যৌতুক_বনাম_মহরানা / তানভীর আহমেদ শরীফ ।


#আল্লাহু_আকবর
#ইসলামের_কাছে_পৌত্তলিকতার_/#হিন্দুত্ববাদের_পরাজয়_পর্ব_২৭
#যৌতুক_বনাম_মহরানা
🚩🚩
🌍যৌতুকের দাবীতে প্রতি ঘন্টায় ১ জন নারী হত্যার শিকার স্বামী ও তার আত্মীয় স্বজন দ্বারা
🌎ভারতে বছরে ১ লক্ষের ও বেশি নারীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় ( গৃহ নির্যাতিত যৌতুকের দাবী)
🌍ভারতে ১০ জনের ১ জন শিশুর জন্য দায়ী গৃহে নারী নির্যাতন!!! দাদারা সুস্থ আছেন ত!
🌏২০০০ নারী ভ্রুন হত্যা প্রতিদিন!
🌏গরু/মহিষের বিনিময়ে নারী বিক্রি

কি দাদারা সুস্থ আছেন ত?
আজকের পরাজয় উপহার দিচ্ছেন @Raj Dutta! 😎
আর আপ্নারা ইসলাম এর মোহরানার( প্রাপ্য উপহার) সমালোচনা করেন!!! শুনেছেন নাকি মোহরানার জন্য পুরুষ হত্যা হয়েছে?
🚩🚩
আন নিসা 4:4
وَءَاتُوا ٱلنِّسَآءَ صَدُقَٰتِهِنَّ نِحْلَةًۚ فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَىْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيٓئًا مَّرِيٓئًا
আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।
🌏মুসলিম নারী মহরানা নিয়ে বিয়ে করে কি পাচ্ছে?
🚩 স্বামীর সম্পত্তির অধিকার
🚩 তালাক ( বিবাহ বিচ্ছেদ এর অধিকার)
🚩 বিবাহ বিচ্ছেদ হলে খোরপোষের অধিকার
🚩 পিতার পিতৃ পরিচয় ই থাকবে কোরান ৩৩ঃ০৫)
🚩 পুরুষের দ্বীনের পূর্নতা দান কারী
🚩 শালীনতা / পর্দা রক্ষা ও, সুধুমাত্র স্বামীর কাছে জৈবিক চাহিদা পূরনের অধিকার
🚩 তার ভরন পোষন স্বামীর কাছ থেকে পাবে
🌏 যৌতুক দিয়ে একজন হিন্দু নারী বিয়ে বসার পর কি পাচ্ছে
🚩ভগবান শ্রী কৃষ্ণ ও যৌতুক নেয়!
সহস্র স্ত্রী, ও হাজার হাজার হাতি, ঘোড়া,ও যুবতি সেবিকা যৌতুক নেন কৃষন- ভগবত পুরাণ,
১০/(৫০-৫১) ও ১০/৫৮
🚩 পিতৃ পরিচয় বাদ দিয়ে, স্বামীর নাম হবে। কোরান নিষিদ্ধ ( সুরা আহযাব ৩৩ঃ০৫) মুহাম্মদ সাঃ এর কোন স্ত্রীর নাম পরিবর্তন হয়নি, পিতার নাম ই আছে।
🚩 শতপথ ব্রাহ্মণ(২/৩/২/৮) “সেই ব্যক্তি ভাগ্যবান যার পশুর সংখ্যা স্ত্রী সংখ্যার চেয়ে বেশী”।🙄
🚩 হিন্দু স্বামী তাকে বিক্রি ( পতিতাবৃত্তি), দান করতে পারবে! মনুসংহিতা ৯ঃ৪৬
🚩জায়াজীবী ( স্ত্রীর পতিতাবৃত্তিতে চলে স্বামীর) হিন্দু স্বামী ভিডিও দেখুন।
🚩হিন্দু স্বামী তাকে ত্যাগ করতে পারবে ( তালাক নয়) ৯ঃ৪৬
🚩 হিন্দু স্বামী তাকে ত্যাগ করলেও স্ত্রী পুন বিবাহের অধিকার পাবেনা। ৯ঃ৪৬
🚩বিধবা হলেও বিবাহের অনুমতি নাই ( নিয়োগ প্রথা বিয়ে নয়, সুধুমাত্র ছেলে সন্তান উৎপাদন এর জন্য)৯ঃ৫৯- ৬০, ৯ঃ৬৫
🚩সতিদাহ, স্বামীর চিতায় জীবন্ত পুড়ে মরার অধিকার ( প্রথম নিষিদ্ধ করেন সম্রাট বাবর, খ্রিস্টান ( ব্রিটিশ) দের সহযোগিতায় পুন রায় চালু হয় শর্ত সাপেক্ষে, ১৮২৯ সালে রাম মোহন রায়ের মামলায় সতিদাহ রদ করা হয়। সূত্রঃ
https://www.britannica.com/topic/suttee
