ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন-- (১১ থেকে ১৫)

ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন--১১
লেখকঃ সাব্বির আহমেদ সজীব 


বিবর্তনবাদী নাস্তিকদের কিছু চ্যালেঞ্জিং প্রশ্ন।
১। বিবর্তন ধারায় male নাকি female আগে বিবর্তিত হয়েছে?
২। male ও female এর মাঝে যেকোনো একজন আগে বিবর্তিত হলে, সেক্ষেত্রে রিপ্রোডাশক কিভাবে হয়েছিলো?
৩। Female একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ডিম্বাণু নিয়ে জন্মগ্রহণ করে ও প্রতি সাইকেলে সাধারণত একটি ডিম্বাণু রিলিজ করে থাকে। একটি ডিম্বাণু ছাড়া ফার্টিলাইজেশন অসম্ভব। সুতরাং, এই সিস্টেম কি বিবর্তনের প্রথম দিকেই ছিল?
৪। শুক্রাণু ডিভেলপ হতে পারে ৩ ও ৫ ডিগ্রি শরীরের তাপমাত্রা থেকে কম তাপমাত্রায়। স্ক্রোটাম শরীরের কাছ থেকে কিছুটা প্রসারিত বা ছড়ানো থাকে যা শুক্রাণুর জন্য সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখে যাতে শুক্রাণু মারা না যায়। সুতরাং, এই সিস্টেম কি বিবর্তনের ধারায় সঠিকভাবে শুরু থেকেই ছিলো?
৫। শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর ২৩টি করে ক্রোমোজোম থাকে অন্যান্য কোষে ৪৬টি। সুতরাং, বিবর্তনে কিভাবে ও কেন এই স্পেসিফিক সেল উদ্ভবের প্রয়োজন হয়েছিলো?
৬। শিশুর লিঙ্গ নির্ধারিত হয় শুক্রাণু দ্বারা কারণ শুক্রাণু -তে থাকে X ও Y ক্রোমোজোম। যদি একই সময়ে উভয় ক্রোমোজোম না থাকে তাহলে শুধু একটা লিঙ্গের জন্ম হবে। সুতরাং, বিবর্তনের ধারায় উভয় ক্রোমোজোম প্রথম থেকেই ছিলো কি?
৭। শুক্রাণুকে অবশ্যই সুইমে সক্ষম হতে হবে তা না হলে ডিম্বাণুতে পৌঁছাতে পারবেনা ও ফার্টিলাইজেশন কার্য সম্পূর্ণ করতে পারবেনা। সুতরাং, শুক্রাণু কি প্রথম থেকেই সুইমে সক্ষম ছিলো? নাকি এই প্রসেসটি তখন প্রয়োজন ছিলোনা?
৮। শুক্রাণুকে শুধু সুইম সক্ষম হলেই চলবেনা তাহকে অবশ্যই ডিম্বাণুকে খুঁজে পেতে হবে। আর এটা শুক্রাণুর জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজ। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে ডিম্বাণু Progesterone হরমোন রিলিজ করে, ইহা Chemoattractant হিসেবে কাজ করে এতে শুক্রাণু ডিম্বাণুর লক্ষ্য পথে যায়। সুতরাং, এই সিস্টেম কি প্রথম থেকেই কার্যকর ছিলোনা? বিবর্তনের ধারায় কিভাবে এমন শুক্রাণু উদ্ভব হয়েছিলো যা progesterone সেন্স করতে পারে? এবং কিভাবে জানতে পারলো ডিম্বাণু খুঁজে পেতে ইহা অনুসরণ করতে হবে?
৯। শুক্রাণুর মাথায় উপযোগী এনজাইম থাকে যা ডিম্বাণুর ওয়াল ভেদ করতে সক্ষম। যখন একটি শুক্রাণু ডিম্বাণুর কাছে পৌঁছে তখন ইহা একটি স্পেশাল এনজাইম রিলিজ করে যারা পরস্পর ডিম্বাণুর ওয়ালে ভেঙে যায়। এই এনজাইমগুলো ব্যতীত শুক্রাণু ডিম্বাণুকে ফার্টিলাইজ করতে পারেনা। সুতরাং, এই সিস্টেম কি প্রথম অবস্থাতেই ছিলো?
১০। ডিম্বাণুর বাইরের ওয়াল মজবুত ফলে অন্য আরেকটা শুক্রাণু একই ডিম্বাণুর ওয়াল ভেদ করতে সক্ষম হয় না। কারণ একাধিক শুক্রাণু দ্বারা ফার্টিলাইজেশন embryo -এর অনিবার্য মৃত্যুর কারণ। শুক্রাণু ডিম্বাণুতে প্রবেশ করার একটু পরেই ডিম্বাণুর বাইরের মেমব্রেন মজবুত হয়ে যায়, যার ফলে অন্য শুক্রাণুর জন্য ভেদ করা অসম্ভব হয়ে যায়। সুতরাং, এই সিস্টেমটি কি প্রথম অবস্থাতেই কার্যকর ছিলো?
১১। ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর নিউক্লিয়াইকে অবশ্যই পরস্পর ফিউজ হয়ে একটি নিউক্লিয়াস হতে হবে। ডিম্বাণুর নিউক্লিয়াস ফিউজস হয়ে শুক্রাণুর নিউক্লিয়াসের সাথে মিশে উভয় জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালগুলো নতুন ইন্ডিভিজুয়াল গঠন তৈরি হয়। সুতরাং, বিবর্তনবাদ কিভাবে এর ব্যাখ্যা দিবে?
