ক্যামেরা আবিস্কারের আগে / আরিফ আজাদ
ক্যামেরা আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত মানুষ ভাবতেই পারতো না যে তার অতিক্রম করে আসা মূহুর্তগুলোকে চাইলেই ফ্রেমে বন্দী করে রাখা যায়।
তার চলা-ফেরা, তার ভালো লাগা-মন্দ লাগার মূহুর্ত, তার ভালো কাজ - মন্দ কাজের মূহুর্তগুলোকে যে 'রেকর্ড' করে রাখা যায়, সেটা মানুষ ভাবতে পেরেছে মাত্র সেদিন।
তার চলা-ফেরা, তার ভালো লাগা-মন্দ লাগার মূহুর্ত, তার ভালো কাজ - মন্দ কাজের মূহুর্তগুলোকে যে 'রেকর্ড' করে রাখা যায়, সেটা মানুষ ভাবতে পেরেছে মাত্র সেদিন।
এর আগে মানুষের কাছে এই ব্যাপারটা ছিলো একদমই স্বপ্নের মতো। যেমন একসময় স্বপ্নের মতো ছিলো আকাশে উড়তে পারা.....
আজ থেকে ৩০০ বছর আগে কী কেউ একটি ভিডিও ক্যামেরার কথা চিন্তা করতে পেরেছে?
অথবা, তার অতিবাহিত সময়কে বন্দী' করে রাখতে পারে এমন কিছুর কথাও কী মানুষ ভাবতে পেরেছে?
আমরা সবাই সি.সি ক্যামেরার ব্যাপারে জানি। অপরাধ আর অপরাধী সনাক্তকরণের কাজে বহুল ব্যবহৃত একটি ছোট্ট সাইজের ক্যামেরা...
অথবা, তার অতিবাহিত সময়কে বন্দী' করে রাখতে পারে এমন কিছুর কথাও কী মানুষ ভাবতে পেরেছে?
আমরা সবাই সি.সি ক্যামেরার ব্যাপারে জানি। অপরাধ আর অপরাধী সনাক্তকরণের কাজে বহুল ব্যবহৃত একটি ছোট্ট সাইজের ক্যামেরা...
কেউ দোকানে আসলো, চুরি করে কিছু নিয়ে গেলো। যদি দোকানের কোথাও লুকানো সি.সি ক্যামেরা থাকে, তাহলে চোরটা আলটিমেটলি ধরা পড়তে বাধ্য। কারণ, চোরটা দোকানে ঢুকার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত যা যা করেছে, তার সব রেকর্ড অই সি.সি ক্যামেরায় ততক্ষণে রেকর্ড হয়ে গেছে।
কোন স্পটে কোন একদল সন্ত্রাসী যদি কাউকে খুন করে দ্রুত পালিয়ে যায়, এবং অই স্পটে যদি একটি সি.সি ক্যামেরা মনিটরিংয়ে থাকে, তাহলে যতো দ্রুতই খুনীটা পালিয়ে যাক না কেনো, সে ধরা পড়তে বাধ্য। কারণ, তার কৃতকর্মের সব রেকর্ড অই সি.সি ক্যামেরা ততোক্ষণে ধারণ করে ফেলেছে।
আজ থেকে ৩০০ বছর আগে, কেউ যদি কাউকে বলতো,- 'তুমি জানো, তুমি অমুক জায়গায় কী কী করেছ, তা আমি চাইলে এক্ষুণি তোমাকে তোমার সামনে রিপিট করে দেখাতে পারি?'
সময়টা যদি ৩০০ বছর আগের হয়, তাহলে দ্বিতীয় জন প্রথম জনের কথা শুনে হো হো হো করে হাসা শুরু করতো। তাকে মানসিক সমস্যাগ্রস্ত, পাগল ভাবতো।
কিন্তু আজকের সময়ে বসে কী কেউ সেরকম করবে?
কেউ যদি এসে ৫ বছর আগের আমার বিয়ের একটা ভিডিও ফুটেজ আমার হাতে দিয়ে বলে,- 'এই দ্যাখ, ৫ বছর আগে তোর বিয়ের ভিডিও',
তাহলে আমি কী অবাক হবো?
৫ বছর আগে আমি আরো শুকনা ছিলাম। গায়ের রঙ আরেকটু উজ্জ্বল ছিলো। এখনকার মতো ভূড়ি ছিলো না। সেই ৫ বছর আগের 'আমি' কে ভিডিওতে নড়তে-চড়তে, কথা বলতে দেখলে কী আমি বিস্ময়ে হতবাক হবো? মোটেও না। এটা আমার জন্য খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার।
কিন্তু আমার জন্য যা সাধারণ, তা আজ থেকে ৩০০ বছর আগের মানুষের জন্য রূপকথা তুল্য।
সময়টা যদি ৩০০ বছর আগের হয়, তাহলে দ্বিতীয় জন প্রথম জনের কথা শুনে হো হো হো করে হাসা শুরু করতো। তাকে মানসিক সমস্যাগ্রস্ত, পাগল ভাবতো।
কিন্তু আজকের সময়ে বসে কী কেউ সেরকম করবে?
