হাদিস অনুসারে কি সৃষ্টিজগৎ পৃথিবীর চব্বিশ ঘণ্টার ছয়দিনে সৃষ্টি হয়েছে??
হাদিস অনুসারে কি সৃষ্টিজগৎ পৃথিবীর চব্বিশ ঘণ্টার ছয়দিনে সৃষ্টি হয়েছে??
লিখেছেনঃ আহমেদ আলী
.
.
"সুরায়জ ইবনু ইউনুস ও হারূন ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত ধরে বললেন, আল্লাহ তা’আলা শনিবার দিন মাটি সৃষ্টি করেন এবং এতে পর্বত সৃষ্টি করেন রবিবার দিন। সোমবার দিন তিনি বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করেন। মঙ্গলবার দিন তিনি বিপদাপদ সৃষ্টি করেন। তিনি নূর সৃষ্টি করেন বুধবার দিন। তিনি বৃহস্পতিবার দিন পৃথিবীতে পশু-পাখি ছড়িয়ে দেন এবং জুমুআর দিন আসরের পর জুমুআর দিনের শেষ মুহূর্তে অর্থাৎ আসর থেকে নিয়ে রাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে সর্বশেষ মাখলুক আদাম (আঃ) কে সৃষ্টি করেন।"
.
[সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৫২। কিয়ামাত, জান্নাত ও জান্নামের বর্ণনা (كتاب صفة القيامة والجنة والنار)
হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৭
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) http://www.hadithbd.com/share.php?hid=54045]
.
.
ইসলামবিদ্বেষীরা এই হাদিস দেখিয়ে আজকাল দাবি করছে যে, কোরআনে যে ছয়টি দিবসের কথা বলা হচ্ছে, সেটা নাকি চব্বিশ ঘণ্টার সময়কালের!
.
প্রথম কথা, অনেক আলিমদের মতেই পৃথিবী আগে সৃষ্টি হয়েছে। আপনি হয়ত empirical evidence এর ওপর নির্ভর করছেন, আর সেটা অনুযায়ী এটা কেবল ধারণা বা অনুমান যে, যেহেতু বিগ ব্যাং এর পর পৃথিবীর অস্তিত্ব এসেছে বলে ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে এবং এর বাইরে বিজ্ঞান কোনো প্রমাণ পাচ্ছে না, তাই ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, পৃথিবী পরে সৃষ্টি হয়েছে। এখানে আমরা আপনাকে বলব, মাত্র একজন ব্যক্তিকে দেখান, যে সৃষ্টির সময় উপস্থিত ছিল আর নিজের চোখে দেখেছে কোনটা আগে সৃষ্টি হয়েছে!
.
কোরআন এর দৃষ্টিভঙ্গি এখানে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবী যে অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে, সেটা বর্তমানের আকারের পৃথিবীর মত না। এটার অবিস্তৃত অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে।
.
প্রথম চার দিন হাদিস অনুসারে ছিল - শনি, রবি, সোম এবং মঙ্গল। শনিবার মাটি, রবিবার পর্বত, সোমবার দিন বৃক্ষ এবং মঙ্গলবার বিপদাপদ সৃষ্টি হয়।
.
এখন কোরআন বলছে,
.
"বল, তোমরা কি তাঁকে অস্বীকার করবেই যিনি দু’দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর সমকক্ষ দাঁড় করাবে? তিনি তো বিশ্বজগতের প্রতিপালক।" (আল-কোরআন, ৪১:৯)
.
.
হাদিসে বলা হয়েছিল, শনিবার মাটি ও রবিবার পর্বত তৈরি হয়েছে। আর কোরআন অনুসারে এই দুই দিনেই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ এখানে মাটি আর পর্বত সেই পৃথিবী সৃষ্টির দুই দিনেরই অন্তর্ভুক্ত। এখন এই সৃষ্টিটা কেমন ছিল? এটা ছিল অবিস্তৃত অবস্থায়।
.
এ সম্পর্কে বলা হচ্ছে,
.
