ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন (১ থেকে ৫)


ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন --১

লিখেছেনঃ সাব্বির আহমেদ সজীব

অনেকদিন থেকেই লিখবো ভাবছিলাম কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে লিখালিখিতে সময় দিতে পারছিনা তবুও অনেক ব্যস্ততার মাঝেও টুকটাক লিখবো বলে মন স্থির করলাম অনেক দিন থেকে বিবর্তনবাদ নিয়ে লিখে আসছি কিন্তু লিখাগুলোকে পূর্ণতা দিতে পারিনি তাই এইবার সৃষ্টিতত্ত্ব ও ডারউইনিজম নিয়ে একটা সম্পূর্ণ প্যাকেজ হিসেবে তুলে ধরবো যতটুকু পারি লিখাগুলোতে বিজ্ঞানের উপাত্ত ও লজিক্যাল কিছু বিষয় যোগ করবো যা আমাদের চিন্তার রসদ হিসেবে কাজ করবে

নাস্তিকরা সাধারণত বিজ্ঞানকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে তাই বিজ্ঞানের বিষয়গুলো থেকেই লজিক্যাল তথ্যগুলো উপস্থাপন করবো যা চিন্তার জগতকে বিস্তৃত করতে সাহায্য করবে কিন্তু সেইসব নাস্তিকদের উদ্দেশ্যে বলবো যারা স্রষ্টাকে ল্যাবে বা নিজের সামনে দেখতে চান তারা দূরে থাকুন আরেকটি বিষয় অনেকেই বলে থাকে কোন বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানে স্রষ্টাতত্ত্ব নিয়ে বলছে কিনা? বলেনা কেন? এইসব চিন্তা করেন তাদের বলবো বিজ্ঞানের কাজ হচ্ছে প্রকৃতি ও বস্তু নির্ভর শুধু তাই নয় বস্তুর গঠন যতই জটিল হোকনা কেন? বিজ্ঞান কখনই স্রষ্টার সৃষ্টি বলে মতবাদ দিবেননা কারণ বিজ্ঞানেও বস্তুবাদীতা অনুসরণ করা হয় এই বিষয়ে Dr Scott Todd বলেন:

"যদিও সমস্ত ডাটা পয়েন্ট একজন ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনারের পক্ষে, তথাপিও সেসব বিজ্ঞান থেকে বর্জনীয় কারণ ইহা ন্যাচারালিস্টিক নয়"

উপরোক্ত বক্তব্যটি স্পষ্ট হয়ে হয় নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের বক্তব্যে

তিনি বলেন: "জীববিজ্ঞানীদের অবশ্যই সর্বদা মনে রাখা উচিত যে, তারা যা দেখে, তা কোনো ডিজাইন ছিলোনা বরং ইল্ভভ হয়েছে"

এর বিষয়ের প্রমাণ পাওয়া যায় বিজ্ঞান দ্বারা ইন্টেলিজেন্স ডিজাইনকে ব্যান করার মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন দেশে ইন্টেলিজেন্স ডিজাইন সম্পর্কে পড়াশোনাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে এ থেকে বলা যায় ম্যাটারিয়লিজম ও এথিইজম ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে বিজ্ঞানের বেশে ও যুক্তিকেন্দ্রিক ছত্রছায়ায়

উপরোক্ত সামান্য আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট সৃষ্টি সমূহ যতই জটিল হোক না কেন, বিজ্ঞান বলবেনা এটা স্রষ্টা দ্বারা সৃষ্টি যার দুইটা কারণ উপরে আলোচিত হয়েছে: ১ বিজ্ঞান প্রকৃতি ও বস্তুর পরিক্ষা ও পর্যবেক্ষণ নির্ভর ব্যাখ্যা ২ স্রষ্টাতত্ত্ব বিজ্ঞান মহলে নিষিদ্ধ তাই আমার লিখাগুলোতে চেষ্টা থাকবে পাঠকদের(আস্তিক ও নাস্তিক) চিন্তা চেতনাকে বিজ্ঞানের উপাত্ত দ্বারা জাগ্রত করা আর এটাই প্রথম উদ্দেশ্য যারা নিজের ব্রেইনকে ভাড়া না দিয়ে স্বাধীনভাবে চিন্তা করবে তারা অবশ্যই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে ইন্টেলিজেন্স ডিজাইন নাকি ডারউইন ইভল্যুশন?


ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন--২

প্রাণ...

পৃথিবীতে প্রথম প্রাণ কিভাবে উৎপত্তি লাভ করে? প্রশ্নটার উত্তর বা সমাধান আজ অবধি বিজ্ঞানের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেনি বিজ্ঞান পাড়ায় এটা এক বিরাট রহস্য প্রাণ বলতে কি বুঝায় সেটা নিয়েও রয়েছে বিভিন্ন মতবাদ প্রাণ সৃষ্টি নিয়ে রয়েছে অনেক জল্পনাকল্পনা কয়েক যুগ আগেও বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন প্রাণ সৃষ্টির রহস্য জানা হয়ে গেছে কিন্তু তা হয়নি, যতই দিন যাচ্ছে ততই যেন রহস্যের গভীরে প্রবেশ করছে বিজ্ঞানীরা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন তাদের জ্ঞান কত সীমিত

