স্রষ্টা বিষয়ে পেরাডক্সিকাল প্রশ্নের জবাব/ মোঃ নিয়ামত আলী

 দুটি প্রশ্নের জবাব
প্রশ্ন ১/  স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছে ?
=  স্রষ্টা আর সৃষ্টির যে তফাৎ অথবা পার্থক্য এটা ওরা জেনেই না জানার অভিনয় করে আবার ফাউল প্রশ্ন করে সত্য বলতে নাস্তিকরা স্রষ্টা বিষয়ে বিন্দু পরিমাণ জ্ঞান রাখে না যদি জানত তাইলে বাচ্চাসুলভ প্রশ্ন করতো না

স্রষ্টা বলতে আমরা যা বুঝি অথবা যা মানি তা হলঃ

* স্রষ্টা এক * তাঁর শুরু নেই , শেষেও নাই * তাঁর সমকক্ষ কেউ নাই * তিনি সর্ব শক্তিমান

এখন সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করেছে ? - দেখুন স্রষ্টার ক্ষেত্রে "সৃষ্টি" শব্দটি প্রযোজ্য না কারন স্রষ্টাই যখন সব কিছু সৃষ্টি করেছেন তখন তাঁকে আবার কে সৃষ্টি করবে যেহেতু স্রষ্টা হলেন তিনি যিনি সৃষ্ট নন

পয়েন্ট ১/ আপনি একটি লিখা লিখেছেন যদি প্রশ্ন করি আপনাকে কে লিখেছে ? তখন ! আসলে এ প্রশ্নটি করা ব্যাকরণগত ভুল এবং ফাউল কারন আপনি হলেন মানুষ আপনাকে যদি কেউ লিখত তাইলে আপনি আর মানুষ হতেন না , আপনি "লিখা" হয়ে যেতেন আপনি মানুষ আপনি লিখার উরধে আপনার ক্ষেত্রে লিখা শব্দটি প্রযোজ্য না তেমনি স্রষ্টার ক্ষেত্রে সৃষ্টি শব্দটিও গ্রহনযোগ্য না মানুষ ও লিখার মধ্যে যেমন তফাৎ স্রষ্টা আর সৃষ্টির মধ্যেও আরও বেশি পার্থক্য

পয়েন্ট ২/ ধরেন আপনার নাম রহিম এখন সাইকেল চালায় প্রশ্ন করা হলঃ রহিমকে কে চালায় ? এ প্রশ্নটিও একই রহিমকে যদি কেউ চালাত তবে রহিম আর রহিম থাকতো না রহিম চাইকেল হয়ে যেত ঠিক তেমনি স্রষ্টাকে যদি কেউ সৃষ্টি করতো তাহলে স্রষ্টা আর স্রষ্টা থাকতেন না, তিনিও সৃষ্টি হয়ে যেতেন স্রষ্টা সৃষ্টি নন বলেই তিনি স্রষ্টা

পয়েন্ট ৩/ ধরেন আপনি একটি ছবি একেছেন যেমন , গাছের ছবি , সুন্দর নদ-নদী , ফুল, ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্ন করি আপনাকে কে একেছে ? - আপনাকে যদি কেউ আঁকত তবে আপনি আর মানুষ হতেন না আপনিও ছবি হয়ে যেতেন বাস্তব মানুষ ও জড় ছবির যে পার্থক্য তেমনি স্রষ্টা ও তাঁর সৃষ্টির মাঝে অনেক তফাৎ

পয়েন্ট ৪/  একটি তাসের সারি টোকা দেয়া হল প্রত্যেক তাস একে একে পরে গেল কেউ যদি প্রশ্ন করে প্রথম যে টোকা দিয়েছে সে কি তাস ? না কারন যে তাসকে প্রথম টোকা দিয়েছে সে মানুষ, যে তাস না স্রস্টাও প্রথম সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন তাঁকে কে সৃষ্টি করেছেন ? না কারন তিনি সৃষ্টি নন

পয়েন্ট ৫/  আপনি কম্পিউটারে বসে টাইপ করছেন প্রশ্ন করা হল আপনাকে কে টাইপ করেছে ? যদি আপনাকে কেউ টাইপ করত তাইলে আপনি আর মানুষ হতেন না আপনি হয়ে যেতেন কিবোর্ড একই ভাবে আপনার ক্ষেত্রে যেমন "কে টাইপ করেছে"  এই প্রশ্ন হাস্যকর একই ভাবে সবকিছুই স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন তাঁকে কে সৃষ্টি করেছে এটাও হাস্যকর নাস্তিকরা ভাইরা যে ভুল করে সেটা হল স্রষ্টা আর সৃষ্টিকে এক করে গুলিয়ে ফেলে সেটা মর্মান্তিক ভুল