🚩 শতপথ ব্রাহ্মণ(৫/২/৩/১৩)- অপুত্রা পত্নী পরিত্যক্তা। স্বামী ত্যাগ করবে, কোরান বলছে স্বামী দায়ী ছেলে হবে না মেয়ে কোরান ৫৩ঃ৪৫-৪৬
🚩 ছেলে না হলে নিয়োগ প্রথা ( দেবর / ভাসুর / পর পরুষ ১২ জন কে নিয়োগ দেয়া পূত্র জন্ম দেয়ার জন্য
🚩 নিয়োগ প্রথাও না হলে পরের ছেলের পিতৃ পরিচয় গোপন করে স্ত্রী ও মেয়েকে বঞ্চিত করে তাকে উত্তরাধিকার করা ( কোরান নিষিদ্ধ করে কোরান ৩৩ঃ০৫)
🌏ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সাল পর্যন্ত স্ত্রীর কথাই স্বীকার করেন নি, নির্বাচনী চাপে এই সত্য বেরিয়ে আসে, তিনি কি স্ত্রীর ভরনপোষন দেন ১৯৪৬ সালের ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী?
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Jashodaben
🌏 ব্রিটেনের রানী তার ছেলের বিয়েতে পূত্র বধুকে উপহার দিলেন
https://www.google.com/…/kate-middleton-meghan-markle-t…/amp
🌏 ভারতে প্রতিঘন্টায় একজন নারী হত্যা যৌতুকের জন্য
https://www.telegraph.co.uk/…/Woman-killed-over-dowry-every…
🌏 প্রতিবছর ১ লক্ষ নারীকে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে মারা হয় যৌতুকের দাবীতে।
https://www.telegraph.co.uk/…/Thousands-of-Indian-women-kil…
🌏 ২০০০ নারী ভ্রুন হত্যা প্রতিদিন https://www.google.com/…/2000-girls-killed-every-day-india-…
🌏গরু/মহিষ এর বিনিময় দামে নারী বিক্রি
হয়।
https://www.google.com/…/Bride…/amp_articleshow/18759464.cms
#
🌐
#স্ত্রীকে বিক্রি, দান, পরিত্যাগ ( তালাক নয়) করে দেয়া বনাম তালাক ও পুন বিবাহের অধিকার।
ন নিষ্ক্রয়বিসর্গাভ্যাং ভর্তুভার্যা বিমচ্যতে।
এবং ধর্মং বিজানীমঃ প্রাক প্রজাপতি নির্মিতম।। ৯ঃ৪৬ মনুসংহিতা
অনুবাদ ঃ দান, বিক্রয়,পরিত্যাগ দ্বারা ভার্যা স্বামী থেকে সম্মন্ধচ্যুত হতে পারে না। প্রজাপতি কর্তৃক এইরূপ ধর্ম ই সৃষ্টিকালে নির্দিষ্ট হয়েছে বলে আমরা জানি।
🌐
নোদ্বাহিকেষু মন্ত্রেষু নিয়গ ঃ কীর্ত্যতে ক্বচিৎ।
ন বিবাহবিধবাবুক্তং বিধবাবেদনং পুনঃ। মনু৯ঃ৬৫
অনুবাদ ঃ বিধবাবিষয়ক যে সকল মন্ত্র আছে তার কোথাও নিয়োগের প্রসংগ নেই ( অর্থাৎ বিবাহ সংক্রান্ত যতগুলো মন্ত্র আছে সেগুলোর প্রত্যেক্টিতেই বিবাহকারীর নিজেত উৎপাদিত সন্তানের কথাই বলা আছে) আর বিধবাবিষয়ক শাস্ত্রতেও বিধবা আবেদনের অর্থাৎ বিধবাগমনের কথা নাই।
🌐
#নিয়োগ_প্রথা
ঋগবেদ ১০/৮৫/৪৫ এ বলা আছে,
একজন স্ত্রীর ১০ টি সন্তান ও ১১ তম স্বামী হওয়া উচিত।
এর ব্যাখায় স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতি তার সত্যার্থপ্রকাশ বইয়ের, ১৩৬ পৃষ্টায় লিখেছেন,
