জীবনের হিসাব / জাকারিয়া মাসুদ
চলুন, একটা হিসেব করা যাক। হিসেবটা তেমন জটিল নয়, বেশ সহজ। আমার মতো যারা গণিতে কাঁচা, তারাও খুব দ্রুত হিসেবটা বের করে ফেলতে পারবেন।
.
হিসেবটা বছরের। বলুন তো, জীবনের কতটা বছর আপনি একাডেমিক পড়াশোনোর পেছনে ব্যয় করেছেন?
.
একেবারে ক্লাস ওয়ান থেকে শুরু করলে, ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত ১৩ বছর৷ এরপর অনার্স লেভেল পার করতে হয় ৪-৫ বছর৷ ডাক্তারদের আরেকটু বেশি লাগে। ৬ বছর। কেউ যদি মাস্টার্স করতে চায়, তার ব্যয় করতে হবে আরও ১-২ বছর। ডাক্তারদের ৫ বছর৷ ধরে নিলাম, গড়পড়তায় ২০ বছর একাডেমিক পড়াশোনোর পেছনে ব্যয় হয়। তবে যারা পিএইচডি বা পোস্ট ডক. করেছেন, তাদের ব্যাপারটা আলাদা। তারা এর চেয়েও বেশি সময় একাডেমিক পড়াশোনোর পেছনে ব্যয় করেছেন।
.
সত্যিই, ভাবলেও অবাক লাগে! জীবনের ২০ টি বছর একাডেমিক পড়াশোনোর জন্যে ব্যয় হয়। এ সময়টাতে করতে হয় অবর্ননীয় কষ্ট। কাটাতে হয় নির্ঘুম রাত৷ ঝরাতে হয় ঘাম। শুনতে হয় টিচারদের বকুনি। সাথে মা-বাবার শাসন তো ফ্রি।
.
কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে ওঠে স্যারের বাসায় যাওয়া। সেখান থেকে দৌড়ে স্কুল/কলেজ এটেন্ড করা। বিকেলে আবার প্রাইভেট/কোচিং করা। রাতে হোমওয়ার্ক, পড়াশোনো, প্রাকটিক্যাল আরও কত কী। ভার্সিটি লাইফে তো এসাইনমেন্ট, ল্যাব, প্রেজেন্টেশান, থিসিস, প্রফেসরদের অপমান ইত্যাদিতেই বেলা পেরিয়ে যায়।
.
এভাবেই বিশটি বছর কেটেছে আপনার। এক পরীক্ষা দিয়ে একটু বিরতি পেতে না পেতেই, আরেকটি পরীক্ষা এসে হাতছানি দিয়ে ডেকেছে। মনভরে নিশ্বাসও নিতে পারেননি।
.
আচ্ছা, এত দীর্ঘ সময় আপনি কেন কষ্ট করেছেন?
.
ভালো ইনকামের জন্যে৷ ভালো একটা পজিসনের জন্যে। একটু ভালোভাবে চলার জন্যে৷ তাই তো?
.
আপনি কত বছর বাঁচবেন?
.
৬০ বছর? ৭০ বছর? ১০০ বছর?
.
ধরে নিলাম, আপনি এক শ বছর বাঁচবেন।
.
এখন বলুন, কত বছর ভালো থাকার জন্যে এই ২০ বছর কষ্ট করলেন?
.
উত্তটা খুবই সহজ। ৭৫ বছর। (জীবনকাল ১০০ বছর ধরে)
.
৭৫ বছর ভালো থাকার জন্যে দীর্ঘ বিশটি বছর কষ্ট করলেন। অনেক নির্ঘুম রাত কাটালেন। স্যার-ম্যামদের বকাবাদ্য শুনলেন। ঘাম ঝরিয়ে তীব্র গরমে পরীক্ষার প্রিপারেশান নিলেন। ভাইভায় টিচারদের চোখ রাঙানো সহ্য করলেন। ইচ্ছে না করলেও মা'র কথা শুনে পড়তে বসলেন। জীবনের বাদবাকি সময় একটু সুখে থাকার জন্যে---সবই নিরবে সয়ে নিলেন।
.
এবার বলুন তো, আখিরাতে আপনি কত বছর কাটাবেন?
.
এক শ বছর? দু শ বছর? ৩ কোটি বছর?
ঠিক কতটা সময় সেখানে থাকতে হবে?
.
অনন্ত অসীম সময় ধরে সেখানে থাকতে হবে। যে জীবনের শুরু আছে, কিন্তু শেষ নেই৷ গণিতের ভাষায় যাকে বলে ইনফিনিটি। সে ইনফিনিটি সময়ের জন্যে আপনি কত বছর কষ্ট করেছেন?
সত্যি করে বলুন তো---ঠিক কতটা বছর, সে আখিরাতের জন্যে ব্যয় করেছেন? কতটা নির্ঘুম রাত, সে আখিরাতের জন্যে অতিক্রম করেছেন? কতটুকু ঘাম, সে আখিরাতের জন্যে ঝরিয়েছেন? কতটা বকাঝকা, সে আখিরাতের জন্যে সয়েছেন?
.
আগেই বলেছি, আমি গণিতে দুর্বল৷ তাই এই হিসেবটা আপনাকেই বের করতে হবে৷
.
.
