গ্রীক অভিজ্ঞতাবাদ:

গ্রীক অভিজ্ঞতাবাদ: সৎগুন (Virtue), প্রাজ্ঞতা ( Wisdom), নৈতিকতার (Morality) সীমাবদ্ধতা।
লেখকঃ মুজিবুর রহমান
=============== এরিস্টটল এর প্রাজ্ঞতা Aristotelian Ethics এর Nicomachian Ethic পর্বে সবিস্তারে বিধৃত রয়েছে । এই Ethics এ অন্যান্য মানবগুনগুলি তথা প্রাজ্ঞতা ও বুদ্ধিদীপ্ত সৎগুনাবলি ভিন্ন ভাবে পরিবেশিত হয়েছে। সৎগুন তথা virtue শব্দটি মূলত এসেছে গ্রীক শব্দ Arête থেকে যাতে বলা হয়েছে একজনের সিদ্ধি হাসিলের জন্য সে যে কর্ম করে তাই Arête । যেকোন বিষয় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করাই হচ্ছে মূলমন্ত্র । আর এটিই হলো “নৈতিক সৎগুন” ( Moral virtue)। গ্রীসে এই Arete সম্পর্কে প্রাথমিক পর্যায়ের ধারনা ছিল যে মানব উদ্দেশ্যর সিদ্ধি বা কর্মের সিদ্ধি তথা নিজের সম্পূর্ন সন্ভাবনার ব্যবহারই সৎগুন। এরিস্টটল এটাকে বলছেন “ গভীর চিন্তাশীলতা” ( Contemplation) অর্থাৎ মানুষের সর্ব্বোচ্চ সক্ষমতা এবং সুখ। এইরুপ চিন্তার ধারাটির উৎস এরিস্টটল , তার Allegory of the Cave দ্বারা বোঝাতে চেয়েছেন মানুষের জ্ঞান ও অজ্ঞতার দিকগুলি। যে খানে মূলত সম্ভ্রান্ত শ্রেনীকে জ্ঞানের আধার তথা arête অর্জনক্ষম হিসাবে তিনি ধারনা দিয়েছেন। তিনি Arête অর্থে সম্পূন ভাবে মানব জ্ঞানকে বুঝিয়েছেন যেখানে তিনি সৎগুন (Virtue), প্রাজ্ঞতা ( Wisdom), নৈতিকতাকে (Morality) বুদ্ধিদীপ্ততার বহির্প্রকাশ হিসাবে দেখিয়েছেন। এই হেলেনিক তথা গ্রীক প্রয়োগবাদীয় নৈতিকতার তথা empiricism এর জগাখিচূরী মার্কা অবস্হান মানুষের মানবতা কে আপেক্ষিক করে তুলেছে কারন মানুষের ঔচিত্যবোধ যখন তার নিজের ব্যাখ্যায় পরিনত হয় তখন সে অর্থনৈতিক উপযোগীতা (Utility) নির্ভর হয়ে স্ব স্ব চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে নিজস্ব নৈতিকতার মানদন্ড নির্ধারন করতে থাকে এবং মৌসুম বদলের সাথে সাথে তার স্বনির্ধারিত নৈতিকতার নীক্তিও বদলাতে থাকে। সেই কারনে বস্তুতান্ত্রীক বৌদ্ধিক জ্ঞানের দ্বারা আহরিত অভিজ্ঞতা মানুষ ভেদে বিভিন্ন রকম হতে থাকে কারন একই বিষয় বিভিন্ন জন্যের ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়। যেখানে মানুষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট চাহিদাই সত্য রুপ ধারন করে । কিন্তু তাদের একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন সত্য ভাবনা অর্থ এই না যে বিষয়টির প্রকৃত সত্যতা নাই । সেই কারনে এরিষ্টোটিলিয়ান জৈবিক তারনা লব্দ্ধ নীতি মালা আপেক্ষিকতা সর্বস্ব যা অদ্যাবধি অমিমাংসিতই রয়ে গেছে। আরও ব্যাপক ভাবে বলতে গেলে আমরা যখনই নিরবিচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষনরত হতে সচেষ্ট হবো সেই মূহুর্তে আমাদের The second law of Thermodynamics অথবা Law of entropy তথা বিশৃঙ্খলায় পতিত হতে হবে। আর ঐ অব্যবস্থা হতে বাহির হতে না পেরে আমরা স্বজ্ঞালব্ধ বোধশক্তি কেই হারিয়ে ফেলবো। দার্শনিকতাতেও Rudolf Otto মানুষের এক অতীন্দ্রিয় numinous কে খুঁজেছেন যেই numinous কে Kant কিংবা Plato ও অস্বিকার করতে পারেন নাই। এই mysterious tremendum মানুষের চৈন্তিক জ্ঞানের বাহিরে তার সশ্রদ্ধ বিশ্ময় বা পরমানন্দ ( Otto amaze)। Aristotelian wisdom এই সশ্রদ্ধ বিশ্ময় বা পরমানন্দের গন্ডিকে বুজতে অক্ষম। বৌদ্ধিক চিন্তা দ্বারা নির্যাস, ভব, ভাব, রস, সত্তা, সুগন্ধসার কে বোঝা যায় না এটি অনুভবের বিষয়। সত্যতা অপ্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়ার ( Law of entropy ) জগতের বাহিরে একটি অপার অনুভবনীয় জগত।

No comments

Note: Only a member of this blog may post a comment.

Powered by Blogger.