“স্ত্রীর প্রথম স্বামী হচ্ছে সে যার সাথে তার বিবাহ হয়, সেই স্বামীকে বলা হয় সোম। এরপর পর যার সাথে নিয়োগের মাধ্যমে যৌনমিলন করা হয় সেই দ্বিতীয় স্বামীকে বলা হয় গন্ধবীর, কারন সে ইতোমধ্যেই অন্য আরেকজনের সাথে বিবাহিত। এরপর তৃতীয় ব্যাক্তি যার সাথে নিয়োগ করা হয় তার নাম অগ্নি, কারন সে কামুক। এরপর চতুর্থ থেকে এগারো পর্যন্ত বাকিদের বলা হয় পুরুষ।”
তিনি আরো বলেন, “ঠিক একিভাবে একজন পুরুষও নিয়োগ করতে পারে একে একে এগারোজন নারীর সাথে, ঠিক যেভাবে স্ত্রী করে এগারোজন পুরুষের সাথে, যা বেদ দ্বারা অনুমোদিত।”
🌐
💠💠দেবরাদ্বা সপিণ্ডাদ্বা স্ত্রিয়া সম্যঙ্ নিযুক্তয়া ।
প্রজেপ্সিতাধিগন্তব্যা সন্তানস্য পরিক্ষয়ে।।
অনুবাদ:- সন্তানের পরিক্ষয়ে অর্থাৎ সন্তান-উৎপত্তি না হওয়ায় বা সন্তান জন্মানোর পর তার মৃত্যু হওয়ায় বা কন্যা জন্ম হলে তাকে পুত্রিকারূপে গ্রহণ না করায় নারীর শ্বশুর-শ্বাশুড়ী পতি পতি প্রভৃতি গুরুজনদের দ্বারা সম্যকভাবে ( অনুমতি ক্রমে) নিযুক্ত হয়ে দেবর ( অর্থাৎ স্বামীর জ্যেষ্ঠ বা কনিষ্ঠ ভ্রাতা ) অথবা সপিন্ডের ( স্বামীর বংসের কোনো পুরুষের ) সাহায্যে অভিলষিত সন্তান লাভ করবে।( মনুস্মৃতি:-৯/৫৯)
তাহলে এখানে দেখা যাচ্ছে যে যদি গুরু জনদের অনুমতি থাকে তাহলে নিয়োগ প্রাপ্ত করা যায় ,, । দেখি দ্বিতীয় শ্লোক কি বলে ----
💠💠বিধবায়াং নিযুক্তস্ত্ত ঘৃতাক্তো বাগযতো নিশি ।
একমুৎপাদয়েৎ পুত্রং ন দ্বিতীয়ং কথঞ্চন ।।
অনুবাদ :- বিধবা নারীতে অথবা অক্ষম পতি থাকা সত্ত্বেও সধবাতেও পতি প্রভৃতি গুরুজনদের দ্বারা নিযুক্ত দেবর বা কোনও সপিণ্ড ব্যক্তি ঘৃতাক্ত শরীরে মৌনাবলম্বন করে রাত্রিতে একটি মাত্র পুত্র উৎপাদন করবে, কখনো দ্বিতীয় পুত্র উৎপাদন করবে না , । ( মনুস্মৃতি :- ৯/৬০)
🌏🌏
حدثنا أحمد بن صالح، حدثنا عنبسة بن خالد، حدثني يونس بن يزيد، قال قال محمد بن مسلم بن شهاب أخبرني عروة بن الزبير، أن عائشة، - رضى الله عنها - زوج النبي صلى الله عليه وسلم أخبرته أن النكاح كان في الجاهلية على أربعة أنحاء فنكاح منها نكاح الناس اليوم يخطب الرجل إلى الرجل وليته فيصدقها ثم ينكحها ونكاح آخر كان الرجل يقول لامرأته إذا طهرت من طمثها أرسلي إلى فلان فاستبضعي منه ويعتزلها زوجها ولا يمسها أبدا حتى يتبين حملها من ذلك الرجل الذي تستبضع منه فإذا تبين حملها أصابها زوجها إن أحب وإنما يفعل ذلك رغبة في نجابة الولد فكان هذا النكاح يسمى نكاح الاستبضاع ونكاح آخر يجتمع الرهط دون العشرة فيدخلون على المرأة كلهم يصيبها فإذا حملت ووضعت ومر ليال بعد أن تضع حملها أرسلت إليهم فلم يستطع رجل منهم أن يمتنع حتى يجتمعوا عندها فتقول لهم قد عرفتم الذي كان من أمركم وقد ولدت وهو ابنك يا فلان فتسمي من أحبت منهم باسمه فيلحق به ولدها ونكاح رابع يجتمع الناس الكثير فيدخلون على المرأة لا تمتنع ممن جاءها وهن البغايا كن ينصبن على أبوابهن رايات يكن علما لمن أرادهن دخل عليهن فإذا حملت فوضعت حملها جمعوا لها ودعوا لهم القافة ثم ألحقوا ولدها بالذي يرون فالتاطه ودعي ابنه لا يمتنع من ذلك فلما بعث الله محمدا صلى الله عليه وسلم هدم نكاح أهل الجاهلية كله إلا نكاح أهل الإسلام اليوم ‏.‏
