পবিত্র সম্পর্ক (নবী মোহাম্মদ সা এবং হযরত জয়নাব রা বিয়ে)
পবিত্র সম্পর্ক (নবী মোহাম্মদ সা এবং হযরত জয়নাব রা বিয়ে)
লেখকঃ মোঃ নিয়ামত আলী
চরম সত্য হল নবী মোহাম্মদ (সা) এর পারিবারিক
থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সব কর্মই ছিল পবিত্র এবং মানবতার কল্যাণে । মনোযোগের
সাথে খেয়াল করেন যারা নবী মোহাম্মদ (সা) এর শত্রু (বর্তমান সময়ের) তারা সবচেয়ে
বেশি ধোঁকা দেয় রাসুলের ব্যক্তিগত জীবন সম্বন্ধে । পজিটিভ ব্যাপারকে নেগেটিভ করায় ওস্তাদ তারা । তথ্যকে বিকৃত করে উল্টা করে পেশ করে আপনাকে
দেখাবে যে দেখুন আপনাদের নবী এই, সেই, ঐ ইত্যাদি ।আজ তারই যুক্তি দিয়ে অপারেশন করা
হবে এবং সত্যিই সুস্থ এমন তাদের ঔষধ দিব । সঠিক প্রমানে ঔষধ দিব , যুক্তির ঔষধ দিব
কেননা যুক্তির ট্যাবলেট তাদের নাকি খুব হজম হয় !!!
নবী মোহাম্মদ (সা) সব বিয়েই ছিল পবিত্র আমরা
ইতিহাস থেকে জানি তাঁর সব স্ত্রীই তাঁকে ভালবাসতেন আর তিনিও । নাস্তিকরা নবী
মোহাম্মদ (সা) এর ব্যাপারে যেই অন্যতম আরেকটি আপত্তি তুলে জয়নাব (রা) এবং নবী
মোহাম্মদ (সা) এর বিয়ে । আপনাদের জন্য সুবিধার জন্য অর্থাৎ নাস্তিকরা কি টাইপের
আপত্তি করে সেটা যেন পরিস্কার হয়ে যায় এর জন্য নীচে একটি বাস্তব সংলাপ পেশ করলাম
যেটি ফেসবুকে এক নাস্তিকের সাথে আমার আলোচনা ।
-নবী তার ছেলের বউকে বিয়ে করেছিলেন আপনি
করবেন ?
-আচ্ছা নবীজি (সা) কি তাঁর আপন পুত্রের বউকে
বিয়ে করেছিল ? উত্তর হল না । আপনারা বিজ্ঞান মানেন তাই আমাকে বলুন “আপন ছেলে” এবং
“পালক পুত্র” কাকে বলে ? বিজ্ঞান কি বলে ? নাস্তিকরা অবাধ সেক্স তথা নিজের আপন বোন
ও মাএর সাথে নোংরাচার করতে জায়েজ ভাবে যদি সম্মতি থাকে ছিঃ আর আপনি আসছেন “স্ত্রী
বিবাহ” করা বিষয়ে !
- জি তার পালক ছেলে জায়েদ এর বউকে নবী বিয়ে
করেছিল । বউ এর নাম ছিল জয়নাব । আপনি কোন হুজুরের কাছ থেকে জেনে নিবেন ।
-আপনি কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর দেন নি ।
বিজ্ঞানে “আপন পুত্র” এবন “পালক পুত্র” কাকে বলে – এটি আমাকে বলুন । এই প্রশ্নের
জবাব জানলেই আশা করি আপনাদের আর কোন কথা থাকবে না ।
- আপন আর পালক বলে কথা না । আমি যদি আপনাকে
ছেলে ডাকি , আমি জীবনেও আপনার বউকে খারাপ নজরে দেখব না বিয়েতে তো দুরের কথা । ঐ
কাজ একজন অমানুষই পারে ।
- (মুচকি হাসি) আপন আর পালক পুত্রের মধ্যে
অবশ্যই তফাৎ আছে । বিজ্ঞান যদি মেনে থাকেন , এর ভাষায় DNA বাবার সাথে মেচ করলে
সেইই তার নিজ আপন পুত্র আর মেচ না করলে সন্তান না । এটা মানছেন না কেন ? আর
হাস্যকর কথা হল এখন পর্যন্ত যারা বিয়ে করেছে তাদের নজর কি খারাপ ? হাহাহাহাহ ।
আজীব দৃষ্টি ভঙ্গি আপনাদের ।
-যদি আপনি জেগে ঘুমান আপনার ঘুম ভাংবেনা ।
- এটা কিন্তু আমার প্রশ্নের জবাব হল না ভাই ।