"মানুষের হিসেব গ্রহণের কাল ক্রমশ ঘনিয়ে আসছে, কিন্তু তারা গাফলতিতে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে।"(সূরা আল-আম্বিয়া : ১)
.
হিসেবটা বছরের। বলুন তো, জীবনের কতটা বছর আপনি একাডেমিক পড়াশোনোর পেছনে ব্যয় করেছেন?
.
একেবারে ক্লাস ওয়ান থেকে শুরু করলে, ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত ১৩ বছর৷ এরপর অনার্স লেভেল পার করতে হয় ৪-৫ বছর৷ ডাক্তারদের আরেকটু বেশি লাগে। ৬ বছর। কেউ যদি মাস্টার্স করতে চায়, তার ব্যয় করতে হবে আরও ১-২ বছর। ডাক্তারদের ৫ বছর৷ ধরে নিলাম, গড়পড়তায় ২০ বছর একাডেমিক পড়াশোনোর পেছনে ব্যয় হয়। তবে যারা পিএইচডি বা পোস্ট ডক. করেছেন, তাদের ব্যাপারটা আলাদা। তারা এর চেয়েও বেশি সময় একাডেমিক পড়াশোনোর পেছনে ব্যয় করেছেন।
.
সত্যিই, ভাবলেও অবাক লাগে! জীবনের ২০ টি বছর একাডেমিক পড়াশোনোর জন্যে ব্যয় হয়। এ সময়টাতে করতে হয় অবর্ননীয় কষ্ট। কাটাতে হয় নির্ঘুম রাত৷ ঝরাতে হয় ঘাম। শুনতে হয় টিচারদের বকুনি। সাথে মা-বাবার শাসন তো ফ্রি।
.
কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে ওঠে স্যারের বাসায় যাওয়া। সেখান থেকে দৌড়ে স্কুল/কলেজ এটেন্ড করা। বিকেলে আবার প্রাইভেট/কোচিং করা। রাতে হোমওয়ার্ক, পড়াশোনো, প্রাকটিক্যাল আরও কত কী। ভার্সিটি লাইফে তো এসাইনমেন্ট, ল্যাব, প্রেজেন্টেশান, থিসিস, প্রফেসরদের অপমান ইত্যাদিতেই বেলা পেরিয়ে যায়।
.
এভাবেই বিশটি বছর কেটেছে আপনার। এক পরীক্ষা দিয়ে একটু বিরতি পেতে না পেতেই, আরেকটি পরীক্ষা এসে হাতছানি দিয়ে ডেকেছে। মনভরে নিশ্বাসও নিতে পারেননি।
.
আচ্ছা, এত দীর্ঘ সময় আপনি কেন কষ্ট করেছেন?
.
ভালো ইনকামের জন্যে৷ ভালো একটা পজিসনের জন্যে। একটু ভালোভাবে চলার জন্যে৷ তাই তো?
.
আপনি কত বছর বাঁচবেন?
.
৬০ বছর? ৭০ বছর? ১০০ বছর?
.
ধরে নিলাম, আপনি এক শ বছর বাঁচবেন।
.
এখন বলুন, কত বছর ভালো থাকার জন্যে এই ২০ বছর কষ্ট করলেন?
.
উত্তটা খুবই সহজ। ৭৫ বছর। (জীবনকাল ১০০ বছর ধরে)
.
৭৫ বছর ভালো থাকার জন্যে দীর্ঘ বিশটি বছর কষ্ট করলেন। অনেক নির্ঘুম রাত কাটালেন। স্যার-ম্যামদের বকাবাদ্য শুনলেন। ঘাম ঝরিয়ে তীব্র গরমে পরীক্ষার প্রিপারেশান নিলেন। ভাইভায় টিচারদের চোখ রাঙানো সহ্য করলেন। ইচ্ছে না করলেও মা'র কথা শুনে পড়তে বসলেন। জীবনের বাদবাকি সময় একটু সুখে থাকার জন্যে---সবই নিরবে সয়ে নিলেন।
.
এবার বলুন তো, আখিরাতে আপনি কত বছর কাটাবেন?
.
এক শ বছর? দু শ বছর? ৩ কোটি বছর?
ঠিক কতটা সময় সেখানে থাকতে হবে?
.
অনন্ত অসীম সময় ধরে সেখানে থাকতে হবে। যে জীবনের শুরু আছে, কিন্তু শেষ নেই৷ গণিতের ভাষায় যাকে বলে ইনফিনিটি। সে ইনফিনিটি সময়ের জন্যে আপনি কত বছর কষ্ট করেছেন?
সত্যি করে বলুন তো---ঠিক কতটা বছর, সে আখিরাতের জন্যে ব্যয় করেছেন? কতটা নির্ঘুম রাত, সে আখিরাতের জন্যে অতিক্রম করেছেন? কতটুকু ঘাম, সে আখিরাতের জন্যে ঝরিয়েছেন? কতটা বকাঝকা, সে আখিরাতের জন্যে সয়েছেন?
.
আগেই বলেছি, আমি গণিতে দুর্বল৷ তাই এই হিসেবটা আপনাকেই বের করতে হবে৷
.
.
"মানুষের হিসেব গ্রহণের কাল ক্রমশ ঘনিয়ে আসছে, কিন্তু তারা গাফলতিতে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে।"(সূরা আল-আম্বিয়া : ১)
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.