১২। ফার্টিলাইজড ডিম্বাণুকে অবশ্যই ইউটারাস ওয়ালের সাথে যুক্ত হতে হবে। একটি মলিকিউল হচ্ছে এল-সিলেকটিন, এটি নতুন ফার্টিলাইজ ডিম্বাণুকে কভার করে রাখে ও ইউটারাস ওয়ালে বিদ্ধ হতে সক্ষম করে। এটা ছাড়া ফার্টিলাইজড ডিম্বাণু ইউটারাস যুক্ত হতে পারবেনা ফলে প্রেগন্যান্সিও নষ্ট হয়ে যাবে। সুতরাং, ইহা কি প্রথম অবস্থাতেই কার্যকর ছিলো?
১৩। প্লেসেন্টা একটি জটিল অংশ, যা শিশুর জন্য জটিল সব সিস্টেমিক কার্য সম্পন্ন করে থাকে। যেমন, এটি কিডনি, লাঙ, ও ডিজেসটিভের মত সিস্টেমিক কর্ম করে থাকে। সুতরাং, বিবর্তন কিভাবে প্লেসেন্টাকে ব্যাখ্যা করবে? প্লেসেন্টা ছাড়া বেবি কিভাবে সারভাইভ করবে?
পরিশেষে, মানুষ ও অন্যান্য কিছু ম্যামলদের রিপ্রোডাকটিভ প্রসেস একটি কমপ্লিকেটেড প্রসেস সিস্টেম, যা কখনো গ্র‍্যাজুয়ালি বিবর্তিত হতে পারেনা, সবকিছু ডিজাইনের সমষ্টি। তাই সেইসব নাস্তিকদের উদ্দেশে যারা নিজের ব্রেইন ভাড়া না দিয়ে সত্যের সন্ধান করে, সত্য সন্ধানী, নিজের ব্রেইন ভাড়া না দিয়ে চিন্তা করুন সত্য সন্ধান করুন, সত্য গ্রহণ করুন।

ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন--১২
প্রোটিন সংশ্লেষণ।
প্রোটিন অ্যামিনো এসিডের পলিমার, অর্থাৎ অনেকগুলি আলফা অ্যামিনো এসিড পেপটাইড বন্ধন দ্বারা পলিপেপটাইড শৃঙ্খল পলিমার তৈরি করে এবং তা সঠিকভাবে ভাঁজ হয়ে একটি প্রোটিন তৈরি হয়।আমাদের দেহের অস্থি, পেশি, বিভিন্ন দেহযন্ত্র, রক্ত কণিকা থেকে শুরু করে দাঁত, চুল, নখ পর্যন্ত প্রোটিন দিয়ে গঠিত। প্রোটিন ছাড়া কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব কল্পনা করা সম্ভব নয়। তাই প্রোটিনকে সকল প্রাণের প্রধান উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রতিটা ফাংশনাল প্রোটিন খুব জটিল গঠনের হয়ে থাকে যার একটা অ্যামিনো এসিড পরিবর্তন হলে প্রাণীর জন্য হুমকি হয়ে উঠে।
প্রোটিন সংশ্লেষণ একটি জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। কারণ ডিএনএ-তে প্রোটিন তৈরির তথ্য সংগ্রহীত থাকে কিন্তু ডিএনএ সরাসরি প্রোটিন তৈরি করেনা। ডিএনএ থেকে জিনেটিক তথ্য প্রথমে কপি হয় আরএনএ-তে যাকে বলে ট্রান্সক্রিপ্টশন। তারপর সেই তথ্য কাজে লাগিয়ে আরএনএ তৈরি করে প্রোটিন যাকে বলে ট্রান্সলেশন। বিষয়টা খুবই সহজ মনে হচ্ছে কিন্তু তারচেয়ে বেশি জটিল। প্রথমত মনে করা হতো ডিএনএ-এর জিনেটিক কোড থেকে আরএনএ তৈরি তারপর আরএনএ থেকে প্রোটিন কিন্তু বর্তমানে আরো একাধিক কোডিং সিস্টেম বায়োলজি ফিল্ডে আবিষ্কৃত হয়েছে। যাইহোক এত জটিলতর দিকে না গিয়ে সংক্ষেপে সিম্পল সিস্টেমিক প্রসেসিং-টাই জানা যাক।
ট্রান্সক্রিপ্টশন ধাপে ডিএনএ-এর জেনেটিক কোড আরএনএ-তে কপি করা হয়। যেহেতু, ডিএনএ ও আরএনএ দুটোই নিউক্লিইক এসিড দিয়ে তৈরি তাই ডিএনএ থেকে আরএনএ পাওয়ার প্রক্রিয়াটি অনেকটা নকল করার মতো। ডিএনএ থেকে প্রোটিন তৈরির প্রক্রিয়ায় প্রথমে ডিএনএ থেকে সম্পূরক ম্যাসেঞ্জার আরএনএ তৈরী হয়। এ প্রক্রিয়ায় শুরুতে ডিএনএ ডাবল হেলিক্স এর মধ্যে বন্ধন খুলে একটি চেইনকে পড়ার জন্য উন্মুক্ত করতে হয়। এ প্রক্রিয়াটি করে একটি বিশেষায়িত প্রোটিন তথা এনজাইম। আরেকটি এনজাইম ডিএনএ-এর ডাবল-হেলিক্সের সামান্য একটা অংশ জিপারের মতো খুলে ফেলে। খুলে ফেলা অংশ দুটির একটাকে বলে টেম্পলেট স্ট্র্যান্ড আর অন্যটিকে বলে কমপ্লিমেন্টারি স্ট্র্যান্ড। এরপর এনজাইমটি টেম্পলেট-স্ট্র্যান্ডে চেপে বসে এবং সামনের দিকে এগুতে থাকে। সে ডাবল-হেলিক্স বেস পেয়ারগুলো খুলতে খুলতে এগিয়ে যায়। আর পেছনের খোলা বেস পেয়ারগুলো আরেকটি এনজাইম হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে জোড়া লাগাতে থাকে। এভাবে ডিএনএ থেকে প্রথম তৈরি হয় ম্যাসেঞ্জার আরএনএ।