কোরআনে আল্লাহ'তালা বলেন, "তারা বলে, আমাদের পার্থিব জীবনই তো শেষ; আমরা মরি ও বাঁচি মহাকালই আমাদেরকে ধ্বংস করেতাদের কাছে এ ব্যাপারে কোন জ্ঞান নেই তারা কেবল অনুমান করে কথা বলে"(সূরা জাসিয়া আয়াত ২৪) আল্লাহ'তালা অন্যত্র বলেন, (হে নবী) আপনি তাদেরকে বলু! রূহ আমার পালনকর্তার আদেশ ঘটিত একটি বিষয় এ বিষয়ে তোমাদেরকে খুব অল্প জ্ঞান দান করা হয়েছে” (সুরা বনী-ইসরাঈল আয়াত ৮৫) কোরআনের অনেক স্থানে মানুষকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে যে, সৃষ্টিজগত সম্পর্কে তাদের অল্প জ্ঞানই দেয়া হয়েছে

এই ক্ষুদ্র প্রাণ যদি এত জটিল হয় তাহলে চিন্তা করুন সমস্ত সৃষ্টি কতটা জটিল হতে পারে এখন দেখা যাক কয়েকটা মতবাদ সম্পর্কে যেখানে প্রাণ সৃষ্টি সম্পর্কে বলা হয়েছে প্রাণ সৃষ্টি সম্পর্কে দুইটা মতবাদ ব্যাপকভাবে প্রচলিত বহির্জাগতিক প্রাণ ২ অবায়োজেনেসিসের মাধ্যমে প্রাণ সৃষ্টি

কিছু কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন বহির্জগত থেকে আসা কোনো জৈব পদার্থ থেকে প্রাণের সূচনা হয়েছিলো ১৯৬৯ সালে উল্কাপিণ্ডের অ্যামিনো এসিড ও বিভিন্ন সময় জৈব পদার্থ আসা থেকে দাবী করেন যে, প্রাণ সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় জৈব পদার্থ উল্কাপিণ্ড বয়ে এনেছিলো কিন্তু আমরা যখন একটা সেক সম্পর্কে জানবো তখন এটা স্পষ্টই বুঝতে পারবো এমনিভাবে প্রাণ সৃষ্টির চিন্তা কতটা র‍্যাশনাল? এর আগে ১৯০৮ সালে দার্শনিক অ্যানেনিয়াস যে তত্ত্ব দিয়েছিলেন তার নাম ছিলো "প্যান্সপার্মিয়া তত্ত্ব" এই তত্ত্ব মতে 'প্রাণের বীজ' মহাকাশে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে পৃথিবীর বুকে আশ্রয় নিয়েছিলো ১৯৫০ সালে এসে বিজ্ঞানী ফ্রেড হয়েল একটি বিতর্কিত মতবাদ হাজির করেন উনার দাবী ছিলো "ইন্টারস্টেলার ক্লাউড" থেকে জন্ম হয়েছিলো প্রাণের

কিন্তু এইসব তত্ত্বের তেমন কোনো প্রমাণ নেই কারণ প্রাণকে যতটা সহজ মনে করা হয়েছিলো প্রাণ তারচেয়ে বহুগুণ বেশি জটিল কোনো প্রমাণ না থাকায় এইসব জল্পনাকল্পনা হিসেবে বাতিল করে দেয়া হয় এইভাবে চলতে থাকে প্রাণ নিয়ে গবেষণা ১৯৫২ সালে মিলার একটি পরিক্ষার মাধ্যমে কিছু অজৈব পদার্থ-পানি, হাইড্রোজেন, মিথেন ও অ্যামোনিয়ার মিশ্রণ থেকে কিছু সাধারণ অ্যামাইনো এসিডের মতো প্রাণের ভিত্তি প্রস্তর গড়ে তুলেন তবুও এটা ভুল প্রমাণিত হয় ও ধারণার পরিবর্তন হয় কিন্তু কিছু নাস্তিক এটাকে কেন্দ্র করে প্রাণ সৃষ্টির প্রমাণ করার চেষ্টা করে

আমার লিখাগুলোতে নাস্তিকরা অনেক প্রমাণ দেখাতে চেষ্টা করবে তাই ল্যাবরেটরি সম্পর্কে কিছু কথা বলে রাখা ভাল ল্যাবরেটরির পরিবেশ হচ্ছে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ যেমন, ২ টি রাসায়নিক দ্রবের মধ্যে বিক্রিয়া করতে তাদেরকে দ্রবীভূত করার প্রয়োজন পড়ে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বায়ুচাপ, তাপ, শব্দ কম্পন ও বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন পড়ে তাই প্রাকৃতিক পরিবেশ যদি নিয়ন্ত্রিত হয় তাহলে তার নিয়ন্ত্রণকারীও রয়েছে

প্রাণ সৃষ্টি সম্পর্কে গ্রাম ও স্মিথ বলেন, 'প্রাণের প্রথম ভিত্তি প্রস্তর নির্মিত হয় পানি ও মাটির মিশ্রণ বা কাদা সমৃদ্ধ কোনো স্থানে' এমন আরো কিছু মতবাদ রয়েছে যা শুধু কল্পনা

আবার ১৯৯৫ সালে মিশেল মেয়র যখন প্রথম ভিন্ন গ্রহের সন্ধান পেলেন তখন এই আবিষ্কার ভীষণভাবে নাড়াচাড়া দিয়ে উঠে বিজ্ঞান মহলে সেই মানব সভ্যতার শাশ্বত কৌতূহল-- মহাবিশ্বে আমরা কি একা? প্রাণের বিকাশ কি পৃথিবীতেই হয়েছিলো? নাকি পৃথিবীর বাইরেও প্রাণ রয়েছে? ইত্যাদি এরফলে বাইরে প্রাণ আসার প্রস্তাবনা জোড়ালো হয়েছে