"সুরায়জ ইবনু ইউনুস ও হারূন ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত ধরে বললেন, আল্লাহ তা’আলা শনিবার দিন মাটি সৃষ্টি করেন এবং এতে পর্বত সৃষ্টি করেন রবিবার দিন। সোমবার দিন তিনি বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করেন। মঙ্গলবার দিন তিনি বিপদাপদ সৃষ্টি করেন। তিনি নূর সৃষ্টি করেন বুধবার দিন। তিনি বৃহস্পতিবার দিন পৃথিবীতে পশু-পাখি ছড়িয়ে দেন এবং জুমুআর দিন আসরের পর জুমুআর দিনের শেষ মুহূর্তে অর্থাৎ আসর থেকে নিয়ে রাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে সর্বশেষ মাখলুক আদাম (আঃ) কে সৃষ্টি করেন।"
.
[সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৫২। কিয়ামাত, জান্নাত ও জান্নামের বর্ণনা (كتاب صفة القيامة والجنة والنار)
হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৭
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) http://www.hadithbd.com/share.php?hid=54045]
.
.
ইসলামবিদ্বেষীরা এই হাদিস দেখিয়ে আজকাল দাবি করছে যে, কোরআনে যে ছয়টি দিবসের কথা বলা হচ্ছে, সেটা নাকি চব্বিশ ঘণ্টার সময়কালের!
.
প্রথম কথা, অনেক আলিমদের মতেই পৃথিবী আগে সৃষ্টি হয়েছে। আপনি হয়ত empirical evidence এর ওপর নির্ভর করছেন, আর সেটা অনুযায়ী এটা কেবল ধারণা বা অনুমান যে, যেহেতু বিগ ব্যাং এর পর পৃথিবীর অস্তিত্ব এসেছে বলে ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে এবং এর বাইরে বিজ্ঞান কোনো প্রমাণ পাচ্ছে না, তাই ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, পৃথিবী পরে সৃষ্টি হয়েছে। এখানে আমরা আপনাকে বলব, মাত্র একজন ব্যক্তিকে দেখান, যে সৃষ্টির সময় উপস্থিত ছিল আর নিজের চোখে দেখেছে কোনটা আগে সৃষ্টি হয়েছে!
.
কোরআন এর দৃষ্টিভঙ্গি এখানে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবী যে অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে, সেটা বর্তমানের আকারের পৃথিবীর মত না। এটার অবিস্তৃত অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে।
.
প্রথম চার দিন হাদিস অনুসারে ছিল - শনি, রবি, সোম এবং মঙ্গল। শনিবার মাটি, রবিবার পর্বত, সোমবার দিন বৃক্ষ এবং মঙ্গলবার বিপদাপদ সৃষ্টি হয়।
.
এখন কোরআন বলছে,
.
"বল, তোমরা কি তাঁকে অস্বীকার করবেই যিনি দু’দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর সমকক্ষ দাঁড় করাবে? তিনি তো বিশ্বজগতের প্রতিপালক।" (আল-কোরআন, ৪১:৯)
.
.
হাদিসে বলা হয়েছিল, শনিবার মাটি ও রবিবার পর্বত তৈরি হয়েছে। আর কোরআন অনুসারে এই দুই দিনেই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ এখানে মাটি আর পর্বত সেই পৃথিবী সৃষ্টির দুই দিনেরই অন্তর্ভুক্ত। এখন এই সৃষ্টিটা কেমন ছিল? এটা ছিল অবিস্তৃত অবস্থায়।
.
এ সম্পর্কে বলা হচ্ছে,
أَوَلَمْ يَرَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ أَنَّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَٰهُمَاۖ وَجَعَلْنَا مِنَ ٱلْمَآءِ كُلَّ شَىْءٍ حَىٍّۖ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ
.
"যারা কুফরী করে তারা কি ভেবে দেখেনা যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী মিশে ছিল ওতপ্রোতভাবে; অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং প্রাণবান সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলাম পানি হতে; তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না?" (আল-কোরআন, ২১:৩০)
.
ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর ব্যাখ্যানুসারে,
.