‘উরওয়াহ ইবনুয যুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাঃ) তাঁকে বলেন, জাহিলী যুগে চার প্রকার বিবাহ চালু ছিলো। (এক) বর্তমানে যা চলছে, অর্থাৎ কোন ব্যক্তি কোন মহিলার অভিভাবকের নিকট বিয়ের প্রস্তাব দিবে এবং পাত্রীকে মোহরানা দিয়ে বিয়ে করবে। (দুই) কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে হায়িয হতে পবিত্র হলে বলতো, তুমি অমুক ব্যক্তির নিকট চলে যাও এবং তার সাথে সঙ্গম করো। অতঃপর তার স্বামী স্বীয় স্ত্রী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা থাকতো এবং অন্য ব্যক্তি দ্বারা গর্ভবতী না হওয়া পর্যন্ত তার সাথে অবস্থান করতো না, এমনকি তাকে স্পর্শও করতো না। অতঃপর স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করতো। স্বীয় স্ত্রীকে অন্য পুরুষের সাথ সহবাস করাতো এজন্যই যে, যাতে সে একটি উন্নত জাতের সন্তান জন্ম হয়। এরূপ বিবাহকে বলা হতো ‘আল-ইস্তিবদা’। (তিন) দশজনের কম ব্যক্তি একত্রে একজন মহিলাকে বিবাহ করতো এবং তারা সকলেই ঐ মহিলার সাথে সঙ্গম করতো। অতঃপর মহিলাটি গর্ভবতী হয়ে সন্তান প্রসবের পর কয়েকদিন অতিবাহিত হলে সকলকে ডেকে পাঠাতো এবং সবাই আসতে বাধ্য হতো। সকলে তার সামনে উপস্থিত হলে সে তাদেরকে বলতো, তোমরা সকলেই জানো যে, তোমরা কি করেছো। এখন আমি সন্তান প্রসব করেছি। তাদের মধ্য হতে পছন্দ মতো কাউকে ডেকে বলতো, হে অমুক! এটি তোমারই সন্তান। ফলে সন্তানটি ঐ ব্যক্তির সাথে সম্পর্কিত হতো। (চার) বহু পুরুষ একত্রিত হয়ে পর্যায়ক্রমে একই নারীর সাথে সঙ্গম করতো এবং ঐ নারীর কাছে যত পুরুষ আসতো কাউকেই সে সঙ্গমে বাঁধা দিতো না। এরা ছিলো বেশ্যা। এরা প্রতীক চিহ্ন হিসেবে নিজ ঘরের দরজার উপর পতাকা টানিয়ে রাখতো। যে কেউ অবাধে এদের সাথে যেনা করতে পারতো। এদের মধ্যে কেউ গর্ভবতী হয়ে সন্তান প্রসব করলে সেসব পুরুষেরা উক্ত মহিলার কাছে একত্রিত হতো এবং একজন বংশবিশারদকে ডেকে আনা হতো। সে যে ব্যক্তির সাথে শিশুর সাদৃশ্য লক্ষ্য করতো তাকে বলতো, এটা তোমার সন্তান। পরে লোকেরা শিশুটিকে তার ছেলে হিসেবে আখ্যা দিতো এবং সে ব্যক্তি তা অস্বীকার করতো না। কিন্তু মহান আল্লাহ যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে সত্য দীনসহ প্রেরণ করলেন, তখন তিনি জাহিলী যুগের প্রচলিত ঐসব বিবাহ পদ্ধতি বাতিল করে বর্তমানে প্রচলিত ইসলামী বিবাহ) পদ্ধতি বহাল করলেন।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২২৭২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Al-Baqarah 2:241