কে ঘুমাচ্ছে আর কে ঘুমাচ্ছে না তা তো বুঝাই যাচ্ছে । আপনি প্রমাণ করতে পারছেন না
যে নবী মোহাম্মদ (সা) কোন আপত্তিকর কাজ করেছে । তিনি তো তালাক প্রাপ্তা এক মেয়েকে
বিয়ে করেছেন যার স্বামী তাঁকে তালাক দিয়েছে। এতে অমানবিকতার কি দেখলেন ? যেখানে
নাস্তিকরা ফ্রি সেক্স এ বিশ্বাস করে এমনকি অমানবিক নোংরা সমকামীতার বিশ্বাস করে
তারা আবার “তালাক প্রাপ্তা স্ত্রীকে” বিয়ে নিয়ে আপত্তি তুলেন , এখানে আপনাদের
মানবতা জেগে উঠে ! ডাবল স্ট্যান্ডdard করছেন । দাগ মে কুছ কালা হে জনাব ।
-কোরআন হাদিস পড়েন বুঝতে পারবেন । আচ্ছা আপনি
কি আপনার ভাতিজার বউকে বিয়ে করতে পারবেন , সত্য বলবেন ?
- হাহাহাহা আরে ভাই আগে মোহাম্মদ (সা) ও
জয়নাব (রা) এর বিষয়ে কথা শেষ করি তারপর আপনার নোংরা চিন্তার খণ্ডন করব । এখন
পর্যন্ত নবী মোহাম্মদ (সা) ও তাঁর স্ত্রী জয়নাব (রা) এর বিয়ে কেন আপত্তিকর এই
বিষয়ে যৌক্তিক ও বিজ্ঞানের আলোকে কোন সমাধান আপনি দিতে পারেনি ।
- নবী না সর্ব কালের সেরা আদর্শ ঐ তার নমুনা
?
-আমি আগেই বলেছিলাম আপনার সব প্রশ্নের জবাব
দিব এর জন্যই ত কথা বলছি কিন্তু আপনি বারবার কথা ঘুরাচ্ছেন । আপনি যাকে গালি
দিয়েছেন তাঁকে তো আপনার দেশের গুনি মানুষই কি বলেছে দেখুন । এখন কি তার বিরুদ্ধে
কথা বলবেন । আচ্ছা তার বিরুদ্ধে ২০০ টি ভিডিও তৈরি করে অ্যামেরিকার সরকারকে দেখান
, জার্মানির সরকারকে দেখান , কানাডার সরকারকে দেখান ।
SIR GEORGE BERNARD বলেনঃ মোহাম্মদের ধর্মের
প্রতি আমি সর্বদা সুউচ্চ ধরনা পোষণ করি । কারন এর চমৎকার প্রাণবন্ততা আমার কাছে
মনে হয় এটাই একমাত্র ধর্ম যেটা সদা পরিবর্তনশীল জীবন যাত্রার সাথে অঙ্গীভূত হওয়ার
ক্ষমতা রাখে যা প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে আবেদন রাখতে সক্ষম । আমি তাঁর সম্পর্কে
পড়াশোনা করেছি । চমৎকার একজন মানুষ এবং আমার মতে খ্রিস্থ-বিরোধী হওয়া সত্তেও তাঁকে
অবশ্যই মানবতার ত্রাণকর্তা বলতে হবে । আমি ভবিষ্যৎ বানী করছি যে মোহাম্মদের ধর্ম
বিশ্বাস আগামী দিনের ইউরোপের কাছে গ্রহন যোগ্য হবে যা ইতিমধ্যেই বর্তমান ইউরোপে
গ্রহন যোগ্যতা পেতে আরম্ব করেছে । (১)
(এরপরে এই বিষয়ে ঐ নাস্তিকের সাথে আমার আর
কথা হয়নি আর তেমন কোন যৌক্তিক জবাব বা প্রমাণ সে দিতেও পারেনি । একটি কথা খুব
মনোযোগ দিয়ে শুনুন নাস্তিকরা ওদের নোংরা চিন্তা কোরআন ও হাদিসের সাথে মিলিয়ে ফেলে
যা ওদের বড় একটি ধাপ্পাবাজি । আমাদের সতর্ক হতে হবে । পড়াশোনা করতে হবে বেশি বেশি)
আরেক দিন এই বিষয়ে আরেক নাস্তিকের সাথে ফেসবুকে আমার কথা হয় ।
-আচ্ছা ভাই নবী মোহাম্মদ (সা) এবং জয়নাব (রা)
ব্যাপারে তোমাদের তো খুব খাউজানি তো চুলজানি কোন বিষয়ে শুনি । আমাকে বোলো দেখি
কেমন যুক্তিবাদী তোমরা ।
-এ বিষয়ে পালক নেয়া একটি ভাল প্রথা ।এটা বাদ
গেলে কেবল একটি নারীর প্রেমে পরার জন্য এটা কি ঠিক ?
