ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন vs ডারউইন ইভল্যুশন।–(২১ থেকে ২৫)

ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন vs ডারউইন ইভল্যুশন।–২১

লেখকঃ সাব্বির আহমেদ সজীব

মানুষ বিবর্তনের সম্ভাবনা।
ডারউইন ইভল্যুশনের ভাষ্যমতে, মানুষসহ সকল জীব সিঙ্গেল সেল অর্গানিজম থেকে বিবর্তিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। যদিও এখনো এটা অনুমান মাত্র তথাপি নাস্তিকরা ইহাকে প্রমাণিত সত্য বলিয়া তাদের নাস্তিক বাদ প্রচার করে।
মানুষ ও অন্যান্য জীব কি এককোষী জীব থেকে বিবর্তিত হয়েছে?
এটা শুধুমাত্র অনুমান যার বাস্তবতা ভিন্ন। আজ মানুষ বিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবো। ডারউইন বিবর্তন কি পারবে মহাবিশ্বের সম্ভাব্য বয়স সীমার মধ্যে এককোষী সরল জীব থেকে মানুষ ও অন্যান্য জীবের বিবর্তন ঘটাতে?
মানুষের জিনোম প্রায় ৩ বিলিয়ন কেমিক্যাল নিউক্লিওটাইড বেইজ পেয়ারস দিয়ে গঠিত। এর মধ্যে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন বেইজ পেয়ারস এমিনো এসিড এনকোড করে যা প্রায় প্রতিটা জীবের জন্য অপরিহার্য। ৩৪ মিলিয়ন বেইজ পেয়ারস হচ্ছে জিন। প্রতিটা এমিনো এসিডকে কোড করে তিনটি নিউক্লিওটাইড যাদের বলা হয় কোডন। চারটি অ্যালফাবেট দিয়ে তৈরি হয় ডিএনএন আর তিনটা অ্যালফাবেট মিলে তৈরি হয় একটি কোডন। ডিএনএন-এর মধ্যে এই জিনই ডিফাইন করে কোনো জীব হবে ব্যাকটেরিয়া, কোনো জীব গাছ, মাছ, ও মানুষ ইত্যাদি। এইজন্য প্রতিটি জীবের ডিএনএন খুবই জটি। একে তুলনা করা হয় সেক্সপিয়ারের কবিতা, নোভেল, ও কম্পিউটার প্রোগ্রাম অথবা ২ মিলিয়ন ওয়ার্ডসের এনসাইক্লোপিডিয়ার সাথে। ডারউইন ইভল্যুশন অনুযায়ী, এই ডিএনএ বেইজ পেয়ারস, সিকোয়েন্স ও কোডিং সিকোয়েন্স এসেছে র‍্যান্ডম মিউটেশন ও ন্যাচারাল সিলেকশনের মাধ্যমে।
সর্বোচ্চ সম্ভাব্য মিউটেশন ও মহাবিশ্বের বয়স সীমা থেকে আমরা দেখবো র‍্যান্ডম মিউটেশন ও ন্যাচারাল সিলেকশনের মাধ্যমে এই বিশাল পরিমাণ ডিএনএ বেইজ পেয়ারস, সিকোয়েন্স ও কোডিং সিকোয়েন্স আসা সম্ভব কিনা?
এককোষী জীব থেকে মানুষ বিবর্তিত হতে আমরা যদি মনে করি প্রায় ৩ বিলিয়ন মিউটেশনস সংঘঠিত হয়েছে পের জেনারেশনে যেখান থেকে ম্যামলসদের বিশাল জিনোমে পৌছেছে, যেখানে মানুষের জিনোমেও সর্বোচ্চ মিউটেশন ঘটেছে ইভল্যুশন প্রক্রিয়ায়। তাহলে এটা কিছুটা হলেও বিবর্তনের পক্ষে যায়। যদিও এটা শুধু মাত্র অনুমানেই সম্ভব কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ভিন্ন, কারণ প্রতি জেনারেশনে প্রতি জিনোমে মিউটেশন রেট র‍্যাঞ্জ প্রায় ০.০০৩-৩৫০ মিউটেশনের মধ্যে। তথাপি এই হিসেব থেকেই দেখবো ইহা কতটা সম্ভব?
সব থেকে অল্প সময়ের জেনারেশন হিসেব করা হয় ম্যারীন ব্যাকটেরিয়ামের ক্ষেত্রে যা প্রতি জেনারেশন হচ্ছে ৯.৮ মিনিটসে। এখন যদি আমরা এখানেও মনে করি, প্রতি সেকেন্ডে একটি জেনারেশন তৈরি হয় তথাপি মহাবিশ্বের বয়স সীমা অনুযায়ী এই ব্যাকটেরিয়ার জেনারেশন হিসেব করা যাক--- আমরা জানি, মহাবিশ্বের বয়স হচ্ছে ১৫ বিলিয়ন বছর সুতরাং মোট জেনারশন হবে—
মহাবিশ্বের বয়স(বছর) × একবছরে মোট দিন × একদিনে মোট সেকেন্ড।
১৫ বিলিয়ন × ৩৬৫ × ৮৬৪০০ যা ১০^১৮ জেনারেশনের কম।
এই এককোষী পপুলেশনের সর্বোচ্চ সম্ভাব্য মিউটেশন হিসেব করতে সর্বশেষ তথ্য পর্যন্ত মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। এর জন্য আমাদের এমন একটা সর্বোচ্চ সংখ্যা অনুমান করতে হবে যা সর্বোচ্চ সংখ্যা। সেক্ষেত্রে আমরা সেই সংখ্যাটা ধরে পারি মহাবিশ্বের এটমসের সংখ্যাকে, আমাদের অবজার্ভাবল মহাবিশ্বে এটমস সংখ্যা প্রায় ১০^৮২। এর উপর ভিত্তি করে যদি আমরা ধরে নেই সর্বোচ্চ মিউটেশন ঘটেছে মহাবিশ্বের বয়স পর্যন্ত তাহলে মিউটেশনের সংখ্যা হবে—
মিটেশন পের জেনারেশন × মোট জেনারেশন × পপুলেশন---
৩ বিলিয়ন × ১০^১৮ × ১০^৮২ যা ১০^১১০ মিউটেশনের চেয়ে কম।
এখন হিসেব করা যাক মানুষ বিবর্তনের জন্য যে সংখ্যক মিউটেশন প্রয়োজন—
মানুষের জিনোমে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন জিন নিউক্লিওটাইড রয়েছে। আর এককোষীর সর্বোচ্চ জিন নিউক্লিওটাইড হচ্ছে ১৩ মিলিয়ন। তাহলে এখানে পার্থক্য হচ্ছে, ৩৪-১৩=২১ মিলিয়ন নিউক্লিওটাইড। তাহলে বিবর্তন প্রক্রিয়া প্রায় ২১ মিলিয়ন নিউক্লিওটাইড মিউটেশনের মাধ্যমে সঠিক বেইজ ও সিকোয়েন্সে ইল্ভভ হতে হবে। উপরে আলোচনা করেছিলাম কোডন নিয়ে যেখানে একটি এমিনো এসিড কোড করতে প্রয়োজন একটি কোডন। সতরাং ২১ নিউক্লিওটাইডে হবে ৭ মিলিয়ন কোডন।
র‍্যান্ডম মিউটেশনের রয়েছে নিউট্রাল, হার্মফুল, বেনিফিশাল প্রভাব। র‍্যান্ডম মিউটেশনের ফলে ডিলেটেরিয়াস মিউটেশন নিউক্লিওটাইড বেইস হ্রাস করে যা সর্বোচ্চ ইনফর্মেশনাল জিন বৃদ্ধি পাওয়াকে হ্রাস করে। শুধু মাত্র বেনিফিশাল মিউটেশন বিবর্তন প্রক্রিয়াকে অগ্রসর করে সেই লক্ষ্য পূরণে কিন্তু সেটা খুবই রেয়ার কেইজ। জিনোমে কোডিং রিজন শুধু মাত্র ২০টি এমিনো এসিডকে কোড করবে এবং ১টি রয়েছে স্টপ কোডন অর্থ্যা মোট পরিবর্তন হবে ২১টি।