এখন আপনি যদি কোনো নাস্তিককে প্রশ্ন করেন, প্রাণ কিভাবে সৃষ্টি? বেশিরভাগ নাস্তিক বলবে অ্যাবায়োজেনেসিসের কথা কেউ এড়িয়ে যাবে কেউ বলবে বহির্জাগতিক প্রাণের কথা যদিও নাস্তিকরা বলে তারা প্রমাণ ছাড়া কিছুই বিশ্বাস করেনা কিন্তু এই ক্ষেত্রে তারা কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যায়

বর্তমান বিজ্ঞান প্রাণ সম্পর্কে কি বলে দেখা যাক? বর্তমান বিজ্ঞান বলছে, "দ্যা কেমিক্যাল অরিজিন অফ লাইফ রিমেইনস এন আনসলভড মিসটারি" এবং কেমিক্যাল ইভল্যুশনের সবগুলো থিওরি ম্যাজর সমস্যার সম্মুখীন

বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানী মাসসিমো বলেন, "সত্যি বলতে আমাদের কাছে কোনো ক্লু নেই, কিভাবে প্রথম প্রাণ উৎপত্তি লাভ করেছিলো "

রাশিয়ান নাস্তিক বিজ্ঞানী কুনিন দৃঢ় বাক্যে বলেন, "অ্যাবায়োজেনেসিস এক গভীর রহস্য বা অস্পষ্টতা যা শুধু গবেষণাগারেই নয়, হাইপোথিটিক্যালিও"

রসায়নবিদ জেমস টোউর বলেন, "অ্যাবায়োজেনেসিস একটি অমীমাংসিত বিষয় শুধু তাইই নয় তিনি ডারউইনিজম সম্পর্কে হাইলি স্কেপ্টিক্যাল

সবচেয়ে মজার তথ্য হলো নাস্তিকদের ভাব গুরু ডকিন্স বলেন, "প্রাণ সৃষ্টিতে একজন ইন্টেলিজেন্স ডিজাইনার রয়েছেন যিনি প্রথম প্রাণ সৃষ্টি করেছেন" কিন্তু তিনি এলিয়েনকে সেই ডিজাইনার আখ্যায়িত করেছেন করার-ই কথা নাস্তিকরা অন্ধভাবে সব মেনে নেয় যদি তা স্রষ্টার বিপক্ষে যায়

উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টি এক বিরাট রহস্য যা বিজ্ঞান মহলেও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে কিন্তু তারপরেও এই আলোচনা থেকে উঠে এসেছে বিজ্ঞান কখনোই স্রষ্টাকে স্বীকার করেনি তারা বিভিন্ন মত ও কল্পনারস তৈরি করেছেন কিন্তু কোথাও স্রষ্টাকে স্বীকার করেননি তারা পৃথিবীর বাইরে, এলিয়েন ও বিভিন্ন সম্ভাবনার কথা বলেছেন কিন্তু স্রষ্টার অস্তিত্ব থাকতে পারে তেমনটি স্বীকার করেননি যার কারণ গত পর্বে আলোচনা করেছিলাম তাই নাস্তিকদের বলবো নিজের ব্রেইন ভাড়া না দিয়ে চিন্তা করুন চিন্তা করুন কোনটা সঠিক? ইন্টেলিজেন্স ডিজাইন নাকি ডারউইন ইভল্যুশন?




ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন --৩

বিবর্তনবাদী নাস্তিক ও বস্তুবাদীদের কাছে ডারউইনবাদ ও বিবর্তন একই কারণ তাদের কাছে ডারউইনবাদের মূল কন্সেপ্টের কোনো প্রমাণ নেই আসুন দেখা যাক ডারউইন ইভল্যুশন ও ইভল্যুশনের মূল পার্থক্য ও নাস্তিকদের দেয়া প্রমাণ--

বিবর্তন কী? ব্যাপক অর্থে যেকোনো ধারাবাহিক পরিবর্তনই বিবর্তন সেটা যেমন জীবজগতে হতে পারে তেমনি হতে পারে সভ্যতা-সংষ্কৃতির যেকোনো ক্ষেত্রে জীবজগতের মধ্যে সেই বিবর্তন হচ্ছে জীবদের মধ্যে ভেরাইটি তৈরি হওয়া কিন্তু ডারউইনবাদের মূল কন্সেপ্ট তা নয়

ডারউইনবাদ কী? অক্সফোর্ড কন্সাইজ সায়েন্স ডিকশনারি অনুযায়ী-- "বিবর্তন হলো সেই ধারণাবাহিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আদিম বা প্রাচীনতম জীবসমূহ হতে বর্তমান জীববৈচিত্রের উদ্ভব হয়েছে, যা তিনশো কোটি বছর ধরে চলছে অনুমান করা হয়"

তাহলে ডারউইনবাদ অনুসারে "তিনশো কোটি বছর থেকে কোনো এককোষী প্রাণী থেকে র‍্যান্ডম মিউটেশনের ও ন্যাচারাল সিলেকশনের মাধ্যমে বর্তমান জীববৈচিত্র উৎপত্তি লাভ করে" ডারউইনবাদ বিশ্লেষণ করলে তিনটি পৃথিক আইডিয়া পাওয়া যায়-- ১ র‍্যান্ডম মিউটেশন ২ ন্যাচারাল সিলেকশন ও ৩ কমন ডিসসেন্ট

ডারউইনবাদে তিনটি পৃথক আইডি থাকার জন্য অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে থাকেন কারণ তিনটা একই সাথে ভুল নয় তিনটা আলাদা আইডিয়া হওয়ায় প্রকৃতিতেই তা কিছুটা দৃশ্যমান যেমন ডারউইন ফিন্স পাখির ঠোটে দেখে উৎসাহিত হয়েছিলেন তাহলে ভুল কোথায়? সেটাই আলোচনার অন্যতম উদ্দেশ্য

