মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে নাস্তিকদের মিথ্যাচারের জবাব / সাইফুল আলম


নাস্তিক ও কথিত মুক্তমনাদের অভিযোগঃ মুক্তিযুদ্ধে ধর্মের নাম করে বাঙালি হত্যা নাই করা হয়। তাহলে পাকিস্তান থেকে কোন আলেম কথা বলেনি কেন??
উত্তরঃ এই নাস্তিক ও কথিত মুক্তমনারা আলেমদের বিরোধিতা করতে গিয়ে পড়াশুনোর কথা একেবারেই ভুলে যান। একে-ওকে স্বাধীনতা বিরোধী বানিয়ে দেন। যা দুঃখজনক। আসলেই কি পাকিস্তানের কোন আলেম সমর্থন করেনি মুক্তিযুদ্ধ?? হ্যাঁ করেছে। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্থানের কওমি আলেমগণ মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্থানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এর পক্ষ থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাহমুদ ২৬ মার্চের আগে ঢাকায় এসে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থানের(বর্তমান বাংলাদেশ🇧🇩) নেতাদের বলেছেন,"আপনারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলুন। দেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে উৎসাহিত করুন [১]।" এমনকি তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথেও দেখা করেছেন। তার প্রমাণ 'মাসিক মদিনা' পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দিন খান বলেছেন,"আমরা বঙ্গবন্ধুর সাথে বৈঠকের পর মুফতি মাহমুদের সাথে বৈঠক করে বাংলাদেশ-পাকিস্থান যুদ্ধের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি তখন জমিয়তের নেতা-কর্মিদের বললেন, পাকিস্থান শাসকদের বন্ধু এখন আমেরিকা। আমেরিকা যাদের বন্ধু তারা আমাদের শত্রু। তোমরা বাংলাদেশের পক্ষে লড়াই কর। তোমাদের এদেশে থাকতে হবে। এদেশের পক্ষেই কাজ করে যাবে। শেখ সাহেবের আন্দোলনে শরিক হবে[২]।" এছাড়াও তারা জমিয়তে হিন্দ এর নেতা আসআদ মাদানী(রাহিঃ) এর বাংলাদেশের পক্ষে আন্দোলন ও সকল পদক্ষেপকে সমর্থন করেছে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের পরে ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ সফর করে শাইখুল ইসলাম মুফতি তকী উসমানী তার 'জাহানে দীদাত' কিতাবের ৩৮৮-৩৮৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন, "বাংলাদেশের মাটিতে তারা(পাকসেনারা) কিয়ামত নামিয়েছিল।" মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্থানের জমিয়তে ইসলাম সংগঠনটি বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করে গেছেন। তবে কোন এক অজ্ঞান কারণে তাদেরকে নিয়ে কোন আলোচনা হয় না। আর এই সুযোগে নাস্তিক ও সুবিধাবাদীরা নিজেরা পড়াশুনো না করেই ভুলভাল শেখানোর চেষ্টা করছে। এটা মূলত করছে ইসলাম বিদ্বেষ থেকে। তারা নিজেদের মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করতে সত্যকেও অস্বীকার করে। এ আর নতুন কি!! তবে তাদের এই কুকর্মকে জাতির সামনে তুলে ধরা প্রকৃত মুক্তচিন্তকদের কাজ।
তথ্যসূত্রঃ
১। একাত্তরের চেপে রাখা ইতিহাসঃ আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে, ১০ পৃষ্ঠা।
২।একাত্তরের চেপে রাখা ইতিহাসঃ আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে, ৪৬০ পৃষ্ঠা।

No comments

Note: Only a member of this blog may post a comment.

Powered by Blogger.