এখন যদি জিনে অর্থ্যা কোডিং রিজনে মিউটেশনের ফলে পরিবর্তন হয় তাহলে এর ১/২১ হবে নিউট্রাল যা কোনো পরিবর্তন করবেনা(একই এমিনো এসিডকে কোড করবে)। আর যদি মিউটেশনের ফলে কোডিং রিজন পরিবর্তন ২০/২১ পরিবর্তন হয় তবে তা এমিনো এসিডকে পরিবর্তন করে দিবে কিন্তু হিসেব করে দেখা গেছে এই পরিবর্তনের ৭০%-এর উপরে হচ্ছে হার্মফুল ও ডিলেটেরিয়াস মিউটেশন।
এখান থেকে আমরা যদি এই ৭০% বাদ দিয়ে সব পরিবর্তনকে বেনিফিশাল ধরে হিসেব করি তাহলে এই ৭ মিলিয়ন কোডনকে ২০/২১-এর পাওয়ার ধরে হিসেব করলে মোট ১০^১০০,০০০ বেনিফিশাল মিউটেশন ঘটতে হবে। আর আমরা জানি ন্যাচারাল সিলেকশন কোডিং সিস্টেমের কোনো পরিবর্তন করেনা। শুধু মাত্র বেনিফিশাল মিউটেশনকে সাস্টেইন করে ও হার্মফুল মিউটেশনকে ইলিমিনেইট করে। কিন্তু ন্যাচারাল সিলেকশন ৭০% হার্মফুল মিউটেশনকে ইলিমিনেইট করতেও ব্যার্থ কারন মিউটেশন দ্রুত ঘটে কিন্তু সে অনুপাতে ন্যাচারল সিলেকশন খুব ধীর।
তাহলে উপরের আলোচনায় দেখা যাচ্ছে, এককোষী থেকে মানুষ বিবর্তিত হতে প্রয়োজন ১০^১০০,০০০ এর উপরে বেনিফিশাল মিউটশন। কিন্তু আমরা মিউটেশন পাচ্ছি ১০^১১০ এর কম। যেখানে আমরা হিসেব করেছি মহাবিশ্বের মোট বয়স দিয়ে কিন্তু বিবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হয় তার অনেক পর। শুধু তাই নয় এখানে হিসেব করেছি শুধু মাত্র কোডিং রিজন নিয়ে যা মানুষের মোট জিনোমের মাত্র ২% এখানে বাকি ৯৮% যাকে প্রথমত জাষ্ক ডিএনএ ধরা হয়েছিল কিন্তু ২০১২ সালে সেটা ভুল প্রমানিত হয়। বর্তমানে আমরা জানি, এই নন-কোডিং রিজনেরও গুরুত্বপূর্ণ ফাংশন ও কাজ রয়েছে। অতএব বলা যায় বিবর্তনের যে গল্প আমরা শুনি তা শুধু মাত্র অনুমাণ নির্ভর বাস্তবে ইহা অসম্ভব।

ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন।--২২

সত্যের সন্ধানে।
আমাদের চারপাশে অসংখ্য সংশয়বাদী রয়েছে। স্রষ্টা আছে বা নেই এমন দ্বন্দ্বে রয়েছেন। আমার এই লিখার উদ্দেশ্য সেইসব সংশয়বাদীদের জন্য যারা সত্যিকার অর্থে সত্যের সন্ধানে জ্ঞান আহরণে তপস্বী। কিন্তু তারা মনে করে স্রষ্টা আছে কিংবা নেউ তা যুক্তিসংগত এভিডেন্স দিয়ে প্রমাণ করা সম্ভব নয়। বাস্তবতা হল, আমরা যদি এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড গভীরভাবে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যবেক্ষণ করি তাহলে আমরা উপলব্ধি করতে পারবো যে, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড স্রষ্টাকে যুক্তিসংগত এভিডেন্স দিয়ে প্রমাণ করার এক বিশাল চারণক্ষেত্র। তার জন্য প্রয়োজন নিরপেক্ষ বিচরণ। চলুন আজ বিচরণ করে আসি "ব্লুপ্রিন্ট অফ লাইফ" থেকে।
ব্লুপ্রিন্ট অফ লাইফ: ডিএনএ-কে বলা হয় ব্লুপ্রিন্ট অফ লাইফ। একটি জীবের বৃদ্ধি, পুনরুৎপাদন, অভিযোজন, ও পরিবেশে টিকে থাকার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা এনকোড করা থাকে ডিএনএ-তে। ডিএনএ-কে ব্লুপ্রিন্ট অফ লাইফ বলা হয় এন্যালজি হিসেবে (যদিও এটা খুব দুর্বল এন্যালজি ডিএনএ-এর ক্ষেত্রে)। ব্লুপ্রিন্ট একটি ইনফরমেশনাল ম্যাপ। একটি বিল্ডিং তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান ও নির্দেশনা একটা ব্লুপ্রিন্টে ব্যাখ্যা করা হয়ে থাকে ঠিক তেমনি ডিএনএ-তে জীবের উপাদান ও বৈশিষ্ট্যর নির্দেশনা এনকোড করা থাকে ডিএনএ-তে।
প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ: সবচেয়ে সূক্ষ্ম সিস্টেম প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ আমাদের ডিএনএ। ডিএনএ শুধু জীবের জন্য জটিল ও সূক্ষ্ম সেলফ-কনটেইনড প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ নয়, অধিকন্তু একটি রিপ্রেজেন্টেশন সিস্টেম প্যাটার্ন যা ইফিশিয়ান্টলি বিশাল পরিমাণ তথ্য স্টোর করে ও পরিবেশে অভিযোজনের জন্য ম্যাকানিজম সরবরাহ করে। আবার ইহা শুধুমাত্র জীবের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের নির্দেশনা এনকোড করে তাই নয়, অধিকন্তু জীবের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো কিভাবে প্রথম থেকে শেষপর্যন্ত পরস্পর যুক্ত হবে সেইসাথে পরস্পরের সাথে কিভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করবে সেইসকল নির্দেশনা প্রদান করে, যা লাইফলেস উপদান থেকে লিভিং ফর্ম তৈরি হয়। মানুষের তৈরি যেকোনো প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ থেকে অনেক অনেক বেশি কমপ্লেক্স প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ হচ্ছে আমাদের ডিএনএ।
২০১০ সালে ক্রেইগ ভেন্টার ও তার দল প্রথম কম্পিউটারে ১০,০০,০০০ লেটারস এর একটি ডিএনএ ডিজাইন করে। পরে সেটি কম্পিউটার সিস্টেম দ্বারা টার্গেট সেলে প্রসেসটি চালনা করেন, এবং সেলটি ডিজাইন করা ডিএনএটি পড়তে (ব্যবহার) থাকে। অর্থাৎ আমাদের ডিএনএ হল হার্ডওয়্যার আর জেনেটিক কোড হল সফটওয়্যার। একটি ইন্টার্ভিউতে ভেন্টার বলেন, “Life is basically the result of an information process, a software process. Our genetic code is our software, and our cells are dynamically, constantly reading that genetic code."