ম্যাসেঞ্জার আরএনএ তৈরি হওয়ার পর রাইবোজোম নামক একটি মেশিনের সহায়তায় প্রোটিন সংশ্লেষ হয়।রাইবোজোম নামক মেশিনটি তৈরী হয় রাইবোজোমাল আরএনএ ও অনেকগুলো প্রোটিনের সমন্বয়ে।আরএনএ থেকে প্রোটিন পাওয়ার ধাপকে বলে ট্রান্সলেশন। ট্রান্সলেশনের কাজটিকে বলা হয় ট্রান্সলেট এবং যারা কাজটি করে তাদের বলা হয় ট্রান্সলেটর। এই কাজটি করে থাকে বিশেষ ধরণের আরএনএ যাদের বলা হয় ট্রান্সফার আরএনএ। এদের কাজ হলো রাইবোজোমের কাছে অ্যামাইনো এসিড বহন করে নিয়ে যাওয়া। বিশটি অ্যামাইনো এসিডের জন্য এরকম বিশ ধরণের সুনির্দিষ্ট ট্রান্সফার আরএনএ থাকে। আবার, প্রত্যেক ধরণের ট্রান্সফার আরএনএ'র সাথে সংশ্লিষ্ট অ্যামাইনো এসিড সংযুক্ত করার জন্য সুনির্দিষ্ট ও পৃথক এনজাইম থাকে যাকে বলা হয় অ্যামিনো এসাইল। এছাড়াও, রাইবোজোমে দুটো পাশাপাশি অ্যামাইনো এসিডের বন্ধন তৈরী করার জন্য কাজ করে আলাদা এনজাইম। উৎপাদিত কিছু প্রোটিন কোষের ভেতরেই কাজে লাগে আর কিছু প্রোটিন নিউক্লিয়াসে, এমনকি কোষের বাহিরেও পাঠাতে হয়। তাই, প্রোটিনকে তার সঠিক গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য প্রোটিনের গায়ে তার গন্তব্যের ঠিকানা লাগিয়ে দিতে হয়। এই সিস্টেমটা কাজ করে ঠিক প্যাকেজিং কারখানার মত। একটি কোষে প্রোটিন তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয় খুব দ্রুত যেখানে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় দেড় লক্ষ্য প্রোটিন তৈরি হতে পারে।
একবার চিন্তা করুন, র‍্যান্ডম কোনো প্রক্রিয়া এত জটিল ও বুদ্ধিদীপ্ত কাজ কি তৈরি করতে পারে? শুধু তাই-ই নয়, উপরের বর্ণনা থেকে লক্ষণীয়, ডিএনএ-তে প্রোটিন তৈরী তথ্য ধারণ করা থাকে। আবার, উক্ত তথ্যকে কাজে লাগিয়ে প্রোটিন তৈরী করার জন্য দরকার অনেকগুলো আরএনএ এবং নির্দিষ্ট প্রোটিন বা এনজাইম। এখন স্বাভাবিকভাবে কিছু প্রশ্ন চলে আসে কোনটা আগে আসবে, ডিএনএ, আরএনএ নাকি প্রোটিন? উক্ত প্রসেসিং সিস্টেম তৈরির তথ্য কোথা হতে আসলো? প্রথমে কোষ প্রোটিন সংশ্লেষণের ডিজায়ার উদ্ভব করেছিলো নাকি হঠাৎ করেই সিস্টেমটি প্রাপ্ত হয়েছিলো?
পরিশেষে সেই সকল নাস্তিকদের বলবো র্যাডম প্রক্রিয়া কি পারবে এইসব সূক্ষ্ম সিস্টেমিক প্রসেস ইভল্ভ করতে? নিজের ব্রেইনকে ভাড়া না দিয়ে একবারের জন্য কাজে লাগান।

ব্যাক্টেরিয়ার ফ্লাজেলা।

আজ কথা হবে ব্যাকটেরিয়ার ফ্লাজেলা নিয়ে। ফ্লাজেলা বা ফ্লাজেলাম হলো ব্যাকটেরিয়াতে অবস্থিত একটি উপাঙ্গ। যার গঠন চাবুকের মত। ব্যাক্টেরিয়াদের ফ্লাজেলা যদিও দেখতে চাবুকের মতো কিন্তু এটা চাকার মত কাজ করে, আক্ষরিক অর্থে এটা ঘোরে চাক্রিক প্রোপেলার ব্যবহার করে। কখনো কি ভেবেছেন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চাকার গুরুত্ব কতটুকু? চাকা ব্যতীত বর্তমান জীবন ব্যবস্থাতে কিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে?