র‍্যান্ডম মিউটেশনঃ মিউটেশন কী? সাধারণভাবে বললে মিউটেশন হচ্ছে জিনোমের পরিবর্তন আরেকটু বিস্তারিত বললে, কোষ বিভাজনের সময় ডিএনএও বিভাজিত হয় যাকে বলা হয় ডিএনএ অনুলিপন ডিএনএ অর্ধরক্ষণশীল নিয়মে বিভাজিত হয় এর ফলেও প্রজাতিতে কিছুটা ভেরাইটি তৈরি হয় ডিএনএ চারটি ক্ষার দিয়ে গঠিত -- অ্যাডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থায়ামিন ডিএনএ অনুলিপনের সময় মাঝে মধ্যেই ভুল হয় যার ফলে ডিএনএ সিকোয়েন্সে পরিবর্তন আসে এই ভুলকেই বলা হয় মিউটেশন কোনো ভুলই কখনো ভাল কিছু নিয়ে আসেনা যদি চমৎকার কিছু না ঘটে তেমনি মিউটেশনও জীবদেহের জন্য বেশিরভাগ সময় বড় ধরণের ক্ষতির কারণ হয় যা অনেক সময় জীবটির অক্কার কারণও হতে পারে আবার অনেক মিউটেশন আছে কোনো প্রভাব ফেলেনা কিছু মিউটেশন উপকারী হয় যা খুবই রেয়ার আবার এমনও হতে পারে সেই ভুল তার পরবর্তী জেনারেশনে প্রকাশ পেতে পারে এতে কিছু উপকারী মিউটেশন দেখিয়ে বস্তুবাদীরা বলে এটা ডারউইনবাদের প্রমাণ চিন্তা করুন এই বিশাল জীবজগৎ বিবর্তিত হয়েছে রেয়ার কিছু মিউটেশনের ফলে এই রেয়ার মিউটেশনের ফলে এককোষী ব্যাকটেরিয়া বহুকোষী হয়ে, চোখ, হাত, পা গজিয়ে আজকের এই জীববৈচিত্র! তাদের এই যুক্তি কতটা অমূলক তা কমন সেন্স দিয়ে চিন্তা করলেও স্পষ্টভাবে বুঝা সম্ভব উপরে আগেই দেখেছি ডিএনএ অনুলিপনের সময় ডিএনএ সিকোয়েন্সে কিছুটা পরিবর্তন আসে মানে ডিএনএ সিকোয়েন্স রিকম্বিনেশন হয় কিন্তু তা নতুন কোনো ফাংশনাল তথ্য যোগ করেনা যা থেকে ব্যাকটেরিয়া বহুকোষী হয়ে চোখ, হাত ও পা তৈরি হয়ে মাছ বা অন্য কোনো প্রাণীতে বিবর্তিত হবে এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ নেই যে, এককোষী থেকে বহুকোষী হয়েছে এইসব প্রশ্নে বস্তুবাদীরা কোটি কোটি বছরের সীমারেখা দাঁড় করিয়ে থাকে কিন্তু এই সময় ও রেয়ার মিউটেশন কি বায়োডাইভারসিটি ব্যাখ্যা করতে পারবে? পারবেনা একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা সহজেই বুঝা যায়-- ব্যাকটেরিয়া প্রতি ২০ বা ৩০ মিনিটস পর পর রিপ্রোডইউস করে থাকে ফলে তাদের মিউটেশন ঘটার সম্ভাবনাও অনেক বেশি বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট থেকে দেখা যায়-- ব্যাকটেরিয়া এন্টিবায়োটিক রিজিসট্যানস তৈরি করে ১ ইন ১০^১২ ও ১^২০ ব্যাকটেরিয়ার রয়েছে লার্জ পপুলেশন সাইজ ও রিপ্রোডইউস করা প্রচুর সুযোগ কিন্তু এটা যদি ম্যামলস ও মানুষের ক্ষেত্রে হিসেব করা হয় তাহলে বিবর্তনের জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবেনা কারণ আমরা ২০ বা ৩০ বছর পর রিপ্রোডিইউস করে থাকি ও আমাদের পপুলেশন সাইজও অনেক কম অতএব বিবর্তনের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবেনা মিউটেশনের মাধ্যমে একটা এন্টিবায়োটিক রিজিসট্যানস তৈরি হতে যদি এই অবস্থা হয় তাহলে ফাংশনাল অঙ্গ তৈরি হয়ে এই বিশাল জীববৈচিত্র্য বিবর্তিত হওয়াও অসম্ভব ব্যাপার বস্তুবাদীরা এন্টিবায়োটিকের মত দু'একটা উপকারী মিউটেশন দেখিয়ে বলে বিবর্তনবাদ প্রমাণিত হয়েছে যা কতটা অযুক্তিক! যদি দু'একটা উপকারী মিউটেশন দিয়ে বিবর্তনবাদ প্রমাণিত হয় তাহলে অসংখ্য ক্ষতিকর মিউটেশন দিয়েও বিবর্তনবাদ ভুল প্রমাণিত হয় কারণ নগণ্য মিউটেশন বায়োডাইভারসিটি ব্যাখ্যা দিতে পারেনা কয়েকটা স্টাডি থেকে দেখা যায়- মিউটেশনের ফলে ৬০০০ উপরে জেনেটিক্স ডিসঅর্ডার সৃষ্টি হয়েছে রয়েছে এপিজেনেটিক্স ও জিন রেগুলেটরি নেটওয়ার্ক সিস্টেম যা প্রমাণ করে সামন্য একটি মিউটেশনও জীবের জন্য বিশাল ক্ষতির কারণ হতে পারে একটি পয়েন্ট মিউটেশন সৃষ্টি করতে পারে মরণঘাতী ক্যান্সার সেখানে র‍্যান্ডম মিউটেশনের ফলে নতুন ফাংশন সৃষ্টি হওয়াও দুর্বোধ জটিল