অর্থাৎ লাইফ মূলত একটি সফটওয়্যার প্রসেস ও ইনফরমেশন প্রসেসের ফলে উদ্ভূত। আমাদের জেনেটিক কোড আমাদের সফটওয়্যার, এবং আমাদের সেল সেই জেনেটিক কোড সক্রিয়ভাবে ক্রমাগত পড়তে (ব্যবহার) থাকে।
আবার MIT biological engineer-রা ডিএনএ-এর উপর ভিত্তি করে একটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ ডেভেলপ করে যা নতুন সেল কম্পোনেন্ট ও ফাংশন ক্রিয়েট করে যা বিভিন্ন অ্যাপলিকেশন ব্যবহার করে, প্রসেস কন্ট্রোলের মাধ্যমে ডিজিজের সাথে লড়াই করবে।
অতএব বায়োলজিক্যাল কম্পিউটার সিস্টেম কোনো থিওরেটিকাল বা হাইপোথিসিস নয়। বরং ইহা গবেষণামূলকভাবে পর্যবেক্ষণ, পরিক্ষা ও যাচাই করা হয়েছে। বায়োলজিক্যাল কম্পিউটার সিস্টেম মানুষের তৈরি কম্পিউটার সিস্টেমের চেয়ে বহুগুণ বেশি সূক্ষ্ম ও জটিল।
ডেটা স্টোরেজ: বিজ্ঞানীরা মনে করেন, একগ্রাম ডিএনএ-তে ২১৫ মিলিয়নস জিবি স্টোর করা সম্ভব। তাই বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন পৃথিবীর সমস্ত ডেটা ডিএনএ-তে স্টোর করতে। কারণ সিডি, ডিভিডি বা অন্য যেকোনো মাধ্যম থেকে নির্ভুলভাবে বিলিয়ন বিলিয়ন বছর ডিএনএ-তে তথ্য সংরক্ষণ করা সম্ভব। যেমন: আমরা জানি, বিলিয়ন বিলিয়ন বছর পুরনো ফসিলের ডিএনএ থেকে বলে দেয়া যায় জীবটি কেমন ছিল। কারণ জীবের ডিএনএ-তে সেই জীবের বিশাল পরিমাণ তথ্য মজুদ থাকে। এই বিষয়ে ডকিন্স বলেন, There is enough information capacity in a single human cell to store the Encyclopedia Britannica, all 30 volumes of it, three or four times over.
অর্থাৎ মাত্র একটি সেলে (সেলের ডিএনএ-তে) যে পরিমাণ তথ্য রাখা যাবে তা দিয়ে ৩-৪টির বেশি ৩০ ভলিউমের এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা লেখা যাবে।
মাল্টিপল মিনিংস: ডিএনএ-তে রয়েছে চারটি লেটারস A, G, T, ও C. এই চারটি লেটারসকে বিভিন্নভাবে ক্রমান্বয়ে (সিকোয়েন্সে) সাজিয়ে হাজার হাজার ভিন্ন ভিন্ন মিনিং বা অর্থ পাওয়া সম্ভব। যেমটা ইংরেজি ২৬টা লেটারসকে সাজিয়ে পাওয়া সম্ভব। ডিএনএ-এর জিন সাধারণত সেলের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন সিন্থেসিসের নির্দেশনা থাকে। কিন্তু এই লেটারসগুলো একইসাথে রেগুলেশন, প্যাকেজিং, ও সেলের অন্যান্য অনেক কাজেও ব্যবহার হতে পারে। একসময় বিজ্ঞানীরা মনে করতেন এই ডিএনএ সিকোয়েন্সগুলো একটি নির্দিষ্ট কাজ অথবা অন্য যেকোনো একটি কাজ করে থাকে অর্থাৎ একই সাথে একাধিক কাজে ব্যবহার হতে পারে না। কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছে একই ডিএনএ সিকোয়েন্স একই সাথে একাধিক কাজে ব্যবহার হতে পারে। একসময় আরও মনে করা হতো একটি জিন শুধু মাত্র একটি প্রোটিন তৈরির তথ্য ধারণ করে কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেলো একই জিন একাধিক প্রোটিন তৈরিতে ব্যবহার হতে পারে। কারণ তারা দেখলো যে, মানুষের শরীরে মাত্র জিন রয়েছে ২০,০০০-২৫,০০০ আর প্রোটিন তার তুলনায় অনেক বেশি। অর্থাৎ একই জিনের রয়েছে মাল্টিপল ফাংশন ও মিনিং, যা শুধুমাত্র কেমিস্ট্রি দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। এই (একটা জিন একটা প্রোটিন) ভিউ থেকে অনেক বিবর্তনবাদী নাস্তিক মনে করে থাকে মিউটেশনে জিনে পরিবর্তন হলেই বুঝি নতুন নতুন তথ্য যোগ হবে ও জীবটি একটি নতুন ফর্ম গঠন করবে একটি আলাদা ফর্মের জীবে বিবর্তিত হবে (কারণ জিনটি পরিবর্তিত হলে প্রোটিন ফাংশনে পরিবর্তিত হবে)। কিন্তু এটা শুধু মাত্র অবাস্তব চিন্তা। কারণ যেমনটা উপরে বললাম একই জিনের রয়েছে মাল্টিপল মিনিং ও একাধিক ফাংশন তৈরির নির্দেশনা। অতএব মিউটেশনের ফলে একটা ফাংশনে উপকারী বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হলেও অন্যান্য ফাংশনে তা বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করবে।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে কয়েকটা প্রশ্ন এসে যায়--
১। জড় উপাদান থেকে কিভাবে বাই চান্স জীবের জন্য প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উদ্ভব হতে পারে?