প্রশ্ন ২/ স্রষ্টা যদি সর্ব শক্তিমান হয় তাইলে তিনি কি এমন কিছু বানাতে পারবে যা তিনি উঠাতে পারবে না ?(নাস্তিকরা এই প্রশ্নের পরে বলেঃ  হ্যাঁ বা না তে জবাব দিতে হবে ) !

= কুযুক্তির প্রশ্নের কোন উত্তর হয় না নাস্তিকরা বলে হ্যাঁ  অথবা না  এর মাধ্যমে উপরের প্রশ্নের জবাব দিতে দেখেন, আপনার নাম কি ? এই প্রশ্নের জবাবে হ্যাঁ অথবা না অথবা না দিয়ে নাস্তিকরা দিতে পারবে না তাইলে কোন লজ্জায় বলে যে উপরের প্রশ্নের জবাব হ্যাঁ বা না তেই দিতে হবে আপনাদের প্রশ্ন মর্মান্তিক ভুল আবার উত্তর এর ক্ষেত্রে  যেই শর্ত চাচ্ছেন সেটার অবস্থাও ভয়াবহ কোন মানুষ একটি কাগজ তৈরি করলো  এখন সে কাগজ সে তৈরি করেছে সে এই কাগজ অবশ্যই উঠাতে পারবে কোন মানুষিক রোগী যদি প্রশ্ন করে তুমি এমন কাগজ বানাতে পারবে যা তুমি উঠাতে পারবে না ? - এই হাস্যকর প্রশ্নের জবাব হল তুমি আগে মানুষিক রোগের চিকিৎসা করাও সামান্য একটি কাগজের ওপর মানুষের যে ক্ষমতা পুরো মহাবিশ্ব এর স্রষ্টা যিনি , মহাবিশ্বের স্রষ্টার মহাবিশ্বের ওপর আরও বেশি ক্ষমতা এটাই স্বাভাবিক

প্রশ্নটিও অযৌক্তিক এবং বাস্তবতা বিরোধী ওরা আসলে সন্দেহ তৈরি করে তবে প্রশ্নের জবাব জানা ওদের উদ্দেশ্য না প্রাচিন আলেমরা নাস্তিকদের বাচ্চাসুলভ প্রশ্নের সকল জবাবই চমৎকার ভাবে দিয়ে গেছেন আর কত !!! এরপরেও এই মানুষিক রোগীরা মানতে চায় না একটি কথা মনে রাখবেন বেআদব , অহংকারী , মানুষকে সত্য বললে গ্রহন করবে না আর বেয়াদব অহংকারী সত্য হতে অনেক দূরে কারন তাদের ভিত্তিই মিথ্যাচার ওপর এবার আসুন রোগীদের প্রশ্নের পোস্টমর্টেম করি

* আপনি কি এমন কিছু লিখতে পারবেন যা আপনি মুছতে পারবেন না ?
* আপনি কি এমন কিছু টাইপ করতে পারবেন যা আপনি ডিলেট করতে পারবেন না ?
* আপনি কি এমন ভাবে নিঃশ্বাস নিয়ে পারবেন যে আপনি সেটা ছাড়তে পারবেন না ?

মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করুন আমার উপরের ৩ টি প্রশ্নের জবাব আপনি যদি হ্যাঁ দেন তাইলে না এর দিকে উত্তর চলে যাবে আবার না জবাব দিলে উত্তর হ্যাঁ এর দিকে চলে আসবে আসলে এই ধরনের প্রশ্নে শব্দগত ধাঁধা থাকলেও বাস্তবে এর কোন নজীর নাই আপনি কোন কিছু লিখতে পারলে তা অবশ্যই আপনি মুছতেও পারবেন বা নষ্ট করতে পারবেন আপনি টাইপ করতে পারলে সেটা অবশ্যই ডিলেট করতে পারবেন আপনি নিঃশ্বাস নিলে তা ছাড়তেও পারবেন আর নিঃশ্বাস না ছাড়তে পারলে আপনি হবেন মৃত তখন আপনার ঐ প্রশ্নের অবস্থাও হবে মৃত্যু আর লিখা মুছতে না পারলে আপনি হবেন দুর্বল তেমনি আপনার প্রশ্নটিও আসলে দুর্বল আর ডিলেট না করতে পারলেও আপনি হবেন অজ্ঞ আর আপনার প্রশ্নটিও অজ্ঞ জাতের হাইব্রিড