وَلِلْمُطَلَّقَٰتِ مَتَٰعٌۢ بِٱلْمَعْرُوفِۖ حَقًّا عَلَى ٱلْمُتَّقِينَ
আর তালাকপ্রাপ্তা নারীদের জন্য প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী খরচ দেয়া পরহেযগারদের উপর কর্তব্য।
# আল বাকারা ২ঃ২৩৬
لَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ اِنۡ طَلَّقۡتُمُ النِّسَآءَ مَا لَمۡ تَمَسُّوۡہُنَّ اَوۡ تَفۡرِضُوۡا لَہُنَّ فَرِیۡضَۃً ۚ ۖ وَّ مَتِّعُوۡہُنَّ ۚ عَلَی الۡمُوۡسِعِ قَدَرُہٗ وَ عَلَی الۡمُقۡتِرِ قَدَرُہٗ ۚ مَتَاعًۢا بِالۡمَعۡرُوۡفِ ۚ حَقًّا عَلَی الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۲۳۶﴾
যদি তোমরা স্পর্শ করার বা মোহর ধার্য করার পূর্বে স্ত্রীদের তালাক দাও, তবে কোন পাপ হবে না, কিন্তু তাদেরকে যথাসাধ্য উপযুক্ত (ক্ষতিপূরণ) খরচপত্র দিও, সংগতিসম্পন্ন ব্যক্তি তার সাধ্যমত এবং গরীব লোক তার সামর্থ্যানুযায়ী নিয়মমত (ক্ষতিপূরণ) খরচপত্র দানের ব্যবস্থা করবে। এটি সৎকর্মশীল লোকেদের পক্ষে (অবশ্য) কর্তব্য। [১]
[১] এ নির্দেশ এমন মহিলার জন্য, বিবাহের সময় যার দেনমোহর নির্ধারিত হয়নি এবং স্বামী সহবাসের পূর্বেই যাকে তালাক দিয়ে দিয়েছে, (বলা হচ্ছে,) তাকে কিছু না কিছু খরচপত্র (ক্ষতিপূরণস্বরূপ) দিয়ে বিদায় কর। এ খরচপত্র বা ক্ষতিপূরণ প্রত্যেক ব্যক্তির সামর্থ্য অনুযায়ী হওয়া উচিত। সচ্ছল ব্যক্তিরা তাদের সচ্ছলতা অনুযায়ী এবং অসচ্ছলরা তাদের সাধ্য মুতাবেক প্রদান করবে। সৎকর্মশীলদের পক্ষে এটা জরুরী কর্তব্য। আর খরচপত্র বা ক্ষতিপূরণের এই জিনিসকে নির্দিষ্টও করা হয়েছে। কেউ বলেছেন, একটি খাদেম। কেউ বলেছেন, ৫০০ দিরহাম। কেউ বলেছেন, এক বা একাধিক জোড়া কাপড় ইত্যাদি। তবে এ নির্দিষ্টীকরণ শরীয়ত কর্তৃক নয়। প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার সাধ্য অনুযায়ী দেওয়ার এখতিয়ার এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারেও মতভেদ রয়েছে যে, খরচপত্র বা ক্ষতিপূরণ প্রত্যেক প্রকার তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে দেওয়া জরুরী; কেবল সেই তালাকপ্রাপ্তা মহিলার জন্য নির্দিষ্ট নয়, যার কথা এই আয়াতে উল্লেখ হয়েছে। কুরআন কারীমের আরো অন্যান্য আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এটা প্রত্যেক প্রকার তালাকপ্রাপ্তা মহিলার জন্য। আর আল্লাহই ভালো জানেন। খরচপত্র বা ক্ষতিপূরণ স্বরূপ কিছু জিনিস দেওয়ার মধ্যে যে হিকমত, যৌক্তিকতা ও সুফল আছে তা বর্ণনার মুখাপেক্ষী নয়। তালাকের কারণ স্বরূপ তিক্ততা, মন কষাকষি এবং মতবিরোধের সময়ে মহিলার প্রতি অনুগ্রহ করা এবং তার হার্দিক প্রশান্তি ও আন্তরিক তুষ্টির প্রতি যত্ন নেওয়া ভবিষ্যতের সম্ভাব্য বিবাদের পথ রোধ করার জন্য বড়ই গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কিন্তু আমাদের সমাজে এই অনুগ্রহ ও উত্তম আচরণের পরিবর্তে তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে এমন নাজেহাল করে বিদায় করা হয় যে, উভয় পক্ষের পারস্পরিক সম্পর্ক চিরকালের জন্য বিদ্বেষপূর্ণ রয়ে যায়।