২। কিভাবে একটি র‍্যান্ডম ন্যাচারাল প্রসেস র‍্যান্ডম চয়েসের মধ্যমে প্রত্যেক সেলে অসংখ্য কম্পিউটারসে কমিউনিকেশন ও কর্ডিন্যাশন ডেভেলপ করল?
৩। শুধুমাত্র কেমিস্ট্রি এমন ফাংশনালিটি তৈরি করতে পেরেছিল কি?
এমন ফাংশনালিটি উপর ভিত্তি করে James Tour বলেছিলেন, “There is collective cluelessness…those who say this is well worked out, they know nothing, nothing about chemical synthesis.. Those who think that scientists understand the details of life’s origin are wholly uninformed.
পরিশেষে: উক্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এটা স্পষ্ট যে, ডিএনএ সূক্ষ্ম ও জটিল ইনফরমেশন প্রসেস, সফটওয়্যার প্রসেস, ও প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। যেখানে ডিএনএ হচ্ছে হার্ডওয়্যার ও জেনেটিক কোড হচ্ছে সফটওয়্যার। আমাদের প্রাপ্ত এভিডেন্সে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে, কোনো প্রোগ্রাম, ইনফরমেশন, ডিজাইন কোনো প্রোগ্রামার, ইন্টেলিজেন্স, ডিজাইনার ব্যতীত বাই চান্স সৃষ্টি হয়েছে। আপনি যদি কোনো প্রোগ্রাম লিখতে চান তাহলে অবশ্যই সেই প্রোগ্রাম আপনাকেই লিখতে হবে তা নিজে নিজেই লিখবে পারে না, পারবে না। প্রোগ্রাম লিখার জন্য প্রয়োজন বুদ্ধিমান মাইন্ড। তাই সব প্রোগ্রামার পিছনে কাজ করে বুদ্ধিমান মাইন্ড। তেমনি একটি বই লিখার জন্যেও প্রয়োজন বুদ্ধিমান মাইন্ড, একজন অথার। তাহলে প্রশ্ন আসে ডিএনএ কে লিখছে? অবশ্যই এর পিছনে বুদ্ধিমান মাইন্ড, ও একজন অথার প্রয়োজন। এটাকে ভুল প্রমাণের জন্য প্রয়োজন এমন একটি অবজারভাবল এভিডেন্স যা প্রমাণ করবে কোনো একটি বই বা প্রোগ্রাম নিজে নিজেই লিখেছে।

ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন --২৩
ডারউইনকে বাঁচাতে অক্টোপাস ভিনগ্রহে।
১৩ মার্চ ২০১৮, ৩৩ জন গবেষক "Progress in Biophysics & Molecular Biology" Peer Reviewed Journal-এ তাদের গবেষণায় ব্যাখ্যা করেন অক্টোপাস পৃথিবীর প্রাণী নয় অর্থাৎ অক্টোপাস ভিনগ্রহের প্রাণী। তাদের গবেষণায় উঠে আসা এমন তথ্যে বিস্মিত জীববিজ্ঞানীরা। গবেষকরা বলছেন, সেফালোপডা প্রজাতিগুলোর সব জীবই নিজেদের শরীরে নিজেরাই বদল আনতে সক্ষম। সেফালোপডদের এমন আশ্চর্যজনক সামর্থ্য ভাবাচ্ছে জীববিজ্ঞানীদের। কারণ, বিবর্তন তত্ত্বের সাথে এর কোন মিল নেই। তাই গবেষকরা মনে করছেন, শুধু অক্টোপাস নয়, সেফালোপডদের অন্য জীব যেমন- স্কুইড ও কাটলফিশ এগুলিও হয়তো ভিনগ্রহের জীব। গবেষকরা প্রত্যক্ষ করেন, সেফালোপডরা নিয়মিত তাদের RNA প্রতিনিয়ত বদল আনতে সক্ষম। এই RNA-তে আছে জেনেটিক কোড। সাম্প্রতিক RNA editing transcriptome-wide ডেটা সোমাটিক RNA বৈচিত্র্য ম্যাকানিজমের উপর যা সেফালোপডে বিশেষ করে অক্টোপাসে আচরণগত-ভাবে জটিল বা সূক্ষ্ম। এই তথ্যসমূহ প্রকাশ করে A-to-I mRNA editing sites-এ সেফালোপডা কলেওয়ডদের (বিশেষ করে অক্টোপাস) প্রায় প্রত্যেকটি প্রোটিন কোডিং জিন আচরণগত-ভাবে খুবই জটিল যা ব্যাপক বিবর্তনীয় পরিবর্তনে প্রোটেকটেড অর্থাৎ প্রত্যেকটি প্রোটিন কোডিং জিন সূক্ষ্ম ও সংরক্ষিত।
স্কুইড ও বিশেষ করে অক্টোপাসের প্রায় প্রত্যেকটি প্রোটিন কোডিং জিন বিবর্তন সংরক্ষিত A-to-I mRNA editing sites isoform রয়েছে, যার ফলে non-synonymous এমিনো এসিডের পরিবর্তন ঘটে। ইহা এমন একটি মসৃণ এবং ক্রমবর্ধমান বংশানুক্রমিক আণবিক জেনেটিক কৌশল একটি ভার্চুয়াল গুণগত পরিবর্তন, অর্থাৎ এক ধরণের আকস্মিক পরিবর্তন যাকে “great leap forward" বলা হয়েছে। অক্টোপাসের DNA highly rearranged যেখানে অসংখ্য জিন রয়েছে যা লাফিয়ে স্থান পরিবর্তন করতে পারে আর এই জিনগুলোকে "jumping genes" বলা হয়। যতক্ষণ না স্কুইড বা অক্টোপাস বংশক্রমানুতে সব নতুন জিন সাধারণ মিউটেশন দ্বারা পূর্ব জিন থেকে প্রকাশিত হয় ততক্ষণ পর্যন্ত স্কুইড অথবা অন্য জীব একই পরিবেশ শেয়ার করে নেয়, এখানে অবশ্যই এমন কোন উপায় নেই যার দ্বারা A-to-I mRNA editing-এর এই বৃহৎ গুণগত রূপান্তর ডারউইন বা নব্য-ডারউইন প্রক্রিয়া দ্বারা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, যদিও horizontal gene transfer ডারউইন বা নব্য-ডারউইনে অনুমতি দেয়া হয় (ডারউইন বা নব্য-ডারউইন horizontal gene transfer ব্যাখ্যা দিতে পারে না)।
এর আগেও সেফালোপডদের ৫০০ মিলিয়ন বছরের একটি ইভল্যুশনারি হিস্ট্রি অঁকন করা হয়েছিল, যদিও তা খুবই বিশৃঙ্খল ও পরস্পরবিরোধী ছিল। অক্টোপাস, স্কুইড ও কাটলফিশে নটিলাস থেকে রূপান্তরিত প্রধান জিনগুলো পূর্বের জীবে সহজে পাওয়া যায় না। এইসব কারণে গবেষকরা দাবী করেন coleoid-রা এলিয়েন বা ভিনগ্রহের বাসিন্দা। গবেষকরা মনে করেছেন, প্রায় ২৭০ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী তৈরির সময় অনেক কিছু মহাকাশ থেকে ছিটকে পড়েছিল যার কিছু ছিল জীবন্ত। আর সেভাবে হয়তো অক্টোপাস অথবা স্কুইডের ডিম সমুদ্রে পড়েছিল যা পরে সমুদ্রের তাপমাত্রায় জীবন পেয়েছে। (১) অক্টোপাসকে এলিয়েন বলার আরো কিছু কারণ রয়েছে নিচে তা ব্যাখ্যা করা হল---