ন্যাচারাল সিলেকশনঃ ন্যাচারাল সিলেকশন কী? ন্যাচারাল সিলেকশন বলতে বুঝায়-- পরিবর্তিত পরিবেশে যোগ্যতমরা টিকে থাকবে ও অযোগ্যরা বিলুপ্ত হবে এবং বেঁচে থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো পরবর্তী জেনারেশন প্রাপ্ত হবে এই প্রক্রিয়া যত সময় ধরেই চলতে থাকুক না কেন তা ব্যাকটেরিয়া থেকে মাছ বা অন্যকোনো পরিবর্তিত হবেনা কারণ তা ফাংশনাল কোনো অঙ্গ তৈরি বা নতুন তথ্য যোগ করেনা একটা উদাহরণ দেখা যাক- ডাইরিয়ায় আক্রান্ত রহিম মিয়া একটি এন্টিবায়োটিক খেলো এতে যেসব ব্যাকটেরিয়া ডাইরিয়ার জন্য দায়ী তাদের জন্য নতুন পরিবেশ সৃষ্টি হলো এই এন্টিবায়োটিকের বিষক্রিয়া সহ্য করার ক্ষমতা সকল ব্যাকটেরিয়ার জন্য সমান নয় কিছু ব্যাকটেরিয়া অল্প ডোজেই অক্কা পাবে কিছু এই এন্টিবায়োটিক ক্ষমতা অর্জন করবে বস্তুবাদীরা এইসব ব্যাকটেরিয়ার রিজিসট্যানস দিয়ে ডারউইনবাদ প্রমাণ দিয়ে থাকেন কিন্তু ব্যাকটেরিয়া এন্টিবায়োটিক রিজিসট্যানস তৈরি হওয়া মানে কখনোই অন্য প্রাণীতে বিবর্তিত হওয়া প্রমাণ করেনা কারণ ব্যাকটেরিয়া তার ডিএনএ রিকম্বিনেশন ও অন্য ব্যাকটেরিয়া থেকে ডিএনএ শেয়ারের মাধ্যমে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে যেখানে নতুন কোনো ফাংশনাল তথ্য যোগ করেনা তাই ব্যাকটেরিয়া থেকে অন্যকোন প্রাণীতে বিবর্তনও অসম্ভব

মিউটেশন ও ন্যাচারাল সিলেকশনের দুইটা প্রধান সমস্যা হলো- ১ যদি পপুলেশন সাইজ লার্জ হয় তবে একটি মিউটেশনের জন্য সময় হ্রাস করে কিন্তু ন্যাচারাল সিলেকশনের সময় বৃদ্ধি করে যদি পপুলেশন সাইজ ছোট হয় তবে, একটি মিউটেশনের সময় বৃদ্ধি করে কিন্তু ন্যাচারাল সিলেকশনের সময় হ্রাস করে সুতরাং ন্যাচারাল সিলেকশন ও মিউটেশন কখনোই বায়োডাইভারসিটি ব্যাখ্যা করতে পারেনা কারণ দুইই অপর্যাপ্ত আবার তাদের যতই সময় দেয়া হোক না কেন তারা কখনোই অন্য কোনো প্রাণীতে বিবর্তিত হবেনা এর কোনো প্রমাণ নেই

কমন ডিসসেন্টঃ বিগত উনিশ শতক ও বিশ শতকের শুরুর দিকে মনে করা হতো মিউটেশন ও ন্যাচারাল সিলেকশনে ভুল রয়েছে কিন্তু কমন ডিসসেন্ট সঠিক প্রমাণ হিসেবে দেখানো হতো ডিএনএ সিকোয়েন্সের ও বাহ্যিক সাদৃশ্য তৈরি করা হয় বিবর্তনবাদের গাছ কাকে কোন ডালে রাখা হবে সেটা নিয়ে চলে জোড় প্রচারণা যা তৈরি করা হয় ডিএনএ সিকোয়েন্স ও বাহ্যিক সাদৃশ্য দিয়ে কিন্তু সেখানেও থাকতো গোঁজামিল যেমন-- ফ্রুট ফ্লাইয়ের ৪৪%, কলা ৫০%, ইঁদুর ৯০% ও শিম্পাঞ্জির সিমিলারিটি ৯৮% তাহলে গাছের ডাল হওয়া উচিত -- ফ্রুট ফ্লাই- কলা- ইঁদুর- শিম্পাজি- মানুষ কিন্তু সেটা করা হয়নি শুধু তাই নয় নন- কোডিং ডিএনএ দিয়ে প্রচার শুরু হলো এইসব জাষ্ক ডিএনএ বিবর্তনের ধারায় রয়ে গেছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা ভুল বলে প্রমাণ হয় কারণ যাকে জাষ্ক ডিএনএ বলা হতো তা জাষ্ক ডিএনএ নয় বরং তার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কাজ তেমনি ডিএনএ সিকোয়েন্সের প্রমাণও ভুল প্রমাণিত হয় কারণ তখন মনে করা হতো জিন ওয়ান টু ওয়ান কাজ করে এবং একটা জিন একটা প্রোটিন কোড করে কিন্তু না সেটা ভুল একটা জিন একাধিক প্রোটিন কোড করতে পারে একই জিন একশো বা হাজারটা প্রোটিন তৈরি করতে পারে alternative splicing- এর মাধ্যমে আবার একটা প্রোটিন বিভিন্ন কাজ করতে পারে ও আলাদা ফাংশন তৈরি করতে পারে এবং অনেকগুলো প্রোটিন একসাথে একটা ফাংশন তৈরি করতে পারে এই জন্য একটা প্রাণীর গঠন এতটা সুনির্দিষ্ট, সূক্ষ্ম ও জটিল গঠনের হয়ে থাকে যার ফলে মিউটেশন বেশিরভাগ ক্ষতিকর হয় ঠিক তেমনি যদিও আমাদের ও শিম্পাঞ্জীর ডিএনএ সিমিলারিটি ৯৮% তথাপিও আমারা তাদের চেয়ে অনেক ভিন্ন কারণ তাদের চেয়ে আমাদের প্রোটিন ৮০% ডিফারেন্ট ডিএনএ প্রোটিন তৈরি করে প্রোটিনই জীবের সকল কাজ ও ফাংশন তৈরি করে তাই সিকোয়েন্স কখনোই বিবর্তনবাদ প্রমাণ করেনা