-নবী মোহাম্মদ (সা) জয়নাব (রা)এর প্রেমে
পরেছিল এই শব্দে একটি সহিহ হাদিস দেখাও ?
-আমি হাদিস পড়ি না । তবে প্রথা বাদ গেল কেন ?
এটা আমার জানার বিষয়
-হ্যাঁ নবী মোহাম্মদ (সা) তাঁকে বিয়ে করেছিল
। তো স্বামী স্ত্রী একে অন্যকে ভালবাসতেই পারে এতে অন্যায়য়ের কিছুই নেই । তবে
চ্যালেঞ্জ ইউ ব্র তুমি আমাকে এমন হাদিস দেখাতে পারবে না যে “মোহাম্মদ (সা) জয়নাব
(রা)এর প্রেমে পরেছিল”। আচ্ছা বাদ দেও, তোমার জন্য একটু সহজ করে দেই “বিয়ের আগে
প্রেমে পরেছিল” এটার প্রমাণ দেও ?
- এটা প্রমাণ করব পরে আপনি টপিকের ওপরে থাকেন
।
-তুমি যদি আমাকে তাবারি হতে দলীল দেও তাহলে
হবে না কারন তাবারিতে এ বিষয়ে জ্বাল হাদিস আছে যা গ্রহন যোগ্য না ।
-পালক পুত্র প্রথা বাদ পড়ল কেন –এটা বলেন
।পালক নেয়া প্রথাটা । আল্লাহ সবাইকে সন্তান দেন আবার সন্তান দেন না আবার অনেক এতিম
ছেলে মেয়ে পরে থাকে এতিম খানায় ।
-এইবার তুমি টপিকের বাইরে যাচ্ছ । হাহাহা ।
তুমি যেহেতু দাবি করেছ “মোহাম্মদ (সা) প্রেমে পরেছেন” তাই এই শব্দে একটি সহিহ
হাদিস পেশ না করলে তোমার দাবি মিথ্যা প্রমানিত হবে । আল্লাহ মানুষকে সন্তান দান
করেন নাকি করেন না এটা আজকের বিষয় না আর যেহেতু পালক পুত্র নিজের আপন পুত্র না তাই
এ প্রথা বাদ দেয়া হয়েছে । এখন তুমি তোমার দাবি প্রমানিত করো ।
-কেন হবে না, সারা বিশ্ব মানলে আপনার আল্লাহ
মানবে না কেন ? আর আমি দুইটি বিষয়েই দাবি উঠিয়েছিলাম প্রথম তাতে গুরুত্ব দেয়ার
দরকার ছিল ।
-মিথ্যা কথা বললে তুমি । পালক পুত্র আপন
পুত্র না । পিতার সাথে DNA মেচ করলেই কেবল আপন পুত্র হয় আর মেচ নাই তো আপন বাপ
হতেই পারে নাহ । বিজ্ঞান যেখানে এ কথা বলছে তখন তুমি নাস্তিক এই সত্য অস্বীকার করছ
কোন লজ্জায় ?
-কেন , পিতা ছাড়া আপনারা ইসা (আ) কে মানতে
পারেন অন্য কাউকে মানতে এত বাধা কেন ?