১৩ আগস্ট ২০১৫-তেও নেচার জার্নালে অক্টোপাসের একটি জেনেটিক নকশা তৈরি করা হয় যেখানে গবেষকরা অদ্ভুত ধরনের নকশা প্রত্যক্ষ করেন। গবেষকরা লক্ষ্য করেন, যেখানে মানুষের জিন রয়েছে ২০ হাজার বা তার কিছু বেশি সেখানে অক্টোপাসের রয়েছে ৩৩ হাজার প্রোটিন কোডিং জিন। শুধু তাইই নয়, গবেষকরা লক্ষ্য করেন, এই জিনগুলোর অদ্ভুত ধরণের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অক্টোপাসের দেহের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করে প্রায় কয়েক’শ জিন পাওয়া যায় যা অন্য কোনো প্রাণীতে নেই। এই জিনগুলো কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। অক্টোপাসের জটিল স্নায়ুতন্ত্রে বিবর্তনমূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার মাধ্যমে ছদ্মবেশ ধারণ করতে পারে। চারপাশে থাকা যেকোনো কিছুর মতো আকার ও রং ধারণ করতে পারে, যাকে বলা হয় “ইনস্ট্যান্ট কেমোফ্লেজ”। অক্টোপাসে আরো রয়েছে, বৃহৎ মস্তিষ্ক, ক্যামেরাদ মত চোখ, নমনীয় দেহ। (২)
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডাঃ ক্লিফটন রাগডেল বলেন, ”প্রয়াত ব্রিটিশ প্রাণী বিজ্ঞানী মার্টিন ওয়েলস দাবী করেছিলেন, অক্টোপাস হলো এলিয়েন। তারপর আমাদের গবেষণাপত্রেও একটি এলিয়েন জিনোমের বর্ণনা দেয়া হয়েছে।” তিনি আরো বলেন, “অন্য যেকোনো প্রাণী থেকে অক্টোপাস একদমই আলাদা। কোন কিছুকে আঁকড়ে ধরার জন্য আছে আটটি বাহু, চিন্তা করার জন্য আছে বড় মস্তিষ্ক। শুধু তাই নয়, যেকোনো সমস্যা সমাধানেও অক্টোপাসের রয়েছে অদ্ভুত রকমের দক্ষতা।” (৩)
পরিশেষে-- অক্টোপাস কোনো এলিয়েন নয়, ডারউইন বা নব্য-ডারউইন দিয়ে এলিয়েনের এমন বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করা যায় না। তাই বিজ্ঞানীরা নানানরকম দাবী ও ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।আদৌ এলিয়েন বলে কিছু আছে কি না, থাকলে তারা দেখতে কেমন, কেমন তাদের বুদ্ধিমত্তা-এ নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। কল্পনার এই ভিনগ্রহী প্রাণী কি বাস্তবেও আছে-সেই কৌতূহলের শেষ নেই। এর মধ্যেই কেউ যদি বলেন, এই পৃথিবীতেই অবাধে বিচরণ করছে এলিয়েনরা। তাহলে চমকে ওঠাটাই স্বাভাবিক। অক্টোপাস এলিয়েন এর স্বপক্ষে তেমন কোনো পোক্ত কোনো এভিডেন্স নেই। শুধুমাত্র ডারউইন ইভল্যুশন দ্বারা এদের (Coleoid) ব্যাখ্যা দেয়া যায় না বিধায় এমন দাবী উত্থাপন করছেন গবেষকরা।
ডারউইনকে বাঁচাতে অক্টোপাস ভিনগ্রহে যাওয়া কারণ সমূহ--
১। অরিজিন অফ স্পিসিসের ৬ষ্ঠ অধ্যায়েই ডারউইন লিখেছেন: “যদি দেখানো যায় যে কোন জটিল প্রাণী আছে যার জটিল কোনো অঙ্গের ব্যাপারে একাধিক, ক্রমান্বয়ে হওয়া, হালকা পরিবর্তনের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায় না, তবে আমার এ তত্ত্ব পুরোপুরিভাবে ভুল প্রমাণিত হবে।” (৪)
আমরা উপরে যেমটা অক্টোপাসের ক্ষেত্রে দেখেছি। এর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও গঠন সম্পূর্ণ ইউনিক। তাই তাদের একাধিক ক্রমান্বয়ে হওয়া হাল্কা পরিবর্তন দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না। অতএব ডারউইনের কথা অনুযায়ী তার তত্ত্ব পুরোপুরিভাবে ভুল প্রমাণিত হয়।
২। অলৌকিক উপায়ে (বা জেনেটিক ধারা ভেঙ্গে) কোন প্রানীর 'সৃষ্টি' হওয়া পর্যবেক্ষণ করা গেলে। তুলনামূলক জেনেটিক্সের তথ্য থেকে একই উপসংহারে পৌঁছনো না গেলে। (৫)
উপরে আমরা যেমনটি দেখলাম। অক্টোপাসের জিন মানুষের চেয়েও বেশি যদিও মানুষের চেয়ে তাদের জিনোম ছোট অর্থাৎ অক্টোপাসের জিনোম অসংখ্য জিনে ভর্তি এবং কয়েক'শ জিন পাওয়া যায় যা অন্য প্রাণীতে নেই। অর্থাৎ অক্টোপাসের জিনোমে 'জেনেটিক ধারা' ভেঙে পড়ে ও জেনেটিক্স তথ্য থেকে একই উপসংহারে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
৪। যদি কোন প্রক্রিয়ার সন্ধান পাওয়া যায় যা পরিব্যক্তিকে পুঞ্জীভূত হতে বাঁধা দিবে। (৫)
উপরে আমরা যেমনটা দেখেছি, অক্টোপাসের প্রায় প্রত্যেকটি জিন evolutionary conserved যা বিবর্তনবাদী পরিবর্তন থেকে সংরক্ষিত। যার প্রতিটা জিন ইউনিক ও প্রয়োজনীয়। এই জিনের পরিবর্তন জীবের জন্য প্রাণঘাতী(lethal) হতে পারে। (৬)
তাই গবেষকরা বলছেন, 'The complex sets of new genes in the Octopus may have not come solely from horizontal gene transfers or simple random mutations of existing genes or by simple duplicative expansions.


ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন --২৪

জেনেটিক এন্ট্রপি।
জেনেটিক এন্ট্রপি নিয়ে আলোচনার শুরুতেই “এন্ট্রপি” সম্পর্কে একটু আলোচনা করবো কারণ অনেকেই “জেনেটিক এন্ট্রপি”-কে তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্রের সাথে গুলিয়ে ফেলেন। এন্ট্রপিকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়, আমাদের আলোচনায় এত সংজ্ঞার প্রয়োজন নেই। সাধারণ অর্থে বলতে গেলে এন্ট্রপ - বলতে বুঝায়, “কোনো এক সিস্টেমের বিশৃঙ্খলাই হচ্ছে এন্ট্রপি।” অতএব, জেনেটিক এন্ট্রপি সাধারণ অর্থে জেনেটিক বিশৃঙ্খলা। জেনেটিক বিশৃঙ্খলা কি ও কিভাবে ঘটে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন কিন্তু আমি সংক্ষেপে আলোচনা করবো।
জেনেটিক এন্ট্রপি: জেনেটিক এন্ট্রপি মূলত রেফার করে জীবের ফাংশনালিটি বিনষ্ট হওয়া অর্থাৎ জীবের কমপ্লেক্স ফর্ম বা অ্যাডাপ্টিভ ফর্ম বিনষ্ট হওয়া। জেনেটিক এন্ট্রপি বৃদ্ধির কারণ জেনেটিক মিউটেশন। জেনেটিক এন্ট্রপি জীবের অভ্যন্তরীণ বায়োলজিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমকে ক্রমান্বয়ে বিনষ্ট করে যে ইনফরমেশন জীবসমূহকে টিকিয়ে রাখে। আমি গত পূর্বগুলোতে আলোচনা করেছিলাম জেনেটিক ইনফরমেশন জীবের জন্য ব্লু-প্রিন্ট বা নকশা হিসেবে কাজ করে অর্থাৎ জেনেটিক ইনফরমেশন একটি স্পেসিফিক প্রোগ্রামিং সিস্টেম। র‌্যান্ডম মিউটেশন ধীরে ধীরে সিস্টেমকে বিনষ্ট করে। একটা উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি ক্লিয়ার করা যাক, আমরা জেনেটিক এন্ট্রপি প্রতিনিয়ত লক্ষ্য করি আমাদের মাঝেই। আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত কোষ বিভাজন হচ্ছে এতে নতুন নতুন মিউটেশন ঘটছে। প্রতি জেনারেশনে প্রায় ১০০-৩০০টি নতুন মিউটেশন তৈরি হচ্ছে। অর্থাৎ আপনার পিতামাতার জিনোমে কোন মিউটেশন না ঘটলে আপনার শরীরে ১০০-৩০০টি মিউটেশন ঘটবে আপনার বাচ্চাকাচ্চার তার ডবল নতুন মিউটেশন ঘটবে। আমাদের সেলগুলো প্রতিনিয়ত বেশি বেশি মিউট্যান্ট হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে, ফলে আমরা বৃদ্ধ হচ্ছি, রোগ আক্রান্ত হচ্ছি এবং এক সময় মারা যাচ্ছি। একইভাবে, মিউটেশন ঘটছে আমাদের প্রতি সেলে, রিপ্রোডাক্টিভ সেল মিউটেশনের ফলে তা প্রবাহিত হচ্ছে প্রতি জেনারেশনে। এতে একটা পপুলেশনের জেনেটিক এন্ট্রপি গ্র্যাজুয়ালি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উদাহরণ: আমরা জানি, যে সকল মিউটেশন প্রোটিন সিকোয়েন্সে পরিবর্তন আনে তার বেশিরভাগ মিউটেশন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। কিছু রেয়ার মিউটেশন আছে যা আপেক্ষিকভাবে উপকারী হয় থাকে। উপকারী মিউটেশনগুলোকে আপেক্ষিক উপকারী বলার কারণ হল, খোলা চোখে জীবের জন্য উপকারী মনে হলেও সেগুলো প্রকৃত অর্থে উপকারী নয়। যেমন; নরমাল হিমোগ্লোবিন ও সিকল সেল হিমোগ্লোবিনের মধ্যে একটা অ্যামিনো এসিডের পার্থক্য। অর্থ্যাৎ একটা অ্যামিনো এসিডের পরিবর্তন সিকল সেল ডিজিজ তৈরি করতে পারে এবং হিমোগ্লোবিনের অক্সিজেন ক্যারি করার ক্ষমতা বিনষ্ট করে দিতে পারে। কিন্তু এটা যে সবসময় ক্ষতির-কারণ হয় তা নয় কারণ সিকল সেল জিন অনেক সময় ম্যালেরিয়ার বিপক্ষে প্রতিরোধ-ক্ষমতা তৈরি করে। অতএব, একদিকে উপকারী হলেও প্রকৃতার্থে উপকারী নয়। বিবর্তনবাদীরা বলে ন্যাচারাল সিলেকশন নাকি যোগ্যতম বৈশিষ্ট্যগুলোকে টিকিয়ে রাখে এবং ক্ষতিকর বৈশিষ্ট্যগুলোকে “weed out” করে দেয়। আর এইভাবে নাকি নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে নতুন নতুন জীব বিবর্তিত হয় কিন্তু আজ অবধি সিকল সেল জিনের উপকারী বৈশিষ্ট্যকে রেখে ক্ষতিকর বৈশিষ্ট্যকে বিতাড়িত করতে পারলো না। এক্ষেত্রে জেনেটিক এন্ট্রপি বৃদ্ধির মূল কারণ হচ্ছে, ন্যাচারাল সিলেকশন স্লো কাজ করে সে তুলনায় মিউটেশন খুব দ্রুত ঘটে তাই নেট জেনেটিক এন্ট্রপি সর্বদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আরেকটা সাধারণ উদাহরণ দিলে বিষয়টা সবার কাছে সহজে বোধগম্য হবে। মনে করুণ, আপনার দেহে ১০টি জিন আছে এবং ৪০টি সেল আছে। তাহলে প্রতি জিন ৪টি সেলে কাজ করবে। এখন যেকোনো একটি জিনে মিউটেশন ঘটলো এবং একটি সেলের কাজ বা ফাংশনের জন্য উপকারী হলো কিন্তু বাকী ৩টি কাজের জন্য তা ক্ষতিকর হতে বাধ্য কারণ জীবের প্রতিটি কাজ বা ফাংশন খুব সূক্ষ্ম ও জটিল।
এভিডেন্স: জেনেটিক এন্ট্রপির প্রধান বিষয়গুলো হচ্ছে, ডিলেটেরিয়াস মিউটেশন, জিন লস, লস অফ ফাংশন ইত্যাদি। ডিলেটেরিয়াস মিউটেশন এমন এক মিউটেশন যা একটি নির্দিষ্ট ডিজিজ অথবা ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে জীবের সংবেদনশীলতা অথবা রোগ প্রবণতা বৃদ্ধি করে। একইভাবে জিন লস ও লস অফ ফাংশন পরস্পর সম্পর্কিত।