শব্দ গত ভাষা পেচিয়ে বাস্তবতা বিরোধী প্রশ্ন করে নাস্তিকরা মূলত প্রশ্নেরই অপমান করে এগুলো প্রশ্নের মধ্যেই পড়ে না স্রষ্টা যেহেতু সর্ব শক্তিমান টাই তিনি কোন বস্তু বানাতে পারলে সেটা অবশ্যই ধ্বংসও করতে পারবেন , তুলতে পারবেন যেমনি ভাবে আপনি কোন গাড়ি সৃষ্টি করতে পারলে সেটা অবশ্যই চালাতে পারবেন গাড়ি বানাতে পারলে , চালাতে পারবেন না  এটা মানুষিক রোগী ছাড়া কেউ বলতে পারে নাহ এরপরেও যদি নাস্তিকদের লজ্জা থেকে থাকে তবে বলদ টাইপ প্রশ্ন হতে দূরে থাকবে আর যদি লজ্জা দেখা যায় না বলে মানি না তাইলে তাদের জন্য আমার শোঁক প্রকাশ !

হাজারো লজিকাল ফেলাসি প্রশ্ন বানানো যায় যার কোন জবাব হয় না হ্যাঁ একটি জবাব হয় তাহল লজিকাল ফেলাসি যুক্ত প্রশ্ন মূলত এর জবাবও হবে ফাউল প্রশ্ন নিচের প্রশ্ন গুলা নাস্তিকদের কাছে রাখলাম উত্তর হ্যাঁ বা না তেই দিতে হবে

* নাস্তিকরা কি মানুষ হত্যা বন্ধ করেছেন ?
* নাস্তিকরা কি ধর্ষণ, চুরি ,ডাকাতি করা বন্ধ করেছে ?
* আপনি কি এই রুমে দাড়াতে পারবেন যে অন্য রুমে দাড়াতে পারবেন না ?
* আপনি কি বৃষ্টিতে গসল করতে পারবেন যে আপনি ভিজতে পারবেন না ?

বর্ণিত প্রশ্ন গুলার জবাব হ্যাঁ দিলে না হয়ে যাবে, না দিলে হ্যাঁ হয়ে যাবে  উপরের প্রশ্ন গুলা আত্মবিরোধ হ্যাঁ বা না যাই জবাব দেন না কেন নাস্তিকরা কচু গাছের সাথে ফেসে যাবে এই বিষয়ে এক নাস্তিকের সাথে আমার কথা পড়ুন

এক নাস্তিক আমাকে প্রশ্ন করেছিলঃ ঈশ্বর সমূহ এমন কিছু তৈরি করতে পারে যা ধ্বংস করতে পারে না ?

আমিঃ আরে ভাই এইসব ত পুরানা প্রশ্ন ওকে জবাব দিচ্চি এই ধরনের প্রশ্নকে বলে প্যারাডক্স তবে এর সহজ উত্তর হল স্রষ্টা কোন কিছু তৈরি করতে পারলে অবশ্যই সেটা ধ্বংসও করতে পারবেন এখন আপনাকে প্রশ্ন করি স্রষ্টা কেন এমন পাথর বানাবেন যা তিনি উঠাতে পারবেন না ? আরেকটি প্রশ্নঃ কোন মা কি তার নিজেকে জন্ম দিতে পারে ?

নাস্তিকঃ আপনাদের কথিত ঈশ্বর সর্ব সক্ষম আমিঃ সেটা জানতে চেয়েছি সেটা খণ্ডন করুন

নাস্তিকঃ এটাই খণ্ডন

আমিঃ হাহাহা

নাস্তিকঃ মায়ের সংজ্ঞাতে নিজেকে জন্ম দেবার কিছুই নাই এটা বুঝেন নাকি না ? উত্তরঃ হ্যাঁ বা না তেই দিতে হবে  এটা কি বুঝেন যে সেসব শব্দ আপনি ব্যাবহার করেন সেগুলার নির্দিষ্ট অর্থ মানুষ তৈরি করেছেন ও সঙ্গা অনুযায়ী অন্য কোন Funtion হলে শব্দের অর্থ বদল হবে ? স্ব সৃষ্টকে বলে Self Actualizea . Actualizea এর মানে হচ্ছে সৃষ্ট হওয়া এই জিনিস আন জেনে তর্ক করতে এসেছেন আমার সাথে ?