সর্বশেষে বলবো, তিনটা আলাদা আইডিয়ায় কোনো একটা প্রমাণ পাওয়া মানেই সম্পূর্ণ ডারউইনবাদ প্রমাণ হয় না প্রাণীর ভেরিয়েশন থাকা মানেই অন্ধ প্রক্রিয়ায় তৈরি হওয়া নয় কারণ স্রষ্টা প্রায় প্রতিটা প্রাণীতে দিয়েছেন রিপ্রোডাকশনের ক্ষমতা ভেরিয়েশন তৈরির ক্ষমতা দিয়েছেন জিনোম কিছুটা পরিবর্তনের ক্ষমতা ও এপিজেনেটিক ম্যাকানিজম যা কোনোই অন্ধ কোনো প্রক্রিয়ায় সম্ভব নয়, ব্যাকটেরিয়া থেকে মানুষের বিবর্তনও সম্ভব নয় নাস্তিকরা প্রমাণ ছাড়া বিশ্বাস করেনা কিন্তু বিবর্তনের প্রমাণ ব্যতীতই ইহা বিশ্বাস করে


ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন--৪


বিবর্তনবাদ ও বাস্তবতা...

আমাদের প্রকৃতির চারপাশে রয়েছে অবিশ্বাস্য বৈচিত্র্য ও সূক্ষ্ম জটিলতাপূর্ণ সৃষ্টিকর্ম প্রত্যেকটি জীবই সূক্ষ্ম ফাংশন ও গঠনের সৃষ্টি কোনো একটা প্রাণের একটা ফাংশন অনুপস্থিত থাকা, আংশিক বা অসম্পূর্ণ থাকা মানে প্রাণীটি ধ্বংস হওয়া ও বিপর্যস্ত হওয়া কিন্তু বিবর্তনবাদীরা এই মহা সত্যকে কোটি কোটি বছরের কল্পনারস মিশ্রিত করে সত্য বলে চালানোর সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যার বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা বলে কয়েকটা পয়েন্টে বিবর্তনবাদ ও এর বাস্তবতা নিয়ে আলোচনা করা যাক

সাইন্টিফিক রিসার্চ হিসট্রিতে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়না; non-living matter থেকে living organism সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু বিবর্তনবাদীরা এই অবৈজ্ঞানিক বিশ্বাসকে আঁকড়ে রয়েছে কারণ তাদের বিশ্বাস কোনো একসময় কোটি কোটি বছর ব্যবধানে তা সৃষ্টি হয়েছিলো যা নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি তা কোনো একটা অন্ধ প্রক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বাস করা অন্ধ বিশ্বাস ও অবৈজ্ঞানিক মতবাদ ছাড়া কিছুই না

এখন পর্যন্ত কোনো জীব তার চেয়ে আরো জেনেটিক্যালি কমপ্লেক্স কোনো জীব জন্ম দেয়নি বা এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি কিন্তু বিবর্তনবাদীদের ধারণা কোনো একসময় ইহা সম্ভব হয়েছিলো যদিও এখন পর্যন্ত জিনোমে নতুন কোনো ফাংশনাল তথ্য যোগ হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বরঞ্চ লস অফ ফাংশন পরিলক্ষিত হয়

সিঙ্গল সেল, মাল্টি সেল-এ বিবর্তিত হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত পর্যবেক্ষিত হয়নি কিন্তু বিবর্তনবাদীদের দাবী কোনো একসময় এমন ঘটনা ঘটেছিলো যা শুধুমাত্র অনুমান যার বাস্তবতা ভিন্ন

এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণী এমন কিছু উদ্ভব বা জন্ম দেয়নি যা তার চেয়ে ভিন্ন অর্গানিজমের বিবর্তনবাদীদের এটাও আরেকটি বিশ্বাস যা কোনো একসময় ঘটেছিলো যদিও সাইন্টিফিক হিসট্রিতে এমন কোনো প্রমাণ নেই বা পর্যবেক্ষণ লব্ধ কোনো উপাত্তই নেই বিবর্তনবাদীদের বিশ্বাস, কোটি কোটি বছরে গ্র‍্যাজুয়াল পরিবর্তনের মাধ্যমে লিজার্ড পরিবর্তিত হয়ে বার্ডে ও ফিস পরিবর্তিত হয়ে ম্যামল রূপ লাভ করেছে কিন্তু বর্তমানেও এইসকল প্রাণীগুলো অসংখ্য রয়েছে কিন্তু তাদের কেউই একটা থেকে অন্যটাতে পরিবর্তিত হচ্ছেনা, গ্র‍্যাজুয়ালি পরিবর্তিত হচ্ছে এমন কোনো প্রমাণও পরিলক্ষিত হয়নি তাহলে কি তাদের বিবর্তিত হওয়া বন্ধ হয়ে গেছে? বিবর্তনবাদ অনুযায়ী যোগ্যরা টিকে থাকবে এবং তারা অন্য প্রজাতিতে পরিবর্তিত হবে পূর্বের প্রাণীটি বিলুপ্ত হবে যদিও অনেকে বলে থাকে এটা সবক্ষেত্রে

প্রযোজ্য নয় কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কেন নয়? অন্যান্য অনেক প্রাণী বিবর্তিত হয়েও তাদের পূর্ববর্তী প্রজাতি টিকে রয়েছে সেক্ষেত্রে মানুষের অনেক পূর্বপুরুষ অল্পসময়ে কেন বিলুপ্ত হলো?

সাইন্টিফিক হিসট্রিতে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে, কোনো একটা পপুলেশনে কোনো একটা বেনিফিসিয়াল মিউটেশন লম্বা সময় ধরে কন্সট্যান্টলি ঘটছে যা উক্ত পপুলেশনকে অন্য কোনো পপুলেশনে পরিবর্তিত করে বিবর্তনের জন্য এইসব মিউটেশন অতীত ও বর্তমানেও বিলিয়ন বিলিয়ন ঘটতে হবে কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোনো অব্জার্ভাবল প্রমাণ পাওয়া যায়নি

শীতল-রক্ত বিশিষ্ট প্রাণীর জন্য এটা অসম্ভব যে, সে উষ্ণ-রক্ত বিশিষ্ট প্রাণী জন্ম দিবে কিন্তু বিবর্তনবাদীরা এটাও ফিশ টু ম্যামল ও লিজার্ড টু বার্ড থিওরি অনুযায়ী বিশ্বাস করে থাকে

এখন অবধি এমন কোনো দৃষ্টান্ত নেই যে, উদ্ভিদ, প্রাণী বা প্রাণী, উদ্ভিদে বিবর্তিত হয়েছে কিন্তু বিবর্তনবাদীদের অন্ধ বিশ্বাসে এটাই সম্ভব বলেই বিবেচিত হয়ে আছে

মাকড়সার প্রাপ্ত ফসিল রেকর্ডস ও বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত থেকে জানা যায়, মাকড়সা প্রায় প্রথম অবস্থা থেকে জাল তৈরি করতে পারতো তাহলে প্রশ্ন জাগে তারা এই কৌশল কিভাবে ও কার কাছ থেকে রপ্ত করেছিলো? এটা কি শুধুই বাই চান্স এর ফলে উদ্ভব ঘটেছিলো?

পরিশেষে, এমন অসংখ্য অন্ধ বিশ্বাসের সমষ্টি নিয়ে টিকে আছে বিবর্তনবাদ বস্তুবাদী ও নাস্তিকবাদের ভিত্তি হিসেবে প্রচার হচ্ছে দাঁড় করানো হচ্ছে স্রষ্টার সৃষ্টিতত্ত্বের বিপক্ষে, অবিশ্বাস্য এই সৃষ্টিজগতকে ঢেলে দেয়া হচ্ছে কাকতালীয়তার অন্ধকূপে কিন্তু তাদের এই অপচেষ্টা কখনই সফল হবেনা

আল্লাহ'তালা এইসব ধোঁকাবাজদের উদ্দেশ্যে কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেছেন: "ইউখা-দি'ঊনাল্লা-হা ওয়াল্লাযীনা আ-মানূ ওয়ামা-ইয়াখদা'ঊনা ইল্লাআনফুছাহুম ওয়ামাইয়াশ'উরূন"

অর্থাৎ-- "আল্লাহ ও মুমিনগণকে তারা ধোকা দিতে চায় কিন্ত তারা নিজেদেরকে নিজেরাই ধোঁকা দেয়,অথচ তারা তা বুঝতে পারে না"

ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন--৫

স্রষ্টার নিয়ন্ত্রিত সৃষ্টি ও র্যাডম সৃষ্টি

র্যাডম ও ইমপার্সোনাল চান্স কমপ্লেক্সিসিটি ও ডিজাইন সৃষ্টি করেনা-- স্যার ফ্রেড হয়েল

নাস্তিকদের মতে দৈবাৎ কিছু ঘটনার মধ্যে দিয়ে মহাবিশ্ব সৃষ্টি আরো কিছু দৈবাৎ ঘটনার সমষ্টিতে পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টি নাস্তিকরা কিন্তু বিজ্ঞানমনস্ক কিন্তু বেশিরভাগ নাস্তিক সঠিক বিজ্ঞান চর্চা করেনা কারণ বিজ্ঞান এই মহাবিশের খুব অল্পই জানতে পেরেছে শুধু তাইই নয় বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত প্রাণ সৃষ্টিরহস্যও ভেদ করতে পারেনি তাই বিজ্ঞান সবক্ষেত্রেই একজন স্রষ্টার অস্তিত্ব ও ডিজাইন সম্পর্কে মতামত দিয়ে থাকেন তাহলে নাস্তিকরা কিভাবে স্রষ্টার অস্তিত্ব অস্বীকার করে সেটা এখনো বোধগম্য হলোনা!!