গঠন-- ব্যাকটেরিয়ার জন্য ফ্লাজেলা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাঙ্গ। ব্যাকটেরিয়ার ফ্লাজেলার গঠন অত্যন্ত জটিল প্রকৃতির, যা সহজে ব্যক্ত করা যাবেনা। তবুও সংক্ষেপে ব্যক্ত করার চেষ্টা করব। ৪০-৫০টি প্রোটিন দিয়ে তৈরি হয়েছে এই মটর। এই প্রোটিনগুলো পরস্পর একত্রিতভাবে রোটারি মটরের মত ফাংশন তৈরি করে। যদি এতে কয়েকটি প্রোটিনও কম থাকে তাহলেও ফাংশনটি কার্যকর হবেনা। এটি মানুষের তৈরি মটরের মতই উপাংশ সম্পন্ন। যেখানে রয়েছে, রোটার, স্ট্যাটর, ড্রাইভ শ্যাফট, বুশিং, ইউনিভারসাল জয়েন্ট ও প্রোপেলার।
কাজ-- এটি মূলত ব্যাকটেরিয়াকে চলনশক্তি দান করে। ফ্লাজেলা প্রোপেলারের মত নড়াচড়া করে ব্যাকটেরিয়াকে খাদ্যের দিকে যেতে সাহায্য করে, বিষাক্ত দ্রব্য থেকে দূরে সরে যেতে সাহায্য করে, ফটোসিনথেটিক সায়ানোব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে আলোর দিকে যেতে সাহায্য করা সহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। ব্যাকটেরিয়াল ফ্লাজেলা হচ্ছে হেলিক্যাল ফিলামেন্ট যা স্ক্রুর মতো ঘুরতে থাকে। এই ফ্লাজেলা ঘুরে প্রোটিন দ্বারা তৈরী একটি রোটারি ইঞ্জিনের সাহায্য। এই ইঞ্জিন শক্তি সরবরাহ করে কোষপ্রাচীরের প্রোটিন প্রবাহ থেকে। ইঞ্জিনের ঘূর্ণায়মান অংশ প্রতি মিনিটে ৬০০০-১৭,০০০ বার ঘুরতে পারে। একবার চিন্তা করেছেন কতটা দ্রুত ঘুরে? এর সাহায্যে ব্যাকটেরিয়া তার শরীরের ৬০ গুন দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে, সেখানে চিন্তা বাঘ মাত্র ২৫ গুন দূরত্ব অতিক্রম করে। আপনি যদি মানুষের তৈরি কোনো ইঞ্জিন বা মটরের কর্মদক্ষতা পর্যবেক্ষণ করেন তাহলে কোনো ইঞ্জিন বা মটর পাবেননা যা ১০০% কর্মদক্ষতা সম্পন্ন। কিন্তু ব্যাকটেরিয়ার এই মটর প্রায় ১০০% কর্মদক্ষতা সম্পন্ন। একবার চিন্তা করুন, ডিজাইন করা একটা মটর ১০০% কর্মদক্ষতা সম্পন্ন নয় কিন্তু র‍্যান্ডম প্রক্রিয়ায় এমন একটা মটর তৈরি হয়ে যা প্রায় ১০০% কর্মদক্ষতা সম্পন্ন, এমন একটি মটর ইভল্ভ হলো কোনো নিয়ন্ত্রণ ব্যতীত। ইহা কতটা যুক্তিসংগত ও র‍্যান্ডম প্রক্রিয়াতে কি ইহা সম্ভব?
উক্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট যে, এই ফ্লাজেলা অবিশ্বাস্য রকমের জটিল ও সম্পূর্ণ ডিজাইন করা । র‍্যান্ডম প্রক্রিয়াতে এমন একটা জটিল ডিজাইন সম্ভব কি? হয়তো বিবর্তনবাদীদের কাছে সম্ভব। যদিও তারা প্রমাণ দিতে ব্যর্থ!! তথাপি বিবর্তনবাদীরা এরা ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছেন। আমি গত পোস্টে বলেছিলাম বিজ্ঞান ন্যাচারালিস্টিক এবং এতে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সমস্ত ডাটা যদিও স্রষ্টার স্বপক্ষে হয় তথাপি হাইপোথিসিস দাঁড় করানো হবে কিন্তু স্রষ্টার স্বপক্ষে কোনো মতামত দিবে না। তাই আমাদের নিজস্ব চিন্তাশক্তি প্রয়োগ করেই উপলব্ধি করতে হবে।
লক্ষণীয় কয়েকটি বিষয় হচ্ছে:
১। র‍্যান্ডম প্রক্রিয়ায় এমন একটি ডিজাইন ইভল্ভ হওয়া প্রায় অসম্ভব। কারণ ফ্লাজেলা গঠিত হয় মাল্টিপল প্রোটিনস-এর সমন্বয়ে, যার জন্য প্রয়োজন প্রোটিন বাইন্ডিং সাইটস। কোনো ফাংশনাল প্রোটিনস বাইন্ডিং সাইটের জন্য দুই বা ততদিক মাল্টিপল মিউটেশন প্রয়োজন হলে তা সম্ভাব্যতার সীমা অতিক্রম করতে পারে।
২। ব্যাকটেরিয়ার খুব অল্প সময় সারভাইভ করে বেঁচে থাকে। আবার ফ্লাজেলা চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয় যা খাদ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করে। এই অল্পসময়ের মাঝে ব্যাকটেরিয়া কিভাবে ফ্লাজেলা ইভল্ভ করবে? ফ্লাজেলা ব্যতীত ব্যাকটেরিয়া কিভাবে খাদ্য খুঁজে নিবে?