-“নবী মোহাম্মদ (সা) নারীর প্রেমে পরেছেন”
এখন পর্যন্ত যদিও প্রমাণ করতে পারো নি আর হজরত ইসা (আ) এর ব্যাপার সম্পূর্ণ আলাদা
। that is tha miracle ব্যাট জায়েদ (রা) এর বিষয় মিরাকল না । হজরত জায়েদ (রা) এর
বাবা ছিলেন । ইসা (আ) এর বিষয় আর এই বিষয় এক না । আলাদা ।
-কিভাবে আলাদা , পিতা ছাড়া যদি তার অস্তিত্ব
আনতে পারেন তবে পিতা ছাড়া রক্তের সম্পর্ক মানতে পারেন না ? আমি জয়নাবের বিষয়ে পরে
যাব ।
-সুন্দর প্রশ্ন । আগে তুমি বল ইসা (আ)
আল্লাহর কুদরতে সৃষ্টি হয়েছে এটি মানো ? আর কেন তুমি জয়নাবের (রা) এর ব্যাপার পরে
আসবে ।এখন আসলে কি তুমি প্রমাণ দিতে পারবে না ।
-আমি আল্লাহ্কেই মানি না আর ইসা নবী ।
- তারমানে তোমার প্রশ্ন তোমার কাছেই ইন্তেকাল
করেছে । মজার বিষয় হল “পিতা ছাড়া অস্তিত্ব মানা” এবং “পিতা ছাড়া রক্তের সম্পর্ক”
এই দুটি বিষয় আলাদা এবং একটির সাথে আরেকটির কোন মিল নাই । অযথা কুযুক্তি দিলে তুমি
। কারন কারো পিতা আছে কিন্তু এরপরেও সে জানে না কি পরিচয় তাকে বলা হয় জারজ তার
সাথে আত্মীয় হয় ব্যাট রক্তের সম্পর্ক হয় না ভাই ।
-কিভাবে মানবো ?
-তারআগে প্রমাণ করো “মোহাম্মদ (সা) নারীর
প্রেমে পরেছিল” – এ শব্দে হাদিস দেখাও
- কারো হল জয়নাবের প্রেমে পরেছিল বলেই এত
মানবিক প্রথাটা বিলুপ্তি করে দিয়েছে মোহাম্মদ
-প্রমাণ ছাড়া কথা কইলেই তো হবে না । তাছাড়া
তোমার এই দাবিও মিথ্যা । এই দাবি পক্ষে পারলে একটি সহিহ হাদিস দেখাও ?
-কোন হাদিস আর সহিহ নাই সব গলদ হয়ে গেছে
- এই দাবি পক্ষে প্রমাণ দেও আর বলত “হাদিসের
উসুল” কাকে বলে ?
-আপনি প্রমাণ দিন আগে যে হাদিস সহিহ হয়ে গেছে
-তুমি প্রমান পেশ করো
-সাহাবিরা কি এখন কেউ বেঁচে আছে । আপনি আগে
হাদিস সহিহ বলেছেন আমি না ।
-বিজ্ঞানী ডারইয়িন কি এখন বেঁচে আছে যে তার
বিবর্তনবাদ বিশ্বাস করো ? হাহাহা । তুমি যে কোন মাপের নাস্তিক তা আমার জানা হয়ে
গেছে । তোমার দাবীর পক্ষে কোন প্রমানি পেশ করতে পারনি আর হাদিসের উসুল কাকে বলে এর
উত্তরও দেও নি ।তুমি নিজেও জানো তুমি কথা ঘুরাচ্ছ ।
-আমি হাদিসের গুজব জিনিস পড়ব কেন ?
-তাইলে কিভাবে বুঝলা যে “মোহাম্মদ (সা) নারীর
প্রেমে পরেছিল ?
-আপনি কিভাবে এমনেই বুঝলেন, বিশ্বাস করলেন
হাদিস ভুল না ?
-(হেসে দিয়ে) কারন তুমি হাদিসের উসুল জানো না
তুমি মুর্খামি করছ ।
-হাদিস কি জিনিস যেটা জানতেই হবে ?