কেউ যদি এসে ৫ বছর আগের আমার বিয়ের একটা ভিডিও ফুটেজ আমার হাতে দিয়ে বলে,- 'এই দ্যাখ, ৫ বছর আগে তোর বিয়ের ভিডিও',
তাহলে আমি কী অবাক হবো?
৫ বছর আগে আমি আরো শুকনা ছিলাম। গায়ের রঙ আরেকটু উজ্জ্বল ছিলো। এখনকার মতো ভূড়ি ছিলো না। সেই ৫ বছর আগের 'আমি' কে ভিডিওতে নড়তে-চড়তে, কথা বলতে দেখলে কী আমি বিস্ময়ে হতবাক হবো? মোটেও না। এটা আমার জন্য খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার।
কিন্তু আমার জন্য যা সাধারণ, তা আজ থেকে ৩০০ বছর আগের মানুষের জন্য রূপকথা তুল্য।
আজ থেকে সাড়ে ১৪০০ বছর আগে বলা হচ্ছে-
'অতএব, কেউ অণু পরিমাণ সৎ কাজ করলে তা সে (হাশরের ময়দানে) দেখবে
এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎ কাজ করলে তাও সে (সেদিন) দেখবে'- সূরা যিলযাল
(৭-৮)
এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎ কাজ করলে তাও সে (সেদিন) দেখবে'- সূরা যিলযাল
(৭-৮)
কোরআন যখন এই কথাগুলো বলছে, তখন পৃথিবীতে ক্যামেরা আবিষ্কার হয়নি।
কেউ অণু পরিমাণ সৎ কাজ করলে তাকে তা রিপিট করে কীভাবে দেখানো সম্ভব?
তার সামনে যদি লিখিত রেকর্ড আনা হয়, এবং বলা হয়,- 'দ্যাখো, তুমি যা যা করেছ, তার সবটাই এখানে টুকে রাখা আছে।'
সে বলতে পারে,- 'না তো। আমি তো এসব করিনি। এসব বানোয়াট, মিথ্যা। বাড়িয়ে লেখা হয়েছে।'
কিন্তু তার সামনে যদি একটি ভিডিও প্লে করে দেওয়া হয়? তার কৃতকর্মের ভিডিও?
সে কতোবার সুদ খেয়েছে, ঘুষ খেয়েছে, কতো রাকাত নামাজ ছেড়ে দিয়েছে, সে কতোবার ব্যাভিচারে লিপ্ত হয়েছে, কতোবার মিথ্যা বলেছে তার সব যদি ভিডিওটাতে সে দেখতে পায়, তার কী অভিযোগের আর বাহানা থাকতে পারে? পারেনা।
আল্লাহও বলছেন,- 'কেউ অণু পরিমাণ সৎ কাজ করলে তা তাকে দেখানো হবে, এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎ কাজ করলে তাও তাকে দেখানো হবে।'
কেউ অণু পরিমাণ সৎ কাজ করলে তাকে তা রিপিট করে কীভাবে দেখানো সম্ভব?
তার সামনে যদি লিখিত রেকর্ড আনা হয়, এবং বলা হয়,- 'দ্যাখো, তুমি যা যা করেছ, তার সবটাই এখানে টুকে রাখা আছে।'
সে বলতে পারে,- 'না তো। আমি তো এসব করিনি। এসব বানোয়াট, মিথ্যা। বাড়িয়ে লেখা হয়েছে।'
কিন্তু তার সামনে যদি একটি ভিডিও প্লে করে দেওয়া হয়? তার কৃতকর্মের ভিডিও?
সে কতোবার সুদ খেয়েছে, ঘুষ খেয়েছে, কতো রাকাত নামাজ ছেড়ে দিয়েছে, সে কতোবার ব্যাভিচারে লিপ্ত হয়েছে, কতোবার মিথ্যা বলেছে তার সব যদি ভিডিওটাতে সে দেখতে পায়, তার কী অভিযোগের আর বাহানা থাকতে পারে? পারেনা।
আল্লাহও বলছেন,- 'কেউ অণু পরিমাণ সৎ কাজ করলে তা তাকে দেখানো হবে, এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎ কাজ করলে তাও তাকে দেখানো হবে।'
এই আয়াত যখন নাজিল হচ্ছে, তখন যেহেতু প্রযুক্তি ছিলোনা, ক্যামেরা, ভিডিও এসবের কনসেপ্ট ছিলোনা, তখন মানুষ চাইলেই এই আয়াত শুনে মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে হাসাহাসি করতো।
বলতো,- 'দ্যাখো, আমাদের কাজগুলো নাকী আমাদের মৃত্যুর পরে আবার আমাদের দেখানো হবে। এটাও কী সম্ভব? হাহাহা।'
তাদের জন্য এটা করা যুক্তিযুক্ত ছিলো। কারণ তারা তখন জানেইনা যে, এটাও (ভিডিও রেকর্ড) চাইলে সম্ভব, এবং পরবর্তীতে দেখানোও সম্ভব।
বলতো,- 'দ্যাখো, আমাদের কাজগুলো নাকী আমাদের মৃত্যুর পরে আবার আমাদের দেখানো হবে। এটাও কী সম্ভব? হাহাহা।'
তাদের জন্য এটা করা যুক্তিযুক্ত ছিলো। কারণ তারা তখন জানেইনা যে, এটাও (ভিডিও রেকর্ড) চাইলে সম্ভব, এবং পরবর্তীতে দেখানোও সম্ভব।
তারা কী হাসাহাসি করেছিলো? হ্যাঁ, করেছিলো।
যারা ঈমান আনতে পারেনি, তারা এই কথা শুনে নিশ্চই হেসেছিলো। তারা আল্লাহর রাসূলকে পাগল, উন্মাদ বলতো।
কিন্তু যারা ঈমাণ এনেছিলো আল্লাহর উপর, আল্লাহর কিতাবের উপর, তাদের কাছে এসব ক্যামেরা সম্পর্কে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও তারা অবিশ্বাস করেনি।
তারা যখন শুনলো, তৎক্ষণাৎ মেনে নিলো। তারা অন্যদের মতো অবিশ্বাস করেনি। হাসাহাসি করেনি। বলেনি,- 'আরে এটা কীভাবে সম্ভব? এভাবেও হয় নাকী? মুহাম্মদ সাঃ কে বিশ্বাস করি বলে কী তার সব আজগুবি কথাতেও বিশ্বাস করতে হবে?'