#আল বাকারা ২ঃ২৩৭
وَ اِنۡ طَلَّقۡتُمُوۡہُنَّ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تَمَسُّوۡہُنَّ وَ قَدۡ فَرَضۡتُمۡ لَہُنَّ فَرِیۡضَۃً فَنِصۡفُ مَا فَرَضۡتُمۡ اِلَّاۤ اَنۡ یَّعۡفُوۡنَ اَوۡ یَعۡفُوَا الَّذِیۡ بِیَدِہٖ عُقۡدَۃُ النِّکَاحِ ؕ وَ اَنۡ تَعۡفُوۡۤا اَقۡرَبُ لِلتَّقۡوٰی ؕ وَ لَا تَنۡسَوُا الۡفَضۡلَ بَیۡنَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ ﴿۲۳۷﴾
যদি স্পর্শ করার পূর্বে স্ত্রীদের তালাক দাও, অথচ মোহর পূর্বেই ধার্য করে থাক, তাহলে নির্দিষ্ট মোহরের অর্ধেক আদায় করতে হবে।[১] কিন্তু যদি স্ত্রী অথবা যার হাতে বিবাহ-বন্ধন[২] সে যদি মাফ করে দেয়, (তাহলে স্বতন্ত্র কথা।) অবশ্য তোমাদের মাফ করে দেওয়াই আত্মসংযমের নিকটতর। তোমরা নিজেদের মধ্যে সহানুভূতি (ও মর্যাদার) কথা বিস্মৃত হয়ো না। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।
[১] এখানে আর এক নিয়মের কথা বলা হচ্ছে, সহবাসের পূর্বে তালাক দিয়ে দিয়েছে, কিন্তু মোহর নির্ধারিত ছিল। এমতাবস্থায় স্বামীর জন্য জরুরী হল অর্ধেক মোহর আদায় করা। কিন্তু স্ত্রী যদি তার মোহরের অধিকার মাফ করে দেয়, তাহলে স্বামীকে কিছুই দিতে হবে না।
[২] এ থেকে স্বামীকে বুঝানো হয়েছে। কারণ, বিবাহের বন্ধন (অটুট রাখা না রাখার এখতিয়ার) তার হাতেই। সে অর্ধেক মোহর মাফ করে দেয়। অর্থাৎ, আদায়কৃত মোহর থেকে অর্ধেক মোহর ফিরিয়ে নেওয়ার পরিবর্তে নিজের এ অধিকার (অর্ধেক মোহর) মাফ করে দিয়ে সম্পূর্ণ মোহর স্ত্রীকে দিয়ে দেয়। এরপর পারস্পরিক সহানুভূতি ও অনুগ্রহের কথা বিস্মৃত না হওয়ার তাকীদ করে মোহরের অধিকারেও এই সহানুভূতি ও অনুগ্রহ প্রদর্শনের উপর অনুপ্রাণিত করা হয়েছে।
দ্রষ্টব্যঃ কেউ কেউ {بِيَدِهِ عُقْدَةُ النِّكَاحِ} (যার হাতে বিবাহ-বন্ধন) থেকে মহিলার অভিভাবককে বুঝিয়েছেন। অর্থাৎ, মহিলা নিজে মাফ করে দিক অথবা তার অভিভাবক মাফ করে দিক। কিন্তু এ অর্থ সঠিক নয়। কারণ, প্রথমতঃ অভিভাবকের হাতে বিবাহের বন্ধন নেই। দ্বিতীয়তঃ মোহর মহিলার নিজসব অধিকার ও তার ব্যক্তিগত সম্পদ, তাই এটা মাফ করার অধিকার অভিভাবকের নেই। সুতরাং পূর্বের অর্থই সঠিক। (ফাতহুল ক্বাদীর)