৩। আমরা জানি, বেশিরভাগ মিউটেশন ক্ষতিকর ও প্রভাববিহীন হয়, বেনিফিসিয়াল মিউটেশন খুব রেয়ার। যদিও কিছু বেনিফিসিয়াল মিউটেশন লক্ষণীয় তথাপি সাইন্টিফিক হিস্ট্রতে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে, কোনো একটা বেনিফিসিয়াল মিউটেশন কন্সট্যান্টলি ঘটছে যা উক্ত পপুলেশনকে অন্য পপুলেশনে পরিবর্তন করে বা কোনো পপুলেশনের একটা অংশে এমন বেনিফিসিয়াল মিউটেশন কন্সট্যান্টলি ঘটছে তারও কোনো অব্জার্ভাবল প্রমাণ নেই। আবার র‍্যান্ডম মিউটেশন কখনই নির্দিষ্ট দিকে অনুসরণ করেনা। তাহলে gradually মিউটেশনের মাধ্যমে কিভাবে ফ্লাজেলা ইভল্ভ করবে?
৪। ব্যাকটেরিয়াতে ফ্লাজেলা gradually ইভল্ভ এর জন্য নতুন নতুন ফাংশনাল তথ্য যোগ হতে হবে। সেগুলো কোথা থেকে, কিভাবে যোগ হবে? এর স্বপক্ষে কোনো অভজার্ভাবল এভিডেন্স নেই তথাপি নাস্তিকরা এটাকে ফ্যাক্ট বলে প্রচার করে।
অতএব, বাই চান্স ও র‍্যান্ডম প্রক্রিয়া কোনো এক বা একাদিক সুনির্দিষ্ট ডিজাইন সৃষ্টি করেনা। অনেক বিজ্ঞানী এতে একমত।
যেমটা স্যার ফ্রেড হয়েল বলেন, "র‍্যান্ডম ও ইমপার্সোনাল চান্স কমপ্লেক্সিসিটি ও ডিজাইন সৃষ্টি করেনা।"

ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন --১৪
বিবর্তনবাদের জন্য কোনো ম্যাকানিজম নেই।
বর্তমান বিজ্ঞানের গবেষণায় বিবর্তন তত্ত্বের তিনটি মৌলিক অন্ধদাবিকে নিষ্ক্রিয় নাকোচ করে দেয়। যেমন: আমাদের শেখানো হয়েছে র‍্যান্ডম মিউটেশন এবং প্রাকৃতিক নির্বাচন বিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি এবং আমাদের ডিএনএ-এর ৯৭% জাষ্ক।
কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়--
১। মিউটেশন বিবর্তন ঘটাতে পারে না কারণ তা শুধুমাত্র জেনেটিক ত্রুটি যা প্রাণীদের দেহের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতির কারণ। যেমন: মানব ডিএনএতে ২,০০,০০০ রোগের কারণ হচ্ছে এই জেনেটিক মিউটেশন। তথাকথিত প্রাকৃতিক নির্বাচন তাদের ফিল্টার করতে সক্ষম নয়।
২। মিউটেশনের কারণ হয়ে থাকে পুষ্টিহীনতা, ধূমপান, অ্যালকোহল, স্ট্রেস, টক্সিন, র‍্যাডিয়েশন, ব্যায়ামের অভাব ইত্যাদি থেকে। বেশিরভাগ মিউটেশন ঘটে আমাদের জীবনধারা ফলাফলে। জীব বৈচিত্রতা বা ভ্যারিয়েশন তৈরি হয় এপিজেনেটিক মডিফিক্যাশন দ্বারা শুধুমাত্র মিউটেশন বা জিন ভ্যারিয়েশনের কারণে নয়।
৩। বর্তমানে 'জাষ্ক-ডিএনএ' শব্দটি ব্যবহার হচ্ছেনা। কারণ জিনোমের নন-কোডিং অঞ্চলে জিন এক্সপ্রেশন, সেলুলার ব্যাকআপ মেকানিজম এবং আমাদের হার্ট, মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির জন্য বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক এলাকা হিসেবে বিবেচিত।
তাই এখানে বিবর্তনের কোনো ম্যাকানিজম নেই। আমাদের জীব বৈচিত্ত্যতা ডিজাইনের সমষ্টি কোনো র‍্যান্ডম প্রসেস নয়।

ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন Vs ডারউইন ইভল্যুশন --১৫

মানুষ ও শিম্পাঞ্জী কি একই কমন অ্যান্সেস্টর থেকে বিবর্তিত হয়েছে?