নাহ। তারা সেরকম বলেনি। কোরআনের ভাষায়- 'আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম।'
তারা এর পেছনের ব্যাখ্যা খুঁজতে যায় নি,যুক্তি খুঁজতে যায়নি।
তারা শুধু জানতো, যখন এই কিতাবের উপর বিশ্বাস এনেছি, তখন এই কিতাব সত্য।
যারা ঈমান আনতে পারেনি, তারা এই কথা শুনে নিশ্চই হেসেছিলো। তারা আল্লাহর রাসূলকে পাগল, উন্মাদ বলতো।
কিন্তু যারা ঈমাণ এনেছিলো আল্লাহর উপর, আল্লাহর কিতাবের উপর, তাদের কাছে এসব ক্যামেরা সম্পর্কে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও তারা অবিশ্বাস করেনি।
তারা যখন শুনলো, তৎক্ষণাৎ মেনে নিলো। তারা অন্যদের মতো অবিশ্বাস করেনি। হাসাহাসি করেনি। বলেনি,- 'আরে এটা কীভাবে সম্ভব? এভাবেও হয় নাকী? মুহাম্মদ সাঃ কে বিশ্বাস করি বলে কী তার সব আজগুবি কথাতেও বিশ্বাস করতে হবে?'
নাহ। তারা সেরকম বলেনি। কোরআনের ভাষায়- 'আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম।'
তারা এর পেছনের ব্যাখ্যা খুঁজতে যায় নি,যুক্তি খুঁজতে যায়নি।
তারা শুধু জানতো, যখন এই কিতাবের উপর বিশ্বাস এনেছি, তখন এই কিতাব সত্য।
আজকের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সময়ে বসে আমরা সূরা যিলযালের সেই আয়াতকে যতোটা ইজিলি বুঝে নিতে পারছি, সাড়ে ১৪০০ বছর আগের মানুষের জন্য সেটা ততোটা সহজ ছিলো না।
তবুও, তারা মেনে নিয়েছে। বিশ্বাস করেছে।
এভাবে, সময় যতো যাবে, কোরআনের কথাগুলো মানুষের কাছে ততো স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হবে।
তবুও, তারা মেনে নিয়েছে। বিশ্বাস করেছে।
এভাবে, সময় যতো যাবে, কোরআনের কথাগুলো মানুষের কাছে ততো স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হবে।
আমাদের সমস্যা হলো, আজকের দিনে আমরা যখন কোরআনের কোনকিছু বুঝিনা বা বুঝে উঠতে পারিনা, তখন আমরা সেটাকে কোরআনের সীমাবদ্ধতা ধরে নিই। সন্দেহবাদী হয়ে যাই।
কিন্তু বোঝার চেষ্টা করিনা যে, বুঝতে না পারাটা নিতান্তই আমার ব্যর্থতা, আমার সীমাবদ্ধতা।, কোরআনের নয়।
১৪০০ বছর আগে সূরা যিলযালের এই আয়াত পড়ে মুমিনরা সন্দেহে পড়ে যায় নি। কারণ, অন্তরের গভীরে তারা বিশ্বাস করতো, এ কোরআন ধ্রুব, সত্য....
কিন্তু বোঝার চেষ্টা করিনা যে, বুঝতে না পারাটা নিতান্তই আমার ব্যর্থতা, আমার সীমাবদ্ধতা।, কোরআনের নয়।
১৪০০ বছর আগে সূরা যিলযালের এই আয়াত পড়ে মুমিনরা সন্দেহে পড়ে যায় নি। কারণ, অন্তরের গভীরে তারা বিশ্বাস করতো, এ কোরআন ধ্রুব, সত্য....
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.