ডিলেটেরিয়াস মিউটেশন জীবের জন্য ক্ষতিকর এবং ন্যাচারাল সিলেকশন তাদের বেশিরভাগ মিউটেশনকে "weed out" করতে পারেনা। (১) এই বিষয়ে আরেকটি স্টাডি করা হয়েছিল ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের জিনোমের উপর। ১৯১৮ সালের ভাইরাস জিনোম স্টাডি করে দেখা যায় যে, তখনকার ভাইরাসগুলো অনেক বেশি প্রাণঘাতী ছিল বর্তমান ভাইরাস থেকে। তখন প্রশ্ন দেখা দিল কেন তারা বেশি প্রাণঘাতী ছিল? এবং জানা গেল, তখন থেকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে কনটিনিউয়াসিলি মিউটেশন রেট বৃদ্ধি পেয়েছে, যাদের বেশিরভাগ ছিল ডিলেটেরিয়াস মিউটেশন। তখন তাদের স্ট্রোং ন্যাচারাল সিলেকশন থাকা সত্ত্বেও ন্যাচারাল সিলেকশন ডিলেটেরিয়াস মিউটেশনগুলোকে "weed out" করতে পারেনি। (২)
এখন দেখা যাক লস অফ ফাংশন মিউটেশন কিভাবে জেনেটিক এন্ট্রপি বৃদ্ধি করে। লস অফ ফাংশন মিউটেশন হলো “এমন মিউটেশন যা প্রোটিন ফাংশনের কার্যক্ষমতা হ্রাস করে।” SLC30A8 জিনে লস অফ ফাংশন মিউটেশনের ফলে টাইপ টু ডাইবেটিস প্রতিরোধ-ক্ষমতা তৈরি হয়। (৩) অন্য স্টাডিতে দেখা যায় ব্যাকটেরিয়া লস অফ ফাংশনের মাধ্যমে অ্যাডাপ্টিভ হয়। ব্যাকটেরিয়া নতুন পরিবেশের নতুন চ্যালেন্সে লস অফ ফাংশনের মাধ্যমে প্রতিরোধ সক্ষমতা তৈরি করে। (৪) একইভাবে জিন লস ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। একটা স্টাডিতে জিন লসকে অন্যতম অপ্রত্যাশিত সমস্যা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বর্তমানে জিনোম ডাটা বৃদ্ধির সাথে সাথে জিন লসের ডাটাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জিন লসের সাথে যেসকল সমস্যা তৈরি হচ্ছে তার মধ্যে বিভিন্ন জীবের মাঝে জিন লসের সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হওয়া। প্রয়োজনীয় জিন কিভাবে পরিহার্য হয়ে পরে তা হারিয়ে যাচ্ছে ইত্যাদি। এবং জিন লস জীবের অ্যাডাপ্টিভ হওয়ার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। (৫) বিজ্ঞানীরা জীবের জন্য একটি ভার্চুয়াল মিউটেশন লিমিট তৈরি করেন। তারা বলেন, জীবের প্রতি জেনারেশনে ৬টির বেশি মিউটেশন জীবের বিলুপ্তির কারণ হতে পারে। তারা আরো বলেন, যে জীব বেশি জটিল সে জীবের ইরর কারেকশন বা ভুল সংশোধের ক্ষমতা বেশি কিন্তু তার মানে এই নয় তারা আরো জটিল হচ্ছে বরং তাদের বিবর্তন সক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। (৬) এতে বুঝা যায়, জীবটি যদিও পরিবেশে টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন করছে কিন্তু তথাপি তাদের জেনেটিক এন্ট্রপি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পরিশেষে, এমন অসংখ্য এভিডেন্স রয়েছে যা প্রমাণ করে জেনেটিক এন্ট্রপি বৃদ্ধি পাচ্ছে। লক্ষণীয়, অনেকে মনে করে জীব যেহেতু লস অফ ফাংশন ও জিন লসের মাধ্যমে অ্যাডাপ্টিভ হচ্ছে তাহলে তো এগুলো বিবর্তনবাদ প্রমাণ করছে। তাদের ধারণা একদম ঠিক, কিন্তু এই বিবর্তন ডারউইনের সরল জীব থেকে জটিল এবং জটিল থেকে অধিকতর জটিল জীবের বিবর্তন নয় অর্থাৎ কোন এক এককোষী জীব থেকে সকল জীবসমূহ সেই বিবর্তন নয়। জীবের ভেরিয়েশন, সাধারণ পরিবর্তন নিয়ে কারো দ্বিমত নেই। অনেকে বলে থাকে, বিবর্তন সঠিক না হলে প্রায় সব বিজ্ঞানী কেন বির্বন মানেন? বিজ্ঞানের কাজ হলো কোন একটি অনুকল্পকে মেনে নিয়ে তার উপর কাজ করা। তথাপি তারা কোন কিছুকে অপরির্বতনীয় বলে মানেন না। এক সময় বংশগতি বিদ্যার জন্য ২৮০টির মত অনুকল্প প্রচলিত ছিল যা এক পড়লে খুব হাস্যকর লাগে, মনে হয় কিভাবে বিজ্ঞানীরা এমন ব্যাখ্যা দিলেন। একসময় এরিস্টটলের পড়ন্ত বস্তুর সূত্র প্রায় ২০০ বছর প্রচলিত ছিল। তেমনি, বির্বতনবাদ নিয়েও রয়েছে অনেক অনুকল্প। ডারউইনের অনেক কিছু ভুল প্রমাণিত হয়েছে অনেক কিছু সংযোজিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত এমন কোন অনুকল্প পাওয়া যায়নি যা দিয়ে জীব জগতকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা দেয়া যায়। তাই বলা যায়, এই জীব জগতের নকশা কোনো এক ডিজাইনারের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে।


ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন। -২৫

জাষ্ক ডিএনএ।
নাস্তিকরা সবকিছুতেই সুবিধে ভোগী। তারা সবকিছুকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে। বিবর্তনের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। যেমন: নিষ্ক্রয় অঙ্গকে বিবর্তনের প্রমাণ দেখিয়েছিল কিন্তু যখন তা ভুল প্রমাণিত হল তখন চাল উল্টিয়ে সেটাকেও বিবর্তন বলে চালিয়ে দিল। এমন অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে যা তারা নিজের সুবিধে অনুযায়ী ব্যবহার করেছে। জাষ্ক ডিএনএ এর ক্ষেত্রেও একই চিত্র। একটা সময় এরা এই জাষ্ক ডিএনএ-কে বিবর্তনের বড় প্রমাণ হিসেবেই দেখিয়েছিল কিন্তু যখন জিনোম প্রজেক্ট তাদের সেই ধারণাকে বাতিল করে দিল তখন তারা পুনরায় ঘুরে বসলেন অর্থাৎ জাষ্ক ডিএনএ-কেই বিবর্তনের প্রমাণ হিসেবে ব্যাখ্যা দেয়া শুরু করলেন। যদিও কয়েকজন বিবর্তনবাদী জিনোম প্রজেক্টের চরম বিরোধিতা করেছিলেন। নিচের দেয়া রেফারেন্সটা দেখে নিতে পারেন।
রেফারেন্সটা অনলাইন ব্লগ বলে কেউ উড়িয়ে দিয়েন না। কারণ এতে জার্নালের রেফারেন্সসহ আলোচনা করা হয়েছে। আমি একটা রেফারেন্স তুলে দিচ্ছি--
These regions have traditionally been regarded as useless accumulations of material from millions of years of evolution… In humans, about 97 percent of the genome is junk.