নাস্তিকরা ও বিবর্তনবাদীরা বিবর্তনবাদকে গ্রাভিটির সাথে তুলনা করে বিবর্তনবাদকে আপেল মাটিতে পড়ার মত সত্য হিসেবে প্রমাণিত দাবী করে। কিন্তু বিষয়টা হাস্যকর উদাহরণ ছাড়া কিছুই না। কারণ বায়োলজি ও ফিজিক্সের মধ্যে পার্থক্য বিস্তর।
আলোচনার শুরুতে বিবর্তনবাদীরা মানুষের বিবর্তন নিয়ে যেসব তথ্য ও ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে তা দেখে নেয়া যাক।
১। প্রায় সব বিজ্ঞানী বিবর্তনবাদ বিশ্বাস করে;
২। মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর এনাটমিক্যাল ও মরফোলজিক্যাল সিমিলারিটি;
২। ডিএনএ সিমিলারিটি।
প্রথমত বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করে এমন কথা বিজ্ঞানে বিজ্ঞানে পরিত্যাজ্য। বিজ্ঞান বিশ্বাসের উপর নির্ভর করেনা বরং প্রমাণের উপর নির্ভর করে। যেমন- আইনস্টাইন বলেছিলেন, কোন তত্ত্ব ভুল প্রমাণ করতে একশ জন বিশেষজ্ঞের 'অভিমত’ লাগে না, কেবল একটিমাত্র পরীক্ষালব্ধ প্রমাণই কিন্তু যথেষ্ট।(১)
আইনস্টাইন এই কথা বলেছিলেন কারণ তার আপেক্ষিকতা তত্ত্বের বিরুদ্ধে অনেক বিশেষজ্ঞ প্রশ্ন তুলেছিলেন।
আর বিজ্ঞানেরদের বিবর্তনবাদ বিশ্বাস করার অনেক কারণ রয়েছে। যেমন- বিবর্তনের সংজ্ঞাটা দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যায়। উইকিপিডিয়া অনুযায়ী 'বিবর্তন হলো এমন একটি জীববৈজ্ঞানিক ধারণা যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে জীবের গাঠনিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ক্রমপরির্তনকে বুঝায়।'
আধুনিক জীববিজ্ঞানের সংজ্ঞা অনুযায়ী, 'বিবর্তন হলো কোনো একটি জীন পুলে এক প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মে অ্যালিল ফ্রিকোয়েন্সির যেকোনো পরিবর্তন।'
অতএব বিবর্তন বলতে প্রজাতির ডাইভারসিটি ও ভেরিয়েশনকে বুঝানো হয় যা প্রমাণিত সত্য। বিবর্তন বলতে কোনো এক এককোষী জীব থেকে সমস্ত জীব ও উদ্ভিদ জগত ধীরে ধীরে বিবর্তন হয়েছে যা বিবর্তনের ব্যাপক আলোচনার ক্ষুদ্রতম অংশ মাত্র। যা শুধুই হাইপোথিসিস মাত্র।
ন্যাচারে জার্নালে এই বিষয়ে বলা হয়েছে, 'There has been no attempt to test statistically the UCA hypothesis among the three domains of life (eubacteria, archaebacteria and eukaryotes) by using molecular sequences.'(২)
তারমানে এককোষী থেকে সমস্তকিছু বিবর্তিত হয়েছে যা শুধুমাত্র হাইপোথিসিস কারণ eubacteria, archaebacteria ও eukaryotes এই তিনটা লাইফ ফর্ম একটা থেকে অন্যটা ভিন্ন। তাই এরা কখনো কিভাবে বিবর্তিত হয়েছে সেই বিষয় সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যাউ না। আবার বিবর্তন বলতে ডাইভারসিটি, ভেরিয়েশন, জিন পুলের পরিবর্তন ইত্যাদি বুঝায় যা প্রমাণিত তাই বিজ্ঞানীরা বিবর্তন বিশ্বাস করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারমানে এই নয় বিবর্তনবাদের কমন ডিসসেন্ট কোনো প্রমাণিত সত্য।
উপরেই বলেছি প্রমাণ ও বিশ্বাস এক নয়। তাই মানুষ ও শিম্পাঞ্জী আত্মীয় বা কমন এন্সেস্টর থেকে বিবর্তিত হয়েছে, তার প্রমাণগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।
বিবর্তনবাদীদের প্রথম প্রমাণ এনাটমিক্যাল ও মরফোলজিক্যাল সিমিলারিটি। বিভিন্ন সময় প্রাপ্ত স্কালের আকৃতির ভিন্নতার ভিত্তিতে মানুষের কমন অ্যান্সেস্টরের মিসিং লিংক দেখানো হয়। প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয় মানুষ ধীরে ধীরে বিবর্তিত হয়েছে। এনাটমিক্যাল ও মরফোলজিক্যাল সিমিলারিটি যদি বিবর্তনের প্রমাণ হয় তাহলে এর বিপরীত প্রমাণের জন্য বিবর্তনবাদ কেন ভুল বলা হবেনা?
নিচের পিকগুলো লক্ষ্য করুন। এই প্রাণীগুলো একদমি আলাদা প্রজাতি কিন্তু তাদের গঠন সিমিলারিটি প্রায় একই। তাহলে কিভাবে তারা আনরিলিটেড প্রাণী হওয়া সত্ত্বেও একই গঠন প্রাপ্ত হয়েছে? এখন তাদের ফসিল ও স্কালগুলো কি একটা আরেকটার মিসিং লিংক হবে?