ফ্রান্সিস বেকনের ভাষায়, "বিজ্ঞান সম্পর্কে অল্প জ্ঞান, মানুষকে করে তোলে নাস্তিক আর বিজ্ঞান সম্পর্কে অধিক জ্ঞান, মানুষকে করে তোলে সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী"

উইলিয়াম কেলভিনের মতে, "যদি তুমি বিজ্ঞান যথেষ্ট নিগূঢ় ও দীর্ঘকালব্যাপী অধ্যয়ন কর, ইহা তোমাকে স্রষ্টায় বিশ্বাসে চালিত করবে"

স্রষ্টার সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়নের সবচেয়ে উপযোগী পন্থা এতে মানুষের মনে বিশ্বাস বৃদ্ধি পায় স্রষ্টার মহত্ব, জ্ঞান-গরিমা ও হিকমত জানা যায়

আল্লাহ তা'আলা বলেন, "আল্লাহ যথার্থরূপে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এতে নিদর্শন রয়েছে ঈমানদার সম্প্রদায়ের জন্যে"(সূরা আনকাবুত-৪৪)

প্রাণ স্রষ্টার অন্যতম সৃষ্টি আজ অবধি প্রাণ সৃষ্টির রহস্যভেদ করা সম্ভব হয়নি শুধু তাইই নয় ক্ষুদ্র একটা কোষকেও সম্পূর্ণভাবে জানা সম্ভব হয়নি যার ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন দিয়ে একটা মানবসত্তা তৈরি কিন্তু বিজ্ঞানমনস্ক নাস্তিকরা স্রষ্টার সৃষ্টি নিয়ে চিন্তিত তবে কিভাবে তারা স্রষ্টার নিদর্শন উপলব্ধি করবে?

মানুষ স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আমাদের মাঝেই রয়েছে অসংখ্য নিদর্শন একটু চিন্তা করলেই স্রষ্টাকে উপলব্ধি করা সম্ভব উদাহরণ স্বরূপ, একটি পুং ও একটি স্ত্রী জননকোষের মিলনে তৈরি হয় জায়গট(zygote) যা কিছু জটিল প্রসেসিং ও পরে আরো কিছু জটিল প্রসেসিং-এর মাধ্যমে অল্প সময়ে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন সেল দিয়ে গঠিত হয় মানব শরীর সেই প্রথম সেলের ডিএনএ-তে স্টোর থাকে মানব শরীরের জন্য সমস্ত তথ্য যেখানে নির্ধারিত থাকে প্রত্যেক অঙ্গে সকল সেলের কার্যক্রম শুধু তাইই নয় ডিএনএ জানে কিভাবে certain প্রোটিন তৈরি করতে হবে আমরা কখনো কি ভেবেছি ডিএনএ এত বিশাল পরিমাণ তথ্য কোথায় পেলো? কিভাবে পেলো?

আবার আমরা জানি, একই ডিএনএ লিভার সেল, মাসল সেল, ব্রেইন সেল, নার্ভ সেল ও সেল অফ এপির্ডামিস ইত্যাদি ডেভেলপমেন্টের জন্য দায়ী যদিও এই সেলগুলো একটা থেকে অন্যটা অনেক ভিন্ন তাই পার্টিকিউলার স্টেজে কিছু জিন সুইচড অন ও কিছু জিন সুইচড অফ বা সাইলেন্ট থাকে এর ফলেই বিভিন্ন অর্গান একটা থেকে অন্যটা আলাদা হয় এখন চিন্তা করুন, যদি আমরা অ্যাক্সসিডেন্টলি নিউক্লিওটাইড পরিবর্তন করি যা লিভার সেলের জন্য অ্যাডাভটিভ, তাহলে সেগুলো ব্রেইন সেল ও হার্ট সেল বা অন্যান্য সেলে উপর কিরূপ প্রভাব ফেলবে? কারণ লিভার সেলের জন্য আলাদা কোনো ডিএনএ নেই, অন্যান্য সেল অপেক্ষা এখানে শুধু জিন এক্সপ্রেশনই আলাদা যদি আমরা মাসল সেলের জন্য ডিএনএ-এর উন্নতি করি তাহলে ইহা অন্যান্য অর্গানিজমেও প্রভাব পড়বে এবং নিঃসন্দেহে সিস্টেমটাকে এলোমেলো করে ফেলবে

দ্বিতীয়ত, আমরা জানি, এখানে জিন ডেভেলপমেন্ট একটা প্রোটিনের জন্য দায়ী নয় বরং হাজারো আলাদা আলাদা ফাংশনাল প্রোটিনের জন্য দায়ী সো মনে করি, আমার কিছু র্যাডম নিউক্লিওটাইড পরিবর্তন হয়েছে যা অ্যাডাভটিভ এবং একটি পার্টিকিউলার প্রোটিন ডেভেলপমেন্টের জন্য উপকারী তাহলে এই পরিবর্তন কি অন্যান্য প্রোটিনগুলো ধ্বংস করবেনা? অবশ্যই করবে, অন্যান্য প্রোটিনগুলো ভেঙ্গে পড়বে ফলে প্রাণীটির ধ্বংস বা বিভিন্ন ডিজিজস সৃষ্টি করবে

উপরোক্ত বিষয় থেকে এটা স্পষ্ট আমাদের সিস্টেম স্রষ্টা নিয়ন্ত্রিত কোনো বাই চান্স বা র্যাডমের ফলে সৃষ্টি নয়

No comments

Note: Only a member of this blog may post a comment.

Powered by Blogger.