-বিবর্তনবাদ কি জিনিস যেটা জানতেই হবে ,
জ্ঞান কি জিনিস যেটা শিখতেই হবে –এর জবাব দেও ।
পাঠক বুঝতেই পারছেন এদের উদ্দেশ্য জানা না
।শুদু শুদু ফাউ তর্ক করা ।প্রেমে পরেছিল, ভাগিয়ে বিয়ে করেছিল , খারাপ নজরে দেখেছল
এই টাইপের যত দাবি তারা করে এই ক্ষেত্রে সবই ভুয়া এবং প্রমাণহীন । আশা করি এটাও
বুঝেছেন নবী মোহাম্মদ (সা) এবং জয়নাব (রা) এর ব্যাপারে এরা কি টাইপের ভুল ধারনা
রাখে বা প্রশ্ন করে । এখন আসুন নবী মোহাম্মদ (সা) ও জয়নাব (রা) বিয়ে ব্যাপারে
আলোচনা করি ।
*হযরত আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আবু
হুজাইফা (রা) ইবনু উতবাহ ইবনু রাবিয়া ইবনু শামস । যিনি বদরের যুদ্ধে রাসুল (সা) এর
সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন । তিনি সালিমকে পালকপুত্র হিসেবে গ্রহন করেন এবং তার সঙ্গে
তিনি তাঁর ভাতিজী ওয়ালিদ ইবনু উতবাহ ইবনু রাবিয়ার কন্যা হিন্দাকে বিয়ে দেন । সে
ছিল এক আনসারি মহিলার আজাদকৃত দাস যেমন জায়েদকে নবী (সা) পালক পুত্র হিসেবে গ্রহন
করেছিলেন । জাহিলি যুগের রিতি ছিল যে, কেউ যদি অন্য কোন বেক্তিকে পালক পুত্র হিসেবে
গ্রহন করত, তবে লোকেরা তাকে ঐ বেক্তির পুত্র হিসেবে ডাকত এবং মৃত্যুর পর ঐ বেক্তির
উত্তরাধিকারী হত । যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ পাক এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ অর্থাৎ
তাদেরকে (পালক পুত্রদেরকে) তাদের জন্মদাতা পিতার নামে ডাকো...তারা তোমাদের মুক্ত
করা গোলাম । (সুরা আহযাব-৫) । এরপর থেকে তাদেরকে পিতার নামেই শুদু ডাকা হত ।যদি তাদের
পিতা সম্পর্কে জানা না যেত , তাহলে তাকে মাওলা বা
দীনি ভাই হিসেবে ডাকা হত । তারপর (আবু হুজাইফা
ইবনু উতবাহ (রা) এর স্ত্রী) সাহ্লা বিনতে সুহায়ল ইবনু আমর আল কুরাইশি আল
আমিরা নবী (সা)এর কাছে এসে বলল “হে আল্লাহর রাসুল! আমরা সালিমকে পুত্র হিসেবে মনে
করতাম অথচ এখন আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা তো আপনিই ভাল জানেন ।এরপর তিনি পুরো
হাদিস বর্ণনা করলেন । (২)
*রাসুল (সা) সর্ব প্রথম জায়েদ (রা) পয়গাম
নিয়ে জয়নাব বিনতে জাহশ (রা) এর কাছে হাজির হন । প্রথমে আপত্তি করলেও পরে মেনে নেন
। (৩)
* যখন পালক পুত্রের প্রথা বাতিল হয়ে যায় ।
পরিবর্তীতে রাসুল (সা) জায়েদ (রা) কে নিজের পুত্র হিসেবে সম্বোধন করেননি বরং
বলেছিলেন তুমি আমার ভাই এবং বন্ধু । (৪)
*হযরত জায়েদ (রা) ও জয়নাব (রা) এর মধ্যে
মনমালিন্য দেখা দেয় ।পরে জায়েদ (রা) রাসুলের কাছে বারবার জয়নাবকে তালাক দেবার
ইচ্ছা বেক্ত করেন । রাসুল (সা) বিয়ে ভাঙ্গে নিষেধ করেন এবং বলেন তোমার স্ত্রীকে
তোমার কাছেই থাকতে দেও এবং আল্লাহ্কে ভয় করো । (৫)
* আল্লাহ বলেনঃ আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন,
আপনিও তাকে অনুগ্রহ করেছেন ।তাকে যখন আপনি বলেছিলেন,তমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই
থাকতে দেও এবং আল্লাহকে ভয় করো , আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন রাখছিলেন যা আল্লাহ
পাক প্রকাশ করে দিবেন আপনি লোক নিন্দার ভয় করছিলেন অথচ আল্লাহ্কেই অধিক ভয় করা
উচিত ।অতপর জায়েদ যখন জয়নাবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে আপনার সাথে
বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্য পুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক
ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে । (৬)
*হজরত জয়নাব (রা) নবী সহধর্মিণীর কাছে এই বলে
গৌরব করতেন যে, তোমাদেরকে বিবাহ দিয়েছে তোমাদের পরিবার পরিজন আর আমাকে স্বয়ং
আল্লাহ তা”লা সাত আসমানের ওপরে বিয়ে দিয়েছেন।(৭)
উপরের তথ্যের আলোকে আমরা যেই দাবি উত্থাপন
করতে পারি তা হলঃ
১/ আরবে আগে নিজের পালক পুত্রকে আপন পুত্র
ভাবত যা ভুল ছিল । সেই ভুল ঠিক করার জন্য আল্লাহ আয়াতের মাধ্যমে সেটা সংশোধন করে
দেন । এমনকি রাসুল (সা) এর মাধ্যমে
সেটা বাস্তবে প্রমাণ করে দিয়েছেন যেন সমাজে প্রভাব বেশি পরে ।তাছাড়া বিজ্ঞান
আমাদের বলে, পালক পুত্র নিজের পুত্র না তাই নবী মোহাম্মদ (সা) তাঁর ছেলের বউকে
বিয়ে করেছেন এ কথা মিথ্যা আর যদি না মানেন তাইলে বিজ্ঞান দিয়ে প্রমাণ করুন কিভাবে
অন্নের ছেলে নিজের আপন ছেলে হয় ??