আমিঃ মা ত জন্ম দিতে পারে তাইলে  কেন মা তার নিজেকে জন্ম দিতে পারবে না ? এটা বুঝেন নাকি না ? আপনি কি কথা বলেও কথা না বলতে পারবেন ? ছেলেটি গাছে দাড়িয়ে মাটিতে বসে আছে কিভাবে ? উত্তর হ্যাঁ না তে দিতে হবে

নাস্তিকঃ প্রশ্নের উত্তর উপরেই দেয়া আছে এখন সর্বক্ষম যিনি যার পক্ষে "সব" সম্ভব সবের মধ্যে তিনকোনা চতুরবুজ তৈরি ও ধ্বংস করতে না পারা জিনিস সৃষ্টিও পড়ে

আমিঃ আপনার প্রশ্নের জবাব আমার বর্ণিত প্রশ্নে দেয়া আছে নাস্তিকঃ এখন প্রমান করেন সে ঐ গুলা সব এর মধ্যে পরেনা

আমিঃ স্রষ্টা সব পারেন না বা করেন না কারো তিনি সৃষ্টির উরধে এর মানে এই নয় যে তিনি অক্ষম যেমন স্রষ্টা ঘুমাতে পারেন না স্রষ্টা খেতে পারেন না কারন তিনি এর উরধে ঠিক তেমনি ভাবে স্রষ্টা এমন পাথর কেন বানাবেন যেটা তিনি উঠাতে পারবে না ? এই প্রশ্নের জবাব হ্যাঁ বা না তে দেওয়া যায় না , অযৌক্তিক প্রশ্ন যেমন আপনি কি মানুষ হত্যা বন্ধ করেছেন ? হ্যাঁ বা না তে এর জবাব দেন ? আমি প্রমান করেছি এখন আপনি আমার যুক্তি খণ্ডন করুন

নাস্তিকঃ আমি আদও মানুষ হত্যা করে থাকলে এই প্রশ্নটি প্রযোজ্য আর হত্যা যখন শুরুই হয়নি তখন বন্ধের প্রশ্ন আসে কিভাবে সেটা বলেন ?

আমিঃ ব্যাখ্যা আমি চাই নি জনাব আপনি কি মানুষ হত্যা বন্ধ করেছেন ? হ্যাঁ বা না তেই উত্তর দেন স্রষ্টা যখন এমন পাথর বানাননি তাহলে ধ্বংসের প্রশ্ন আসে কিভাবে অথবা এমন প্রশ্ন আসে কিভাবে ?

(অনেকখন ত্যানাপেচানর পরে)

নাস্তিকঃ আপনি নাস্তিক হয়ে ধার্মিক সাজবেন না

আমিঃ হাহাহা আমি মুসলিম আলহামদুলিল্লাহ আপনি আমার যুক্তি খণ্ডন করেন জনাব এরপরে বেচারা নাস্তিককে আর পাওয়া যায় নি , আমাকে ব্লক মেরে দিয়েছে কিনা আল্লাহই ভাল জানেন  

মুসলিম ভাইদের উদ্দেশ্য একটি কথা বোলব আপনারা যদি নিজ অবস্থানে ঠিক থেকে নাস্তিকদের ডাবল স্ট্যান্ডDard গুলো ধরিয়ে দিতে পারেন তাহলে হযরত ওমর (রা) কে দেখে শয়তান যেমন ভয়ে পালিয়ে যেত ঠিক আপনাকে দেখে ত্যানাবাজ নাস্তিকরাও ভয় পাবে এ বিষয়ে আরেকটি ঘটনা আছে নাস্তিকদের সাথে আমার , কলেবর বড় হবে তাই অন্য বইতে বোলব ইনশাআল্লাহ্‌ পরিশেষে ফাউল প্রশ্ন করে নিজেকে মূর্খ এবং হাস্যকর বানাবেন না কারন বানরের কারবার দেখে আমরাও কিন্তু হাসি!

No comments

Note: Only a member of this blog may post a comment.

Powered by Blogger.