জরুরী বিশ্লেষণঃ তালাকপ্রাপ্তা মহিলারা চার ধরনের। (ক) যার মোহর নির্ধারিত, স্বামী তার সাথে সহবাসও করেছে, তাকে তার মোহরের সম্পূর্ণ অধিকার দেওয়া হবে। যেমন, ২২৯নং আয়াতে এর বর্ণনা রয়েছে। (খ) মোহরও নির্ধারিত নেই এবং তার সাথে সহবাসও করা হয়নি, তাকে কেবল কিছু খরচপত্র দেওয়া হবে। (গ) মোহর নির্ধারিত, কিন্তু সহবাস হয়নি, তাকে অর্ধেক মোহর দেওয়া জরুরী। (উভয়ের ব্যাখ্যা ২৩৬-২৩৭ নং আয়াতে বিদ্যমান।) (ঘ) মোহর নির্ধারিত নেই, কিন্তু সহবাস করা হয়েছে, তার জন্য রয়েছে মোহরে মিসল। অর্থাৎ, এই মহিলার সমাজে যে পরিমাণ মোহরের প্রচলন আছে অথবা তার মত মহিলাদের সাধারণতঃ যে পরিমাণ মোহর দেওয়া হয়, তাকেও সে পরিমাণ মোহর দিতে হবে। (নাইনুল আওত্বার ও আ'উনুল মা'বুদ)
🌏
و حدثني عن مالك أنه بلغه أن عمر بن عبد العزيز كتب في خلافته إلى بعض عماله أن كل ما اشترط المنكح من كان أبا أو غيره من حباء أو كرامة فهو للمرأة إن ابتغته ১৯২৫-قال مالك في المرأة ينكحها أبوها ويشترط في صداقها الحباء يحبى به إن ما كان من شرط يقع به النكاح فهو لابنته إن ابتغته وإن فارقها زوجها قبل أن يدخل بها فلزوجها شطر الحباء الذي وقع به النكاح.
মালিক (র)- থেকে বর্ণিতঃ:
উমার ইব্নু আবদুল আযীয (র) তাঁর খিলাফতকালে জনৈক কর্মকর্তার নিকট এই মর্মে পত্র লিখলেন যে, বিবাহ প্রদানকারী তিনি পিতা হোক বা অন্য কেউ স্বামীর নিকট হতে কোন প্রকার উপঢৌকন বা সম্মানীর শর্ত করে থাকলে স্ত্রী দাবী করলে সে তা পাবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) সেই মহিলা সম্পর্কে বলেন, যে মহিলাকে তার পিতা বিবাহ দিয়েছে এবং কন্যার মোহরানাতে কন্যার পিতা নিজের জন্য কিছু উপঢৌকনের শর্ত করেছে। তবে যেসব শর্তে বিবাহ সংঘটিত হয়েছে, সেই সব প্রাপ্য হবে কন্যার, যদি সে দাবি করে। আর যদি তার স্বামী সহবাসের পূর্বে তাকে তালাক দেয় তবে শর্তকৃত উপঢৌকন স্বামীকে পরিশোধ করতে হবে না।
মালিক (র) বলেন : যে ব্যক্তি তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক পুত্রকে বিবাহ দেয়, যে পুত্র কোন সম্পদের মালিক নয়। বিবাহ অনুষ্ঠানে যদি সে পুত্র সম্পদের মালিক না থাকে তবে মহর ওয়াজিব হবে তার পিতার উপর। আর যদি পুত্র সম্পদের মালিক থাকে তবে পিতা স্বয়ং মহর-এর দায়িত্ব গ্রহণ না করে থাকে তবে পুত্রের সম্পদ হতে মহর আদায় করতে হবে। কেননা পুত্র পিতার কর্তৃত্বাধীন থাকলে এবং পুত্র অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে এই বিবাহ পুত্রের জন্য অপরিহার্য হবে।
মালিক (র) বলেন : কোন ব্যক্তি সহবাসের পূর্বে তার কুমারী স্ত্রীকে তালাক দিল। কন্যার পিতা তার কন্যার অর্ধেক মহর মাফ করে দিল। কন্যার পিতা যে পরিমাণ মহর মাফ করে দিল সে পরিমাণ মহর না দেওয়া স্বামীর জন্য বৈধ হবে।
মালিক (র) বলেন, উপরিউক্ত মাস‘আলার দলীল এই যে, আল্লাহ তা’আলা কুরআনুল করীমে ইরশাদ করেছে, إِلَّا أَنْ يَعْفُوْنَ “যদি না স্ত্রী মাফ করে দেয়।” এতে ঐ সকল স্ত্রীলোকের কথা বলা হয়েছে যাদের সাথে তাদের স্বামীগণ সহবাস করেছে।
أَوْ يَعْفُوَ الَّذِي بِيَدِهِ عُقْدَةُ النِّكَاحِ.