"...সৃষ্টি করা এক জিনিস এবং دَحَى যার মূল হল, دَحْوٌ (বিস্তৃত করা বা বিছানো) আর এক জিনিস। অর্থাৎ, পৃথিবী সৃষ্টি আসমানের পূর্বে হয়েছে। যেমন, এখানেও বলা হয়েছে এবং دَحْوٌ অর্থাৎ, পৃথিবীকে বসবাসের যোগ্য বানানোর জন্য এর মধ্যে পানির ভান্ডার রাখা হয়, তাকে প্রয়োজনীয় জিনিস উৎপাদনের ক্ষেত্র বানানো হয়। ﴿اَخْرَجَ مِنْهَا مَآءَهَا وَمَرْعَاهَا﴾ এতে পাহাড়, নদ-নদী এবং নানা প্রকার ধাতু ও খনিজ পদার্থ রাখা হয়। এ সব কাজ সুসম্পন্ন হয় আকাশ সৃষ্টির পর অন্য দুই দিনে। এইভাবে পৃথিবী ও তার সংশ্লিষ্ট সমস্ত জিনিসের সৃষ্টি চার দিনে পরিপূর্ণ হয়।" [তাফসিরে আহসানুল বয়ান/আল-কোরআন, ৪১:৯ আয়াতের তাফসিরে হতে বিবৃত]
.
.
অর্থাৎ দুই দিনে পৃথিবী সৃষ্টি হয়, সেটা মহাবিশ্বের অন্যান্য সবকিছুর সাথে এক হয়ে থাকে one unit হিসেবে যাকে এখন আমরা বলি super atom এবং এরপর big bang এর মাধ্যমে তা পৃথক হয় এবং ক্রমাগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মোট চার দিনে পৃথিবীর একটি মোটামুটি পরিণত অবস্থা তৈরি হয়। আল্লাহ বলেন,
.
وَجَعَلَ فِيهَا رَوَٰسِىَ مِن فَوْقِهَا وَبَٰرَكَ فِيهَا وَقَدَّرَ فِيهَآ أَقْوَٰتَهَا فِىٓ أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ سَوَآءً لِّلسَّآئِلِينَ
.
"তিনি স্থাপন করেছেন অটল পর্বতমালা ভূপৃষ্ঠে এবং তাতে রেখেছেন কল্যাণ এবং চার দিনে ব্যবস্থা করেছেন খাদ্যের - সমভাবে, যাঞ্চাকারীদের জন্য।" (আল-কোরআন, ৪১:১০)
.
এখন প্রথম দুই দিনে পৃথিবী অবিস্তৃত ছিল, পরের দুই দিনে বিস্তৃত হয় এবং হাদিস অনুযায়ী পরের দুই দিনে অর্থাৎ সোমবার বৃক্ষরাজি ও মঙ্গলবার বিপদাপদ সৃষ্টি হয়। এখন সৃষ্টির এই পর্যায়েও বিস্তৃতি চলতে থাকে।
.
فَقَضَىٰهُنَّ سَبْعَ سَمَٰوَاتٍ فِى يَوْمَيْنِ وَأَوْحَىٰ فِى كُلِّ سَمَآءٍ أَمْرَهَاۚ وَزَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِمَصَٰبِيحَ وَحِفْظًاۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ ٱلْعَزِيزِ ٱلْعَلِيمِ
.
"অধিকন্তু তিনি আকাশমন্ডলীকে দুই দিনে সপ্তাকাশে পরিণত করলেন এবং প্রত্যেক আকাশে উহার বিধান ব্যক্ত করলেন এবং আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালা দ্বারা এবং করলাম সুরক্ষিত। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা।" (আল-কোরআন, ৪১:১২)
.