একই সময়ে একই প্রজাতিতে বিভিন্ন ভেরিয়েশন থাকতে পারে থাকতে পারে আলাদা প্রজাতিতে সিমিলারিটি। তাই সিমিলারিটি পাওয়া মানেই মিসিং লিংক বলে চালিয়ে দেয়া বিবর্তন প্রমাণের জন্য শুভঙ্করের ফাঁকি। বিবর্তনবাদ সিমিলারিটির তত্ত্ব নয় বরং এক জীব থেকে অন্য জীব বিবর্তিত হওয়ার তত্ত্ব। তাই সিমিলারিটি বিবর্তনবাদ প্রমাণ করে না।
একই প্রমাণ উঠে এসেছে জর্জিয়ায় প্রাপ্ত স্কালে। সেখানে বলা হয়েছে '"If you found the Dmanisi skulls at isolated sites in Africa, some people would give them different species names. But one population can have all this variation. We are using five or six names, but they could all be from one lineage." If the scientists are right, it would trim the base of the human evolutionary tree and spell the end for names such as H rudolfensis , H gautengensis , H ergaster and possibly H habilis. (৩)
অর্থাৎ Dmanisi skulls পেলে অনেকেই এগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতি নাম দিয়ে থাকে। কিন্তু একই পপুলেশনে সকল ভেরিয়েশন থাকতে পারে যাদের একাদিক নাম দেয়া হয় কিন্তু তারা সবাই একই লিনিজ থেকে হতে পারে।
তাই বলা যায় বিবর্তনবাদের যে ট্রি দেখানো হয় তা সম্ভবতই ভুল। হতে পারে বিভিন্ন নামের এই প্রজাতিগুলো একই পপুলেশন থেকে অর্থাৎ প্রাপ্ত স্কালগুলো মানুষ ও এপ পপুলেশন থেকে।
মানুষ ও এপসের মধ্যে কোনো মিসিং লিংক পাওয়া যায়নি যা পাওয়া গেছে তা একই প্রজাতির পপুলেশনে ভেরিয়েশন মাত্র। মিসিং লিংক নিয়ে বিবিসি-এর আর্টিকেলে বলা হয় 'We have still not found the missing link between us and apes.' (৪)
অতএব, বিবর্তবাদ গঠনগত সিমিলারিটির তত্ত্ব নয় বরং ট্রান্সফরমেশনের তত্ত্ব। ডারউইন বিবর্তন(কমন এন্সেস্টর) প্রমাণের জন্য প্রয়োজন অসংখ্য ট্রান্সফরমেশন প্রসেস, গঠনগত সাদৃশ্য বা বৈসাদৃশ্য নয়।
তাদের পরবর্তী দাবী মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর জেনেটিক্স সিমিলারিটি ৯৬% ও ৯৮%। তাই মানুষ ও শিম্পাঞ্জী একই কমন এন্সেস্টর থেকে বিবর্তিত হয়েছে।
বিবর্তনবাদের বিপক্ষে যতই প্রমাণ থাকুক না কেন বিবর্তনবাদীরা কোনো না কোনোভাবে বিবর্তন প্রমাণের জন্য ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে। যেমন- জাষ্ক ডিএনএ, এপেন্ডিক্স, লেজ ইত্যাদি দিয়ে বিবর্তন প্রমাণের ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে থাকে। একটা ভুল হলে নতুন ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছে, করিয়ে থাকে।
বিবর্তনবাদ প্রমাণের জন্য সবচেয়ে আলোচিত হয় যে বিষয়টি তা হচ্ছে জেনেটিক সিমিলারিটি।
জেনেটিক সিমিলারিটির বিরুদ্ধে প্রমাণ দেয়ার আগে একটা বিষয় ক্লিয়ার করি। আমরা জানি, আমাদের ডিএনএ-এর ২% শুধু মাত্র প্রোটিন তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয় বাকি ৯৮% নন কোডিং ডিএনএ যা আগে জাষ্ক ডিএনএ বলে বিবর্তনের প্রমাণ বলে দেখানো হতো। এই ৯৮% ডিএনএ খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ ফাংশনে কাজ করে কিন্তু তাদের কাজ সম্পর্কে এখনো তেমন কিছুই জানা যায়নি। তাই ডিএনএ সিমিলারিটি কত % তা বলা খুব কঠিন।
শিম্পাঞ্জী ও মানুষের জেনেটিক সিমিলারিটি ৯৮% নয় ব্যাখ্যা দিয়ে Leading primate evolutionist Todd Preuss, National Academy of Sciences of the United States of America-এর একটি রিভিউয়ে বলেন, "It is now clear that the genetic differences between humans and chimpanzees are far more extensive than previously thought; their genomes are not 98% or 99% identical. (৫)
অর্থাৎ আগে যেমনটা ভাবা হতো মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর জেনেটিক সিমিলারিটি ৯৮% অথবা ৯৯% আইডেন্টিক্যাল তা এখন পরিষ্কার যে, মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর জেনেটিক পার্থক্য অনেক বেশি।
অন্য আরেকটা স্টাডি বলে, 'মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর জেনেটিক সিমিলারিটি ৯৮% নয় বরং ৮৭%। (৬)
বিবর্তন অনুযায়ী যদিও ইঁদুর মানুষের আত্মীয় তবুও তারা কিছুটা দূরের আত্মীয়। কিন্তু তবুও তাদের সাথে আমাদের জেনেটিক সিমিলারিটি ৯৯% ও ৯৭.৫%। (৭)
যা তুলনা করলে দেখা যায় অন্যান্য এপসদের চেয়ে বেশি সিমিলার।
একই প্রমাণ পাওয়া যায় BovB’s family tree-তে, আর্টিকেলটিতে বলা হয়ছে, The obvious interpretation is that BovB was present in the ancestor of all of these animals, and stayed in their genomes as they diversified. If that’s the case, then closely related species should have more similar versions of BovB. The cow version should be very similar to that in sheep, slightly less similar to those in elephants and platypuses, and much less similar to those in snakes and lizards.