তাদের ভাষ্যমতে, মানুষের জিনোমের প্রায় ৯৭% জাষ্ক বা বাতিল, যা মিলিয়ন মিলিয়ন বছর বিবর্তন থেকে উপাদানের উদ্দেশহীন বা ব্যবহারহীন সঞ্চয় হিসেবে গণ্য করা হয়।
একই বক্তব্য দেয়া হয়েছে এখানেও-- “From the Darwinian perspective all this is explicable,” but “if you were designing the genomes of organisms, you would certainly not fill them up with junk.”
অর্থাৎ ডারউইনবাদী দৃষ্টিকোণ এইসব ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব কিন্তু যদি আপনি জীবের জিনোম ডিজাইন করে থাকেন তবে আপনি অবশ্যই জাষ্ক/বাতিল/আবর্জনা দিয়ে তাদের পূর্ণ করবেন না।
কিন্তু আমরা আজ জানি ৯৮% জাষ্ক নয়। সো তাদের কথা অনুযায়ী ডিএনএ ডিজাইন করা হয়েছে। তবুও তারা তা অস্বীকার করবে।
এমন অসংখ্য ডারউইনবাদীদের বিবর্তনবাদ প্রমাণের গল্প এই লিংক ও অসংখ্য বইয়ের মলাটে বন্ধী ছিল যা সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে। যেমনটা ছিল এপেন্ডিক্স ও অন্যান্য অর্গান নিয়ে।
আবার ডকিন্স তার বইয়ে ব্যক্ত করেন, 'ডিএনএ-র একমাত্র "উদ্দেশ্য" হল তার নিজস্ব উন্ন নিশ্চিত করা। প্রাকৃতিক নির্বাচন জিনের সহায়ক, যা উদ্বর্তন মেশিন গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখে। জিন এনকোডিং প্রোটিন দ্বারা ভ্রূণ উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ করে যা তৈরি করে শরীর। যেখানে ডিএনএ-এর বিশাল অংশ কখনো প্রোটিন এনকোড করে না (অর্থাৎ এগুলো জাষ্ক)। বিশাল পরিমাণ ডিএনএ খুঁজে পাওয়া আশ্চর্যজনক যা কোনো কাজের জিনিস নয়।'
আমার দেয়া উপরোক্ত লিংকে ডকিন্সের আরো কিছু স্ববিরোধী বক্তব্য আলোচনা করা হয়েছে।
যে ডিএনএ-কে এতদিন জাষ্ক বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছিল তা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। নন কোডিং অংশ খুব গুরুত্বপূর্ণ ফাংশন মেইনটেইন করে যেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জিন এক্সপ্রেশন। জিন এক্সপ্রেশনে ব্যাঘাত ঘটলেই ক্যান্সারের মত রোগ তৈরি হতে পারে। বিস্তারিত এখানে--https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC3818539/
বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানী Dr. Dan Graur তার বই Naturalism and Its Alternatives in Scientific Methodologies-তে বলেন, "If ENCODE is right, evolution is wrong."
তিনি এর ব্যাখ্যায় বলেন, যদি আমাদের সম্পূর্ণ ডিএনএ-এর উদ্দেশ্য থাকে তাহলে আমরা মিলিয়ন সন্তান জন্ম দিবো যার বেশিরভাগ অবশ্যই মারা যাবে কারণ সেখানে অসংখ্য ডিলিটেরিয়াস মিউটেশন ঘটবে ফলে ন্যাচারাল সিলেকশনকে তা থেকে পছন্দ করে কিছু individuals মিউটেশনকে “weed
out” করতে হবে। তাই আমাদের মিলিয়ন মিলিয়ন বাচ্চা জন্ম দিতে হবে যাতে ন্যাচারাল সিলেকশন প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের “weed
out” করতে পারে।
অতএব উপরোক্ত আলোচনায় বুঝা যাচ্ছে, যেহারে ডিলিটেরিয়াস মিউটেশন ঘটে ন্যাচারাল সিলেকশন সে হারে তাদের “weed
out” করতে পারে না। একটা স্টাডি দেখাচ্ছে 'Natural selection can’t weed out deleterious mutations..Which we already know.'
http://m.pnas.org/content/114/43/E9026.abstract
অর্থাৎ ন্যাচারাল সিলেকশন ডিলিটেরিয়াস মিউটেশনকে weed out করতে পারে না, যেগুলো আমরা ইতিমধ্যে জানি। এইজন্য বিবর্তনবাদীরা অনেকেই জাষ্ক ডিএনএ যে ফাংশনাল তা স্বীকার করতে চাননি। কিন্তু বর্তমান বিবর্তনবাদী ও বিবর্তিত নাস্তিকরা এটাকেই বিবর্তনের প্রমাণ হিসেবে ব্যাখ্যা দেয়।

No comments

Note: Only a member of this blog may post a comment.

Powered by Blogger.