অর্থাৎ চারদিনের পরও পৃথিবীর গঠনের সাথে সাথে মহাবিশ্বের অন্যান্য গঠনও চলতে থাকে আর তাই পৃথিবীতে যে বৃক্ষরাজি তৈরি হয় তারও অবিস্তৃত অবস্থা থেকে বিস্তৃতির দিকে ধীরে ধীরে যেতে থাকে, আর হাদিস বলছে চারদিনের পর বুধবারে নূর সৃষ্টি হয়, আর বৃহস্পতিবার পৃথিবীতে পশু-পাখি সৃষ্টি হয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এখানে তাই বৃক্ষরাজি বিস্তৃত অবস্থায় আসার পর বুধবার নূর বা আলোর কারণে তা এবার পরিপূর্ণভাবে বিকাশ লাভ করতে শুরু করে বিস্তৃত অবস্থায় এবং এক্ষেত্রে যেহেতু পৃথিবী অলরেডি বিস্তৃত হয়ে গেছে, সেহেতু নূর অর্থাৎ আলোও সৃষ্টি হয়ে যাওয়ার কথা আর তাই বৃহস্পতিবার পশুপাখিও পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আর এখানে দেখাই যাচ্ছে যে, আলো সৃষ্টির আগেই দিনের কথা বলা হচ্ছে। অথচ আমরা নক্ষত্রের আলোর সাপেক্ষে দিন-রাত হিসাব করি। এথেকে আমরা আরও বুঝতে পারি যে, হাদিসে বর্ণিত শনি, রবি ইত্যাদি দিনের নামগুলো পার্থিব দিনের নামের থেকে নেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এর ব্যাপ্তিকাল পার্থিব দিনের ব্যাপ্তিকালের সমান নয়। এভাবে ছয় দিবসে পৃথিবী সৃষ্টি হয়ে যাওয়ার পর জুমআর দিবসের কথা বলা হয়েছে আর হাদিসে বলছে, "জুমুআর দিন আসরের পর জুমুআর দিনের শেষ মুহূর্তে অর্থাৎ আসর থেকে নিয়ে রাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে সর্বশেষ মাখলুক আদাম (আঃ) কে সৃষ্টি করেন।"
.
আল্লাহই ভাল জানেন।
.
.
"যারা কুফরী করে তারা কি ভেবে দেখেনা যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী মিশে ছিল ওতপ্রোতভাবে; অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং প্রাণবান সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলাম পানি হতে; তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না?" (আল-কোরআন, ২১:৩০)
.
ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর ব্যাখ্যানুসারে,
.
"...সৃষ্টি করা এক জিনিস এবং دَحَى যার মূল হল, دَحْوٌ (বিস্তৃত করা বা বিছানো) আর এক জিনিস। অর্থাৎ, পৃথিবী সৃষ্টি আসমানের পূর্বে হয়েছে। যেমন, এখানেও বলা হয়েছে এবং دَحْوٌ অর্থাৎ, পৃথিবীকে বসবাসের যোগ্য বানানোর জন্য এর মধ্যে পানির ভান্ডার রাখা হয়, তাকে প্রয়োজনীয় জিনিস উৎপাদনের ক্ষেত্র বানানো হয়। ﴿اَخْرَجَ مِنْهَا مَآءَهَا وَمَرْعَاهَا﴾ এতে পাহাড়, নদ-নদী এবং নানা প্রকার ধাতু ও খনিজ পদার্থ রাখা হয়। এ সব কাজ সুসম্পন্ন হয় আকাশ সৃষ্টির পর অন্য দুই দিনে। এইভাবে পৃথিবী ও তার সংশ্লিষ্ট সমস্ত জিনিসের সৃষ্টি চার দিনে পরিপূর্ণ হয়।" [তাফসিরে আহসানুল বয়ান/আল-কোরআন, ৪১:৯ আয়াতের তাফসিরে হতে বিবৃত]
.
.
অর্থাৎ দুই দিনে পৃথিবী সৃষ্টি হয়, সেটা মহাবিশ্বের অন্যান্য সবকিছুর সাথে এক হয়ে থাকে one unit হিসেবে যাকে এখন আমরা বলি super atom এবং এরপর big bang এর মাধ্যমে তা পৃথক হয় এবং ক্রমাগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মোট চার দিনে পৃথিবীর একটি মোটামুটি পরিণত অবস্থা তৈরি হয়। আল্লাহ বলেন,
.
