেয়াল করলাম যে, শাপলা চত্ত্বরের সেই ঐতিহাসিক, নির্মম ঘটনার হাত ধরে সূচনা হয়েছে নতুন এক সময়ের।
শাপলার ঠিক পরেই, এতোদিন ধরে 'ট্যাবু' হয়ে থাকা ইসলামটা হঠাৎ করে জনপ্রিয় হয়ে উঠলো। বিশেষ করে তরুণদের কাছে। চারদিকে যেন নতুন করে জেগে উঠার একটা রোল শোনা যাচ্ছে। ইসলামটা মসজিদ আর মাদ্রাসায় আবদ্ধ না থেকে রাজনীতির গোলটেবিলের আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠলো। কি মাদ্রাসা আর কি জেনারেল শিক্ষিত- সবার মধ্যেই এক অন্যরকম উৎসাহ-উদ্দীপনা। ছেলেরা দাঁড়ি রাখছে। টাখনুর উপরে কাপড় তুলে দিচ্ছে। গায়ে ঝুলাচ্ছে লম্বা পাঞ্জাবি। মেয়েরাও কম যায়না একদম। হিজাব-নিকাবের মধ্যে নিজেকে সংরক্ষণ করার মধ্যে তারা যেন অন্যরকম একটা আনন্দ খুঁজে পেতে শুরু করলো। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে শিক্ষার্থীদের আমরা বদলে যেতে দেখেছি। এমনকি, আমি নিজেও তার একটা বাস্তব সাক্ষী। আলহামদুলিল্লাহ্।
শাপলার অনেক হারানোর মধ্যেও এগুলোই ছিলো আমাদের প্রাপ্তি।
(৩)
৫-ই মে তে হেফাজতের যে আন্দোলনটি ছিলো, সেটি কখনোই 'আওয়ামিলীগ বিরোধী' আন্দোলন ছিলোনা। এটি ছিলো নাস্তিকদের বিরুদ্ধে তাওহিদবাদীদের সংগ্রাম। কিন্তু, হেফাজতের উপরে যে জুলুমটা হয়েছে, সেটা হয়েছে আওয়ামিলীগের পক্ষ থেকেই। তাই, ব্যাপারটা হেফাজত বনাম নাস্তিক দিয়ে শুরু হলেও সমাপ্ত হয়েছে হেফাজত বনাম আওয়ামিলীগ দিয়ে। বিরোধি শিবির স্বীকার করুক আর না করুক, ক্ষমতাসীনদের ওই রাতের নৃশংসতা আড়াল করার কোন রাস্তা তাদের হাতে নেই।
জনমনে প্রশ্ন- সেদিন তাওহিদবাদীদের সাথে শাপলা চত্ত্বরে এরকম আচরণ করার পরেও এই ঘটনার কুশীলবেরা কিভাবে সংবর্ধনা পায়?
প্রশ্নটা আমার, আমাদের, সকলের। একটি সনদের স্বীকৃতি কওমী অঙ্গনকে কতোটুকু এগিয়ে নিয়ে যাবে সেটা আমি বলতে পারবো না। তবে, একটি সংবর্ধনা যে কিছু মানুষকে ভিলেন বানিয়ে ছেড়েছে, সেটা এখন দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট।
সনদের একটি পাতা এই স্বার্থবাদীদের কি কি দিয়েছে তাও জানিনা। তবে এটুকু জানি, তাদের জন্য বুকের গভীরে থাকা ভালোবাসার হৃদ শুকিয়ে কাঠফাটা হয়ে গেছে।
জনমনে প্রশ্ন- সেদিন তাওহিদবাদীদের সাথে শাপলা চত্ত্বরে এরকম আচরণ করার পরেও এই ঘটনার কুশীলবেরা কিভাবে সংবর্ধনা পায়?