But not so. If you draw BovB’s family tree, it looks like you’ve entered a bizarre parallel universe where cows are more closely related to snakes than to elephants, and where one gecko is more closely related to horses than to other lizards. (৮)
অর্থাৎ আপনি যদি BovB’s family tree অংকন করেন জেনেটিক সিমিলারিটির উপর ভিত্তি করে তাহলে ট্রি-টা হবে Cows-Sheep-elephants-platypuses-snakes-lizards.. কিন্তু জেনেটিক তথ্য দিয়ে ট্রি-টা অংকন করেন তাহলে ট্রি-টা হবে, Cows-snakes-elephants এবং gecko-horses-lizards..
এইজন্য আর্টিকেলটিতে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হয়েছে, কিভাবে এক চতুর্থাংশ গরুর জিনোম সাপ থেকে এসেছিল?
অতএব, যদি জেনেটিক সিমিলারিটি দিয়ে বিবর্তন প্রমাণ হয়। তাহলে এর বিপরীত প্রমাণ বিবর্তনবাদকে ভুল প্রমাণ করবে নাকি? ভুল নাহ হলে কেন নয়?
আরেকটা স্টাডি পাওয়া যায় স্কুইডদের মধ্যে। যেখানে দেখা যায়, unrelated lineages হওয়ার পরেও তাদের জিন এক্সপ্রেশন আইডেন্টিক্যাল। (৯)
একই linkages এর প্রাণীর জিন সিমিলারিটি ও এক্সপ্রেশন যদি বিবর্তনের প্রমাণ হয় তবে unrelated linkages এর প্রাণীর জিন সিমিলারিটি ও জিন এক্সপ্রেশন কেন বিবর্তনবাদের জন্য ভুল হবেনা?
এতক্ষণ মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর সিমিলারিটি নিয়ে আলোচনা করলাম এখন দেখা যাক এদের মূল পার্থক্যগুলো।
তার আগে একটা বিষয় বলে রাখি যদিও ডিএনএ-তে প্রোটিন তৈরির তথ্য থাকে তথাপি ডিএনএ শুধু raw material হিসেবে কাজ করে। তাই ডিএনএ সিমিলারিটি তেমন কোনো ভূমিকা পালন করেনা।
মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর পার্থক্য সমূহ--
যদিও মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর ডিএনএ সিমিলার তথাপি তাদের প্রোটিনের পার্থক্য ৮০%। (১০)
আমরা জানি, প্রোটিন-ই জীব দেহের সমস্ত কাজ সম্পন্ন করে কিন্তু সেখানেই পার্থক্য ৮০%।
মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর মধ্যে নন কোডিং আরএনএ পার্থক্য ৭০%। ডিএনএ-এর কাজ আরএন তৈরি করা আর আরএনএ ডিএনএ-এর তথ্য নিয়ে বিভিন্ন ওয়েতে কাজ সম্পন্ন করে। আর সেখানেই এদের পার্থক্য ৭০% অতএব ডিএনএ সিমিলারিটির অনেক পরে। (১১)
মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর RNA alternative splicing প্রসেসে রয়েছে পার্থক্য। যেখানে RNA alternative splicing একই জিন থেকে হাজার হাজার প্রোটিন তৈরি করতে পারে। আর জীবের মূল পার্থক্য তৈরি করে এইসকল প্রোটিন। (১২)
আরেকটা স্টাডিতে বলা হয়েছে, 'Gene Regulation Differences Between Humans, Chimpanzees Very Complex and major differences in mRNA expression levels. (১৩)
অতএব, যদি জেনেটিক সিমিলারিটি বিবর্তনের প্রমাণ হয় তাহলে রেগুলেটরি ম্যাকানিজমের পার্থক্য কেন বিবর্তনকে ভুল প্রমাণ করবেনা?
তাই বলা যায়, মানুষ ও শিম্পাঞ্জীর বিবর্তন নিয়ে যে প্রমাণ উত্থাপন করা হয় তা শুভকরের ফাঁকি মাত্র। প্রতিটা জীব খুব ইউনিক ও জটিল গঠনের যদিও এদের উপাদান একই। যেহেতু একই কাঁচামাল দিয়ে জীব গঠিত তাই এদের মধ্যে সাদৃশ্য থাকা অবশ্যম্ভবী। কিন্তু এই সাদৃশ্য কখনোই বিবর্তনবাদের প্রমাণ নয় বরং একই উপাদানের বিভিন্ন ডিজাইন, ডিনাইনারের ডিজাইন করা।
তথ্য সূত্র--
১। Has a Speeding Neutrino
Really Overturned Einstein? The Wall Street Journal, September, 2011
২। Nature 468, E9 (16 December 2010)
৩। theguardian-17 oct, 2013.
৪। BBC-20170517
৫। Preuss 2012, p. 10709
৬। pnas/100/13/7708
৭। nature/journal/v420/n6915/full/420509a---newscientist.com/article/dn2352-just-2-5-of-dna-turns-mice-into-men/
৯। Proceedings of the National Academy of Sciences 111(44), E4736-E4742
১০। pubmed- 15716009
১১।genomebiology.biomedcentral-10.1186/s13059-016-0880-9
১২। sciencedaily- 2012/11/121106201124 ও PMC310997/
১৩। sciencedaily.2013/10/131017144632.

No comments

Note: Only a member of this blog may post a comment.

Powered by Blogger.