وَجَعَلَ فِيهَا رَوَٰسِىَ مِن فَوْقِهَا وَبَٰرَكَ فِيهَا وَقَدَّرَ فِيهَآ أَقْوَٰتَهَا فِىٓ أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ سَوَآءً لِّلسَّآئِلِينَ
.
"তিনি স্থাপন করেছেন অটল পর্বতমালা ভূপৃষ্ঠে এবং তাতে রেখেছেন কল্যাণ এবং চার দিনে ব্যবস্থা করেছেন খাদ্যের - সমভাবে, যাঞ্চাকারীদের জন্য।" (আল-কোরআন, ৪১:১০)
.
এখন প্রথম দুই দিনে পৃথিবী অবিস্তৃত ছিল, পরের দুই দিনে বিস্তৃত হয় এবং হাদিস অনুযায়ী পরের দুই দিনে অর্থাৎ সোমবার বৃক্ষরাজি ও মঙ্গলবার বিপদাপদ সৃষ্টি হয়। এখন সৃষ্টির এই পর্যায়েও বিস্তৃতি চলতে থাকে।
.
فَقَضَىٰهُنَّ سَبْعَ سَمَٰوَاتٍ فِى يَوْمَيْنِ وَأَوْحَىٰ فِى كُلِّ سَمَآءٍ أَمْرَهَاۚ وَزَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِمَصَٰبِيحَ وَحِفْظًاۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ ٱلْعَزِيزِ ٱلْعَلِيمِ
.
"অধিকন্তু তিনি আকাশমন্ডলীকে দুই দিনে সপ্তাকাশে পরিণত করলেন এবং প্রত্যেক আকাশে উহার বিধান ব্যক্ত করলেন এবং আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালা দ্বারা এবং করলাম সুরক্ষিত। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা।" (আল-কোরআন, ৪১:১২)
.
অর্থাৎ চারদিনের পরও পৃথিবীর গঠনের সাথে সাথে মহাবিশ্বের অন্যান্য গঠনও চলতে থাকে আর তাই পৃথিবীতে যে বৃক্ষরাজি তৈরি হয় তারও অবিস্তৃত অবস্থা থেকে বিস্তৃতির দিকে ধীরে ধীরে যেতে থাকে, আর হাদিস বলছে চারদিনের পর বুধবারে নূর সৃষ্টি হয়, আর বৃহস্পতিবার পৃথিবীতে পশু-পাখি সৃষ্টি হয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এখানে তাই বৃক্ষরাজি বিস্তৃত অবস্থায় আসার পর বুধবার নূর বা আলোর কারণে তা এবার পরিপূর্ণভাবে বিকাশ লাভ করতে শুরু করে বিস্তৃত অবস্থায় এবং এক্ষেত্রে যেহেতু পৃথিবী অলরেডি বিস্তৃত হয়ে গেছে, সেহেতু নূর অর্থাৎ আলোও সৃষ্টি হয়ে যাওয়ার কথা আর তাই বৃহস্পতিবার পশুপাখিও পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আর এখানে দেখাই যাচ্ছে যে, আলো সৃষ্টির আগেই দিনের কথা বলা হচ্ছে। অথচ আমরা নক্ষত্রের আলোর সাপেক্ষে দিন-রাত হিসাব করি। এথেকে আমরা আরও বুঝতে পারি যে, হাদিসে বর্ণিত শনি, রবি ইত্যাদি দিনের নামগুলো পার্থিব দিনের নামের থেকে নেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এর ব্যাপ্তিকাল পার্থিব দিনের ব্যাপ্তিকালের সমান নয়। এভাবে ছয় দিবসে পৃথিবী সৃষ্টি হয়ে যাওয়ার পর জুমআর দিবসের কথা বলা হয়েছে আর হাদিসে বলছে, "জুমুআর দিন আসরের পর জুমুআর দিনের শেষ মুহূর্তে অর্থাৎ আসর থেকে নিয়ে রাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে সর্বশেষ মাখলুক আদাম (আঃ) কে সৃষ্টি করেন।"
.
আল্লাহই ভাল জানেন।
.
No comments
Note: Only a member of this blog may post a comment.