প্রশ্নটা আমার, আমাদের, সকলের। একটি সনদের স্বীকৃতি কওমী অঙ্গনকে কতোটুকু এগিয়ে নিয়ে যাবে সেটা আমি বলতে পারবো না। তবে, একটি সংবর্ধনা যে কিছু মানুষকে ভিলেন বানিয়ে ছেড়েছে, সেটা এখন দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট।
সনদের একটি পাতা এই স্বার্থবাদীদের কি কি দিয়েছে তাও জানিনা। তবে এটুকু জানি, তাদের জন্য বুকের গভীরে থাকা ভালোবাসার হৃদ শুকিয়ে কাঠফাটা হয়ে গেছে।
(৪)
সেক্যুলার আর নাস্তিকদের সাথে আমাদের বিশেষ একটা দ্বন্ধের জায়গা আছে। সেই দ্বন্ধটা হলো আদর্শিক। আমাদের আদর্শের একটা বিশাল দিক হলো এই যে, আমরা কখনোই আদর্শচ্যুত হইনা। যারা আদর্শচ্যুত হয়, ধরে নিতে হবে তাদের মধ্যে কখনো আদর্শ ছিলোনা, অথবা আদর্শকে তারা কখনো বুকে ধারণ করতে পারেনি।
নাস্তিক আর সেক্যুলার গংয়ের কাছে আল্লামা আহমদ শফী 'তেঁতুল হুজুর' বলে কটাক্ষের শিকার। আল্লামা আহমদ শফী বাংলার জমিনে একজন প্রবাদতুল্য মানুষ। এটা সত্য যে, এই এক আল্লামা আহমদ শফীর ডাকেই লাখে লাখে মানুষ শাপলা চত্ত্বরে হাজির হয়েছিলো সেই ৫-ই মে তে।
তখন এই আল্লামা আহমদ শফীকে বিরোধি শিবির 'তেঁতুল হুজুর' বলে অপমান করতো। কটাক্ষ, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতো। এবং, এটাই নাস্তিক-সেক্যুলারদের চিরাচরিত অভ্যাস।
তখন এই আল্লামা আহমদ শফীকে বিরোধি শিবির 'তেঁতুল হুজুর' বলে অপমান করতো। কটাক্ষ, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতো। এবং, এটাই নাস্তিক-সেক্যুলারদের চিরাচরিত অভ্যাস।
কিন্তু, খুব মর্মাহত হই যখন দেখি আমাদের কিছু ভাইরা আল্লামা আহমদ শফীর বিরোধিতা করতে গিয়ে নাস্তিকদের সুরে তাঁকে 'তেঁতুল হুজুর' বলে গালি দেয়। বড় অদ্ভুত আমাদের আদর্শের লেভেল!
আল্লামা আহমদ শফী কিংবা সংবর্ধনা দেওয়া পার্টির এই সিদ্ধান্ত আমি কোনোভাবেই মানতে পারছিনা। তারা ঠিক এরকম একটি কাজ করেছে যা আমাদের কল্পনারও বাইরে। কিন্তু, তাই বলে কি আমার আদর্শ বিকিয়ে বসতে হবে? আমার আদর্শ কি এতোই ঠুনকো আর ভঙ্গুর যে একজন বয়োবৃদ্ধ আলেমের বিরোধিতা করার জন্যে আমাকে এমন উপাধি আর এমন শিরোনাম ব্যবহার করতে হবে যা ব্যবহার করে মজা পায় আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুশমনগন? স্রেফ একটা সিদ্ধান্তের জন্যে 'আল্লামা শফী' কে আমরা 'তেঁতুল শফী' বলতে কুণ্ঠাবোধ করছিনা? এই আমাদের আদর্শ? এই আদর্শিক লড়াই কি আমরা নাস্তিক-সেক্যুলারদের বিপক্ষে করি?
আল্লামা আহমদ শফী কিংবা সংবর্ধনা দেওয়া পার্টির এই সিদ্ধান্ত আমি কোনোভাবেই মানতে পারছিনা। তারা ঠিক এরকম একটি কাজ করেছে যা আমাদের কল্পনারও বাইরে। কিন্তু, তাই বলে কি আমার আদর্শ বিকিয়ে বসতে হবে? আমার আদর্শ কি এতোই ঠুনকো আর ভঙ্গুর যে একজন বয়োবৃদ্ধ আলেমের বিরোধিতা করার জন্যে আমাকে এমন উপাধি আর এমন শিরোনাম ব্যবহার করতে হবে যা ব্যবহার করে মজা পায় আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুশমনগন? স্রেফ একটা সিদ্ধান্তের জন্যে 'আল্লামা শফী' কে আমরা 'তেঁতুল শফী' বলতে কুণ্ঠাবোধ করছিনা? এই আমাদের আদর্শ? এই আদর্শিক লড়াই কি আমরা নাস্তিক-সেক্যুলারদের বিপক্ষে করি?
আপনি অবশ্যই আল্লামা শফীর এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে পারেন। তবে, আপনার সেই বিরোধিতার 'ভদ্র' এবং 'সুন্দর' একটা পদ্ধতি আছে। সেই পদ্ধতিতে করুন। আল্লামা শফীর বিরোধিতা করার জন্যে আপনাকে কেনো নাস্তিকদের পথেই হাঁটতে হবে? আপনার আর নাস্তিকদের মধ্যে আদর্শিক পার্থক্যটা কোথায় তাহলে?
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.