“অথবা যার হাতে বিবাহ বন্ধন রয়েছে সে মাফ করে দেয়।” [১]
আয়াতে উল্লেখিত, “যার হাতে বিবাহ বন্ধন রয়েছে” দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, কুমারী কন্যার পিতা এবং ক্রীতদাসীর মালিক যাদের হাতে বিবাহ বন্ধনের অধিকার রয়েছে।”
মালিক (র) বলেন : এই বিষয়ে আমি এইরূপই শুনেছি এবং আমাদের মদীনাবাসীর আমলও অনুরূপ।
মালিক (র) বলেন, ইহুদী অথবা খ্রিস্টান মহিলা ইহুদী অথবা খ্রিস্টান স্বামীর বিবাহ বন্ধনে থাকলে এবং ইহুদী অথবা খ্রিস্টান মহিলা স্বামীর সহিত সহবাসের পূর্বে মুসলমান হলে তবে মহর তাদের প্রাপ্য হবে না।
মালিক (র) বলেন : দীনার-এর এক-চতুর্থাংশের কম পরিমাণ মহর-এর বিনিময়ে মহিলাকে বিবাহ দেওয়া আমি বৈধ মনে করি না। এই পরিমাণই হচ্ছে সর্বনিম্ন পরিমাণ যাতে চোরের হাত কাটা হয়।
ফুটনোটঃ
[১] পূর্ণ আয়াতটি এই, তোমরা যদি তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দাও অথচ মহর ধার্য করে থাক তবে যা তোমরা ধার্য করেছ তার অর্ধেক যদি না স্ত্রী অথবা যার হাতে বিবাহ বন্ধন রয়েছে সে মাফ করে দেয়; এবং মাফ দেওয়াই তাকওয়ার নিকটতর। তোমরা নিজেদের মধ্যে সদাশয়তার কথা বিস্মৃত হইও না। তোমরা যা কর আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।
মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হাদিস নং ১০৯৩
হাদিসের মান: অন্যান্য
🌏
و حدثني عن مالك أنه سمع ابن شهاب يقول إذا طلق الرجل امرأته ثلاثا وهو مريض فإنها ترثه ২১১৮-قال مالك وإن طلقها وهو مريض قبل أن يدخل بها فلها نصف الصداق ولها الميراث ولا عدة عليها وإن دخل بها ثم طلقها فلها المهر كله والميراث البكر والثيب في هذا عندنا سواء.
মালিক (র) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি ইবনু শিহাবকে বলতে শুনেছেন, কোন ব্যক্তি পীড়িতাবস্থায় স্ত্রীকে তিন তালাক দিলে তবে সে (স্বামীর) মীরাস পাবে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন : যদি কোন ব্যক্তি তার পীড়িত অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দেয় তার সাথে সংগত হওয়ার পূর্বে তবে সে স্ত্রী মহরের অর্ধেক পাবে এবং সে (স্বামীর) মীরাস পাবে, তার ইদ্দত পালন করতে হবে না। আর যদি সে স্ত্রীর সাথে সংগত হয়ে তারপর তালাক দেয় তবে সে পূর্ণ মহর এর হকদার হবে এবং মীরাসও পাবে।
মালিক (র) বলেন : কুমারী এবং অকুমারী এই ব্যাপারে আমাদের মতে সমান।

মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হাদিস নং ১১৮৩
হাদিসের মান: অন্যান্য

No comments

Note: Only a member of this blog may post a comment.

Powered by Blogger.