২/ ইবন ইসহাক, আল ওয়াকেদি,ইবন সাদ এবং ইবনে
জারির আত তাবারি থেকে সে হাদিস গুলা দ্বারা নাস্তিকরা নোংরামি করে সে হাদিস গুলা
জঈফ তথা দুর্বল ।তাই দুর্বল হাদিস দিয়ে দাবি করলে সেটা গ্রহন যোগ্য না ।
৩/ পালক পুত্রের প্রথা আগে থাকলেও পরে তা
সম্পূর্ণ নিষেধ করে দেয়া হয় ।
৪/ জায়েদ (রা) নিজেই জয়নাব (রা) কে তালাক দেন
। আর যেহেতু তালাক দেন তাই জয়নাব (রা) আর জায়েদ (রা) এর স্ত্রী থাকেন না ।
পক্ষান্তরে নবী মোহাম্মদ (সা) যে পরে জয়নাব (রা) কে বিয়ে করেন এ ব্যাপারে জায়েদ
(রা) এর কোন আপত্তি নেই কারন তখন সে আর তাঁর স্ত্রী না ।
৫/ ইদ্দত শেষে, আল্লাহর হুকুমে রাসুল (সা)
জয়নাব (রা) কে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে হয় । স্বামী স্ত্রী
একটি সুন্দর পবিত্র সম্পর্ক ।
৬/ কোরানের এই আয়াত “অন্তরে যে বিষয় গোপন
করেছিলেন” – এই আয়াত নিয়েও তারা মিথ্যাচার মূলক অপবাদ দেয় অথচ এ আয়াত দ্বারা
বুঝানো হয়েছে জয়নাব (রা) যে রাসুল (সা) এর স্ত্রী হবেন এ কথা বহু আগেই আল্লাহ তাকে
অবগত করেছিলেন কিন্তু রাসুল (সা) এ কথা প্রকাশ করেননি বরং তিনি জায়েদ (রা) কে
স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে বলেছিলেন ।তাই আল্লাহ এ আয়াত দ্বারা বুঝালেন
রাসুল যতই গোপন রাখুক না কেন আল্লাহ তা প্রকাশ করে দিবেন । (৮)
প্রমাণ হয়ে গেল আসল ঘটনা । প্রমাণ সহ যুক্তি
সহ সব বলার পরেও যদি তাদের মানতে কষ্ট হয় তাহলে ওমুকদের জন্য আমাদের আন্তরিক শোঁক
প্রকাশ ।
রেফারেন্সঃ
১/ THE GENUINE ISLAM, VOL= 1, NO-8 , 1936
২/ সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫০৮৮। ihadis.com
৩/ তাফসীরে ইবনে কাসির। খণ্ড =১৫, পৃষ্ঠা-৮০৫।
৪/ তাফসীরে ইবনে কাসির। খণ্ড=১৫ ,
প্রিস্থা-৭৩৮।
৫/ সিরাতে মস্তফা, মাও ইদ্রিস কান্ধলবি (রহ),
পৃষ্ঠা-৭২৮।
৬/ সুরা আহযাব আয়াত ৩৭
৭/ ইঃফা , সহিহ বুখারি , খণ্ড= ১০,
পৃষ্ঠা-৫৫৬,৫৫৭, হাদিস নন-৬৯১৫ ।
৮/ মুসনাদে আবু হাতিম গ্রন্থ দেখুন ।
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.